
.png)

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তার পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হককে তদন্ত সংস্থায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ‘হেনস্তা ও জবরদস্তিমূলক আচরণের’ অভিযোগ তুলেছেন তাঁর আইনজীবী।

জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান চলাকালে রাজধানীর রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় সেই সময় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশে (বিজিবি) কর্মরত দুই সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক বরখাস্ত মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে গুম করে মানুষকে হত্যা এবং লাশের পেট কেটে নদী-নালায় ফেলে দেওয়ার শক্তিশালী প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ।

গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেডআই খান পান্নাকে ‘স্টেট ডিফেন্স’ বা রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় গ্রেপ্তার ১৩ সেনা কর্মকর্তা পরের শুনানিতে ভার্চুয়ালি হাজিরা দেওয়ার জন্য আবেদন করেছেন।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে বিরোধী মতাদর্শের মানুষদের গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ১৩ সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে।

পুলিশ কখন আইনগতভাবে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহার করতে পারে, অর্থাৎ কখন ‘গুলি চলানো’ বৈধ—এই প্রশ্নটি নতুন করে আলোচনায় এসেছে। ২৪ এর গণ অভ্যত্থানের পর অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সহিংসতা ও বিক্ষোভ বাড়ায় এ বিতর্ক আরও তীব্র হয়েছে।

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডাদেশ প্রসঙ্গে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) বলেছে, বিচার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ শেষ হয়নি। সর্বোচ্চ আদালতের আপিলের রায় পাওয়া পর্যন্ত বিচারপ্রক্রিয়া সমাপ্ত হয়েছে বলা যায় না।

ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) গত সোমবার ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ঘনিষ্ঠ সহযোগী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনকে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দিলে শাহিনা বেগম কান্নায় ভেঙে পড়েন।

সব মিলিয়ে শেখ হাসিনার সামনে এখন তিনটি সমান্তরাল আইনগত ও রাজনৈতিক লড়াই দাঁড়িয়ে গেছে—বাংলাদেশের ভেতরে আইনি প্রতিকারের চেষ্টা, ভারতে প্রত্যর্পণ ঠেকানোর সংগ্রাম এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ন্যায়বিচারের দাবি তোলা।

জুলাইয়ের মানবতাবিরোধী অপরাধে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে সোমবার (১৭ নভেম্বর) মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মৃত্যুদন্ডের রায় দিয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রপ্রধানের এমন বিচার ও ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট ইতিহাসে এই প্রথম নয়। প্রশ্ন হলো এই ধরনের রায়ের চূড়ান্ত পরিণতি কী হয়?

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা শেখ হাসিনার রায়ে 'ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে' বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। একই সঙ্গে অন্যান্য মামলায় অভিযুক্তদের সুবিচারের দাবি জানিয়েছে দলটি।

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়কে গত বছরের আন্দোলনে ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীদের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত’ হিসেবে অভিহিত করেছে জাতিসংঘ।

জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছেন। রায় ঘোষণার পর এক্সকাভেটর নিয়ে ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কের শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িটির বাকি অর্ধেকের ভাঙতে যায় বিক্ষোভকারীরা।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রায় ঘোষিত হয়েছে। এই রায় কেবল একটি আইনি সিদ্ধান্ত নয়, বাংলাদেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই বিচারকাজ সম্পন্ন করার মাধ্যমে বাংলাদেশে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হলো।