leadT1ad

পাকিস্তান কেন তালেবান ইস্যুতে ভারতকে জড়িয়ে ফেলছে

প্রকাশ : ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৯: ৫১
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ তারিখে কাতারের দোহায় যুদ্ধবিরতি স্বাক্ষরের পর আফগান প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব মুজাহিদ (বাম দিক থেকে দ্বিতীয়) এবং পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ করমর্দন করছেন। ছবি: রয়টার্স

গত ২৮ অক্টোবর পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি বাড়ানোর বিষয়ে আলোচনায় অচলাবস্থা দেখা দেয়। এর পর পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ তৃতীয় এক দেশকে দোষারোপ করেন—যে দেশ আলোচনায় অংশই নেয়নি। দেশটি হলো ভারত।

এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে আসিফ দাবি করেন, ভারত আফগান তালেবান নেতৃত্বের ভেতরে ‘প্রভাব বিস্তার’ করেছে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, এ কারণেই পাকিস্তান-আফগানিস্তান সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা বেড়েছে।

তিনি ইস্তাম্বুলে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেওয়া তালেবান প্রতিনিধিদের প্রশংসা করেন। তবে বলেন, ‘কাবুলে যারা সুতো টানছে, তারা আসলে দিল্লির নিয়ন্ত্রণে। ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ চায়, আর সে লক্ষ্যেই তারা কাবুলকে ব্যবহার করছে।’

আসিফ তাঁর অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করেননি। তবুও, তাঁর বক্তব্য পাকিস্তানের ক্রমবর্ধমান সেই প্রচেষ্টাকে প্রকাশ করে, যেখানে আফগানিস্তানের সঙ্গে তাদের টানাপোড়েনকে ভারত-তালেবান সম্পর্কের ফল হিসেবে দেখানো হচ্ছে।

চলতি মাসের শুরুতে সীমান্তে সংঘর্ষের সময়ও আসিফ বলেছিলেন, ‘তালেবান এখন ভারতের কোল ঘেঁষে বসেছে।’ ইসলামাবাদ দাবি করে আসছে—তালেবান পাকিস্তানবিরোধী তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি)-কে আফগান ভূখণ্ডে কার্যক্রম চালাতে দিচ্ছে এবং ভারতের সহায়তায় এই গোষ্ঠী পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। তবে এসব দাবিরও কোনো প্রকাশ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি।

অন্যদিকে, তালেবান নেতৃত্ব স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে যে ভারত পাকিস্তান-আফগান উত্তেজনায় কোনো ভূমিকা রাখছে। তারা টিটিপির কর্মকাণ্ডের দায়ও অস্বীকার করেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানি নেতাদের এই বক্তব্য ইসলামাবাদের উদ্বেগকে প্রকাশ করে—কারণ কাবুল ও দিল্লির মধ্যে সম্পর্ক ক্রমশ ঘনিষ্ঠ হচ্ছে। পাকিস্তানের জন্য, পশ্চিমে আফগানিস্তান ও পূর্বে ভারত—এই দুই প্রতিবেশীর ঘনিষ্ঠতা কৌশলগতভাবে উদ্বেগজনক।

আগামী বৃহস্পতিবার ইস্তাম্বুলে কাতার ও তুরস্ক-নেতৃত্বাধীন শান্তি আলোচনার পরবর্তী পর্ব বসবে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সেখানে ভারত এখন ‘অদৃশ্য কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ উপস্থিতি’—অর্থাৎ আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে নেই, কিন্তু প্রভাব রাখছে।

আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা

অক্টোবরের শেষ দিকে উত্তর আফগানিস্তানে ৬.৩ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রথম সাহায্য পাঠানো দেশগুলোর একটি ছিল ভারত। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ফোনে তালেবান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সঙ্গে কথা বলেন এবং ১৫ টন খাদ্যসামগ্রী পাঠান বালখ ও সামাঙ্গান প্রদেশে। তিনি জানান, শিগগিরই চিকিৎসা সামগ্রীও পাঠানো হবে।

এই সহায়তা আসে মুত্তাকির ভারতের ছয় দিনের সফরের ঠিক পরেই। ২০২১ সালে তালেবান দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় ফেরার পর এটি ছিল ভারতের উদ্দেশে তালেবান নেতার প্রথম সফর। সফরটি দিল্লি ও কাবুলের মধ্যে পুনঃসংযোগের নতুন অধ্যায় উন্মোচন করে। গত মাসেই ভারত কাবুলে তার দূতাবাস পুনরায় খুলে দিয়েছে, যা এই সম্পর্কের আরেক বড় পদক্ষেপ।

তবে এখনকার আঞ্চলিক পরিস্থিতি চার বছর আগের থেকে একেবারে আলাদা। ২০২১ সালে তালেবান ক্ষমতায় ফেরার সময় ভারত আফগানিস্তানে তার বেশিরভাগ কূটনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করেছিল। তখন কাবুলে পাকিস্তানের প্রভাব অনেক বেশি ছিল বলে মনে করা হতো।

দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান তালেবানের প্রধান মিত্র হিসেবে কাজ করেছে। বিপরীতে, ভারত তালেবানকে পাকিস্তানের হাতের ক্রীড়নক হিসেবে দেখত। ২০০১ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তালেবান ক্ষমতার বাইরে থাকাকালে ভারত অভিযোগ করেছিল—তালেবান তাদের কূটনৈতিক স্থাপনাগুলোয় একাধিকবার হামলা চালিয়েছে।

পাকিস্তানের তথাকথিত ‘কৌশলগত গভীরতা’ নীতিও এই ধারণার ওপর প্রতিষ্ঠিত—যে আফগানিস্তানে প্রভাব ধরে রেখে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের প্রভাবকে দুর্বল করা যায়।

কিন্তু ২০২১ সালের পর থেকে তালেবান ভারতের প্রতি তুলনামূলকভাবে নরম ও বাস্তববাদী অবস্থান নিচ্ছে।

ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পরিষদের সাবেক সদস্য সি রাজা মোহন ফরেন পলিসি পত্রিকায় লিখেছেন—২০২১ সালের পর থেকে কাবুলের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ ‘সতর্ক, বাস্তববাদী ও সচেতনভাবে নীরব।’

এই পরিবর্তন ইসলামাবাদকে অস্থির করে তুলেছে। কারণ এখন পাকিস্তানকে দুদিকের সীমান্তেই নিরাপত্তা হুমকির মুখোমুখি হতে হচ্ছে।

এপ্রিল মাসে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পাহালগামে এক হামলায় ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এ হামলার জন্য পাকিস্তানভিত্তিক গোষ্ঠীগুলোকে দায়ী করে। দুই সপ্তাহ পর ভারতের পাল্টা পদক্ষেপে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বেড়ে যায় এবং মে মাসে চার দিনের সংঘর্ষ হয়।

যুদ্ধবিরতির পাঁচ দিন পর জয়শঙ্কর আবার মুত্তাকিকে ফোন করে হামলার নিন্দা জানানোর জন্য ধন্যবাদ দেন এবং আফগান উন্নয়নে ভারতের সহায়তা পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন, ‘আফগান জনগণের সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যগত বন্ধুত্ব এবং তাদের উন্নয়ন চাহিদার প্রতি আমাদের অব্যাহত সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছি।’

মে মাসে ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষের পরপরই পাকিস্তান আফগানিস্তানের সঙ্গেও সপ্তাহব্যাপী লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে—যখন মুত্তাকি তখনও ভারতে সফরে ছিলেন।

এই সংঘর্ষ পরবর্তীতে কাতার ও তুরস্ক-নেতৃত্বাধীন আলোচনার মাধ্যমে থামে। দোহা ও ইস্তাম্বুলে দুই দফা বৈঠকের পর একটি যুদ্ধবিরতি হয়। তবে শান্তি এখনো খুবই ভঙ্গুর।

গভীর উদ্বেগ

কিছু বিশ্লেষকের মতে, পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উদ্বেগ মূলত আফগানিস্তান সংক্রান্ত নতুন কোনো ঘটনা নয়, বরং দীর্ঘদিনের কৌশলগত দুশ্চিন্তার প্রতিফলন।

ইসলামাবাদের ইনস্টিটিউট অব স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের আমিনা খান বলেন, পাকিস্তান আশা করেছিল যে তালেবান ভারতের জন্য কোনো ‘শূন্যতা বা সুযোগ’ তৈরি করবে না। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।

তিনি উল্লেখ করেন, আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মুতাক্কির সাম্প্রতিক ভারত সফরের পর আফগান সরকার ও ভারতীয় কর্মকর্তাদের কঠোর বক্তব্য পাকিস্তানের উদ্বেগ আরও বাড়িয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধির জয়সওয়াল গত মাসে বলেন, পাকিস্তান-আফগানিস্তান সীমান্ত পরিস্থিতি ভারত ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে, তবে পাকিস্তানের ‘অভ্যন্তরীণ ব্যর্থতার দায় প্রতিবেশীদের ওপর চাপানো’ তার পুরনো অভ্যাস।

তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তান নিজের ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব প্রয়োগ করায় পাকিস্তান ক্ষুব্ধ। ভারত আফগানিস্তানের সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা ও স্বাধীনতার প্রতি সম্পূর্ণ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

আমিনা খান মনে করেন, শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের উচিত আফগানিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে অন্য দেশের প্রভাব থেকে আলাদা করে দেখা।

তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘পাকিস্তানের আফগানিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক আলাদাভাবে দেখা উচিত। একইভাবে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ককেও আফগান ইস্যুর সঙ্গে না মেলানোই শ্রেয়।’

বিপরীত বয়ান

দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তান অভিযোগ করে আসছে যে ভারত তাদের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশ বেলুচিস্তানে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনকে উসকে দিচ্ছে। বেলুচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) ও বেলুচ লিবারেশন ফ্রন্ট (বিএলএফ) নামের সংগঠনগুলো সেখানে বিচ্ছিন্নতার জন্য লড়ছে।

২০১৬ সালের মার্চে পাকিস্তান বেলুচিস্তান থেকে ভারতের সাবেক নৌ কর্মকর্তা কুলভূষণ যাদবকে গ্রেপ্তারের ঘটনাকে ভারতের হস্তক্ষেপের প্রমাণ হিসেবে দেখায়। তবে ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করে এবং একে ভিত্তিহীন বলে জানায়।

পাকিস্তান সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সহিংসতা বৃদ্ধির জন্যও আফগান মাটি থেকে পরিচালিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোকেই দায়ী করছে। বিশেষ করে, ইসলামাবাদ অভিযোগ করছে যে তালেবান আফগান ভূখণ্ডে পাকিস্তান তালেবান (টিটিপি)-কে আশ্রয় দিচ্ছে। ২০০৭ সালে গঠিত এই সংগঠনটি আফগান তালেবান থেকে আলাদা হলেও তাদের আদর্শিক মিল রয়েছে।

এ বছর পাকিস্তানের সরকারি বক্তব্যে নতুন প্রবণতা দেখা গেছে। সরকার বলছে, বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদী ও টিটিপি— উভয়ই ভারতের পৃষ্ঠপোষকতাপ্রাপ্ত সংগঠন। বিশ্লেষকদের মতে, এই বক্তব্যের উদ্দেশ্য হলো ভিন্ন ভিন্ন হুমকিকে একটি সাধারণ বহিঃশত্রুর সঙ্গে যুক্ত করা।

পাকিস্তানের সাবেক কূটনীতিক আসিফ দুররানি আল জাজিরাকে বলেন, বেলুচ গোষ্ঠীর নেতারা ‘গর্বের সঙ্গে’ ভারতের সহায়তার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি আরও দাবি করেন, ২০০১ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ভারত মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে টিটিপি-কে সহায়তা করেছে। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগের কোনো প্রকাশ্য প্রমাণ উপস্থাপন করেনি।

দুররানির মতে, আফগান তালেবানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক উন্নত হওয়ায় ভারত এখন আফগানিস্তানে ‘আরও সক্রিয় ভূমিকা’ নিতে পারছে। তিনি বলেন, ‘ভারত তালেবানকে শর্ত আরোপ করছে না। বরং এটি পারস্পরিক সমঝোতার বিষয়—ভারত সাহায্য দেবে, আর তালেবান কিছু বিষয় উপেক্ষা করবে।’

কৌশলগত সন্দেহ

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের বিশ্লেষক ইব্রাহিম বাহিস বলেন, পাকিস্তানের সামরিক নেতৃত্ব আফগানিস্তানকে সাধারণত ভারতের দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখে।

তিনি আল জাজিরাকে জানান, ‘পাকিস্তানের নিরাপত্তা নীতিনির্ধারকেরা আফগানিস্তানকে সরাসরি অস্তিত্বের হুমকি মনে করেন না। কিন্তু ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের হুমকির প্রেক্ষাপটে আফগানিস্তান একটি গুরুতর উদ্বেগে পরিণত হয়।’

বাহিস আরও বলেন, পাকিস্তানের পক্ষে ভারতের সম্পৃক্ততা প্রমাণ করা কঠিন, বিশেষ করে যখন তারা একসঙ্গে তালেবান সংশ্লিষ্ট টিটিপি এবং ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির বেলুচ বিচ্ছিন্নতাবাদীদের পেছনে ভারতের ভূমিকার অভিযোগ তোলে।

তিনি বলেন, ‘টিটিপি-র সঙ্গে আফগান তালেবানের আদর্শিক, সামাজিক ও ভাষাগত সম্পর্ক আছে। কিন্তু বেলুচ গোষ্ঠীগুলো সম্পূর্ণ বিপরীত ধারায়—তারা ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তাধারায় বিশ্বাসী। তাই ভারত ও তালেবান একত্রে এই দুই ভিন্ন গোষ্ঠীকে সমর্থন করছে—এটি বিশ্বাসযোগ্য ও সুসংগত বর্ণনা নয়।’

তবুও ইসলামাবাদ কাবুল ও নয়াদিল্লির সঙ্গে সম্পর্ককে পারস্পরিক হুমকি হিসেবে বিবেচনা করে।

আমিনা খান সতর্ক করে বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কাবুল ও নয়াদিল্লির কিছু বিবৃতি পাকিস্তানকে সন্ত্রাসবাদে পৃষ্ঠপোষক হিসেবে অভিযুক্ত করেছে, যা তিনি ‘সুবিধার বিয়ে’ বা অস্থায়ী স্বার্থের মিলন হিসেবে বর্ণনা করেছেন।

সংঘাতের আশঙ্কা

যদিও মে মাসের যুদ্ধবিরতির পর থেকে পাকিস্তান-ভারত পূর্ব সীমান্ত তুলনামূলক শান্ত, তবুও সম্পর্কের উত্তেজনা রয়ে গেছে। দুই দেশই যুদ্ধক্ষেত্রে সাফল্যের দাবি ও বিমান ক্ষতির বিপরীত বক্তব্য দিয়েছে। উভয় পক্ষই সামরিক ভাষণ ও প্রস্তুতি জোরদার করেছে।

ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং অক্টোবর মাসে সতর্ক করে বলেন, সির ক্রিক এলাকায় কোনো আগ্রাসন ঘটলে তার ‘ইতিহাস ও ভৌগোলিক বাস্তবতাকে পাল্টে দেওয়ার মতো জবাব’ দেওয়া হবে।

সির ক্রিক হচ্ছে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি উপকূলীয় জলাভূমি, যা ভারতের গুজরাটের রান অব কচ্ছ ও পাকিস্তানের সীমান্তের মধ্যে অবস্থিত। এই অঞ্চলটি দুই দেশের মধ্যেই দীর্ঘদিন ধরে বিতর্কিত।

২৭ অক্টোবর সিং সৈন্যদের উদ্দেশে বলেন, মে মাসের সংঘাত থেকে শিক্ষা নিয়ে ভারতকে ‘যুদ্ধসম্ভব পরিস্থিতির জন্য’ সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। এর আগে ১৮ অক্টোবর পাকিস্তানের সেনাপ্রধান জেনারেল আসিম মুনির সামরিক একাডেমির সমাপনী অনুষ্ঠানে পাল্টা হুঁশিয়ারি দেন।

তিনি বলেন, ‘যে কোনো নতুন সংঘাতের দায়ভার ভারতের ওপর বর্তাবে। এমন কোনো যুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানের প্রতিক্রিয়া আগ্রাসনকারীদের প্রত্যাশার অনেক বাইরে হবে।’

বর্তমানে দুই দেশই আরব সাগরে নৌবাহিনী মোতায়েন করেছে এবং বড় আকারের সামরিক মহড়া চালাচ্ছে।

পাকিস্তানের সাবেক কূটনীতিক সিমা ইলাহী বালুচ বলেন, আফগানিস্তানের সঙ্গে ভারতের নতুন করে সম্পর্ক পুনর্গঠন পাকিস্তানের উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

তিনি আল জাজিরাকে বলেন, ‘পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে বাকযুদ্ধ আরও তীব্র হবে। ভবিষ্যতে কোনো সামরিক সংঘর্ষ ঘটার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না।’

সূত্র: আল-জাজিরা

Ad 300x250

সম্পর্কিত