সময়ের সাথে সাথে থুনবার্গের কর্মকাণ্ড পরিবেশ বিষয় ছাড়িয়ে সামাজিক ন্যায় ও মানবাধিকার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। তিনি ইউক্রেনের পক্ষে, আদিবাসী অধিকার এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সক্রিয় হয়েছেন। গত কয়েক বছরে থুনবার্গ ফিলিস্তিনের পক্ষে ক্রমবর্ধমানভাবে আন্দোলন করছেন। তিনি এটিকে বৈশ্বিক ন্যায় এবং জলবায়ু সংকটের সঙ্গে যুক্ত মনে করেন।
স্ট্রিম ডেস্ক
সুইডেনের নাগরিক গ্রেটা থুনবার্গ একজন জলবায়ু আন্দোলন কর্মী। তিনি কিশোর বয়সেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আন্দোলনের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি পান। ২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারি সুইডেনের স্টকহোমে তার জন্ম। ১৫ বছর বয়সেই তিনি তার জলবায়ু আন্দোলনের কর্মকাণ্ড শুরু করেন।
নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রেটা শুক্রবারে স্কুলে না গিয়ে সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে প্রতিবাদ করা শুরু করেন। তার দাবি ছিল, বিশ্ব উষ্ণায়ন থামাতে বিশ্বের সরকারগুলোকে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে। তার এই একক প্রতিবাদ ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ আন্দোলনে রুপ নেয়। পরে এতে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ তরুণ-তরুণী অংশ নেন।
তার মা-বাবাও— অপেরা গায়িকা ম্যালেনা আর্নম্যান ও অভিনেতা স্বান্তে থুনবার্গ— তার কাজকে সমর্থন করেন। থুনবার্গ প্রকাশ্যে জানিয়েছেন যে তিনি অ্যাসপারগার সিনড্রোমে আক্রান্ত। তিনি এটিকে তার ‘সুপারপাওয়ার’ হিসেবে দেখেন, যা কোনও বিষয়ে তার মনোযোগ ও দৃঢ়তাকে জোরদার করে।
থুনবার্গ জনপ্রিয় হন জাতিসংঘে হাই-প্রোফাইল ভাষণ দিয়ে। ২০১৯ সালের জাতিসংঘ ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে তার ‘হাউ ডেয়ার ইউ?’ ভাষণ ভাইরাল হয়। সেখানে তিনি বিশ্বনেতাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি দায়িত্ব না পালনের জন্য নিন্দা জানান। তিনি একাধিকবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। ২০১৯ সালে তিনি রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড পান।
সময়ের সাথে সাথে থুনবার্গের কর্মকাণ্ড পরিবেশ বিষয় ছাড়িয়ে সামাজিক ন্যায় ও মানবাধিকার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। তিনি ইউক্রেনের পক্ষে, আদিবাসী অধিকার এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সক্রিয় হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন
গত কয়েক বছরে থুনবার্গ ফিলিস্তিনের পক্ষে ক্রমবর্ধমানভাবে আন্দোলন করছেন। তিনি এটিকে বৈশ্বিক ন্যায় এবং জলবায়ু সংকটের সঙ্গে যুক্ত মনে করেন। তিনি ফিলিস্তিনের পক্ষে র্যালিতে অংশ নিয়েছেন, কেফিয়াহ (ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ) পরেছেন। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করেছেন, বিশেষ করে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর।
উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালে আমস্টারডামের এক জলবায়ু র্যালিতে তিনি ‘ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে’ ধ্বনি তোলেন এবং বলেন, ‘অধিকৃত ভূমিতে কোনো জলবায়ুগত ন্যায়বিচার নেই।’ তিনি তার জলবায়ু আন্দোলনের কর্মকাণ্ডকে ইসরায়েলের অধিকারের বিরোধের সঙ্গে যুক্ত করেছেন।
তবে কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং মিডিয়া প্রতিষ্ঠান থুনবার্গের ব্যপক সমালোচনা করে। তাদের অভিযোগ, তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করছেন। ২০২৪ সালে তিনি এমন অভিযোগের মুখোমুখি হন যে তিনি ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়কে হালকাভাবে দেখাচ্ছেন এবং জলবায়ু সমস্যা থেকে মনোযোগ সরাচ্ছেন।
থুনবার্গ এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তার অবস্থান মানবাধিকার ভিত্তিক এবং ইসরায়েলের ‘অবৈধ অবরোধ’ ও গাজায় ‘ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করার বিরোধিতার ওপর ভিত্তিতে তৈরি। তার সমর্থকরাও বলেন, ফিলিস্তিনের পক্ষে গ্রেটার অবস্থান তার জলবায়ু আন্দোলন কর্মসূচির স্বাভাবিক সম্প্রসারণ।
গাজা সাহায্য বহরে থুনবার্গের অংশগ্রহণ
গ্রেটা থুনবার্গ ফিলিস্তিনি ইস্যুতে সরাসরি ভূমিকা রাখেন গাজা সাহায্য বহরের মাধ্যমে। এই বহরগুলো ইসরায়েলের নৌ অবরোধকে চ্যালেঞ্জ করে। ইসরায়েল বলে, এই অবরোধ হামাসের অস্ত্রের চালান ঠেকাতে জরুরি। কিন্তু সমালোচকেরা মনে করেন, এটি গাজায় দুর্ভিক্ষসহ মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
ম্যাডলিন (জুন ২০২৫)
থুনবার্গ গাজা সাহাজ্য বহরে প্রথমবার সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন ২০২৫ সালের জুনে। ম্যাডলিন নামের একটি জাহাজে চড়ে তিনি গাজার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন ওই মানবিক ত্রাণ সহায়তা নৌ-যাত্রার আয়োজন করেছিল।
ইসরায়েলি বাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজটি আটক করে। থুনবার্গসহ আরও ১১ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন ফরাসি-ফিলিস্তিনি ইউরোপীয় এমইপি রিমা হাসান এবং ব্রাজিল, স্পেন ও তুরস্কের অ্যাকটিভিস্টরা।
ইসরায়েল সেই মিশনকে ‘সেলফি ইয়ট’ বলে ব্যঙ্গ করেছিল। তারা দাবি করে, এতে খুব সামান্য সাহায্য ছিল, যা একটি ট্রাকের মালামালের চেয়েও কম। ইসরায়েল সেসময় গ্রেটাদের বিরুদ্ধে ‘বৈধ’ অবরোধ ভঙ্গের অভিযোগ তোলে। অন্যদিকে থুনবার্গ এক ভিডিও বার্তায় সেই ঘটনাকে ‘অপহরণ’ বলেন। তিনি বিশ্বের সরকারগুলোকে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
পরে ফ্রান্সের মাধ্যমে তাকে সুইডেনে ফেরত পাঠানো হয়। সেখানেও তিনি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে অবৈধ বলে অভিযোগ করেন। এই ঘটনা ২০১০ সালের ফ্লোটিলা অভিযানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যেখানে ইসরায়েলের হামলায় নয়জন অ্যাকটিভিস্ট নিহত হয়েছিলেন।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (সেপ্টেম্বর–অক্টোবর ২০২৫)
প্রথম অভিজ্ঞতায় নিরুৎসাহিত না হয়ে থুনবার্গ আবারও গাজা ত্রাণ বহরে যুক্ত হন। তিনি যোগ দেন বৃহত্তম গাজা ত্রাণবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’তে। এতে প্রায় ৫০টি নৌযান অংশ নেয়। প্রায় ৫০০ কর্মী ৪৪টি দেশ থেকে এতে যুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আরও আছেন নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা, ইতালির আইনপ্রণেতা এবং যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও তুরস্কের অ্যাকটিভিস্টরা।
‘সুমুদ’ শব্দের অর্থ আরবিতে ‘অটলতা’ বা প্রতিরোধ। বহরটির লক্ষ্য খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রী, শিশুদের দুধ এবং পানিশোধন যন্ত্র গাজায় পৌঁছে দেওয়া। সংগঠকেরা এটিকে শান্তিপূর্ণ ও অহিংস উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেন। তারা বলেন, এর উদ্দেশ্য ইসরায়েলের ‘অবৈধ অবরোধ’ ভাঙা।
ফিলিস্তিনের গাজার ওপর ইসরায়েলের অবরোধকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা এর আয়োজন করেন। এর অংশ হিসেবেই একটি মিডিয়া ফ্লোটিলারও আয়োজন করা হয়, যেখানে শহীদুল আলমও যোগ দেন।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তিউনিসিয়া থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। এর আগে বহরটি গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে ছেড়ে আসে। পরে ৭ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়ার সিদি বু সাঈদ বন্দরে থামে। সেখান থেকে নেলসন ম্যান্ডেলার পরিবার-সন্তানরাও এতে যুক্ত হন। বহরটির লক্ষ্য হলো গাজায় খাদ্যসঙ্কটে ভোগা মানুষের জন্য জরুরি সরবরাহ পৌঁছে দেওয়া। বর্তমানে সেখানে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষে রয়েছেন।
মিডিয়া ফ্লোটিলার লক্ষ্য মূলত তথ্যের অবরোধ ভাঙা। ইসরায়েল অধিকাংশ বিদেশি সাংবাদিককে গাজায় প্রবেশে বাধা দেয়। ২০০৭ সাল থেকেই ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজায় আন্তর্জাতিক পর্যযবেক্ষকদের প্রবেশ কার্যত সীমিত।
অংশগ্রহণকারীরা সরাসরি উপকূলে পৌঁছে সেখানকার বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরতে চান। এর মধ্যে রয়েছে মানবিক বিপর্যয়, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ও অবরুদ্ধ মানুষের দৈনন্দিন জীবন। এই মিশনগুলো সমন্বয় করে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এএফসি), যা বিভিন্ন নাগরিক সমাজের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক।
ভূমধ্যসাগরের বিভিন্ন বন্দর থেকে যাত্রা শুরু হলেও পথেই চ্যালেঞ্জ আসে। তিউনিসিয়ায় ড্রোন হামলার অভিযোগ ওঠে, যার দায় আয়োজকেরা ইসরায়েলের ওপর চাপান। তবে ইসরায়েল তা অস্বীকার করে।
গতকাল বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ইসরায়েলি নৌবাহিনী অন্তত ১৩ থেকে ১৯টি নৌযান আটক করেছে। এগুলো গাজা থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল। থুনবার্গকেও আটক করা হয়েছে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো থুনবার্গকে আটক করল ইসরায়েল।
ইসরায়েল দাবি করে, তারা বৈধ অবরোধ কার্যকর করেছে। গাজা থেকে উদ্ধারকৃত নথি দেখিয়ে তারা বলে, ফ্লোটিলার আয়োজকদের হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এখনো প্রায় ২৫টির বেশি জাহাজ গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলও তাদের আটকের জন্য অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সুইডেনের নাগরিক গ্রেটা থুনবার্গ একজন জলবায়ু আন্দোলন কর্মী। তিনি কিশোর বয়সেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় আন্দোলনের জন্য আন্তর্জাতিক খ্যাতি পান। ২০০৩ সালের ৩ জানুয়ারি সুইডেনের স্টকহোমে তার জন্ম। ১৫ বছর বয়সেই তিনি তার জলবায়ু আন্দোলনের কর্মকাণ্ড শুরু করেন।
নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় গ্রেটা শুক্রবারে স্কুলে না গিয়ে সুইডিশ পার্লামেন্টের বাইরে প্রতিবাদ করা শুরু করেন। তার দাবি ছিল, বিশ্ব উষ্ণায়ন থামাতে বিশ্বের সরকারগুলোকে শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে হবে। তার এই একক প্রতিবাদ ধীরে ধীরে বিশ্বব্যাপী ‘ফ্রাইডেজ ফর ফিউচার’ আন্দোলনে রুপ নেয়। পরে এতে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ তরুণ-তরুণী অংশ নেন।
তার মা-বাবাও— অপেরা গায়িকা ম্যালেনা আর্নম্যান ও অভিনেতা স্বান্তে থুনবার্গ— তার কাজকে সমর্থন করেন। থুনবার্গ প্রকাশ্যে জানিয়েছেন যে তিনি অ্যাসপারগার সিনড্রোমে আক্রান্ত। তিনি এটিকে তার ‘সুপারপাওয়ার’ হিসেবে দেখেন, যা কোনও বিষয়ে তার মনোযোগ ও দৃঢ়তাকে জোরদার করে।
থুনবার্গ জনপ্রিয় হন জাতিসংঘে হাই-প্রোফাইল ভাষণ দিয়ে। ২০১৯ সালের জাতিসংঘ ক্লাইমেট অ্যাকশন সামিটে তার ‘হাউ ডেয়ার ইউ?’ ভাষণ ভাইরাল হয়। সেখানে তিনি বিশ্বনেতাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রতি দায়িত্ব না পালনের জন্য নিন্দা জানান। তিনি একাধিকবার নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন। ২০১৯ সালে তিনি রাইট লাইভলিহুড অ্যাওয়ার্ড পান।
সময়ের সাথে সাথে থুনবার্গের কর্মকাণ্ড পরিবেশ বিষয় ছাড়িয়ে সামাজিক ন্যায় ও মানবাধিকার পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। তিনি ইউক্রেনের পক্ষে, আদিবাসী অধিকার এবং ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে সক্রিয় হয়েছেন।
ফিলিস্তিনের পক্ষে আন্দোলন
গত কয়েক বছরে থুনবার্গ ফিলিস্তিনের পক্ষে ক্রমবর্ধমানভাবে আন্দোলন করছেন। তিনি এটিকে বৈশ্বিক ন্যায় এবং জলবায়ু সংকটের সঙ্গে যুক্ত মনে করেন। তিনি ফিলিস্তিনের পক্ষে র্যালিতে অংশ নিয়েছেন, কেফিয়াহ (ফিলিস্তিনের ঐতিহ্যবাহী স্কার্ফ) পরেছেন। গাজায় ইসরায়েলের সামরিক কর্মকাণ্ডের সমালোচনাও করেছেন, বিশেষ করে ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরুর পর।
উদাহরণস্বরূপ, ২০২৩ সালে আমস্টারডামের এক জলবায়ু র্যালিতে তিনি ‘ফিলিস্তিন স্বাধীন হবে’ ধ্বনি তোলেন এবং বলেন, ‘অধিকৃত ভূমিতে কোনো জলবায়ুগত ন্যায়বিচার নেই।’ তিনি তার জলবায়ু আন্দোলনের কর্মকাণ্ডকে ইসরায়েলের অধিকারের বিরোধের সঙ্গে যুক্ত করেছেন।
তবে কিছু ইসরায়েলি কর্মকর্তা এবং মিডিয়া প্রতিষ্ঠান থুনবার্গের ব্যপক সমালোচনা করে। তাদের অভিযোগ, তিনি ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করছেন। ২০২৪ সালে তিনি এমন অভিযোগের মুখোমুখি হন যে তিনি ইসরায়েলের নিরাপত্তা বিষয়কে হালকাভাবে দেখাচ্ছেন এবং জলবায়ু সমস্যা থেকে মনোযোগ সরাচ্ছেন।
থুনবার্গ এই অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তার অবস্থান মানবাধিকার ভিত্তিক এবং ইসরায়েলের ‘অবৈধ অবরোধ’ ও গাজায় ‘ক্ষুধাকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার’ করার বিরোধিতার ওপর ভিত্তিতে তৈরি। তার সমর্থকরাও বলেন, ফিলিস্তিনের পক্ষে গ্রেটার অবস্থান তার জলবায়ু আন্দোলন কর্মসূচির স্বাভাবিক সম্প্রসারণ।
গাজা সাহায্য বহরে থুনবার্গের অংশগ্রহণ
গ্রেটা থুনবার্গ ফিলিস্তিনি ইস্যুতে সরাসরি ভূমিকা রাখেন গাজা সাহায্য বহরের মাধ্যমে। এই বহরগুলো ইসরায়েলের নৌ অবরোধকে চ্যালেঞ্জ করে। ইসরায়েল বলে, এই অবরোধ হামাসের অস্ত্রের চালান ঠেকাতে জরুরি। কিন্তু সমালোচকেরা মনে করেন, এটি গাজায় দুর্ভিক্ষসহ মানবিক সংকটকে আরও বাড়িয়ে তুলছে।
ম্যাডলিন (জুন ২০২৫)
থুনবার্গ গাজা সাহাজ্য বহরে প্রথমবার সক্রিয়ভাবে যুক্ত হন ২০২৫ সালের জুনে। ম্যাডলিন নামের একটি জাহাজে চড়ে তিনি গাজার উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন। গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন ওই মানবিক ত্রাণ সহায়তা নৌ-যাত্রার আয়োজন করেছিল।
ইসরায়েলি বাহিনী আন্তর্জাতিক জলসীমায় জাহাজটি আটক করে। থুনবার্গসহ আরও ১১ জনকে আটক করা হয়। তাদের মধ্যে ছিলেন ফরাসি-ফিলিস্তিনি ইউরোপীয় এমইপি রিমা হাসান এবং ব্রাজিল, স্পেন ও তুরস্কের অ্যাকটিভিস্টরা।
ইসরায়েল সেই মিশনকে ‘সেলফি ইয়ট’ বলে ব্যঙ্গ করেছিল। তারা দাবি করে, এতে খুব সামান্য সাহায্য ছিল, যা একটি ট্রাকের মালামালের চেয়েও কম। ইসরায়েল সেসময় গ্রেটাদের বিরুদ্ধে ‘বৈধ’ অবরোধ ভঙ্গের অভিযোগ তোলে। অন্যদিকে থুনবার্গ এক ভিডিও বার্তায় সেই ঘটনাকে ‘অপহরণ’ বলেন। তিনি বিশ্বের সরকারগুলোকে ইসরায়েলের ওপর চাপ সৃষ্টির আহ্বান জানান।
পরে ফ্রান্সের মাধ্যমে তাকে সুইডেনে ফেরত পাঠানো হয়। সেখানেও তিনি ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডকে অবৈধ বলে অভিযোগ করেন। এই ঘটনা ২০১০ সালের ফ্লোটিলা অভিযানের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, যেখানে ইসরায়েলের হামলায় নয়জন অ্যাকটিভিস্ট নিহত হয়েছিলেন।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা (সেপ্টেম্বর–অক্টোবর ২০২৫)
প্রথম অভিজ্ঞতায় নিরুৎসাহিত না হয়ে থুনবার্গ আবারও গাজা ত্রাণ বহরে যুক্ত হন। তিনি যোগ দেন বৃহত্তম গাজা ত্রাণবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’তে। এতে প্রায় ৫০টি নৌযান অংশ নেয়। প্রায় ৫০০ কর্মী ৪৪টি দেশ থেকে এতে যুক্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে আরও আছেন নেলসন ম্যান্ডেলার নাতি মান্ডলা ম্যান্ডেলা, ইতালির আইনপ্রণেতা এবং যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও তুরস্কের অ্যাকটিভিস্টরা।
‘সুমুদ’ শব্দের অর্থ আরবিতে ‘অটলতা’ বা প্রতিরোধ। বহরটির লক্ষ্য খাদ্য, চিকিৎসা সামগ্রী, শিশুদের দুধ এবং পানিশোধন যন্ত্র গাজায় পৌঁছে দেওয়া। সংগঠকেরা এটিকে শান্তিপূর্ণ ও অহিংস উদ্যোগ হিসেবে বর্ণনা করেন। তারা বলেন, এর উদ্দেশ্য ইসরায়েলের ‘অবৈধ অবরোধ’ ভাঙা।
ফিলিস্তিনের গাজার ওপর ইসরায়েলের অবরোধকে চ্যালেঞ্জ জানাতে আন্তর্জাতিক সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মীরা এর আয়োজন করেন। এর অংশ হিসেবেই একটি মিডিয়া ফ্লোটিলারও আয়োজন করা হয়, যেখানে শহীদুল আলমও যোগ দেন।
সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি তিউনিসিয়া থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে এর যাত্রা শুরু হয়। এর আগে বহরটি গত ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে ছেড়ে আসে। পরে ৭ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়ার সিদি বু সাঈদ বন্দরে থামে। সেখান থেকে নেলসন ম্যান্ডেলার পরিবার-সন্তানরাও এতে যুক্ত হন। বহরটির লক্ষ্য হলো গাজায় খাদ্যসঙ্কটে ভোগা মানুষের জন্য জরুরি সরবরাহ পৌঁছে দেওয়া। বর্তমানে সেখানে পাঁচ লাখের বেশি মানুষ দুর্ভিক্ষে রয়েছেন।
মিডিয়া ফ্লোটিলার লক্ষ্য মূলত তথ্যের অবরোধ ভাঙা। ইসরায়েল অধিকাংশ বিদেশি সাংবাদিককে গাজায় প্রবেশে বাধা দেয়। ২০০৭ সাল থেকেই ইসরায়েলের অবরোধের কারণে গাজায় আন্তর্জাতিক পর্যযবেক্ষকদের প্রবেশ কার্যত সীমিত।
অংশগ্রহণকারীরা সরাসরি উপকূলে পৌঁছে সেখানকার বাস্তব পরিস্থিতি তুলে ধরতে চান। এর মধ্যে রয়েছে মানবিক বিপর্যয়, যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ ও অবরুদ্ধ মানুষের দৈনন্দিন জীবন। এই মিশনগুলো সমন্বয় করে ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এএফসি), যা বিভিন্ন নাগরিক সমাজের বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক।
ভূমধ্যসাগরের বিভিন্ন বন্দর থেকে যাত্রা শুরু হলেও পথেই চ্যালেঞ্জ আসে। তিউনিসিয়ায় ড্রোন হামলার অভিযোগ ওঠে, যার দায় আয়োজকেরা ইসরায়েলের ওপর চাপান। তবে ইসরায়েল তা অস্বীকার করে।
গতকাল বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ইসরায়েলি নৌবাহিনী অন্তত ১৩ থেকে ১৯টি নৌযান আটক করেছে। এগুলো গাজা থেকে প্রায় ৭০ নটিক্যাল মাইল দূরে ছিল। থুনবার্গকেও আটক করা হয়েছে। এই নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো থুনবার্গকে আটক করল ইসরায়েল।
ইসরায়েল দাবি করে, তারা বৈধ অবরোধ কার্যকর করেছে। গাজা থেকে উদ্ধারকৃত নথি দেখিয়ে তারা বলে, ফ্লোটিলার আয়োজকদের হামাসের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। এখনো প্রায় ২৫টির বেশি জাহাজ গাজার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলও তাদের আটকের জন্য অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা ও জাতিগত নিধনযজ্ঞ এবং ধ্বংসযজ্ঞের দুই বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এ সময়ে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকাসহ বিশ্বব্যাপী ফিলিস্তিন-ইসরায়েলের পক্ষে-বিপক্ষে বিক্ষোভ বেড়েছে।
১১ ঘণ্টা আগেসেবাগ্রহীতাদের কাছ থেকে মাসুদের বিরুদ্ধে অভিযোগ শোনার পর সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘মাসুদের সঙ্গে দেখা হলেই প্রায় আমি বলি, মাসুদ তুমি ভালো হয়ে যাও। কিন্তু সে এখনো পুরোপুরি ভালো হয়নি।’
২০ ঘণ্টা আগেনাটক-সিনেমার সংলাপে এক সময় শোনা যেত, ‘ঠান্ডা, না গরম?’ বড়লোক নায়ক অথবা নায়িকার বাবারা বলতেন। অথবা বলতেন গরিব নায়কের বড়লোক বন্ধু। এরপর এলো নতুন সংলাপ, ‘চা, না কফি?’—এও শোনা গেছে বড়লোকদের মুখেই। অর্থাৎ বাঙালির সংস্কৃতিতে ঢুকে গেছে কফির পোড়া পোড়া চকলেটি স্বাদ। কিন্তু সিনেমার সংলাপে ঢোকার আগে কফি তো ঢুক
১ দিন আগেপ্রতিনিধি পরিষদে সংখ্যালঘু দলনেতা হাকিম জেফরিস বলেছেন, ডেমোক্র্যাটরা ট্রাম্প প্রশাসনের এ ধরনের হুমকিতে ভীত হবে না। সরকার বন্ধ হয়ে গেলে আরও ফেডারেল কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হবে, এমন ভয়ে তারা শঙ্কিত নন।
১ দিন আগে