সুমন সাজ্জাদ
নেপালে কি নেমে এলো জুলাইয়ের ছায়া? অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্ন। কেননা সবই যেন মিলে যাচ্ছে, যেমন ঘটেছিল বাংলাদেশে, নেপাল যেন তারই এক সংক্ষিপ্ত প্রতিলিপি। বাংলাদেশের মতোই নেপালের রাজপথ কাঁপিয়ে ফিরেছেন জেন-জি তরুণরা। স্লোগান দিয়েছেন, অভিযোগ করেছেন, মোড়ে মোড়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেনে আগুন।
ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে প্রায় একই রকম অভিযোগ—পাহাড়সমান দুর্নীতি, খুঁটি গেড়ে বসে পড়া অপশাসন।
প্রত্যাশার দিকগুলোও কাছাকাছি—নতুন নেতৃত্ব, নতুন রাজনীতি।
নেপালে সংঘটিত আন্দোলনের তাৎক্ষণিক ফলাফল এক; মাত্র দুদিনের গণবিক্ষোভে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি।
এত বড় একটি ঘটনা; কিন্তু কারণ কী?
অনেকেই দিচ্ছেন ছোট্ট একটি জবাব। নেপালি আইন ও অধ্যাদেশ মেনে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপসমূহ বন্ধ করা। বলা হচ্ছে, তরুণরা এই আকস্মিক নিষিদ্ধকরণ মেনে নিতে পারেনি। কারণ তাঁরা তাদের হতাশাকে ব্যক্ত করে এর মাধ্যমে; বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের উপায়ও এগুলোই।
কারো কারো যুক্তি এই যে অ্যাপগুলো তাদের জীবনযাপনের অংশ। দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের সম্পাদকীয় নিবন্ধেও এ ধরনের যুক্তির প্রতিফলন দেখা গেছে।
আবার কেউ কেউ মত দিচ্ছেন এসব নেটওয়ার্কিং অ্যাপ ব্যবহার করেই তরুণরা আয় রোজগার করে থাকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার মাধ্যমে তাদের জীবনযাপনের ওপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ ঘটেছে।
প্রশ্ন হলো, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপই কি জীবনের সর্বস্ব? জেন-জিদের এই প্রযুক্তিকেন্দ্রিকতা একদমই প্রশ্নাতীত ব্যাপার? তারা কি আইন-বিধান-রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়ার ঊর্ধ্বে? যুক্তিপদ্ধতি মেনে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর ভাবা জরুরি।
সমাজ-পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন-অভ্যুত্থান আর নৈরাজ্যের মধ্যে পার্থক্য আছে। অভ্যুত্থানের গন্তব্য থাকে, কিন্তু নৈরাজ্য গন্তব্যহীন। নেপাল অথবা বাংলাদেশ—যেকোনো রাষ্ট্রের জন্যই কথাগুলো সমানভাবে সত্য।
তিনটি গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্রের জন্য এই ভাবনা আরও জরুরি। কেননা রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশও এখন পর্যন্ত একটি সুস্থির কাঠামো গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি।
সত্যিকার অর্থে, বাংলাদেশের মতোই নেপালের ইতিহাস রাজনৈতিক অস্থিরতার ইতিহাস। রাজতন্ত্র, মতাদর্শ আর শাসনতন্ত্র নির্ধারণের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে নেপালকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে। ২০০৮ সালে রাজতন্ত্র থেকে মুক্তি পেয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে চেয়েছে গণতান্ত্রিক নেপাল।
রাষ্ট্রীয় অস্থিতিশীলতা জনমনস্তত্বের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। জনতা হতাশ হয়, আগ্রাসী হয়ে ওঠে। শাসক শ্রেণির আগ্রাসী আচরণ যত বাড়ে নাগরিকের মধ্যে ক্ষোভের পরিমাণও ততো বাড়তে থাকে। নেপালে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির তৈরি হওয়ার পেছনে এটিও বড় কারণ।
নাকি কাজ করছে ভিন্নতর কোনো রাজনীতির খেলা?
কেউ কেউ বলছেন, এই আন্দোলনের পেছনে লুকিয়ে রাজতন্ত্র ফিরে আসার বার্তা। এমনকি আন্তঃরাষ্ট্রীয় চক্রান্তের কানাঘুষাও শোনা যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বাতাসে। নেপালকে সহ্য করতে হয় ভারত ও চীনের মতো বড় দুই রাষ্ট্রের দ্বিমুখী চাপ।
ভৌগোলিকভাবে দেশটি এমন একটি অবস্থানে রয়েছে যে কারণে দেশটিকে বাফার স্টেট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অন্য সব বাফার স্টেটের মতোই নেপাল রাষ্ট্রনৈতিক ঝুঁকিতে থাকে। নেপালের সঙ্গে যেকোনো একটি দেশের ঘনিষ্ঠতা দেখা গেলেই অন্য রাষ্ট্রটি নাখোশ হয়। নেপালে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ হওয়ার পর ভারত তাই ক্ষুব্ধ হয়েছিল।
চীন ও ভারত—দুই দেশই নেপালকে অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। ভারত কখনোই নেপালের মাওবাদী প্রবণতাকে মেনে নেয়নি। চীন দেখতে চায় না ভারতের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য। ছোট্ট দরিদ্র দেশ নেপালকে হাত বাড়াতে হয় দুই দিকেই।
ভারতের সঙ্গে নেপালের ঐতিহাসিক এক সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে নেপালি উচ্চবর্গীয়রা ভারতে এসেছেন, সাংস্কৃতিকভাবে ভারতীয়তাকে বরণ করেছেন। ভারতীয় কংগ্রেসের আদলে গড়ে উঠেছিল নেপালি কংগ্রেস।
অন্যদিকে, আঠার শতকের শেষ দিকে তিব্বতকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে বেধেছিল নেপালের ঐতিহাসিক লড়াই। তারপর প্রায় দেড়শ বছর ধরে লিখিত হয়েছে নেপাল-চীনের হারজিতের বয়ান। তবে নেপালের দিক থেকে সম্পর্ক মূলত বশ্যতার। নেপাল-চীন সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছে মূলত ষাটের দশকে। নব্বইয়ের দশকে বেড়েছে মাওবাদী তৎপরতা।
ভারত-নেপাল-চীন সম্পর্কের এই ইতিহাস এটিই প্রমাণ করে যে, নেপাল কখনোই স্বস্তিতে থাকতে পারেনি। দুটি দেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও ভাবাদর্শ নানাভাবে তাকে প্রভাবিত করেছে। সাম্প্রতিক নেপালে দুই দেশের প্রভাবকেই উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
নেপালের এই পরিস্থিতিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, সেটি হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কি তৃতীয় দুনিয়ার মানুষের জন্য আফিমের মতো কাজ করছে? সব কিছু ভুলে রিলস, ভিডিও, পোস্ট, শেয়ার, ঘরে বসে আয় করার নেশায় একধ্যানে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা যায়। ভোক্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া যায়। প্রযুক্তি কারখানাগুলো শেষপর্যন্ত মানুষের দেহমনের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেবে? জন্ম দেবে অভ্যুত্থান ও বিপ্লবের? প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে রাষ্ট্রের?
এ ধরনের প্রশ্ন উত্থাপনের কারণও আছে। পরিসংখ্যানগত হিসেব থেকে দেখা যাচ্ছে, ‘উন্নত’ দেশগুলোর তুলনায় ‘অনুন্নত’, ‘স্বল্পোন্নত’ দেশগুলোর ব্যবহারকারীরাই ফেসবুক ব্যবহার করছে। মিসর, তিউনিসিয়ায় অভ্যুত্থানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরাট ভূমিকা ছিল। তাই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, নেপালেও কি তেমন কোনো প্রভাব কাজ করেছে? কর্পোরেট অর্থায়ন কি কাজ করছে? সাম্রাজ্যবাদ আর প্রযুক্তি কি মিলেমিশে ভিন্নতর কোনো প্রযুক্তিকেন্দ্রিক আধিপত্যবাদের জন্ম দিচ্ছে?
প্রশ্নগুলো তোলা রইল ভবিষ্যতের পাতায়।
ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত—যাই হোক না কেন, গণমানুষ সব সময় বুক ভরে নিতে চায় স্বস্তির নিশ্বাস।
দীর্ঘমেয়াদি শাসন অথবা ঘনঘন শাসকবদল কোনোটিই কোনো রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
জনতাই নির্ধারণ করুক নেপালের ভবিষ্যৎ।
নেপালে কি নেমে এলো জুলাইয়ের ছায়া? অনেকের মনেই ঘুরপাক খাচ্ছে এই প্রশ্ন। কেননা সবই যেন মিলে যাচ্ছে, যেমন ঘটেছিল বাংলাদেশে, নেপাল যেন তারই এক সংক্ষিপ্ত প্রতিলিপি। বাংলাদেশের মতোই নেপালের রাজপথ কাঁপিয়ে ফিরেছেন জেন-জি তরুণরা। স্লোগান দিয়েছেন, অভিযোগ করেছেন, মোড়ে মোড়ে জ্বালিয়ে দিয়েছেনে আগুন।
ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে প্রায় একই রকম অভিযোগ—পাহাড়সমান দুর্নীতি, খুঁটি গেড়ে বসে পড়া অপশাসন।
প্রত্যাশার দিকগুলোও কাছাকাছি—নতুন নেতৃত্ব, নতুন রাজনীতি।
নেপালে সংঘটিত আন্দোলনের তাৎক্ষণিক ফলাফল এক; মাত্র দুদিনের গণবিক্ষোভে পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা অলি।
এত বড় একটি ঘটনা; কিন্তু কারণ কী?
অনেকেই দিচ্ছেন ছোট্ট একটি জবাব। নেপালি আইন ও অধ্যাদেশ মেনে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপসমূহ বন্ধ করা। বলা হচ্ছে, তরুণরা এই আকস্মিক নিষিদ্ধকরণ মেনে নিতে পারেনি। কারণ তাঁরা তাদের হতাশাকে ব্যক্ত করে এর মাধ্যমে; বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগের উপায়ও এগুলোই।
কারো কারো যুক্তি এই যে অ্যাপগুলো তাদের জীবনযাপনের অংশ। দ্য কাঠমান্ডু পোস্টের সম্পাদকীয় নিবন্ধেও এ ধরনের যুক্তির প্রতিফলন দেখা গেছে।
আবার কেউ কেউ মত দিচ্ছেন এসব নেটওয়ার্কিং অ্যাপ ব্যবহার করেই তরুণরা আয় রোজগার করে থাকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার মাধ্যমে তাদের জীবনযাপনের ওপর রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ ঘটেছে।
প্রশ্ন হলো, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং অ্যাপই কি জীবনের সর্বস্ব? জেন-জিদের এই প্রযুক্তিকেন্দ্রিকতা একদমই প্রশ্নাতীত ব্যাপার? তারা কি আইন-বিধান-রাষ্ট্রীয় প্রক্রিয়ার ঊর্ধ্বে? যুক্তিপদ্ধতি মেনে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর ভাবা জরুরি।
সমাজ-পরিবর্তনের জন্য আন্দোলন-অভ্যুত্থান আর নৈরাজ্যের মধ্যে পার্থক্য আছে। অভ্যুত্থানের গন্তব্য থাকে, কিন্তু নৈরাজ্য গন্তব্যহীন। নেপাল অথবা বাংলাদেশ—যেকোনো রাষ্ট্রের জন্যই কথাগুলো সমানভাবে সত্য।
তিনটি গণ-অভ্যুত্থানের ভেতর দিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের মতো একটি রাষ্ট্রের জন্য এই ভাবনা আরও জরুরি। কেননা রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশও এখন পর্যন্ত একটি সুস্থির কাঠামো গড়ে তুলতে সক্ষম হয়নি।
সত্যিকার অর্থে, বাংলাদেশের মতোই নেপালের ইতিহাস রাজনৈতিক অস্থিরতার ইতিহাস। রাজতন্ত্র, মতাদর্শ আর শাসনতন্ত্র নির্ধারণের দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিন ধরে নেপালকে বিপর্যস্ত করে রেখেছে। ২০০৮ সালে রাজতন্ত্র থেকে মুক্তি পেয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে চেয়েছে গণতান্ত্রিক নেপাল।
রাষ্ট্রীয় অস্থিতিশীলতা জনমনস্তত্বের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলে। জনতা হতাশ হয়, আগ্রাসী হয়ে ওঠে। শাসক শ্রেণির আগ্রাসী আচরণ যত বাড়ে নাগরিকের মধ্যে ক্ষোভের পরিমাণও ততো বাড়তে থাকে। নেপালে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির তৈরি হওয়ার পেছনে এটিও বড় কারণ।
নাকি কাজ করছে ভিন্নতর কোনো রাজনীতির খেলা?
কেউ কেউ বলছেন, এই আন্দোলনের পেছনে লুকিয়ে রাজতন্ত্র ফিরে আসার বার্তা। এমনকি আন্তঃরাষ্ট্রীয় চক্রান্তের কানাঘুষাও শোনা যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বাতাসে। নেপালকে সহ্য করতে হয় ভারত ও চীনের মতো বড় দুই রাষ্ট্রের দ্বিমুখী চাপ।
ভৌগোলিকভাবে দেশটি এমন একটি অবস্থানে রয়েছে যে কারণে দেশটিকে বাফার স্টেট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। অন্য সব বাফার স্টেটের মতোই নেপাল রাষ্ট্রনৈতিক ঝুঁকিতে থাকে। নেপালের সঙ্গে যেকোনো একটি দেশের ঘনিষ্ঠতা দেখা গেলেই অন্য রাষ্ট্রটি নাখোশ হয়। নেপালে রাজতন্ত্র উচ্ছেদ হওয়ার পর ভারত তাই ক্ষুব্ধ হয়েছিল।
চীন ও ভারত—দুই দেশই নেপালকে অর্থনৈতিক সুবিধা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছে। ভারত কখনোই নেপালের মাওবাদী প্রবণতাকে মেনে নেয়নি। চীন দেখতে চায় না ভারতের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য। ছোট্ট দরিদ্র দেশ নেপালকে হাত বাড়াতে হয় দুই দিকেই।
ভারতের সঙ্গে নেপালের ঐতিহাসিক এক সাংস্কৃতিক সম্পর্ক আছে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক আমলে নেপালি উচ্চবর্গীয়রা ভারতে এসেছেন, সাংস্কৃতিকভাবে ভারতীয়তাকে বরণ করেছেন। ভারতীয় কংগ্রেসের আদলে গড়ে উঠেছিল নেপালি কংগ্রেস।
অন্যদিকে, আঠার শতকের শেষ দিকে তিব্বতকে কেন্দ্র করে চীনের সঙ্গে বেধেছিল নেপালের ঐতিহাসিক লড়াই। তারপর প্রায় দেড়শ বছর ধরে লিখিত হয়েছে নেপাল-চীনের হারজিতের বয়ান। তবে নেপালের দিক থেকে সম্পর্ক মূলত বশ্যতার। নেপাল-চীন সম্পর্ক উষ্ণ হয়েছে মূলত ষাটের দশকে। নব্বইয়ের দশকে বেড়েছে মাওবাদী তৎপরতা।
ভারত-নেপাল-চীন সম্পর্কের এই ইতিহাস এটিই প্রমাণ করে যে, নেপাল কখনোই স্বস্তিতে থাকতে পারেনি। দুটি দেশের রাজনীতি, সংস্কৃতি ও ভাবাদর্শ নানাভাবে তাকে প্রভাবিত করেছে। সাম্প্রতিক নেপালে দুই দেশের প্রভাবকেই উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।
নেপালের এই পরিস্থিতিতে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, সেটি হলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কি তৃতীয় দুনিয়ার মানুষের জন্য আফিমের মতো কাজ করছে? সব কিছু ভুলে রিলস, ভিডিও, পোস্ট, শেয়ার, ঘরে বসে আয় করার নেশায় একধ্যানে স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকা যায়। ভোক্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়া যায়। প্রযুক্তি কারখানাগুলো শেষপর্যন্ত মানুষের দেহমনের নিয়ন্ত্রণও নিয়ে নেবে? জন্ম দেবে অভ্যুত্থান ও বিপ্লবের? প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠবে রাষ্ট্রের?
এ ধরনের প্রশ্ন উত্থাপনের কারণও আছে। পরিসংখ্যানগত হিসেব থেকে দেখা যাচ্ছে, ‘উন্নত’ দেশগুলোর তুলনায় ‘অনুন্নত’, ‘স্বল্পোন্নত’ দেশগুলোর ব্যবহারকারীরাই ফেসবুক ব্যবহার করছে। মিসর, তিউনিসিয়ায় অভ্যুত্থানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিরাট ভূমিকা ছিল। তাই প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, নেপালেও কি তেমন কোনো প্রভাব কাজ করেছে? কর্পোরেট অর্থায়ন কি কাজ করছে? সাম্রাজ্যবাদ আর প্রযুক্তি কি মিলেমিশে ভিন্নতর কোনো প্রযুক্তিকেন্দ্রিক আধিপত্যবাদের জন্ম দিচ্ছে?
প্রশ্নগুলো তোলা রইল ভবিষ্যতের পাতায়।
ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত—যাই হোক না কেন, গণমানুষ সব সময় বুক ভরে নিতে চায় স্বস্তির নিশ্বাস।
দীর্ঘমেয়াদি শাসন অথবা ঘনঘন শাসকবদল কোনোটিই কোনো রাষ্ট্রের জন্য কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না।
জনতাই নির্ধারণ করুক নেপালের ভবিষ্যৎ।
দীর্ঘ বিরতির পর আবারও অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন। ক্যাম্পাস ছাড়িয়ে পুরো দেশের ছাত্ররাজনীতির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হয়ে উঠতে পারে এবারের ডাকসু। দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই নির্বাচনকে একটি দিক নির্দেশক মাইলফলক হিসেবে দেখার যথেষ্ট কারণ আছে।
১ দিন আগেবহু প্রত্যাশিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে গেছে। শিক্ষার্থীরা ভোটকেন্দ্রে যাচ্ছেন, ভোট দিচ্ছেন, হাস্যজ্জ্বোল ছবি দিচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সেসব ছবি দেখছি আর কত কিছু যে মনে পড়ছে!
১ দিন আগেতাঁর প্রতিটি নতুন গ্রন্থ আগের চিন্তাগুলোকে আরও বিকশিত করে, ধরে রাখে চিন্তার সংগতি। বাংলাদেশের বিগত দেড় শ বছরের রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যাকরণ বুঝতে উমরকে লাগবেই।
২ দিন আগেউজ্জ্বল নক্ষত্র বদরুদ্দীন উমর (১৯৩১) আর নেই। তিনি কেবল উপনিবেশ-পরবর্তী বাংলাদেশের একজন মার্কসবাদী ইতিহাসবিদই ছিলেন না। তিনি ছিলেন একজন বিপ্লবী তাত্ত্বিক এবং রাজনীতিবিদও। লেখালেখি ও বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার মধ্য দিয়ে শ্রেণিসংগ্রাম, জাতীয়তাবাদ ও রাষ্ট্রগঠনের প্রচলিত ধারণাকে তিনি চ্যালেঞ্জ করেছিলেন। নিজের
৩ দিন আগে