ঢাকার বাজারে আগাম শীতের সবজি উঠতে শুরু করেছে। তবে সরবরাহ কম হওয়ায় দাম বেশ চড়া। আবার ভোজ্যতেলের বাজারও অস্থির। সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে খোলা সয়াবিন ও সুপার পাম অয়েলে।
ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানোর পক্ষে মত দিয়েছে সরকার। তবে কত টাকা বাড়বে এবং কবে থেকে এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে, সে ব্যাপারে কিছু এখনও জানানো হয়নি। এদিকে দাম বাড়তে পারে— এমন খবরে সয়াবিন তেলের বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দেশের বাজারে আবারও বাড়ানো হয়েছে সোনার দাম। ভরিপ্রতি ৩ হাজার ৬৬৩ টাকা বাড়িয়ে ২২ ক্যারেটের এক ভরি সোনার দাম ১ লাখ ৯৪ হাজার ৮৫৯ টাকা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন।
রাজধানীর বাজারগুলোতে নিত্যপণ্যের চড়া দাম সাধারণ মানুষের জীবনে বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু পণ্যের দাম সামান্য কমলেও বাজার এখনো স্বস্তিদায়ক হয়নি।
চাল-ডাল-সবজি-মাংস সবকিছুর দাম চড়া
চাল থেকে শুরু করে ডাল, আটা-ময়দা, ডিম, মুরগি, মাছ কিংবা সবজি কোনোটিরই দাম সহনীয় পর্যায়ে নেই। একেকদিন বাজার করতে এসে ক্রেতারা পড়ছেন দোটানায়—কাঁটছাট করতে গিয়ে কোনটা বাদ দিয়ে কোনটা নেবেন। ব্যবসা ভালো হচ্ছে না বলে বিক্রেতারাও ক্ষুব্ধ।
গোল বেগুন কেজিতে ১৪০ থেকে ২০০ টাকা, লম্বা বেগুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা। ঢ্যাঁড়স ও পটোল ৮০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, বরবটি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, শসা ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ থেকে ১০০ টাকা, টমেটো ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা, নতুন শিম ২২০ থেকে ২৪০ টাকা।
বাজারে সবধরনের সবজির দাম বাড়তির দিকে হলেও আলুর দাম কম। ফলে এ বছর আলুর দাম পাচ্ছেন না কৃষকরা, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তাঁরা। সেজন্য সরকারিভাবে কিছু আলু কেনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন কৃষি ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.)।
আজ শুক্রবার (২২ আগস্ট) সকালে রামপুরা, খিলক্ষেত, কারওয়ান বাজার, যাত্রাবাড়ি ঘুরে দেখা গেছে প্রায় সব ধরনের সবজির দামই ৮০ থেকে ১০০ টাকার নিচে নেই।
ছয় মাসে বস্তাপ্রতি বেড়েছে ৪০০ টাকা পর্যন্ত
রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাস দেড়েক ধরে উচ্চমূল্যে বিক্রি হচ্ছে চাল। মোটা চালের দামই এখন ৬০ টাকার বেশি। মাঝারি মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল কেজিপ্রতি ৬৫–৭০ টাকা, সরু জাতের চাল ৭৫–৮৫ টাকা এবং ভালো মানের চাল ৯০–১০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
রাজধানীর বাজারে গত সপ্তাহে প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল ১২০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে তা বেড়ে এখন ১৫০। ডিমের পাশাপাশি চাল, সবজি, পেঁয়াজ, আদা, এলাচ ও ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে। মাছের বাজারেও নেই স্বস্তি। এসব পণ্যের বাড়তি দামে হিমশিম খাচ্ছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্তরা।
দেশের ভোজ্যতেলের বাজারে পাম তেলের অংশ শতকরা ৬০ ভাগ। বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন নিয়মিত ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক ও দেশীয় বাজারের সরবরাহ ও চাহিদা পর্যবেক্ষণ করে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় কমিশনের সুপারিশে খোলা পাম তেলের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
চালের বাজার আগেই ঊর্ধ্বমুখী ছিল, এখন তাতে যুক্ত হয়েছে পেঁয়াজ, ডিম, সবজি, মসলা ও কাঁচা মরিচসহ প্রায় সব পণ্য। নিত্যপণ্যের দামের এই উল্লম্ফনে নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন।