গাজায় স্থায়ী শান্তির জন্য উপনিবেশমুক্ত এবং ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্বকেন্দ্রিক পরিকল্পনা লাগবে। সেরকম একটি পরিকল্পনা কেমন হতে পারে তা নিয়ে লিখেছেন কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্টের পরিচালক এবং জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্কের প্রেসিডেন্ট জেফ্রি স্যাকস ও তার উপদেষ্টা সিবিল ফারেস।
স্ট্রিম ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনায় কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব আছে— যেমন জিম্মি মুক্তি, মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন। কিন্তু পুরো পরিকল্পনাটি উপনিবেশিক মানসিকতায় ভরপুর। এতে বলা হয়েছে, গাজা তদারক করবেন ট্রাম্প নিজে। তার সঙ্গে থাকবেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ কয়েকজন বিদেশি ‘পর্যবেক্ষক’। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই চিন্তাধারা নতুন নয়। এটি আসলে শতবর্ষের পুরোনো অ্যাংলো-আমেরিকান নীতির পুনরাবৃত্তি। ১৯১৯ সালের ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটেন যখন ফিলিস্তিনের ম্যান্ডেট পায়, তখন থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর ১৯৪৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নভাবে ওই অঞ্চলে হস্তক্ষেপ চালিয়ে আসছে।
একটি প্রকৃত শান্তি পরিকল্পনা হতে হবে এই উপনিবেশিক কাঠামোহীন। এর কেন্দ্রবিন্দু হতে হবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা। পরিকল্পনাটি এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে শুরু থেকেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ পায়, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা একচেটিয়াভাবে ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকে, কোনো বিদেশি প্রতিনিধি বা ‘ভাইসরয়’ হস্তক্ষেপ করতে না পারে এবং ২০২৬ সালের শুরু নাগাদ ইসরায়েলের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার ও পূর্ণ ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্বের নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত থাকে।
এই সংশোধিত পরিকল্পনাটি ট্রাম্পের কিছু বাস্তবধর্মী দিক বজায় রাখবে— যেমন যুদ্ধবিরতি, জিম্মি মুক্তি, ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা ও ধ্বংসস্তূপ পুনর্গঠন। তবে এতে উপনিবেশিক ভাষা ও মানসিকতা বাদ দেওয়া হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এতে ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায়, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাম্প্রতিক প্রস্তাব, এবং বিশ্বের ১৫৭টি দেশের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি স্বীকৃতিকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হবে।
এই উপনিবেশমুক্ত বিকল্প পরিকল্পনা গাজার পুনর্গঠন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কেন্দ্রবিন্দুতে ফিলিস্তিনিদের স্থান দিবে, বিদেশি তত্ত্বাবধায়কদের নয়।
বিকল্প পরিকল্পনাটি নিচে উপস্থাপন করা হলো। পাঠকেরা ট্রাম্পের মূল পরিকল্পনার সঙ্গে তুলনা করে এর পার্থক্যগুলো দেখতে পারেন।
পরিমার্জিত ২০ দফা পরিকল্পনা: উপনিবেশমুক্ত গাজা শান্তি পরিকল্পনা
১. ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল উভয় দেশই সন্ত্রাসমুক্ত থাকবে এবং কোনো প্রতিবেশী দেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে না।
২. ফিলিস্তিন পুনর্গঠিত হবে শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের কল্যাণে, যারা ইতিমধ্যে অতি দুর্ভোগ সহ্য করেছে।
৩. উভয় পক্ষ প্রস্তাবে সম্মতি দিলে যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হবে। ইসরায়েলি বাহিনী জিম্মি মুক্তির প্রস্তুতির জন্য নির্ধারিত সীমায় ফিরে যাবে। সব সামরিক অভিযান বন্ধ হবে।
৪. চুক্তি উভয় পক্ষ প্রকাশ্যে গ্রহণ করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিকে—জীবিত ও মৃত—ফেরত দেওয়া হবে।
৫. সব জিম্মি মুক্তির পর ইসরায়েল যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি ও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে।
৬. হামাসের যারা অস্ত্র ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সম্মত হবে, তাদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে। যারা গাজা ত্যাগ করতে চায়, তাদের নিরাপদে অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
৭. চুক্তি গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে গাজায় পূর্ণমাত্রায় মানবিক সহায়তা পাঠানো হবে। অন্তত ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারির চুক্তির মান অনুযায়ী পানি, বিদ্যুৎ, ড্রেন, হাসপাতাল ও বেকারি পুনর্গঠন, ধ্বংসাবশেষ সরানো ও সড়ক খোলার সরঞ্জামসহ সব সহায়তা দেওয়া হবে।
৮. জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে সাহায্য বিতরণ ও প্রবেশ নিশ্চিত করা হবে। রাফাহ সীমান্তও একই প্রক্রিয়ায় উভয় দিকেই খোলা থাকবে।
৯. ফিলিস্তিন ও এর অবিচ্ছেদ্য অংশ গাজা শাসিত হবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক পরামর্শকরা সহায়তা দিতে পারবেন, তবে সার্বভৌম ক্ষমতা থাকবে ফিলিস্তিনিদের হাতে।
১০. পিএ আরব অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় পুনর্গঠন ও উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করবে। বাইরের প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতে পারে, তবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার নেতৃত্ব দেবে আরব পক্ষ।
১১. ফিলিস্তিন চাইলে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করতে পারবে। এর শুল্ক ও প্রবেশাধিকারের বিষয়টি ফিলিস্তিন ও অংশীদার দেশগুলো যৌথভাবে নির্ধারণ করবে।
১২. কোনো ফিলিস্তিনিকে তার নিজ ভূমি থেকে জোর করে সরানো যাবে না। যারা নিজের ইচ্ছায় যেতে চায়, তারা স্বাধীনভাবে যাতায়াত করতে পারবে।
১৩. হামাস ও অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রশাসনে ভূমিকা থাকবে না। সব সামরিক ও সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হবে, যা নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা যাচাই করবে।
১৪. আঞ্চলিক অংশীদাররা নিশ্চয়তা দেবে যে হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠী এই চুক্তি মেনে চলছে, যাতে গাজা কারও জন্য হুমকি না হয়।
১৫. ফিলিস্তিনের আমন্ত্রণে আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদাররা ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েন করবে। এটি মিসর ও জর্ডানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেবে। আইএসএফ সীমান্ত রক্ষা, জননিরাপত্তা এবং পণ্য চলাচল সহজ করবে।
১৬. ইসরায়েল গাজা বা পশ্চিম তীর দখল বা সংযুক্ত করবে না। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে সরে যাবে। এরপর আইএসএফ ও ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ নেবে।
১৭. যদি হামাস প্রস্তাব বিলম্বিত করে বা প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে আইএসএফ ও পিএ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সাহায্য ও পুনর্গঠন কার্যক্রম চালু থাকবে।
১৮. ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বাড়াতে আন্তঃধর্মীয় সংলাপের ব্যবস্থা করা হবে।
১৯. জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ১২ সেপ্টেম্বরের প্রস্তাব ও ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের পরামর্শ অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে ফিলিস্তিন পূর্ণ সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে তার ভূখণ্ড পরিচালনা করবে।
২০. যুক্তরাষ্ট্র অবিলম্বে সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে এবং জাতিসংঘে স্থায়ী সদস্যপদে সমর্থন করবে। এই রাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করবে।
এই পরিকল্পনা ট্রাম্পের পরিকল্পনা থেকে যেভাবে আলাদা
পরিমার্জিত ২০ দফা পরিকল্পনাটি কাঠামোগত দিক থেকে ট্রাম্পের প্রস্তাবের সঙ্গে পুরোপুরি ভিন্ন নয়। এতে সামরিক নিরস্ত্রীকরণ, মানবিক সহায়তা, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং আন্তঃধর্মীয় সংলাপের বিষয়গুলো আগের মতোই রাখা হয়েছে। মূল পার্থক্য হলো—এটি ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ওপর জোর দেয়।
ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রত্ব: ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছিল, যা বহিরাগত অনুমোদন ও সংস্কারের ওপর নির্ভর করত। উপনিবেশমুক্ত পরিকল্পনায় নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া হয়েছে—ইসরায়েল ১ নভেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং ফিলিস্তিন ১ জানুয়ারি ২০২৬ সাল থেকে পূর্ণ সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দায়িত্ব নেবে। এটি ১৯১৯ সালের ভার্সাই চুক্তির ১২৬ বছর পরের এক ঐতিহাসিক সময়সীমা।
উপনিবেশিক তদারকি বাতিল: ট্রাম্পের প্রস্তাবে ‘বোর্ড অব পিস’ নামে একটি সংস্থা গঠনের কথা বলা হয়েছিল, যার চেয়ারম্যান হতেন ট্রাম্প এবং প্রধান সদস্য হিসেবে থাকতেন টনি ব্লেয়ার। উপনিবেশমুক্ত পরিকল্পনায় এই কাঠামো পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যে, ফিলিস্তিনিদের নিজেদের শাসনের জন্য কোনো বিদেশি তত্ত্বাবধায়ক প্রয়োজন নেই। প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রথম দিন থেকেই ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকবে।
অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব: ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজাকে পুনর্গঠনের জন্য ‘ট্রাম্প ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান’ আছে। আমাদের পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক পরিকল্পনা পরিচালনার পূর্ণ দায়িত্ব ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকবে। তারা চাইলে আরব বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিতে পারবে এবং বাইরের প্রস্তাব শুধুমাত্র নিজেদের বিবেচনায় গ্রহণ করবে।
অ্যাংলো-আমেরিকান তত্ত্বাবধানের অবসান:
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রকে ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ ‘গ্যারান্টর’ বা তদারককারী হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছিল, যার সহযোগী ছিল যুক্তরাজ্য। উপনিবেশমুক্ত পরিকল্পনায় এই শতবর্ষব্যাপী মডেলের অবসান ঘটানো হয়েছে। এখানে ফিলিস্তিনি ও আরব নেতৃত্বকেই প্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
শতাধিক বছর ধরে ফিলিস্তিনিরা বিদেশি নিয়ন্ত্রণে থেকেছে—ব্রিটিশ ম্যান্ডেট শাসন, মার্কিন কূটনৈতিক আধিপত্য, ইসরায়েলি দখল এবং ট্রাম্পের মতো নানা ‘ট্রাস্টি’ কাঠামোর মাধ্যমে। বেলফোর ঘোষণা থেকে ভার্সাই, অসলো এবং ট্রাম্পের ‘বোর্ড অব পিস’—সব ক্ষেত্রেই ফিলিস্তিনিদের সার্বভৌম জাতি হিসেবে দেখা হয়নি।
এই পরিকল্পনা সেই ইতিহাস সংশোধন করে। এটি স্বীকার করে যে, ফিলিস্তিনিরা নিজস্ব সক্ষমতা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ একটি জাতি। তাদের তত্ত্বাবধান নয়, প্রয়োজন স্বাধীনতার।
পরিকল্পনাটি নিশ্চিত করে যে, ফিলিস্তিনিরাই নিজেরা নিজেদের শাসন করবে, অর্থনীতি পরিচালনা করবে এবং ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। আন্তর্জাতিক অংশীদাররা সহায়তা ও পরামর্শ দিতে পারে, কিন্তু নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে পারবে না।
ইসরায়েলের প্রত্যাহার ও ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি—এই দুটি বিষয় হবে অপরিবর্তনীয় এবং আলোচনাবহির্ভূত।
একটি সত্যিকারের শান্তি পরিকল্পনা হতে হবে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায় ও জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলোকে মেনে চলতে হবে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক সংখ্যাগরিষ্ঠতার সেই ইচ্ছাকেও সম্মান জানাতে হবে, যারা দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে।
এ মুহূর্তে প্রয়োজন সততা, বৈশ্বিক ঐক্য ও নৈতিক দৃঢ়তা। কেবল বাস্তব পদক্ষেপ—যা ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রত্ব কার্যকর করবে—তাই স্থায়ী শান্তি আনতে পারে।
সূত্র: আল-জাজিরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা গাজা শান্তি পরিকল্পনায় কিছু ইতিবাচক প্রস্তাব আছে— যেমন জিম্মি মুক্তি, মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন। কিন্তু পুরো পরিকল্পনাটি উপনিবেশিক মানসিকতায় ভরপুর। এতে বলা হয়েছে, গাজা তদারক করবেন ট্রাম্প নিজে। তার সঙ্গে থাকবেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারসহ কয়েকজন বিদেশি ‘পর্যবেক্ষক’। অন্যদিকে, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছে।
এই চিন্তাধারা নতুন নয়। এটি আসলে শতবর্ষের পুরোনো অ্যাংলো-আমেরিকান নীতির পুনরাবৃত্তি। ১৯১৯ সালের ভার্সাই চুক্তির মাধ্যমে ব্রিটেন যখন ফিলিস্তিনের ম্যান্ডেট পায়, তখন থেকেই এ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এরপর ১৯৪৫ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্নভাবে ওই অঞ্চলে হস্তক্ষেপ চালিয়ে আসছে।
একটি প্রকৃত শান্তি পরিকল্পনা হতে হবে এই উপনিবেশিক কাঠামোহীন। এর কেন্দ্রবিন্দু হতে হবে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব পুনঃপ্রতিষ্ঠা। পরিকল্পনাটি এমনভাবে সাজাতে হবে যাতে শুরু থেকেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ (পিএ) প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ পায়, অর্থনৈতিক পরিকল্পনা একচেটিয়াভাবে ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকে, কোনো বিদেশি প্রতিনিধি বা ‘ভাইসরয়’ হস্তক্ষেপ করতে না পারে এবং ২০২৬ সালের শুরু নাগাদ ইসরায়েলের সম্পূর্ণ সেনা প্রত্যাহার ও পূর্ণ ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্বের নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত থাকে।
এই সংশোধিত পরিকল্পনাটি ট্রাম্পের কিছু বাস্তবধর্মী দিক বজায় রাখবে— যেমন যুদ্ধবিরতি, জিম্মি মুক্তি, ইসরায়েলি বাহিনীর প্রত্যাহার, মানবিক সহায়তা ও ধ্বংসস্তূপ পুনর্গঠন। তবে এতে উপনিবেশিক ভাষা ও মানসিকতা বাদ দেওয়া হবে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো, এই পরিকল্পনা আন্তর্জাতিক আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। এতে ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায়, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাম্প্রতিক প্রস্তাব, এবং বিশ্বের ১৫৭টি দেশের ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতি স্বীকৃতিকে ভিত্তি হিসেবে নেওয়া হবে।
এই উপনিবেশমুক্ত বিকল্প পরিকল্পনা গাজার পুনর্গঠন ও শান্তি প্রতিষ্ঠার কেন্দ্রবিন্দুতে ফিলিস্তিনিদের স্থান দিবে, বিদেশি তত্ত্বাবধায়কদের নয়।
বিকল্প পরিকল্পনাটি নিচে উপস্থাপন করা হলো। পাঠকেরা ট্রাম্পের মূল পরিকল্পনার সঙ্গে তুলনা করে এর পার্থক্যগুলো দেখতে পারেন।
পরিমার্জিত ২০ দফা পরিকল্পনা: উপনিবেশমুক্ত গাজা শান্তি পরিকল্পনা
১. ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল উভয় দেশই সন্ত্রাসমুক্ত থাকবে এবং কোনো প্রতিবেশী দেশের জন্য হুমকি সৃষ্টি করবে না।
২. ফিলিস্তিন পুনর্গঠিত হবে শুধুমাত্র ফিলিস্তিনিদের কল্যাণে, যারা ইতিমধ্যে অতি দুর্ভোগ সহ্য করেছে।
৩. উভয় পক্ষ প্রস্তাবে সম্মতি দিলে যুদ্ধ তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হবে। ইসরায়েলি বাহিনী জিম্মি মুক্তির প্রস্তুতির জন্য নির্ধারিত সীমায় ফিরে যাবে। সব সামরিক অভিযান বন্ধ হবে।
৪. চুক্তি উভয় পক্ষ প্রকাশ্যে গ্রহণ করার ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সব জিম্মিকে—জীবিত ও মৃত—ফেরত দেওয়া হবে।
৫. সব জিম্মি মুক্তির পর ইসরায়েল যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত বন্দি ও ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পর আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তি দেবে।
৬. হামাসের যারা অস্ত্র ত্যাগ করে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে সম্মত হবে, তাদের সাধারণ ক্ষমা দেওয়া হবে। যারা গাজা ত্যাগ করতে চায়, তাদের নিরাপদে অন্য দেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে।
৭. চুক্তি গ্রহণের সঙ্গে সঙ্গে গাজায় পূর্ণমাত্রায় মানবিক সহায়তা পাঠানো হবে। অন্তত ২০২৫ সালের ১৯ জানুয়ারির চুক্তির মান অনুযায়ী পানি, বিদ্যুৎ, ড্রেন, হাসপাতাল ও বেকারি পুনর্গঠন, ধ্বংসাবশেষ সরানো ও সড়ক খোলার সরঞ্জামসহ সব সহায়তা দেওয়া হবে।
৮. জাতিসংঘ, রেড ক্রিসেন্ট ও অন্যান্য নিরপেক্ষ আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে সাহায্য বিতরণ ও প্রবেশ নিশ্চিত করা হবে। রাফাহ সীমান্তও একই প্রক্রিয়ায় উভয় দিকেই খোলা থাকবে।
৯. ফিলিস্তিন ও এর অবিচ্ছেদ্য অংশ গাজা শাসিত হবে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের (পিএ) মাধ্যমে। আন্তর্জাতিক পরামর্শকরা সহায়তা দিতে পারবেন, তবে সার্বভৌম ক্ষমতা থাকবে ফিলিস্তিনিদের হাতে।
১০. পিএ আরব অঞ্চল ও আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় পুনর্গঠন ও উন্নয়ন পরিকল্পনা তৈরি করবে। বাইরের প্রস্তাব বিবেচনা করা যেতে পারে, তবে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার নেতৃত্ব দেবে আরব পক্ষ।
১১. ফিলিস্তিন চাইলে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করতে পারবে। এর শুল্ক ও প্রবেশাধিকারের বিষয়টি ফিলিস্তিন ও অংশীদার দেশগুলো যৌথভাবে নির্ধারণ করবে।
১২. কোনো ফিলিস্তিনিকে তার নিজ ভূমি থেকে জোর করে সরানো যাবে না। যারা নিজের ইচ্ছায় যেতে চায়, তারা স্বাধীনভাবে যাতায়াত করতে পারবে।
১৩. হামাস ও অন্য কোনো সশস্ত্র গোষ্ঠীর প্রশাসনে ভূমিকা থাকবে না। সব সামরিক ও সন্ত্রাসী অবকাঠামো ভেঙে ফেলা হবে, যা নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষকরা যাচাই করবে।
১৪. আঞ্চলিক অংশীদাররা নিশ্চয়তা দেবে যে হামাস ও অন্যান্য গোষ্ঠী এই চুক্তি মেনে চলছে, যাতে গাজা কারও জন্য হুমকি না হয়।
১৫. ফিলিস্তিনের আমন্ত্রণে আরব ও আন্তর্জাতিক অংশীদাররা ১ নভেম্বর ২০২৫ থেকে একটি অস্থায়ী আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী (আইএসএফ) মোতায়েন করবে। এটি মিসর ও জর্ডানের সঙ্গে পরামর্শক্রমে ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে প্রশিক্ষণ ও সহায়তা দেবে। আইএসএফ সীমান্ত রক্ষা, জননিরাপত্তা এবং পণ্য চলাচল সহজ করবে।
১৬. ইসরায়েল গাজা বা পশ্চিম তীর দখল বা সংযুক্ত করবে না। ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে ইসরায়েলি বাহিনী সম্পূর্ণভাবে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড থেকে সরে যাবে। এরপর আইএসএফ ও ফিলিস্তিনি নিরাপত্তা বাহিনী নিয়ন্ত্রণ নেবে।
১৭. যদি হামাস প্রস্তাব বিলম্বিত করে বা প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে আইএসএফ ও পিএ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় সাহায্য ও পুনর্গঠন কার্যক্রম চালু থাকবে।
১৮. ফিলিস্তিনি ও ইসরায়েলিদের মধ্যে সহনশীলতা ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান বাড়াতে আন্তঃধর্মীয় সংলাপের ব্যবস্থা করা হবে।
১৯. জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ১২ সেপ্টেম্বরের প্রস্তাব ও ২০২৪ সালের আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের পরামর্শ অনুযায়ী, ১ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে ফিলিস্তিন পূর্ণ সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে তার ভূখণ্ড পরিচালনা করবে।
২০. যুক্তরাষ্ট্র অবিলম্বে সার্বভৌম ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেবে এবং জাতিসংঘে স্থায়ী সদস্যপদে সমর্থন করবে। এই রাষ্ট্র ইসরায়েলের পাশে শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করবে।
এই পরিকল্পনা ট্রাম্পের পরিকল্পনা থেকে যেভাবে আলাদা
পরিমার্জিত ২০ দফা পরিকল্পনাটি কাঠামোগত দিক থেকে ট্রাম্পের প্রস্তাবের সঙ্গে পুরোপুরি ভিন্ন নয়। এতে সামরিক নিরস্ত্রীকরণ, মানবিক সহায়তা, অর্থনৈতিক পুনর্গঠন এবং আন্তঃধর্মীয় সংলাপের বিষয়গুলো আগের মতোই রাখা হয়েছে। মূল পার্থক্য হলো—এটি ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতির ওপর জোর দেয়।
ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রত্ব: ট্রাম্পের পরিকল্পনায় ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা অনির্দিষ্ট ভবিষ্যতের জন্য স্থগিত রাখা হয়েছিল, যা বহিরাগত অনুমোদন ও সংস্কারের ওপর নির্ভর করত। উপনিবেশমুক্ত পরিকল্পনায় নির্দিষ্ট সময়সীমা দেওয়া হয়েছে—ইসরায়েল ১ নভেম্বর ২০২৫ সালের মধ্যে সেনা প্রত্যাহার করবে এবং ফিলিস্তিন ১ জানুয়ারি ২০২৬ সাল থেকে পূর্ণ সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে দায়িত্ব নেবে। এটি ১৯১৯ সালের ভার্সাই চুক্তির ১২৬ বছর পরের এক ঐতিহাসিক সময়সীমা।
উপনিবেশিক তদারকি বাতিল: ট্রাম্পের প্রস্তাবে ‘বোর্ড অব পিস’ নামে একটি সংস্থা গঠনের কথা বলা হয়েছিল, যার চেয়ারম্যান হতেন ট্রাম্প এবং প্রধান সদস্য হিসেবে থাকতেন টনি ব্লেয়ার। উপনিবেশমুক্ত পরিকল্পনায় এই কাঠামো পুরোপুরি বাদ দেওয়া হয়েছে। এতে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে যে, ফিলিস্তিনিদের নিজেদের শাসনের জন্য কোনো বিদেশি তত্ত্বাবধায়ক প্রয়োজন নেই। প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রথম দিন থেকেই ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকবে।
অর্থনৈতিক সার্বভৌমত্ব: ট্রাম্পের পরিকল্পনায় গাজাকে পুনর্গঠনের জন্য ‘ট্রাম্প ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান’ আছে। আমাদের পরিকল্পনায় অর্থনৈতিক পরিকল্পনা পরিচালনার পূর্ণ দায়িত্ব ফিলিস্তিনিদের হাতে থাকবে। তারা চাইলে আরব বিশেষজ্ঞদের সহায়তা নিতে পারবে এবং বাইরের প্রস্তাব শুধুমাত্র নিজেদের বিবেচনায় গ্রহণ করবে।
অ্যাংলো-আমেরিকান তত্ত্বাবধানের অবসান:
ট্রাম্পের পরিকল্পনায় যুক্তরাষ্ট্রকে ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ ‘গ্যারান্টর’ বা তদারককারী হিসেবে চিত্রিত করা হয়েছিল, যার সহযোগী ছিল যুক্তরাজ্য। উপনিবেশমুক্ত পরিকল্পনায় এই শতবর্ষব্যাপী মডেলের অবসান ঘটানো হয়েছে। এখানে ফিলিস্তিনি ও আরব নেতৃত্বকেই প্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
শতাধিক বছর ধরে ফিলিস্তিনিরা বিদেশি নিয়ন্ত্রণে থেকেছে—ব্রিটিশ ম্যান্ডেট শাসন, মার্কিন কূটনৈতিক আধিপত্য, ইসরায়েলি দখল এবং ট্রাম্পের মতো নানা ‘ট্রাস্টি’ কাঠামোর মাধ্যমে। বেলফোর ঘোষণা থেকে ভার্সাই, অসলো এবং ট্রাম্পের ‘বোর্ড অব পিস’—সব ক্ষেত্রেই ফিলিস্তিনিদের সার্বভৌম জাতি হিসেবে দেখা হয়নি।
এই পরিকল্পনা সেই ইতিহাস সংশোধন করে। এটি স্বীকার করে যে, ফিলিস্তিনিরা নিজস্ব সক্ষমতা, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ একটি জাতি। তাদের তত্ত্বাবধান নয়, প্রয়োজন স্বাধীনতার।
পরিকল্পনাটি নিশ্চিত করে যে, ফিলিস্তিনিরাই নিজেরা নিজেদের শাসন করবে, অর্থনীতি পরিচালনা করবে এবং ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। আন্তর্জাতিক অংশীদাররা সহায়তা ও পরামর্শ দিতে পারে, কিন্তু নিজেদের ইচ্ছা চাপিয়ে দিতে পারবে না।
ইসরায়েলের প্রত্যাহার ও ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্বের স্বীকৃতি—এই দুটি বিষয় হবে অপরিবর্তনীয় এবং আলোচনাবহির্ভূত।
একটি সত্যিকারের শান্তি পরিকল্পনা হতে হবে আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এতে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের রায় ও জাতিসংঘের প্রস্তাবগুলোকে মেনে চলতে হবে। একই সঙ্গে বৈশ্বিক সংখ্যাগরিষ্ঠতার সেই ইচ্ছাকেও সম্মান জানাতে হবে, যারা দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের পক্ষে।
এ মুহূর্তে প্রয়োজন সততা, বৈশ্বিক ঐক্য ও নৈতিক দৃঢ়তা। কেবল বাস্তব পদক্ষেপ—যা ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রত্ব কার্যকর করবে—তাই স্থায়ী শান্তি আনতে পারে।
সূত্র: আল-জাজিরা
গাজা যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পর ২০ দফা প্রস্তাবের প্রাথমিক পর্যায়ে সম্মত হয়েছে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস। এর অংশ হিসেবে সেনাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
৩ ঘণ্টা আগেফিলিস্তিনের গাজা যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার ‘প্রথম পর্যায়‘ বাস্তবায়নে একমত হয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েল। এই খবরে গাজার ধ্বংসস্তূপে বসবাসকারী ফিলিস্তিনিরা উল্লাস করছেন।
৪ ঘণ্টা আগেগাজায় যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা শান্তি পরিকল্পনার ‘প্রথম পর্যায়’ বাস্তবায়নে একমত হয়েছে হামাস ও ইসরায়েল। ফলে যুদ্ধ শেষ হলে ভবিষ্যতে গাজার অবস্থা কেমন হতে পারে—এ প্রশ্ন এখন অনেকের মনে।
৫ ঘণ্টা আগেগাজায় যুদ্ধ অবিলম্বে বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনার প্রথম পর্যায়ের বাস্তবায়নে একমত হয়েছে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলে।
৭ ঘণ্টা আগে