leadT1ad

চানখারপুলে ৬ হত্যা মামলা: রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্য শেষ, সাফাই সাক্ষী দিতে চান সাবেক ওসি আরশাদ

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক

প্রকাশ : ২৮ নভেম্বর ২০২৫, ০০: ০৫
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সংগৃহীত ছবি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের চূড়ান্ত দিনে রাজধানীর চানখারপুলে সংঘটিত নৃশংস হত্যাযজ্ঞের বিচার প্রক্রিয়ায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা সম্পন্ন হয়েছে। মামলার এই চূড়ান্ত মুহূর্তে আত্মপক্ষ সমর্থনে সাফাই সাক্ষী হাজির করার আবেদন জানিয়েছেন মামলার অন্যতম আসামি ও শাহবাগ থানার তৎকালীন ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল এই আবেদনের শুনানির জন্য আগামী রোববার দিন ধার্য করেছেন। ওই দিনই সিদ্ধান্ত হবে মামলাটি সরাসরি যুক্তিতর্কে যাবে, নাকি সাফাই সাক্ষ্যের নতুন ধাপে গড়াবে।

বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এর সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর একক বেঞ্চ এই তারিখ নির্ধারণ করেন।

এদিন ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আট আসামির বিরুদ্ধে চলমান মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ মোট ২৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য ও জেরা সম্পন্ন হয়। রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হওয়ার পরই আসামি আরশাদের আইনজীবী সাদ্দাম হোসেন অভি সাফাই সাক্ষীর আবেদন নিয়ে আদালতের কাছে সময় প্রার্থনা করেন। তিনি আদালতকে জানান, তাঁর মক্কেলের পক্ষে তিনজন সাফাই সাক্ষীর নাম জমা দেওয়া হয়েছে। আদালত আগামী রোববার এ বিষয়ে শুনবেন বলে জানান। শুনানিতে প্রসিকিউশনের পক্ষে প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম, ফারুক আহাম্মদ, মঈনুল করিম, তারেক আবদুল্লাহ ও সাইমুম রেজা তালুকদার উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১২ নভেম্বর মামলার মূল তদন্ত কর্মকর্তা মো. মনিরুল ইসলামের জবানবন্দী শুরু হয় এবং গত ১৯ নভেম্বর টানা তৃতীয় দিনের মতো তাঁর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় সংঘটিত হত্যাযজ্ঞের আদ্যোপান্ত এবং জব্দকৃত আলামত আদালতের সামনে তুলে ধরেন। স্টেট ডিফেন্স ও আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাঁকে বৃহস্পতিবার জেরা শেষ করেন।

আলোচিত এই মামলায় অভিযুক্ত আট আসামির মধ্যে চারজন বর্তমানে কারাগারে আটক রয়েছেন। তাঁরা হলেন শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ও মো. নাসিরুল ইসলাম। অন্যদিকে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল মামলার শুরু থেকেই পলাতক রয়েছেন।

প্রসিকিউশনের ভাষ্যমতে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘লং মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ছাত্র-জনতার ওপর মারণাস্ত্র ব্যবহার করে। তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ঘটনার দিন ঘটনাস্থলে ৫০ জনের বেশি পুলিশ সদস্য উপস্থিত ছিলেন এবং তাঁদের অধিকাংশই গুলিবর্ষণ করেছিলেন। তবে যাঁরা সরাসরি প্রাণঘাতী অস্ত্র বা ‘লেথাল ওয়েপন’ ব্যবহার করেছেন, সুনির্দিষ্টভাবে এমন তিনজনকেই এই মামলায় আসামি করা হয়েছে। ওই দিনের বর্বরোচিত হামলায় শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক, মানিক মিয়াসহ ছয়জন নিহত হন এবং বহু আন্দোলনকারী গুরুতর আহত হন।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত