প্রতারণার মামলায় মহাদেব চন্দ্র সাধু নামের এক ব্যক্তির জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। বুধবার (৫ নভেম্বর) চুয়াডাঙ্গার সিনিয়র জুডিশিয়াল আদালতের বিচারক তার জামিন আবেদন ও রিমান্ড নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠান। মাগুরার বাসিন্দা মহাদেব চন্দ্র সাধুর বিরুদ্ধে কয়েকশ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে। তার নামে প্রতারণাসহ অন্তত ৮০টি মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে।
চুয়াডাঙ্গার ব্যবসায়ী লিটন কুমার আইচের মামলার অভিযোগে বলা হয়, এক বছর আগে মহাদেব চন্দ্র সাধুর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর মহাদেব নগদ টাকায় মালামাল কিনে লিটনের বিশ্বাস অর্জন করেন। এরপর ২০২৪ সালের ৯ অক্টোবর থেকে ২০২৫ সালের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে ৬ কোটি ৬৫ লাখ ১৬ হাজার ৫৭৯ টাকার ৭৬ গাড়ি ভুট্টা কেনেন। এর মধ্যে ৪ কোটি ২৪ লাখ ১৪ হাজার টাকা পরিশোধ করলেও ২ কোটি ৪১ লাখ ২ হাজার ৫৭৯ টাকা বাকি রাখেন। একইভাবে ঢাকার ব্যবসায়ী ও মামলার সাক্ষী ইসমাইল হোসেন রতনের কাছেও ১৭ কোটি ১৪ লাখ ৪৮ হাজার ৪০০ টাকা বাকি করেন।
লিটন কুমার আইচ বলেন, ‘আমি মহাদেব সাধুর সঙ্গে পাঁচ মাস ব্যবসা করেছি। তাকে জেলে পাঠানো আমার উদ্দেশ্য নয়। আমি যাদের কাছ থেকে বাকি নিয়ে তার কাছে মাল বিক্রি করেছি, তাদের টাকা তো আমাকেই পরিশোধ করতে হবে। তারা তো আমায় ছেড়ে দেবে না। আমার কাছে যারা টাকা পায়, তারা আমার বাড়িতে এসে ভাঙচুর করেছে, স্ত্রীর গয়না নিয়ে গেছে। আমি দুইবার আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছিলাম। পরিবারের মুখের দিকে তাকিয়ে আবার ফিরে এসেছি। আমি এর ন্যায়বিচার চাই।’
আদালতে লিটন কুমার আইচের পক্ষে শুনানি করেন ঢাকা থেকে আসা আইনজীবী আল মামুন রাসেল ও অ্যাডভোকেট সেলিম উদ্দিন খানসহ আরও কয়েকজন আইনজীবী। অপরদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট তুহিন আহমেদ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী আল মামুন রাসেল বলেন, ‘মহাদেব ফ্যাসিস্ট আমলে দীর্ঘ ১৭ বছর ধরে একটি অপরাধ সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে নিজের ছবি ব্যবহার করে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নানা রকম প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন। প্রথমে তিনি বিশ্বাস স্থাপনের জন্য আগে টাকা পাঠাতেন। কয়েকবার এমন লেনদেনের পর বিশ্বাস অর্জন করে কয়েক কোটি টাকার পণ্য অর্ডার করতেন এবং বলতেন, টাকা কয়েক দিনের মধ্যেই দেবেন। মালামাল গ্রহণ করার পর উধাও হয়ে যেতেন। তার বিরুদ্ধে আমরা ৮৫টি মামলা পেয়েছি। বিজ্ঞ আদালত প্রাথমিক অবস্থায় সব ডকুমেন্ট দেখে তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি, আদালত ন্যায়বিচার করবেন।’