
.png)

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি। মামদানি চলতি মাসের শুরুর দিকে মেয়র নির্বাচিত হন। মামদানি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর এই প্রথম এই দুই রাজনীতিকের মধ্যে মুখোমুখি বৈঠক হতে যাচ্ছে।

যে মামদানিকে আটকাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন ট্রাম্প এবার তিনি নিজেই সেই মামদানির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা জানালেন। ২১ নভেম্বর, শুক্রবার মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও দপ্তর হোয়াইট হাউসের ওভাল অফিসে এই সাক্ষাৎ ঘটবে।

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির বিজয়ে সারাবিশ্বের মুক্তিকামী মানুষের উল্লসিত হওয়াটাই স্বাভাবিক। এই জয় চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছে, আজকের জনতুষ্টিবাদী ডানপন্থার (পপুলিস্ট রাইটউইং) হাতেই শুধু জনতাকে সংঘবদ্ধ করার কিংবা নতুন ভোটারদের আকর্ষণ করার একচেটিয়া ক্ষমতা নেই।

নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানি সহজ জয় পাওয়ার পর রিপাবলিকান নেতারা তার বিরুদ্ধে নতুন অভিযানে নেমেছেন। শহরের প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মেয়র হিসেবে তার বিজয়কে ঘিরে ওয়াশিংটনের রিপাবলিকানদের একাংশ ঘোষণা দিয়েছে, তারা তাকে দায়িত্ব গ্রহণে বাধা দেবে।

নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি এক সকালে নিজের অ্যাপার্টমেন্টের মেঝেতে তোয়ালে বিছিয়ে পানি মুছছিলেন। মাসে ২ হাজার ৩০০ ডলারের ভাড়া দেওয়া সেই ছোট্ট এক বেডরুমের ফ্ল্যাটে সিঙ্ক লিক করছিল। এ ধরনের ঝামেলা তাঁর জীবনের নতুন নয়।

নিউ ইয়র্কের জোহরান মামদানি সম্প্রতি মেয়র নির্বাচনে জয়ী হয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। কিন্তু তাঁর সাফল্য কেবল রাজনীতির নয়—এটি এক দারুণ যোগাযোগ ও সম্পর্কের গল্প। তিনি প্রচারণা চালিয়েছেন ভিন্ন উপায়ে।

মামদানির জয়ে কেন উল্লাসিত বাঙালি অভিবাসীরা

ইউএস প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নানবিধ হুমকি ধামকির পরও ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক বিজয়কে মার্কিন রাজনীতিতে এক নতুন দিগন্তের হাতছানি বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কেন তারা এমনটি মনে করছেন?

নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক বিজয়কে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা দেখছেন গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের প্রতীক হিসেবে। মামদানির বিজয় কেবল নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের জন্যই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক রাজনীতির জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ।

ব্রিটেন থেকে ৮ ঘণ্টার ফ্লাইট শেষে বুধবার ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছান হামজা ইউসুফ। তিনি পশ্চিমা বিশ্বের প্রথম মুসলিম রাষ্ট্রনেতা। ওয়াশিংটনে মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যদের তিনি শুভেচ্ছা জানান, ‘জোহরান মুবারাক’ বলে।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানির স্ত্রী রামা সাওয়াফ দুয়াজি ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ফার্স্ট লেডির পদে অধিষ্ঠিত হবেন। ২৮ বছর বয়সী এই সিরিয়ান-আমেরিকান শিল্পী, ইলাস্ট্রেটর ও সিরামিক নির্মাতা ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

নিউইয়র্কের মেয়র পদে জিতেছেন জোহরান মামদানি। এর পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে চায়ের টং, সবখানেই তাঁকে নিয়ে কথা হচ্ছে। আধুনিক সময়ে নিউইয়র্কের সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র হওয়ার পাশাপাশি মামদানি প্রথম মুসলমান ও দক্ষিণ এশীয় মেয়রও বটে।

মামদানির সমাজতান্ত্রিক নীতি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বজুড়ে আলোচনার জন্ম দেয়। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন—ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিজম আসলে কী, আর কী নয়। নির্বাচনের আগে ট্রাম্প তাঁকে ‘কমিউনিস্ট’ বলে আখ্যায়িত করেন। জুন মাসে এনবিসির মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে মামদানি সরাসরি বলেন, ‘আমি কমিউনিস্ট নই।’

নির্বাচনে জয়ের পর বুধবার নিউইয়র্ক সিটির নবনির্বাচিত মেয়র জোহরান মামদানি তাঁর প্রশাসনের রূপরেখা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আগামী ১ জানুয়ারি দায়িত্ব গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গেই কাজ শুরু করবেন।

নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে সবচেয়ে কমবয়সী ফার্স্ট লেডি হতে যাচ্ছেন ২৮ বছর বয়সী রামা দুয়াজি। মঙ্গলবার রাতে তাঁর স্বামী জোহরান মামদানি মেয়র নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তিনি আলোচনার কেন্দ্রে চলে আসেন।

যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম নগরী নিউইয়র্ক সিটির রাজনীতিতে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন ঘটেছে। ৩৪ বছর বয়সী গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী জোহরান মামদানি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সাবেক ডেমোক্র্যাট গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো এবং রিপাবলিকান কার্টিস স্লিওয়াকে পরাজিত করেছেন।