আজ বুধবার রাতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়, চিঠি পাঠানোর মধ্য দিয়ে নির্বাচন আয়োজনের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে ইসিকে অনুরোধের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হলো।
যেকোনো জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ডিসি, এসপি, ইউএনও এবং ওসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। নির্বাচনের সময় দেখা যায়, প্রার্থীরা তাদের আসনে পছন্দের ডিসি, এসপি কিংবা ওসিকে পদায়ন করতে চান।
প্রধান উপদেষ্টার চিঠি পেলে আলোচনা করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এম এম নাসির উদ্দিন। আজ বুধবার (৬ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
সিপিবি মনে করছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার নয়, একটি নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনেই পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হবে। সেই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তদারকি সরকার জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৯০ দিন আগে গঠিত হবে। তারা ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।
ফেব্রুয়ারিই নির্বাচনের উপযুক্ত সময় বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি। বুধবার (৬ আগস্ট) প্রধান উপদেষ্টার নির্বাচনের সময় ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় স্ট্রিমের কাছে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
যাবতীয় সংস্কার পরবর্তী সংসদে হবে এবং এটিই বৈধ প্রক্রিয়া বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টা ঘোষণা দিয়েছেন, পরবর্তী সংসদ সংস্কার বাস্তবায়ন করবে। এটিই বৈধ প্রক্রিয়া।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে নির্বাচনের আগে সেসব সংস্কার সম্পন্ন হবে বলে মনে করেন জমিয়তের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী।
আগামী নির্বাচনকে সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন হিসেবে করার দাবি জানায় গণসংহতি আন্দোলন। তারা জানায়, এই নির্বাচন যাতে একটা টেকসই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সাংবিধানিকভাবে তৈরি করতে পারে তার জন্য আমরা আগামী নির্বাচনকে সংবিধান সংস্কার পরিষদের নির্বাচন হিসেবে করার দাবি জানাচ্ছি।
প্রধান উপদেষ্টার ভাষণের প্রতিক্রিয়া
জাতির উদ্দেশে ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন। এই ঘোষণার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। কোনো কোনো রাজনৈতিক দল এই ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে দেখছে, আবার কোনো কোনো দল নেতিবাচকভাবে দেখছে।
আগামী রমজানের আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।
ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পর্যবেক্ষক দল সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে আসবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে আজকে এই তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানানো হয়েছে।
আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১০ আগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এছাড়া সংশোধনের পর আগামী ৩১ আগস্ট চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পতন ঘটে আওয়ামী লীগ সরকারের। অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির এই দিনেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করতে পারেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
উচ্চকক্ষে সদস্য নির্বাচন
বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার পর ৩১ জুলাই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সিদ্ধান্ত দিয়েছে, জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষ হবে ১০০ আসন বিশিষ্ট। আর এর সদস্য মনোনীত হবেন সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতিতে। অর্থাৎ, দলগুলো জাতীয় নির্বাচনে যে ভোট পাবে, তার ভিত্তিতে তাদের মধ্যে বণ্টন করা হবে আসন।
নির্বাচনের প্রস্তুতি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মধ্যে সমঝোতা এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের বিশ্বাস অর্জনের লক্ষ্যে মিয়ানমারের জান্তা দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করেছে।
নির্বাচন নির্দিষ্ট সময়েই হবে, দেরি হবে না। এই ব্যাপারে প্রধান উপদেষ্টা আগে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, সেই অনুযায়ীই নির্বাচন হবে বলে বলে জানিয়েছেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম।