স্ট্রিম ডেস্ক
ইসরায়েলি অবোরধ ভাঙতে গাজা অভিমুখী ‘কনশানস’ সহ ১১টি জাহাজ আগামীকাল বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর নাগাদ ‘রেড জোন’ তথা বিপজ্জনক এলাকায় পৌঁছাতে পারে। আলোকচিত্রী শহীদুল আলম আজ মঙ্গলবার তার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন। শহীদুল আলম নিজেও কনশানস জাহাজে আছেন।
রেড জোন বলতে শহীদুল আলম বুঝিয়েছেন, যেখান থেকে ইসরায়েলি সেনারা সম্প্রতি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের ৪০টির বেশি জাহাজ আটকে অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। শহীদুলদের বহরে মোট ১১টি জাহাজ আছে।
ফেসবুক পোস্টে শহীদুল আলম লিখেছেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছি। কারণ ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস’ নৌবহরে থাকা ছোট ও ধীরগতির নৌযানগুলো যেন পেছনে পড়ে না যায়, তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এসব জাহাজও এফএফসির (ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন) অংশ।’
শহীদুল জানান, ‘ধীরগতির নৌযানগুলো (থাউজেন্ড ম্যাডলিনস) এখন আমাদের সমকাতারে এসেছে। আমরা এখনও “রেড জোন” থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে আছি।’
আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলা এবং এর জবাবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি।
শহীদুল লিখেছেন, ‘আজ ৭ অক্টোবর ২০২৫। ২০২৩ সালের এদিন হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলের ওপর হামলা চালায়, যাতে ১ হাজার ১৯৫ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিক নিহত হন। এর মধ্যে ৮১৫ জনসাধারণ মানুষ। ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্তি দিতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ২৫১ জনকে জিম্মিও করেছিল হামাস।
‘জবাবে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি মানুষ।‘
শহীদুল আরও জানান, ‘দ্য ল্যানসেটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জুন নাগাদ আঘাতের কারণে মৃত্যু হওয়া মানুষের সংখ্যাটা কম করে হিসাব করা হয়েছে। পরোক্ষ কারণে মৃত্যু হওয়া মানুষের হিসাব করলে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।’
আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি)’ শিরোনামে এই যাত্রার আয়োজন করেছে। এফএফসি ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে যাওয়া বৈশ্বিক প্রচেষ্টা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার’ যৌথ আয়োজক জোটগুলোর একটি। কনশানস সবার শেষে (৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালি থেকে রওনা করেছিল।
গত ২-৩ অক্টোবর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’কেও থামিয়ে দেওয়া হয় এবং ৪০টির বেশি জাহাজসহ প্রায় ৫০০ অ্যাকটিভিস্টকে আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। সে প্রসঙ্গ টেনে শহিদুল লেখেন, ‘তবুও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কনশানস জাহাজে মূলত সাংবাদিক ও চিকিৎসকেরা আছেন। তাঁরা সেই দুই পেশাজীবী গাজায় যাঁদের ইসরায়েল সুনির্দিষ্টভাবে টার্গেট করে হত্যা করছে।’
সাংবাদিকদের বহন করায় কনশাসনসকে ‘মিডিয়া ফ্লোটিলা’ও বলা হচ্ছে। জাহাজটিতে মোট ৯৬ জন অ্যাকটিভিস্ট আছেন, যার মধ্যে ৮২ জনই মিডিয়া ও চিকিৎসা পেশাজীবী। এদের মধ্যে আবার মিডিয়া ব্যক্তিত্বই বেশি।
এফএফসি-র স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য হুয়াইদা আরাফ বলেন, এটি এই ঐতিহাসিক বহরের সর্বশেষ ও সবচেয়ে বড় নৌযান। এর নাম শুধু ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধের প্রতীক নয়, বরং বিশ্বের বিবেককে জাগ্রত করারও আহ্বান।
সাম্প্রতিক এক ভিডিও বার্তায় শহীদুল তার দৃঢ় সংকল্পের কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, এই মিশন কেবল সাহায্য পৌঁছানো নয় বরং বিশ্বজনীন সংহতির প্রতীক। তিনি আরও বলেন, ‘কী হবে জানি না, তবে আমরা গাজার পথে আছি।’
তাঁর লক্ষ্য গাজার ওপর চলমান ‘তথ্য অবরোধ’ ভাঙা। এজন্য তিনি সরাসরি সাংবাদিকতা, ধ্বংসযজ্ঞের ছবি তোলা ও তথ্য নথিভুক্ত করা এবং তার সঙ্গে থাকা চিকিৎসকরা সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
শহীদুল আরও জানান, এই যাত্রা গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ। তিনি বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশ’ এই অভিযানের সঙ্গে রয়েছে। তিনি বিশ্বব্যাপী শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের সংহতি প্রকাশের আহ্বান জানান। তিনি তার ২০১৮ সালের কারাবাসের অভিজ্ঞতার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির মিল খুঁজে বলেন, এবারও তিনি ‘অদম্য সাহস ও দৃঢ় মনোবল’ নিয়ে এগোচ্ছেন।
শহীদুল আলম কি গ্রেপ্তার হতে পারেন
শহীদুল আলমের জাহাজ আটক হলে তার গ্রেপ্তারের ঝুঁকি প্রবল। এর আগেও এ ধরনের অভিযানে বহু সাংবাদিক ও অধিকার কর্মীকে ইসরায়েল আটক করেছে। শহীদুলদের আগে সুমুদ ফ্লোটিলা থেকেও ২০ জনের বেশি সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদুলের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করছে এবং পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশের সরাসরি হস্তক্ষেপের ক্ষমতা নেই। শহীদুল নিজেও ঝুঁকি স্বীকার করেছেন, তবে তিনি শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এখনো তাকে আটক করা হয়নি। তবে গন্তব্যের কাছে পৌঁছালে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যেতে পারে।
দুই বছর ধরে ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে। এ সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের ওপরও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭০ জনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, অনেকে আটক ও কারাগারে বন্দী আছেন।
এক ফেসবুক পোস্টে শহীদুল বলেন, ‘আমরা মূলত কোনও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য যাচ্ছি না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙা। আমরা সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানাতে যাচ্ছি। আমরা বিশেষ করে মিডিয়ার ওপর এবং তথ্যের ওপর ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙতে চাই। আমরা গাজার বাস্তব পরিস্থিতি পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চাই।’
শহীদুল আরও বলেন, ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস এক অসাধারণ ধারণা। গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে বিশ্বনেতাদের পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়তা এবং ভণ্ডামির কারণে বিশ্বের সাধারণ জনগণ নিজেরাই পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাজার জাহাজের এই ধারণাটি প্রতীকী। তবে নিঃসন্দেহে এভাবে একত্রিত হওয়া সমুদ্রযানের সবচেয়ে বড় বহর এটি।’
সাংবাদিক ও অধিকার কর্মীদের আটক করাকে অনেকে স্বেচ্ছাচারী ও অবৈধ বলে মনে করা হয়। যদি তাৎক্ষণিক কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকে, তবে এসব আটক আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের মতে, এই অবরোধ মানবিক সংকট বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ভঙ্গ করছে।
ইসরায়েল নিজেদের পদক্ষেপকে আত্মরক্ষার অধিকার বলে দাবি করে। তবে অধিকাংশ মানবাধিকার সংগঠন ও কিছু রাষ্ট্রের মতে, অবরোধ ও হস্তক্ষেপ অবৈধ। আর বেসামরিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়তে পারে।
বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষাকারী সংগঠনগুলো বহুবার ইসরায়েলের সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এই সপ্তাহেও তারা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, যখন ইসরায়েলি বাহিনী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে গাজায় পৌঁছাতে বাধা দেয় এবং কয়েকজন সাংবাদিককে আটক করে।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)-এর সংকট ডেস্কের প্রধান মার্টিন রু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং তাদের কাজ করতে বাধা দেওয়া তথ্য দেওয়া ও পাওয়ার অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।’
আরএসএফ ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা সাংবাদিকদের মর্যাদা রক্ষা করে, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেয়
ইসরায়েলি অবোরধ ভাঙতে গাজা অভিমুখী ‘কনশানস’ সহ ১১টি জাহাজ আগামীকাল বুধবার (৮ সেপ্টেম্বর) ভোর নাগাদ ‘রেড জোন’ তথা বিপজ্জনক এলাকায় পৌঁছাতে পারে। আলোকচিত্রী শহীদুল আলম আজ মঙ্গলবার তার ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন। শহীদুল আলম নিজেও কনশানস জাহাজে আছেন।
রেড জোন বলতে শহীদুল আলম বুঝিয়েছেন, যেখান থেকে ইসরায়েলি সেনারা সম্প্রতি গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা নৌবহরের ৪০টির বেশি জাহাজ আটকে অধিকারকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে। শহীদুলদের বহরে মোট ১১টি জাহাজ আছে।
ফেসবুক পোস্টে শহীদুল আলম লিখেছেন, ‘আমরা নির্ধারিত সময়ের চেয়ে কিছুটা পিছিয়ে আছি। কারণ ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস’ নৌবহরে থাকা ছোট ও ধীরগতির নৌযানগুলো যেন পেছনে পড়ে না যায়, তা নিশ্চিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। এসব জাহাজও এফএফসির (ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন) অংশ।’
শহীদুল জানান, ‘ধীরগতির নৌযানগুলো (থাউজেন্ড ম্যাডলিনস) এখন আমাদের সমকাতারে এসেছে। আমরা এখনও “রেড জোন” থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে আছি।’
আজ মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) ইসরায়েলে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের হামলা এবং এর জবাবে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলা শুরুর দ্বিতীয় বর্ষপূর্তি।
শহীদুল লিখেছেন, ‘আজ ৭ অক্টোবর ২০২৫। ২০২৩ সালের এদিন হামাস ও অন্যান্য ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরায়েলের ওপর হামলা চালায়, যাতে ১ হাজার ১৯৫ জন ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিক নিহত হন। এর মধ্যে ৮১৫ জনসাধারণ মানুষ। ফিলিস্তিনি কারাবন্দিদের মুক্তি দিতে ইসরায়েলকে বাধ্য করার উদ্দেশ্যে ২৫১ জনকে জিম্মিও করেছিল হামাস।
‘জবাবে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় হামলা শুরু করার পর থেকে এ পর্যন্ত ৬৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাঁদের অর্ধেকের বেশি নারী ও শিশু। আহত হয়েছেন ১ লাখ ৬৯ হাজারের বেশি মানুষ।‘
শহীদুল আরও জানান, ‘দ্য ল্যানসেটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ২০২৪ সালের জুন নাগাদ আঘাতের কারণে মৃত্যু হওয়া মানুষের সংখ্যাটা কম করে হিসাব করা হয়েছে। পরোক্ষ কারণে মৃত্যু হওয়া মানুষের হিসাব করলে মৃতের সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে।’
আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি) ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি)’ শিরোনামে এই যাত্রার আয়োজন করেছে। এফএফসি ইসরায়েলি অবরোধ ভেঙে গাজায় ত্রাণ পৌঁছাতে যাওয়া বৈশ্বিক প্রচেষ্টা ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার’ যৌথ আয়োজক জোটগুলোর একটি। কনশানস সবার শেষে (৩০ সেপ্টেম্বর) ইতালি থেকে রওনা করেছিল।
গত ২-৩ অক্টোবর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’কেও থামিয়ে দেওয়া হয় এবং ৪০টির বেশি জাহাজসহ প্রায় ৫০০ অ্যাকটিভিস্টকে আটক করে ইসরায়েলি নৌবাহিনী। সে প্রসঙ্গ টেনে শহিদুল লেখেন, ‘তবুও আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। কনশানস জাহাজে মূলত সাংবাদিক ও চিকিৎসকেরা আছেন। তাঁরা সেই দুই পেশাজীবী গাজায় যাঁদের ইসরায়েল সুনির্দিষ্টভাবে টার্গেট করে হত্যা করছে।’
সাংবাদিকদের বহন করায় কনশাসনসকে ‘মিডিয়া ফ্লোটিলা’ও বলা হচ্ছে। জাহাজটিতে মোট ৯৬ জন অ্যাকটিভিস্ট আছেন, যার মধ্যে ৮২ জনই মিডিয়া ও চিকিৎসা পেশাজীবী। এদের মধ্যে আবার মিডিয়া ব্যক্তিত্বই বেশি।
এফএফসি-র স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য হুয়াইদা আরাফ বলেন, এটি এই ঐতিহাসিক বহরের সর্বশেষ ও সবচেয়ে বড় নৌযান। এর নাম শুধু ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধের বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রতিরোধের প্রতীক নয়, বরং বিশ্বের বিবেককে জাগ্রত করারও আহ্বান।
সাম্প্রতিক এক ভিডিও বার্তায় শহীদুল তার দৃঢ় সংকল্পের কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, এই মিশন কেবল সাহায্য পৌঁছানো নয় বরং বিশ্বজনীন সংহতির প্রতীক। তিনি আরও বলেন, ‘কী হবে জানি না, তবে আমরা গাজার পথে আছি।’
তাঁর লক্ষ্য গাজার ওপর চলমান ‘তথ্য অবরোধ’ ভাঙা। এজন্য তিনি সরাসরি সাংবাদিকতা, ধ্বংসযজ্ঞের ছবি তোলা ও তথ্য নথিভুক্ত করা এবং তার সঙ্গে থাকা চিকিৎসকরা সেবা দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছেন।
শহীদুল আরও জানান, এই যাত্রা গাজায় ইসরায়েলি অবরোধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ। তিনি বলেন, ‘পুরো বাংলাদেশ’ এই অভিযানের সঙ্গে রয়েছে। তিনি বিশ্বব্যাপী শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মীদের সংহতি প্রকাশের আহ্বান জানান। তিনি তার ২০১৮ সালের কারাবাসের অভিজ্ঞতার সঙ্গে বর্তমান পরিস্থিতির মিল খুঁজে বলেন, এবারও তিনি ‘অদম্য সাহস ও দৃঢ় মনোবল’ নিয়ে এগোচ্ছেন।
শহীদুল আলম কি গ্রেপ্তার হতে পারেন
শহীদুল আলমের জাহাজ আটক হলে তার গ্রেপ্তারের ঝুঁকি প্রবল। এর আগেও এ ধরনের অভিযানে বহু সাংবাদিক ও অধিকার কর্মীকে ইসরায়েল আটক করেছে। শহীদুলদের আগে সুমুদ ফ্লোটিলা থেকেও ২০ জনের বেশি সাংবাদিক গ্রেপ্তার হয়েছেন।
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শহীদুলের নিরাপত্তা পর্যবেক্ষণ করছে এবং পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছে। তবে বাংলাদেশের সরাসরি হস্তক্ষেপের ক্ষমতা নেই। শহীদুল নিজেও ঝুঁকি স্বীকার করেছেন, তবে তিনি শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। এখনো তাকে আটক করা হয়নি। তবে গন্তব্যের কাছে পৌঁছালে পরিস্থিতি দ্রুত পাল্টে যেতে পারে।
দুই বছর ধরে ইসরায়েল বিদেশি সাংবাদিকদের গাজায় প্রবেশে বাধা দিয়ে আসছে। এ সময়ে ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনি সাংবাদিকদের ওপরও হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে আসছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ২৭০ জনের বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, অনেকে আটক ও কারাগারে বন্দী আছেন।
এক ফেসবুক পোস্টে শহীদুল বলেন, ‘আমরা মূলত কোনও মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর জন্য যাচ্ছি না। আমাদের প্রধান লক্ষ্য ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙা। আমরা সাংবাদিক ও চিকিৎসকদের ওপর ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ জানাতে যাচ্ছি। আমরা বিশেষ করে মিডিয়ার ওপর এবং তথ্যের ওপর ইসরায়েলের অবৈধ অবরোধ ভাঙতে চাই। আমরা গাজার বাস্তব পরিস্থিতি পুরো বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে চাই।’
শহীদুল আরও বলেন, ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস এক অসাধারণ ধারণা। গাজায় গণহত্যা ঠেকাতে বিশ্বনেতাদের পুরোপুরি নিষ্ক্রিয়তা এবং ভণ্ডামির কারণে বিশ্বের সাধারণ জনগণ নিজেরাই পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। হাজার জাহাজের এই ধারণাটি প্রতীকী। তবে নিঃসন্দেহে এভাবে একত্রিত হওয়া সমুদ্রযানের সবচেয়ে বড় বহর এটি।’
সাংবাদিক ও অধিকার কর্মীদের আটক করাকে অনেকে স্বেচ্ছাচারী ও অবৈধ বলে মনে করা হয়। যদি তাৎক্ষণিক কোনো নিরাপত্তা ঝুঁকি না থাকে, তবে এসব আটক আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের মতে, এই অবরোধ মানবিক সংকট বাড়িয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন ভঙ্গ করছে।
ইসরায়েল নিজেদের পদক্ষেপকে আত্মরক্ষার অধিকার বলে দাবি করে। তবে অধিকাংশ মানবাধিকার সংগঠন ও কিছু রাষ্ট্রের মতে, অবরোধ ও হস্তক্ষেপ অবৈধ। আর বেসামরিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলে তা যুদ্ধাপরাধের পর্যায়ে পড়তে পারে।
বিশ্বব্যাপী সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা রক্ষাকারী সংগঠনগুলো বহুবার ইসরায়েলের সাংবাদিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। এই সপ্তাহেও তারা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, যখন ইসরায়েলি বাহিনী গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলাকে গাজায় পৌঁছাতে বাধা দেয় এবং কয়েকজন সাংবাদিককে আটক করে।
রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ)-এর সংকট ডেস্কের প্রধান মার্টিন রু এক বিবৃতিতে বলেন, ‘সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার এবং তাদের কাজ করতে বাধা দেওয়া তথ্য দেওয়া ও পাওয়ার অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘন।’
আরএসএফ ইসরায়েলকে আহ্বান জানিয়েছে যেন তারা সাংবাদিকদের মর্যাদা রক্ষা করে, তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করে এবং আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের নিরাপত্তা গ্যারান্টি দেয়
এ বছর পদার্থবিজ্ঞানে যৌথভাবে নোবেল পেয়েছেন তিন আমেরিকান বিজ্ঞানী— জন ক্লার্ক, মিশেল ডেভরে ও জন এম মার্টিনিস। তারা বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক। আজ (৭ অক্টোবর, মঙ্গলবার) বিকাল পৌনে ৪টার দিকে সুইডেনের রয়্যাল একাডেমি অব সায়েন্সেস পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কারের ঘোষণা
৪ ঘণ্টা আগেঅবিলম্বে গাজা যুদ্ধ বন্ধে মিসরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা চলছে। ট্রাম্পের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে চুক্তি করতে ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েল পরোক্ষভাবে এই আলোচনা করছে।
৯ ঘণ্টা আগেফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা থামছেই না। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি প্রস্তাবনা নিয়ে যখন হামাস আলোচনা করছে, ঠিক তখনো গাজায় হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল। গাজায় ইসরায়েলের চালানো এ ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাযজ্ঞ বিশ্ব থেকে দেশটিকে প্রায় বিচ্ছিন্ন করে তুলছে।
১১ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের আগস্টের শেষ দিকে জাতিসংঘ আনুষ্ঠানিকভাবে গাজায় দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করে। এই ঘোষণার মাধ্যমে কয়েক মাস ধরে মানবাধিকার সংস্থা ও বিশেষজ্ঞদের করা দাবিকে স্বীকার করে নেয় জাতিসংঘ।
১২ ঘণ্টা আগে