উনিশ শতকের শেষতম দশক। গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছেন এক স্কুল শিক্ষক। এ বাড়ি ও বাড়ি গিয়ে পরশপাথরের মতো খুঁজে ফিরছেন ‘অতি সামান্য’জিনিস, পরোনো পুঁথি। মনে হতে পারে, আহা মরি কিছু নয়। উচ্চবর্গের ‘উচ্চ সংস্কৃতি’র কাছে এর বিশেষ কদর থাকার কথাও নয়। কিন্তু কেউ কেউ এর মূল্য বুঝেছিলেন ভবিষ্যতের বিচারে; সেই জনাকয়েক সমঝদ
একসময় ‘বাল্যশিক্ষা’ই ছিল পূর্ব বাংলায় শিক্ষার এক সাংস্কৃতিক প্রতীক। এ অঞ্চলের অগণিত মানুষের শিক্ষার সূচনা ঘটেছে বাল্যশিক্ষা দিয়ে। আর এই ‘বাল্যশিক্ষা’র জনপ্রিয়তাকে পুঁজি করেছিল সেকালের ঢাকার মুদ্রণ যন্ত্রালয়গুলো।
নাটক-সিনেমার সংলাপে এক সময় শোনা যেত, ‘ঠান্ডা, না গরম?’ বড়লোক নায়ক অথবা নায়িকার বাবারা বলতেন। অথবা বলতেন গরিব নায়কের বড়লোক বন্ধু। এরপর এলো নতুন সংলাপ, ‘চা, না কফি?’—এও শোনা গেছে বড়লোকদের মুখেই। অর্থাৎ বাঙালির সংস্কৃতিতে ঢুকে গেছে কফির পোড়া পোড়া চকলেটি স্বাদ। কিন্তু সিনেমার সংলাপে ঢোকার আগে কফি তো ঢুক
পাহাড়ে ধর্ষণ কখনোই কমবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত না পাহাড়ি জনপদের মানুষকে আমরা অপরায়ণ প্রক্রিয়ার একমুখী চশমা দিয়ে দেখা থেকে বিরত হবো। বিশেষভাবে শুধু পাহাড় নয়, সারা বাংলাদেশেই ধর্ষণ কমবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না আমরা নারী ও শিশুবান্ধব সমাজ ও রাষ্ট্র গড়ে তুলতে পারব।
আজ আন্তর্জাতিক গণতন্ত্র দিবস। একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের খোঁজে ১৯৪৭ থেকে বহুবার রক্ত দিয়েছে এই বাংলার মানুষ। আদর্শ ও কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্রের দেখা কখনোই পায়নি। চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর আবারও মানুষ গণতন্ত্রের জন্য পথ চেয়ে আছে। তবে বাংলাদেশের মানুষের গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষা কেন বারবার হোঁচট খায়?
সমাজ-পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন-অভ্যুত্থান আর নৈরাজ্যের মধ্যে পার্থক্য আছে। অভ্যুত্থানের গন্তব্য থাকে, কিন্তু নৈরাজ্য গন্তব্যহীন। নেপাল অথবা বাংলাদেশ—যেকোনো রাষ্ট্রের জন্যই কথাগুলো সমানভাবে সত্য।
ঐতিহাসিক ও ভূগোলবিদের ভাষ্যে ‘বদ্বীপে’র নিখুঁত সংজ্ঞার্থ আমরা পাব। কিন্তু আপাতত দেখতে চাই সাহিত্যের সেই সীমা-সরহদ্দ, যেখানে বাংলাদেশের মানুষ ও জনপদকে চিহ্নিত করা যায় বদ্বীপের প্রাকৃতিক ও আঞ্চলিক বিশিষ্টতায়।
শামসুর রাহমান, আল মাহমুদ, জাতীয়তাবাদ, আধুনিকতা, প্রগতিশীলতার প্রশ্নে আমাদের শহরের কবিদের মধ্যে সূক্ষ্ম একটা ভেদরেখা আছে।
আমরা হয়তো অভিযোগ তুলতে পারি, রবীন্দ্রনাথ আর কিছুই নন—উনিশ শতকের উপনিবেশিত কলকাতার চিত্তদূতমাত্র। জমিদারির অঢেল বিত্তে বেড়ে ওঠাদের দলে তিনিও ছিলেন। তাহলে সে কথা হবে আংশিক সত্য।
কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছিল শেখ হাসিনা সরকারের পতনের একদফার ডাক। পথে নেমে আসেন ছাত্র-জনতা—নাগরিকেরা। এ সময় শেখ হাসিনা সরকারকে অভিশাপ দিয়েছিলেন এক অধ্যাপক।
একজন শিক্ষক হিসেবে ভাবছি, শ্লোকের মতো করে আমাদের মনে রাখতে হবে মাহরীনের অমোঘ উচ্চারণ, ‘দৌড়াও, ভয় পেও না, আমি আছি।’ পরম নির্ভরতা হয়ে এই ‘থাকা’, এই ‘আছিময়তা’ই হয়তো বড় শিক্ষকের গুণ।
আমার এখনও মনে পড়ে, আমাদের স্কুলের মাঠে লুৎফর রহমান স্যার চিৎকার করে রোল নাম্বার ডাকছিলেন, সঙ্গে লেটার সংখ্যা আর রেজাল্ট বলছিলেন। গলায় কাতর স্বর তুলে আমার বেলায় স্যার বললেন, ‘আহা, ছেলেটা স্টার পায় নাই, ধর্মে লেটার…।’
‘জুলাই–আন্দোলন’ আমার কাছে ছিল আমার রাজনৈতিক আত্মার আধ্যাত্মিক বহিঃপ্রকাশ। দেশচেতনার আবেগে কাতর হয়ে উঠেছিল আমার মন। আমি ঘুমের ভেতর জনতার পায়ের শব্দ শুনতে পেতাম; মানুষের সমবেত স্লোগানগুলো আমাকে প্রকম্পিত করে তুলত।
এ কালের অনেক তরুণের মতো ছফাও বাঙালি জাতীয়তাবাদকে দাঁড় করিয়েছিলেন কাঠগড়ায়। জাতীয়তাবাদের প্রতীকসমূহের দিকে ছুড়ে দিয়েছিলেন সমালোচনামূলক ভাষ্য। জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল, গোষ্ঠী, ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান, মতাদর্শ—সব কিছুকেই তিনি পাঠযোগ্য করে তুলেছেন।