.png)
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির নির্বাচনে প্রথম মুসলিম, প্রথম ভারতীয়-আফ্রিকান বংশোদ্ভূত এবং সবচেয়ে তরুণ মেয়র হয়ে ইতিহাস গড়েছেন ডেমোক্র্যাটপ্রার্থী জোহরান মামদানি। নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর মঙ্গলবার রাতে ব্রুকলিনে সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বিজয় ভাষণ দেন।

স্ট্রিম ডেস্ক

ধন্যবাদ, আমার বন্ধুরা। আজ সূর্য আমাদের শহরের ওপর অস্ত গেছে, কিন্তু ইউজিন ডেবসের মতো, ‘আমি মানবতার জন্য এক নতুন দিনের ভোর দেখতে পাচ্ছি।’
নিউইয়র্কের শ্রমজীবী মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে ধনীদের কাছ থেকে শুনতে হয়েছে—ক্ষমতা তাদের হাতে নয়। যে হাত গুদামে বাক্স তুলতে গিয়ে আঘাত পায়, যে হাত বাইকের হ্যান্ডেলে শক্ত হয়ে গেছে, যে হাতে রান্নাঘরের দাগ—সেই হাতগুলোকে কখনো ক্ষমতা ধরতে দেওয়া হয়নি।
তবু গত এক বছরে আপনারা সেই সীমা অতিক্রম করার সাহস দেখিয়েছেন। আজ রাতে, সব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করেছি। ভবিষ্যৎ এখন আমাদের হাতে।
বন্ধুরা, আমরা একটি রাজনৈতিক রাজবংশের অবসান ঘটিয়েছি।
আমি অ্যান্ড্রু কুওমোর ব্যক্তিগত জীবনের জন্য শুভকামনা জানাই। কিন্তু আজ রাতই তাঁর নাম শেষবারের মতো উচ্চারিত হোক। কারণ যে রাজনীতি অল্প কয়েকজনের জন্য কাজ করে আমরা তার সমাপ্তি চাই।
নিউইয়র্কের বাসিন্দারা আজ রাতে স্পষ্টভাবে বলেছেন—আপনারা পরিবর্তন চান। এমন এক শহর চান যা সবার নাগালে। এমন এক সরকার চান যা তা নিশ্চিত করবে।
আগামী ১ জানুয়ারি আমি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে শপথ নেব। এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র আপনাদের কারণে। তাই প্রথমেই বলতে চাই—ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সেই নতুন প্রজন্মের নিউইয়র্কবাসীকে, যারা অতীতের প্রতিশ্রুতিকে ভবিষ্যতে বাস্তবে রূপ দিতে চায়। আপনারা দেখিয়েছেন, যখন রাজনীতি জনগণের ভাষায় কথা বলে, তখন নতুন নেতৃত্বের যুগ শুরু হয়।
আমরা আপনাদের জন্য লড়ব, কারণ আমরাও আপনাদেরই একজন। যেমন আমরা স্টেইনওয়েতে বলি—‘আনা মিনকুম ওয়া আলাইকুম’ (আমি তোমাদেরই একজন, তোমাদের সঙ্গেই আছি)।
ধন্যবাদ সেইসব মানুষকে, যাদের কথা এই শহরের রাজনীতি প্রায়ই ভুলে যায়। তারা এই আন্দোলনকে নিজেদের করে নিয়েছেন। আমি বলছি ইয়েমেনি দোকানদার, মেক্সিকান দাদি, সেনেগালের ট্যাক্সিচালক, উজবেকিস্তানের নার্স, ত্রিনিদাদের রাঁধুনি এবং ইথিওপিয়ান খালাদের কথা। হ্যাঁ, আমার প্রিয় খালারা।
কেনসিংটন, মিডউড বা হান্টস পয়েন্টের প্রতিটি নিউইয়র্কবাসীকে বলছি—এই শহর আপনার, এই গণতন্ত্রও আপনার।
এই আন্দোলন ছিল তাদের জন্য যারা নিউইয়র্কে বাসা ভাড়া দিতে পারেন না বলে প্রতিদিন পেনসিলভানিয়া থেকে দুই ঘণ্টা পথ পাড়ি দেন।
এই আন্দোলন ছিল সেই নারীটির জন্যও, যিনি একদিন বাসে করে যাওয়ার সময় আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি একসময় নিউইয়র্ককে ভালোবাসতাম। এখন শুধু এখানে থাকি।’
আর ট্যাক্সিচালক রিচার্ডের কথাও বলি। তাঁর সঙ্গে আমি সিটি হলে ১৫ দিনের অনশন করেছিলাম। ভাই, আজ আমরা সিটি হলে আছি।
এই বিজয় সেই এক লাখেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবকদের, যারা এই প্রচারণাকে এক অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে রূপ দিয়েছেন।
আপনাদের প্রচেষ্টায় আমরা আবার এমন একটি শহর গড়ব, যেখানে কর্মজীবী মানুষ ভালোবাসতে ও বাঁচতে পারবে। আপনাদের প্রতিটি দরজায় কড়া নাড়া, প্রতিটি স্বাক্ষর, প্রতিটি আলোচনা—সবই আমাদের রাজনীতির হতাশাকে আশায় বদলে দিয়েছে।
গত এক বছরে আমি আপনাদের কাছ থেকে অনেক কিছু চেয়েছি। আর আপনারা প্রতিবার সাড়া দিয়েছেন। তবে আমার এক শেষ অনুরোধ আছে— এই মুহূর্তটিকে অনুভব করুন।
আমরা অনেকদিন ধরে শ্বাস আটকে রেখেছিলাম। ছিল পরাজয়ের আশঙ্কা, বঞ্চনার ভার, অনিশ্চয়তা। আজ আমরা এমন এক শহরের বাতাসে নিঃশ্বাস নিচ্ছি, যে শহরের নতুন জন্ম হচ্ছে।
আমার প্রচারণা দলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা। আপনারা বিশ্বাস রেখেছিলেন যখন অন্য কেউ রাখেনি। আপনারা এক নির্বাচনী প্রচারণাকে আন্দোলনে রূপ দিয়েছেন। এখন আপনারা বিশ্রাম নিতে পারেন।
আমার বাবা-মা—আপনারাই আমাকে গড়ে তুলেছেন। আমি গর্বিত আপনাদের সন্তান হতে পেরে। আর আমার অসাধারণ স্ত্রী রমা হায়াতি—এই মুহূর্তে, এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তোমার পাশে থাকাটাই আমার সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য।
প্রত্যেক নিউইয়র্কবাসীর প্রতি—আপনি আমাকে ভোট দেন বা আমার প্রতিদ্বন্দ্বীকে, কিংবা রাজনীতিতে হতাশ হয়ে ভোট না দেন—আমি কৃতজ্ঞ। আমাকে আপনার আস্থার যোগ্য প্রমাণের সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন সকালে আমি এই শহরটিকে আগের দিনের চেয়ে আরও ভালো করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে জাগব।
অনেকে ভেবেছিলেন আজকের দিনটি কখনো আসবে না। তারা ভয় পেতেন, আমরা কেবল একই রকম ভবিষ্যতের’ ফাঁদে বন্দি থাকব। অনেকে বিশ্বাস হারিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, রাজনীতি আজ এত নিষ্ঠুর হয়ে গেছে যে আশার আলো আর টিকতে পারে না। কিন্তু নিউইয়র্ক আজ সেই ভয়কে জবাব দিয়েছে।
আজ আমরা এক স্পষ্ট কণ্ঠে বলেছি—আশা এখনও বেঁচে আছে। এই আশাতেই ১০ লাখের বেশি মানুষ গির্জা, জিমনেসিয়াম, ও কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে গণতন্ত্রের খাতায় নিজেদের নাম লিখেছেন।
আমরা একা ভোট দিয়েছি। কিন্তু একসাথে আশা বেছে নিয়েছি। আমরা বেছে নিয়েছি আশাকে—স্বৈরাচারের পরিবর্তে, অর্থ ও ক্ষুদ্র চিন্তার পরিবর্তে, হতাশার পরিবর্তে। আমরা জিতেছি, কারণ নিউইয়র্কবাসীরা বিশ্বাস করেছেন—অসম্ভবও সম্ভব করা যায়। আমরা জিতেছি, কারণ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে রাজনীতি আর আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া কিছু হবে না। এখন আমরা নিজেরাই রাজনীতি করব।
এই মুহূর্তে আমি জওহরলাল নেহরুর কথা স্মরণ করছি, ‘ইতিহাসে এমন মুহূর্ত আসে, যখন আমরা পুরোনোকে পেছনে ফেলে নতুনের দিকে পা বাড়াই, যখন একটি যুগ শেষ হয় এবং দীর্ঘদিন নীরব থাকা জাতির আত্মা কথা বলতে শুরু করে।’ আজ আমরা সেই নতুন যুগে প্রবেশ করেছি।
এখন সময় এসেছে স্পষ্টভাবে বলার—এই নতুন যুগ কাদের জন্য এবং কী আনবে। এটি হবে এমন এক যুগ, যখন নাগরিকরা নেতাদের কাছ থেকে সাহসী দৃষ্টি আশা করবে—অজুহাত নয়। সেই দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রবিন্দু হবে জীবিকা ও জীবন-যাত্রার ব্যয়ের সংকট মোকাবিলায় ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী কর্মসূচি। আমরা ২০ লাখেরও বেশি ভাড়াটিয়ার জন্য ভাড়া স্থগিত করব, শহরজুড়ে বাস সেবা বিনামূল্যে ও দ্রুত করব এবং সর্বজনীন শিশুযত্ন ব্যবস্থা চালু করব।
এই নতুন যুগ হবে ধারাবাহিক উন্নতির যুগ। আমরা হাজারো নতুন শিক্ষক নিয়োগ করব, প্রশাসনের অপচয় বন্ধ করব এবং দীর্ঘদিন অন্ধকার থাকা সরকারি আবাসনের করিডোরগুলোতে আবার আলো জ্বালাব।
নিরাপত্তা ও ন্যায় একসাথে চলবে। আমরা পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে কাজ করব অপরাধ কমাতে। মানসিক স্বাস্থ্য ও গৃহহীনতার সংকট মোকাবিলায় ‘কমিউনিটি সেফটি বিভাগ’ গঠন করব। দক্ষতা হবে সরকারের নতুন মানদণ্ড।
আমরা ঘৃণা ও বিভাজনের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করব। এই রাজনৈতিক অন্ধকারে নিউইয়র্ক হবে আলোর প্রতীক। আমরা বিশ্বাস করি—যাদের আমরা ভালোবাসি, তাদের পাশে দাঁড়ানোই মানবতার পরিচয়। আপনি অভিবাসী হোন, হোন রুপান্তরকামী সম্প্রদায়ের সদস্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে চাকরি হারানো কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী বা পণ্যের দাম কমার অপেক্ষায় থাকা একাকী মা, আপনি যেই হন, আপনার সংগ্রামই আমাদের সংগ্রাম।
আমরা এমন একটি সিটি হল গড়ব, যা ইহুদি নিউইয়র্কবাসীদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে। ইহুদি-বিরোধী ঘৃণার বিরুদ্ধে আপসহীন থাকবে। একইসঙ্গে, শহরের ১০ লাখেরও বেশি মুসলমানের কাছে এই বার্তা পৌঁছে যাবে—তারা শুধু এই শহরের পাঁচটি বরোতেই নয়, বরং ক্ষমতার কেন্দ্রেও নিজেদের অন্তর্ভুক্ত মনে করবেন।
নিউইয়র্ক আর সেই শহর হবে না যেখানে ইসলামবিদ্বেষকে পুঁজি করে কেউ নির্বাচনে জেতা যায়। এই নতুন যুগে দক্ষতা ও সহমর্মিতা একসঙ্গে চলবে। আমরা প্রমাণ করব—এমন কোনো সমস্যা নেই যা সরকার সমাধান করতে পারে না এবং অগ্রাহ্য করার মতো ছোট কোনো উদ্বেগ নেই।
বহু বছর ধরে সিটি হল কেবল তাদেরই সাহায্য করেছে, যারা তাদের কিছু ফিরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু আগামী ১ জানুয়ারি থেকে আমরা এমন একটি সরকার গঠন করব, যা সবার সেবা করবে।
আমি জানি, অনেকেই আমাদের বার্তা শুনেছেন ভুলভাবে। কোটি কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে বাস্তবতাকে বিকৃত করতে এবং মানুষকে বোঝাতে যে আমাদের এই নতুন যুগ তাদের জন্য হুমকি। ধনীদের একাংশ সবসময়ই চেষ্টা করেছে ঘণ্টায় ৩০ ডলার আয়ের মানুষকে বিশ্বাস করাতে যে তাদের শত্রু হলো ঘণ্টায় ২০ ডলার আয় করা শ্রমিক।
তারা চায়, মানুষ যেন নিজেদের মধ্যেই লড়াইয়ে লিপ্ত থাকে, যাতে পুরনো অচল ব্যবস্থাকে বদলের কাজ থেকে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে যাই। কিন্তু আমরা আর তাদের সেই খেলার নিয়ম মানব না। এখন থেকে তাদের আমাদের নিয়মে চলতে হবে।
আমরা একসঙ্গে বদলের এক নতুন যুগ সূচনা করব। যদি আমরা এই সাহসী পথকে বেছে নিই, তাহলে একনায়কতন্ত্র ও ধনিকশক্তির জবাব আমরা শক্তি দিয়ে দিতে পারব—নমনীয়তা দিয়ে নয়।
যে শহর ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্ম দিয়েছে, সেই শহর পারে তাকে পরাজিত করতে। আর কোনো স্বৈরশাসককে ভয় দেখানোর শ্রেষ্ঠ উপায় হলো, তাঁকে ক্ষমতার সুযোগ দিয়েছে যে বাস্তবতা, সেই বাস্তবতা ভেঙে দেওয়া।
এভাবেই আমরা শুধু ট্রাম্পকেই নয়, ভবিষ্যতের ট্রাম্পদেরও ঠেকাব। তাই, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প—যেহেতু জানি আপনি শুনছেন—আমার কথাগুলো মনে রাখুন: ভলিউম বাড়ান।
আমরা খারাপ মালিকদের জবাবদিহির মুখে আনব। কারণ আমাদের শহরের ট্রাম্পদের মতো অনেকেই ভাড়াটিয়াদের শোষণ করে আরাম করছে। আমরা দুর্নীতির সেই সংস্কৃতি শেষ করব, যা ধনীদের কর ফাঁকি দিয়ে সুবিধা নিতে দিয়েছে। আমরা শ্রমিক সংগঠনের পাশে দাঁড়াব এবং শ্রম অধিকার বাড়াব। কারণ আমরা জানি—যখন শ্রমিকদের অধিকার দৃঢ় হয়, তখন তাদের শোষণকারীরা দুর্বল হয়ে যায়।
নিউইয়র্ক অভিবাসীদের শহর থাকবে। হবে অভিবাসীদের গড়া, অভিবাসীদের শক্তিতে চলা এবং আজ থেকে অভিবাসীর নেতৃত্বে পরিচালিত শহর।
তাই আমাকে শুনুন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আমাদের কারও কাছে পৌঁছাতে হলে আপনাকে আমাদের সবার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। মাত্র ৫৮ দিনের মধ্যে আমরা সিটি হলে প্রবেশ করব। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বড়, আর আমরা তা পূরণ করব।
এক মহান নিউইয়র্কার একবার বলেছিলেন, ‘আপনি যদি কবিতায় প্রচারণা চালান, তাহলে গদ্যে শাসন করবেন।’ যদি সেটিই সত্য হয়, তবে আমাদের সেই গদ্যেও যেন ছন্দ থাকে। আমরা যেন গড়ি সবার জন্য উজ্জ্বল এক শহর।
আমাদের এখন নতুন পথ রচনার সময় এসেছে। সেই সাহস নিয়ে আমরা আজ পর্যন্ত চলেছি। প্রচলিত ধারণা বলবে আমি আদর্শ প্রার্থী নই। আমি তরুণ, মুসলিম, গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী। সবচেয়ে বড় কথা—এই পরিচয়ের জন্য আমি কখনো ক্ষমা চাইব না।
আজকের দিনটি আমাদের বলছে—প্রথাগত চিন্তাধারাই আমাদের পিছিয়ে রেখেছে। আমরা অতিরিক্ত সতর্কতার নামে অনেক ত্যাগ করেছি। শ্রমজীবী মানুষের অনেকেই আর নিজেদের দলকে চিনতে পারেন না। কেউ কেউ উত্তর খুঁজতে ডানপন্থার দিকে ঝুঁকেছেন।
আমরা গড়পড়তা অবস্থাকে পেছনে ফেলে যাব। ডেমোক্র্যাটরা সাহসী হতে পারে, এর প্রমান আর ইতিহাসের বইয়ে খুঁজতে হবে না। আমাদের বর্তমান সেই কথা বলবে।
প্রতিটি ভাড়াটিয়া তা অনুভব করবে, যখন প্রতি মাসের প্রথম দিনে সে জানবে—তার ভাড়া আগের মাসের মতোই আছে। প্রতিটি প্রবীণ তা অনুভব করবে, যখন তিনি তাঁর নিজ বাড়িতে থাকতে পারবেন। তাঁর নাতি-নাতনিরা তাঁর কাছেই থাকবে। কারণ শিশু যত্নের খরচ মেটাতে গিয়ে তাদের আলাদা থাকতে পারবে না।
প্রতিটি একক মা তা অনুভব করবে, যখন তাঁর যাত্রা নিরাপদ হবে, বাস দ্রুত চলবে আর সময়মতো কাজে পৌঁছাতে তাড়াহুড়া করে বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসতে হবে না। নিউইয়র্কবাসীরা সকালে যখন পত্রিকা খুলবেন, তারা সফলতার খবর পড়বেন—কেলেঙ্কারির নয়।
সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিটি নিউইয়র্কবাসী অনুভব করবে—অবশেষে এই শহর তাদের ভালোবাসে, যেমন তারা এই শহরকে ভালোবাসে।
নিউইয়র্ক— একসঙ্গে আমরা ভাড়া স্থির করব!
নিউইয়র্ক— একসঙ্গে আমরা বাস সেবা দ্রুত ও বিনামূল্যে করব!
নিউইয়র্ক— একসঙ্গে আমরা সর্বজনীন শিশুযত্ন নিশ্চিত করব!
আমরা একসঙ্গে যে কথা বলেছি, যে স্বপ্ন দেখেছি—তা এখন বাস্তব কর্মসূচিতে রূপ নেবে।
নিউইয়র্ক, এই ক্ষমতা তোমার। এই শহর তোমারই।
ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ, আমার বন্ধুরা। আজ সূর্য আমাদের শহরের ওপর অস্ত গেছে, কিন্তু ইউজিন ডেবসের মতো, ‘আমি মানবতার জন্য এক নতুন দিনের ভোর দেখতে পাচ্ছি।’
নিউইয়র্কের শ্রমজীবী মানুষকে দীর্ঘদিন ধরে ধনীদের কাছ থেকে শুনতে হয়েছে—ক্ষমতা তাদের হাতে নয়। যে হাত গুদামে বাক্স তুলতে গিয়ে আঘাত পায়, যে হাত বাইকের হ্যান্ডেলে শক্ত হয়ে গেছে, যে হাতে রান্নাঘরের দাগ—সেই হাতগুলোকে কখনো ক্ষমতা ধরতে দেওয়া হয়নি।
তবু গত এক বছরে আপনারা সেই সীমা অতিক্রম করার সাহস দেখিয়েছেন। আজ রাতে, সব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও, আমরা সেই লক্ষ্য অর্জন করেছি। ভবিষ্যৎ এখন আমাদের হাতে।
বন্ধুরা, আমরা একটি রাজনৈতিক রাজবংশের অবসান ঘটিয়েছি।
আমি অ্যান্ড্রু কুওমোর ব্যক্তিগত জীবনের জন্য শুভকামনা জানাই। কিন্তু আজ রাতই তাঁর নাম শেষবারের মতো উচ্চারিত হোক। কারণ যে রাজনীতি অল্প কয়েকজনের জন্য কাজ করে আমরা তার সমাপ্তি চাই।
নিউইয়র্কের বাসিন্দারা আজ রাতে স্পষ্টভাবে বলেছেন—আপনারা পরিবর্তন চান। এমন এক শহর চান যা সবার নাগালে। এমন এক সরকার চান যা তা নিশ্চিত করবে।
আগামী ১ জানুয়ারি আমি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র হিসেবে শপথ নেব। এটি সম্ভব হয়েছে শুধুমাত্র আপনাদের কারণে। তাই প্রথমেই বলতে চাই—ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ সেই নতুন প্রজন্মের নিউইয়র্কবাসীকে, যারা অতীতের প্রতিশ্রুতিকে ভবিষ্যতে বাস্তবে রূপ দিতে চায়। আপনারা দেখিয়েছেন, যখন রাজনীতি জনগণের ভাষায় কথা বলে, তখন নতুন নেতৃত্বের যুগ শুরু হয়।
আমরা আপনাদের জন্য লড়ব, কারণ আমরাও আপনাদেরই একজন। যেমন আমরা স্টেইনওয়েতে বলি—‘আনা মিনকুম ওয়া আলাইকুম’ (আমি তোমাদেরই একজন, তোমাদের সঙ্গেই আছি)।
ধন্যবাদ সেইসব মানুষকে, যাদের কথা এই শহরের রাজনীতি প্রায়ই ভুলে যায়। তারা এই আন্দোলনকে নিজেদের করে নিয়েছেন। আমি বলছি ইয়েমেনি দোকানদার, মেক্সিকান দাদি, সেনেগালের ট্যাক্সিচালক, উজবেকিস্তানের নার্স, ত্রিনিদাদের রাঁধুনি এবং ইথিওপিয়ান খালাদের কথা। হ্যাঁ, আমার প্রিয় খালারা।
কেনসিংটন, মিডউড বা হান্টস পয়েন্টের প্রতিটি নিউইয়র্কবাসীকে বলছি—এই শহর আপনার, এই গণতন্ত্রও আপনার।
এই আন্দোলন ছিল তাদের জন্য যারা নিউইয়র্কে বাসা ভাড়া দিতে পারেন না বলে প্রতিদিন পেনসিলভানিয়া থেকে দুই ঘণ্টা পথ পাড়ি দেন।
এই আন্দোলন ছিল সেই নারীটির জন্যও, যিনি একদিন বাসে করে যাওয়ার সময় আমাকে বলেছিলেন, ‘আমি একসময় নিউইয়র্ককে ভালোবাসতাম। এখন শুধু এখানে থাকি।’
আর ট্যাক্সিচালক রিচার্ডের কথাও বলি। তাঁর সঙ্গে আমি সিটি হলে ১৫ দিনের অনশন করেছিলাম। ভাই, আজ আমরা সিটি হলে আছি।
এই বিজয় সেই এক লাখেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবকদের, যারা এই প্রচারণাকে এক অপ্রতিরোধ্য শক্তিতে রূপ দিয়েছেন।
আপনাদের প্রচেষ্টায় আমরা আবার এমন একটি শহর গড়ব, যেখানে কর্মজীবী মানুষ ভালোবাসতে ও বাঁচতে পারবে। আপনাদের প্রতিটি দরজায় কড়া নাড়া, প্রতিটি স্বাক্ষর, প্রতিটি আলোচনা—সবই আমাদের রাজনীতির হতাশাকে আশায় বদলে দিয়েছে।
গত এক বছরে আমি আপনাদের কাছ থেকে অনেক কিছু চেয়েছি। আর আপনারা প্রতিবার সাড়া দিয়েছেন। তবে আমার এক শেষ অনুরোধ আছে— এই মুহূর্তটিকে অনুভব করুন।
আমরা অনেকদিন ধরে শ্বাস আটকে রেখেছিলাম। ছিল পরাজয়ের আশঙ্কা, বঞ্চনার ভার, অনিশ্চয়তা। আজ আমরা এমন এক শহরের বাতাসে নিঃশ্বাস নিচ্ছি, যে শহরের নতুন জন্ম হচ্ছে।
আমার প্রচারণা দলের প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা। আপনারা বিশ্বাস রেখেছিলেন যখন অন্য কেউ রাখেনি। আপনারা এক নির্বাচনী প্রচারণাকে আন্দোলনে রূপ দিয়েছেন। এখন আপনারা বিশ্রাম নিতে পারেন।
আমার বাবা-মা—আপনারাই আমাকে গড়ে তুলেছেন। আমি গর্বিত আপনাদের সন্তান হতে পেরে। আর আমার অসাধারণ স্ত্রী রমা হায়াতি—এই মুহূর্তে, এবং জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে তোমার পাশে থাকাটাই আমার সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য।
প্রত্যেক নিউইয়র্কবাসীর প্রতি—আপনি আমাকে ভোট দেন বা আমার প্রতিদ্বন্দ্বীকে, কিংবা রাজনীতিতে হতাশ হয়ে ভোট না দেন—আমি কৃতজ্ঞ। আমাকে আপনার আস্থার যোগ্য প্রমাণের সুযোগ দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ। প্রতিদিন সকালে আমি এই শহরটিকে আগের দিনের চেয়ে আরও ভালো করে গড়ে তোলার উদ্দেশ্য নিয়ে জাগব।
অনেকে ভেবেছিলেন আজকের দিনটি কখনো আসবে না। তারা ভয় পেতেন, আমরা কেবল একই রকম ভবিষ্যতের’ ফাঁদে বন্দি থাকব। অনেকে বিশ্বাস হারিয়েছিলেন। ভেবেছিলেন, রাজনীতি আজ এত নিষ্ঠুর হয়ে গেছে যে আশার আলো আর টিকতে পারে না। কিন্তু নিউইয়র্ক আজ সেই ভয়কে জবাব দিয়েছে।
আজ আমরা এক স্পষ্ট কণ্ঠে বলেছি—আশা এখনও বেঁচে আছে। এই আশাতেই ১০ লাখের বেশি মানুষ গির্জা, জিমনেসিয়াম, ও কমিউনিটি সেন্টারে গিয়ে গণতন্ত্রের খাতায় নিজেদের নাম লিখেছেন।
আমরা একা ভোট দিয়েছি। কিন্তু একসাথে আশা বেছে নিয়েছি। আমরা বেছে নিয়েছি আশাকে—স্বৈরাচারের পরিবর্তে, অর্থ ও ক্ষুদ্র চিন্তার পরিবর্তে, হতাশার পরিবর্তে। আমরা জিতেছি, কারণ নিউইয়র্কবাসীরা বিশ্বাস করেছেন—অসম্ভবও সম্ভব করা যায়। আমরা জিতেছি, কারণ আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে রাজনীতি আর আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া কিছু হবে না। এখন আমরা নিজেরাই রাজনীতি করব।
এই মুহূর্তে আমি জওহরলাল নেহরুর কথা স্মরণ করছি, ‘ইতিহাসে এমন মুহূর্ত আসে, যখন আমরা পুরোনোকে পেছনে ফেলে নতুনের দিকে পা বাড়াই, যখন একটি যুগ শেষ হয় এবং দীর্ঘদিন নীরব থাকা জাতির আত্মা কথা বলতে শুরু করে।’ আজ আমরা সেই নতুন যুগে প্রবেশ করেছি।
এখন সময় এসেছে স্পষ্টভাবে বলার—এই নতুন যুগ কাদের জন্য এবং কী আনবে। এটি হবে এমন এক যুগ, যখন নাগরিকরা নেতাদের কাছ থেকে সাহসী দৃষ্টি আশা করবে—অজুহাত নয়। সেই দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রবিন্দু হবে জীবিকা ও জীবন-যাত্রার ব্যয়ের সংকট মোকাবিলায় ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী কর্মসূচি। আমরা ২০ লাখেরও বেশি ভাড়াটিয়ার জন্য ভাড়া স্থগিত করব, শহরজুড়ে বাস সেবা বিনামূল্যে ও দ্রুত করব এবং সর্বজনীন শিশুযত্ন ব্যবস্থা চালু করব।
এই নতুন যুগ হবে ধারাবাহিক উন্নতির যুগ। আমরা হাজারো নতুন শিক্ষক নিয়োগ করব, প্রশাসনের অপচয় বন্ধ করব এবং দীর্ঘদিন অন্ধকার থাকা সরকারি আবাসনের করিডোরগুলোতে আবার আলো জ্বালাব।
নিরাপত্তা ও ন্যায় একসাথে চলবে। আমরা পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে কাজ করব অপরাধ কমাতে। মানসিক স্বাস্থ্য ও গৃহহীনতার সংকট মোকাবিলায় ‘কমিউনিটি সেফটি বিভাগ’ গঠন করব। দক্ষতা হবে সরকারের নতুন মানদণ্ড।
আমরা ঘৃণা ও বিভাজনের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করব। এই রাজনৈতিক অন্ধকারে নিউইয়র্ক হবে আলোর প্রতীক। আমরা বিশ্বাস করি—যাদের আমরা ভালোবাসি, তাদের পাশে দাঁড়ানোই মানবতার পরিচয়। আপনি অভিবাসী হোন, হোন রুপান্তরকামী সম্প্রদায়ের সদস্য, ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে চাকরি হারানো কোনো কৃষ্ণাঙ্গ নারী বা পণ্যের দাম কমার অপেক্ষায় থাকা একাকী মা, আপনি যেই হন, আপনার সংগ্রামই আমাদের সংগ্রাম।
আমরা এমন একটি সিটি হল গড়ব, যা ইহুদি নিউইয়র্কবাসীদের পাশে দৃঢ়ভাবে দাঁড়াবে। ইহুদি-বিরোধী ঘৃণার বিরুদ্ধে আপসহীন থাকবে। একইসঙ্গে, শহরের ১০ লাখেরও বেশি মুসলমানের কাছে এই বার্তা পৌঁছে যাবে—তারা শুধু এই শহরের পাঁচটি বরোতেই নয়, বরং ক্ষমতার কেন্দ্রেও নিজেদের অন্তর্ভুক্ত মনে করবেন।
নিউইয়র্ক আর সেই শহর হবে না যেখানে ইসলামবিদ্বেষকে পুঁজি করে কেউ নির্বাচনে জেতা যায়। এই নতুন যুগে দক্ষতা ও সহমর্মিতা একসঙ্গে চলবে। আমরা প্রমাণ করব—এমন কোনো সমস্যা নেই যা সরকার সমাধান করতে পারে না এবং অগ্রাহ্য করার মতো ছোট কোনো উদ্বেগ নেই।
বহু বছর ধরে সিটি হল কেবল তাদেরই সাহায্য করেছে, যারা তাদের কিছু ফিরিয়ে দিতে পারে। কিন্তু আগামী ১ জানুয়ারি থেকে আমরা এমন একটি সরকার গঠন করব, যা সবার সেবা করবে।
আমি জানি, অনেকেই আমাদের বার্তা শুনেছেন ভুলভাবে। কোটি কোটি ডলার খরচ করা হয়েছে বাস্তবতাকে বিকৃত করতে এবং মানুষকে বোঝাতে যে আমাদের এই নতুন যুগ তাদের জন্য হুমকি। ধনীদের একাংশ সবসময়ই চেষ্টা করেছে ঘণ্টায় ৩০ ডলার আয়ের মানুষকে বিশ্বাস করাতে যে তাদের শত্রু হলো ঘণ্টায় ২০ ডলার আয় করা শ্রমিক।
তারা চায়, মানুষ যেন নিজেদের মধ্যেই লড়াইয়ে লিপ্ত থাকে, যাতে পুরনো অচল ব্যবস্থাকে বদলের কাজ থেকে আমরা বিভ্রান্ত হয়ে যাই। কিন্তু আমরা আর তাদের সেই খেলার নিয়ম মানব না। এখন থেকে তাদের আমাদের নিয়মে চলতে হবে।
আমরা একসঙ্গে বদলের এক নতুন যুগ সূচনা করব। যদি আমরা এই সাহসী পথকে বেছে নিই, তাহলে একনায়কতন্ত্র ও ধনিকশক্তির জবাব আমরা শক্তি দিয়ে দিতে পারব—নমনীয়তা দিয়ে নয়।
যে শহর ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্ম দিয়েছে, সেই শহর পারে তাকে পরাজিত করতে। আর কোনো স্বৈরশাসককে ভয় দেখানোর শ্রেষ্ঠ উপায় হলো, তাঁকে ক্ষমতার সুযোগ দিয়েছে যে বাস্তবতা, সেই বাস্তবতা ভেঙে দেওয়া।
এভাবেই আমরা শুধু ট্রাম্পকেই নয়, ভবিষ্যতের ট্রাম্পদেরও ঠেকাব। তাই, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প—যেহেতু জানি আপনি শুনছেন—আমার কথাগুলো মনে রাখুন: ভলিউম বাড়ান।
আমরা খারাপ মালিকদের জবাবদিহির মুখে আনব। কারণ আমাদের শহরের ট্রাম্পদের মতো অনেকেই ভাড়াটিয়াদের শোষণ করে আরাম করছে। আমরা দুর্নীতির সেই সংস্কৃতি শেষ করব, যা ধনীদের কর ফাঁকি দিয়ে সুবিধা নিতে দিয়েছে। আমরা শ্রমিক সংগঠনের পাশে দাঁড়াব এবং শ্রম অধিকার বাড়াব। কারণ আমরা জানি—যখন শ্রমিকদের অধিকার দৃঢ় হয়, তখন তাদের শোষণকারীরা দুর্বল হয়ে যায়।
নিউইয়র্ক অভিবাসীদের শহর থাকবে। হবে অভিবাসীদের গড়া, অভিবাসীদের শক্তিতে চলা এবং আজ থেকে অভিবাসীর নেতৃত্বে পরিচালিত শহর।
তাই আমাকে শুনুন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। আমাদের কারও কাছে পৌঁছাতে হলে আপনাকে আমাদের সবার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। মাত্র ৫৮ দিনের মধ্যে আমরা সিটি হলে প্রবেশ করব। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে বড়, আর আমরা তা পূরণ করব।
এক মহান নিউইয়র্কার একবার বলেছিলেন, ‘আপনি যদি কবিতায় প্রচারণা চালান, তাহলে গদ্যে শাসন করবেন।’ যদি সেটিই সত্য হয়, তবে আমাদের সেই গদ্যেও যেন ছন্দ থাকে। আমরা যেন গড়ি সবার জন্য উজ্জ্বল এক শহর।
আমাদের এখন নতুন পথ রচনার সময় এসেছে। সেই সাহস নিয়ে আমরা আজ পর্যন্ত চলেছি। প্রচলিত ধারণা বলবে আমি আদর্শ প্রার্থী নই। আমি তরুণ, মুসলিম, গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী। সবচেয়ে বড় কথা—এই পরিচয়ের জন্য আমি কখনো ক্ষমা চাইব না।
আজকের দিনটি আমাদের বলছে—প্রথাগত চিন্তাধারাই আমাদের পিছিয়ে রেখেছে। আমরা অতিরিক্ত সতর্কতার নামে অনেক ত্যাগ করেছি। শ্রমজীবী মানুষের অনেকেই আর নিজেদের দলকে চিনতে পারেন না। কেউ কেউ উত্তর খুঁজতে ডানপন্থার দিকে ঝুঁকেছেন।
আমরা গড়পড়তা অবস্থাকে পেছনে ফেলে যাব। ডেমোক্র্যাটরা সাহসী হতে পারে, এর প্রমান আর ইতিহাসের বইয়ে খুঁজতে হবে না। আমাদের বর্তমান সেই কথা বলবে।
প্রতিটি ভাড়াটিয়া তা অনুভব করবে, যখন প্রতি মাসের প্রথম দিনে সে জানবে—তার ভাড়া আগের মাসের মতোই আছে। প্রতিটি প্রবীণ তা অনুভব করবে, যখন তিনি তাঁর নিজ বাড়িতে থাকতে পারবেন। তাঁর নাতি-নাতনিরা তাঁর কাছেই থাকবে। কারণ শিশু যত্নের খরচ মেটাতে গিয়ে তাদের আলাদা থাকতে পারবে না।
প্রতিটি একক মা তা অনুভব করবে, যখন তাঁর যাত্রা নিরাপদ হবে, বাস দ্রুত চলবে আর সময়মতো কাজে পৌঁছাতে তাড়াহুড়া করে বাচ্চাকে স্কুলে দিয়ে আসতে হবে না। নিউইয়র্কবাসীরা সকালে যখন পত্রিকা খুলবেন, তারা সফলতার খবর পড়বেন—কেলেঙ্কারির নয়।
সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিটি নিউইয়র্কবাসী অনুভব করবে—অবশেষে এই শহর তাদের ভালোবাসে, যেমন তারা এই শহরকে ভালোবাসে।
নিউইয়র্ক— একসঙ্গে আমরা ভাড়া স্থির করব!
নিউইয়র্ক— একসঙ্গে আমরা বাস সেবা দ্রুত ও বিনামূল্যে করব!
নিউইয়র্ক— একসঙ্গে আমরা সর্বজনীন শিশুযত্ন নিশ্চিত করব!
আমরা একসঙ্গে যে কথা বলেছি, যে স্বপ্ন দেখেছি—তা এখন বাস্তব কর্মসূচিতে রূপ নেবে।
নিউইয়র্ক, এই ক্ষমতা তোমার। এই শহর তোমারই।
ধন্যবাদ।
.png)

গত ২৮ অক্টোবর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। এর পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ তৃতীয় এক দেশকে দোষারোপ করেন—যে দেশ আলোচনায় অংশই নেয়নি। দেশটি হলো ভারত।
২ ঘণ্টা আগে
মঙ্গলবার রাতে কুইন্সের অ্যাস্টোরিয়ার ‘মোকা অ্যান্ড কো’ নামের এক ক্যাফেতে বসার জায়গা ছিল না। হালাল রেস্টুরেন্ট ও ইয়েমেনি ক্যাফেতে ঘেরা ওই এলাকায় শত শত মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। মুসলিম ডেমোক্র্যাটিক ক্লাব অব নিউইয়র্ক ও আরও কয়েকটি মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় সংগঠন সেখানে নির্বাচনী ফলাফল দেখার আয়োজন করেছিল।
৮ ঘণ্টা আগে
নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি নানা দিক থেকে অনন্য। তিনি হবেন ১৮৯২ সালের পর শহরের সর্বকনিষ্ঠ মেয়র, প্রথম মুসলিম মেয়র এবং আফ্রিকায় জন্ম নেওয়া প্রথম ব্যক্তি যিনি এই পদে আসীন হবেন।
৮ ঘণ্টা আগে
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদকালে যুক্তরাষ্ট্রের অনুষ্ঠিত প্রথম বড় তিনটি নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটরা বিশাল জয় পেয়েছে। জানুয়ারি মাসে ট্রাম্পের অভিষেকের পর এই প্রথম বড় আকারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
১১ ঘণ্টা আগে