
.png)

গাজা জুড়ে ইসরায়েলের সামরিক হামলায় কমপক্ষে ৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে কার্যকর যুদ্ধবিরতির পর এই হামলা সাম্প্রতিক উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়েছে।

জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ সোমবার (১৮ নভেম্বর ২০২৫) যুক্তরাষ্ট্র-প্রস্তাবিত একটি প্রস্তাব অনুমোদন করে। এই প্রস্তাব যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ থামানোর জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের তৈরি ২০ দফা পরিকল্পনাকে সমর্থন করে।

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরেও ইসরায়েলি বর্বরতায় গত এক মাসে ২৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এই সময়ে আহত হয়েছেন আরও ৬৩২ জন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। শুধু গাজা নয়, অধিকৃত পশ্চিম তীরেও আগ্রাসন অব্যাহত রেখেছে ইসরায়েলি বাহিনী।

ফিলিস্তিনের দখলকৃত পশ্চিম তীরে একটি মসজিদে ইহুদী বসতি স্থাপনকারীদের অগ্নিসংযোগে আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখে পড়েছে ইসরায়েল। সাম্প্রতিক সময়ে ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতা অব্যাহত থাকায় পরিস্থিতি আরও উত্তেজনাপূর্ণ হয়েছে।

গাজা সিটির পাশের এক উঁচু বাঁধ থেকে তাকালে বোঝা যায়, যুদ্ধ এই শহরকে কীভাবে ধ্বংস করেছে। মানচিত্রের গাজার চিহ্ন এখন নেই। স্মৃতির শহরটি পরিণত হয়েছে ধূসর ধ্বংসস্তূপে, যা একদিক থেকে অন্যদিকে প্রসারিত। বেইত হানুন থেকে গাজা সিটি পর্যন্ত যতদূর চোখ যায়, শুধু ভাঙাচোরা ইট-পাথর।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির মেয়র নির্বাচনে রেকর্ড ৫০ দশমিক ৪ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী হন স্বঘোষিত গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী জোহরান মামদানি। মামদানি শহরের ইতিহাসে প্রথম মুসলিম মেয়র, প্রথম ভারতীয়-উগান্ডান বংশোদ্ভূত এবং সবচেয়ে তরুণ মেয়র। এই বিজয় ডেমোক্রেটিক পার্টির ভেতরেও একটি নতুন ধারা সূচিত করেছে।

অধিকৃত পশ্চিম তীরে জলপাই সংগ্রহের মৌসুম শুরু হয়েছে। কিন্তু সেই সঙ্গে বেড়েছে ইসরায়েলি বসতিস্থাপনকারীদের হামলা। তারা নিয়মিতভাবে ফিলিস্তিনিদের ও তাদের গাছের ওপর আক্রমণ চালাচ্ছে।

গাজায় ফিলিস্তিনিরা যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ২৪ ঘণ্টা পার করেছে। মঙ্গলবার থেকে বুধবার পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় ১০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি মানুষ নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৪৬ জন শিশু।

যুদ্ধবিরতির পরও গাজা এখনো ফিরে আসা বাসিন্দাদের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক এলাকা হয়ে রয়েছে। ইসরায়েলের ফেলা অবিস্ফোরিত বোমা ও গোলাবারুদ জীবনহানির পাশাপাশি পুনর্গঠনকেও বাধাগ্রস্ত করছে।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে অধিকৃত অঞ্চলের ওপর তথাকথিত ‘ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব’ আরোপের লক্ষ্যে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভায় খসড়া বিল অনুমোদনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দুই সপ্তাহ পরও সেখানে খাদ্য সংকট ‘বিপর্যয়কর’ অবস্থায় রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও )। আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো ইসরায়লকে মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

ইসরায়েলের পার্লামেন্ট ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরায়েলি সার্বভৌমত্ব আরোপের একটি বিলের প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত কার্যত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড সংযুক্ত করার সমান, যা আন্তর্জাতিক আইনের সরাসরি লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হবে।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরের তুরমুস আয়ার কাছে একদল মুখোশধারী ইহুদি বসতি স্থাপনকারী গত রবিবার ফিলিস্তিনি জলপাই চাষি ও তাঁদের সঙ্গে থাকা কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এ সময় তারা লাঠি ও পাথর দিয়ে আক্রমণ করে, তিনটি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয় এবং অন্য গাড়ির জানালা ভাঙচুর করে।

যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় গত ১০ অক্টোবর যে নাজুক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়, তার পর থেকে ইসরায়েল প্রায় ১০০ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং ২৩০ জনকে আহত করেছে। এই সময়টিতে দুই পক্ষের মধ্যে চলেছে অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ।

যেকোনো যুদ্ধবিরতি সাধারণত তখনই টেকে যখন সংঘাতরত দুই পক্ষ সামরিকভাবে অচলাবস্থায় পৌঁছে যায়। অথবা যখন উভয় পক্ষের কাছে যুদ্ধ থামানো যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার চেয়ে বেশি লাভজনক মনে হয়। কিন্তু গাজার বাস্তবতায় এর কোনোটিই প্রযোজ্য নয়। গত দুই বছরের ভয়াবহতা যুদ্ধ নয়, বরং গণহত্যা।

দশকের পর দশক ধরে চলা প্রতিদিনের সহিংসতা ও দমননীতি এখনও বন্ধ হয়নি। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর থেকে দখলদার শক্তির নৃশংসতা আরও বেড়েছে। আজ পশ্চিম তীরে জীবন প্রায় অচল হয়ে পড়েছে।