টিকটক, রিলস, ইউটিউব কিংবা ইউটিউব শর্টস– সর্বত্র এখন ভোজপুরি গানের আধিপত্য। বিহার, পূর্ব-উত্তর প্রদেশ ও সংলগ্ন অঞ্চলের ভাষার এই গান কীভাবে বিশ্ব মাতাচ্ছে, দেখাচ্ছে ভাইরালের ভেল্কি? এই প্রশ্নের বিস্তারিত শুলুকসন্ধানের প্রয়াস এই লেখা।
মাহিসুন রাশ্তি

রিলস স্ক্রল করলে বুঝতেই পারি না কখন থাম্ব থমথম করে, আর চোখ আটকে যায় অটো-টিউন দিয়ে ভরা ভোজপুরি হিটে। কয়েক সপ্তাহ আগেও ভোজপুরি হঠাৎ পার্টির প্রাণ হয়ে উঠল। সবসময় ডাবল মিনিং আর ‘নট সো ক্লাসি’ ট্যাগ খাওয়া ভোজপুরি গান হঠাৎ কিভাবে হিট হয়ে গেল? এই লেখায় বোঝার চেষ্টা করবো কিভাবে ভোজপুরি গান হয়ে গেলো ভাইরাল আর কিভাবে ভোজপুরি ক্রেজ আমাদের না চাইতেও নাচিয়ে দিল।
আচ্ছা, আপনাদের কি কখনো এমন হয়েছে, কোনো গান হঠাৎ মাথায় ঢুকে গেছে আর বেরোয় না?
গিল্টি অ্যাজ চার্জড। এমন ঘটনা আমার সাথে ঘটেছে। আমার ও আমার বন্ধু ইভার সাথে হওয়া একটা ঘটনা বলি। ঘটনার শুরু একটি ঝগড়া দিয়ে। একে অপরের সঙ্গে কথা বন্ধ; পুরো গরম অবস্থা। পরদিন ইভা ফোন করে, কাঁদতে কাঁদতে ‘স্যরি’ বললো। আর তারপর… হঠাৎ ঘটে গেল। একজন স্বাভাবিক মানুষ এই সময়ে কী করবে? নিজে কাঁদবে নাহলে বান্ধবীর কান্না থামানোর চেষ্টা করবে। আমি কী করেছি, বলেন তো!
ও যেই মুহূর্তে ‘স্যরি’ বলল, আমার মাথায় খেলে গেলো একটি গান:
একটি ভোজপুরি গান। আমি আগে রিলস-এ দেখেছি। এই গানের অর্থও আমি জানি না। আর এতো দেখেছি যে কি বলবো, থাক!
তো, গল্পে ফিরি। ইমোশনাল ক্রাইসিসের মধ্যেই, আমি শুরু করলাম গানটা গাওয়া; যেন আমি কোনো সার্টিফায়েড ভোজপুরি পপ স্টার। আমার ফ্রেন্ড কাঁদে আর স্যরি বলে আর আমি বলি ‘ববি দেহ মেহ ছুঁয়া কে’। ইভা এক পর্যায়ে হাসতে শুরু করল। এরপর আমিও হাসতে শুরু করলাম। যাক ঝগড়াটা মিটলো!
এখনো, যখন রিলগুলো দেখি, আমি হাসতে আর নাচতে বাধ্য হই। এই দেখা যায় বাপ-ছেলে নাচে, আবার দেখা যায় অরুণাচল প্রদেশের কেউ নাচে। অবিশ্বাস্য হলেও কতো সহজে কয়েকটা অজানা শব্দ আর এক ঝাঁক বিট আমাদের মাথা দখল করে নিতে পারে, হাসি ফোটাতে পারে, আর ইমোশনাল স্পেসকে এক মিনি ড্যান্স পার্টিতে রূপান্তরিত করতে পারে।
ভোজপুরি গানের ‘রিল ওয়েভ’ কিন্তু কোনো ক্লাসিক ফোক গান দিয়ে আসেনি, বরং শুরু হল একটা ডান্স ট্রেন্ড দিয়ে। সেই ভাইরাল রিল ছিল ‘সাজ কে সওয়ার কে ’–পাওয়ান সিং ও খেসারি লাল ইয়াদাভের হুক স্টেপ দিয়ে। আপনারাও দেখেছেন নিশ্চয়ই; দুটো সাদা টিশার্ট পড়া লোক সাপের মতো নাচছে?
এইক্লিপটা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ল যে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ। যারা আগে ভোজপুরি গান শোনেনি, তারাও হঠাৎ ‘Use Audio’ চাপতে লাগল, পুরো গানটা খুঁজে বের করল, আর গানের লিরিক্স বোঝার আগেই নাচতে শুরু করলো। ভাষার বাধাকে তোয়াক্কা না করে বিটের মন্ত্রে মানুষকে টানতে শুরু করলো একটি গান।
মজার বিষয় হলো, সবাই যখন এই রিল বা গানটা নিয়ে মজা ও নাচানাচিতে ব্যস্ত তখনই আবিষ্কৃত হলো ‘আরেহ! এ তো ভোজপুরি গান!’ - খুব কম মানুষই বুঝেছে যে, যারা গানটা নিয়ে মজা করেছে, বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেছে, বা বিয়ে বা পার্টিতে নেচেছে, সেই গানগুলোও আসলে ভোজপুরি।
এরকম গান কিন্তু নতুন না; আগে থেকেই ট্রেন্ডে ছিল যা আমরা হয়তো এড়িয়ে গেছি বা খোঁজাখুঁজি করিনি। যেমন, ‘কাইসে বানি’ । এই গান সালমান খানের দাবাং এর মাধ্যমে ট্রেন্ডিংয়ে এলেও, সরল অথচ ফানি গান কিন্তু ভোজপুরি। ফোক আর ইংরেজি মেটাফোরে ভরা গানটির মাঝে আছে গভীর রসবোধ। আর ‘তোরা লেহেঙ্গা উঠা দে রিমোট সে’ নামটা এতই বেপরোয়া যে অনেকেই ভাববে এটা মিম গান… কিন্তু না, এটাও ভোজপুরির দান।
আরও আছে। ‘ললিলপ লাগেলু’—রিলসের আগেও বিশ্বজুড়ে দেশি এ্যান্থেম হয়ে উঠেছিল। আছে রিঙ্কিয়া কে পাপা যা কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের রিয়্যাকশন ভিডিওর কারণে ভাইরাল হয়েছিল; কারণ হুকটা এত মজার যে সবাই নাচতে বাধ্য।
এইসব গান সেই সাউন্ড জগতের অংশ, যেখানে ফোক রুট, আধুনিক প্রোডাকশন, ডাবল মিনিং লিরিক্স এবং চরম ক্যাচি রিদম একসাথে মিশে একাকার।
রিল ক্রেজ শুধু একটি গানকে জনপ্রিয় করেছে না; বরং মিউজিকের এক ভিন্ন ল্যান্ডস্কেপ আমাদের সামনে খুলে দিয়েছে। যা আগে ‘রিজিওনাল’ বা ‘লো’ ক্যাটাগরি হিসেবে অবহেলা করা হত, তা এখন ‘গিলটি প্লেজার’ হয়ে গেছে বার্থডে পার্টি, বিয়ে, ক্লাস পার্টি, আর হ্যাঁ, কলেজ স্টেজেও, যেখানে মানুষ আগে নাচে, পরে গুগল করে গানের অর্থ খুঁজে।
ভোজপুরি গান মূলত বিহার, পূর্ব উত্তর প্রদেশ ও সংলগ্ন অঞ্চলের ভাষার গান। ঐতিহ্যগতভাবে এই সংগীতের জগৎ গড়ে উঠেছিল গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির ওপর যা সন্তানের জন্ম, বিয়ে, মৌসুমি কাজ, কৃষিকাজের ছন্দ, আর উৎসব-অনুষ্ঠানের গানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা।
কিন্তু ভোজপুরি সংগীত সেই শেকড় ছাড়িয়ে আরও বহু দূর পৌঁছে গেছে। ভোজপুরি সিনেমার উত্থান, সহজলভ্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, দেশ–বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অভিবাসী শ্রমজীবী দর্শক, আর স্বল্প বাজেটে বিপুল উৎপাদন—এই সবকিছুর মিলিত প্রভাবে ভোজপুরি সংগীত আজ এক অত্যন্ত গতিশীল সাংস্কৃতিক রূপে বদলে গেছে। সব থেকে বড় ব্যাপার হলো ইন্টারনেটের যুগে ভোজপুরি গান পেয়েছে এক নতুন আঙিনা। ভোজপুরি গান এখন একই সঙ্গে আঞ্চলিক, বাণিজ্যিক এবং আশ্চর্য রকমের বৈশ্বিক—যেখানে লোকজ ঐতিহ্য, বাজারচাহিদা, প্রযুক্তি, আর অভিবাসী জীবনের অভিজ্ঞতা একসাথে মিশে নতুন এক সাউন্ডস্কেপ তৈরি করেছে।
ভোজপুরি সঙ্গীত এক স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক কণ্ঠ তৈরি করেছে। কোনোভাবেই আর আঞ্চলিক বা তুচ্ছ বিনোদন বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। গবেষক ড. অতুল কুমার কানোজিয়া মিথ, হিস্ট্রি, এন্ড রেজিস্টেন্স: পোস্টকলোনিয়াল ন্যারেটিভস ইন ভোজপুরি এন্ড আওয়াধি রিজিওনাল সিনেমাজ নামের গবেষণাপত্রে দেখিয়েছেন যে ভোজপুরি ও আওধি উভয় ধারার মিউজিক মূলত মিথ, প্রতিরোধ ও জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির দীর্ঘ ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে যা বহুদিন ধরে মূলধারার ভারতীয় সিনেমার ছায়ার বাইরে টিকে ছিল। রত্নাকর ত্রিপাঠীর ম্যাপিং দ্য ইনভিজিবল ওয়ার্ল্ড অব ভোজপুরি সিনেমা এন্ড ইটস চেঞ্জিং অডিয়েন্সও ভোজপুরি সিনেমার এক ‘অদৃশ্য জগত’-এর চিত্রায়ণ করে যা দশকের পর দশক বলিউড-নির্ভর শিল্পের সমান্তরালে থাকলেও কখনোই প্রকৃত স্বীকৃতি পায়নি। অদ্ভুতভাবে, এই দীর্ঘ ঐতিহাসিক প্রান্তিকতা ভোজপুরি সঙ্গীতকে দুর্বল না করে নাই বরং এমন এক শক্তভিত্তি তৈরি করেছে যে তার ওপর দাঁড়িয়ে পরে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এর ব্যাপক বিস্ফোরণ সম্ভব হয়েছে।
গ্রামীণ পরিবার, অভিবাসী শ্রমিক এবং যারা গ্রাম আর শহরের মধ্যে পড়ে থাকে তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতাই মূলত ভোজপুরি সংগীতের বিষয়। বিচ্ছেদ, বাসনা, নস্টালজিয়া এবং স্থানচ্যুতি—এই থিমগুলো প্রায়ই গানগুলোতে দেখা যায়। এ বিষয়গুলো মূলধারার গল্পে প্রায়শ বাদ পড়া ভোজপুরীভাষীদেরকে একটি আবেগগত পরিচয় দেয়। ত্রিপাঠী তাঁর শ্রোতা-সমীক্ষায় তুলে ধরেছেন: একটি বিস্তীর্ণ, ছড়ানো জনসংখ্যা যাদের কাছে ভোজপুরি সংগীত শুধুমাত্র বিনোদন নয়, সাংস্কৃতিক সংযোগের মাধ্যমও।
যদিও বলিউড বহু দশক ধরে ফ্লাশি প্রোডাকশন, তারকা ক্ষমতা এবং বিশাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের মাধ্যমে প্রাধান্য বজায় রেখেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল ল্যান্ডস্কেপ শাসন করছে ভোজপুরি সংগীত। বলিউডের গানগুলো দীর্ঘ বিল্ড-আপ এবং ন্যারেটিভ ভিত্তিক স্ট্রাকচারের কারণে, রিল বা টিকটকের সংক্ষিপ্ত, সরাসরি এবং পাঞ্চি তালের সঙ্গে সহজে খাপ খায় না। কিন্তু ভোজপুরি গান খাপ খায় পুরোপুরি। তাদের হুক গানের শুরু হতেই চলে আসে যা দর্শকের মাথায় গেঁথে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। গানের বিটগুলো খুব জোরালো—এমন বিট যে শরীর নিজে থেকেই নেচে ওঠে। গানগুলোতে আবেগও লুকিয়ে বা ঘুরিয়ে বলা হয় না। খুব সোজাসাপ্টা ও খোলামেলাভাবেই গানের লিরিক লেখা। হ্যা! ডাবল মিনিংও আছে, কিন্তু সহজ মানে তো ভোজপুরিয়ানদের জন্য সহজ।
এই পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো ডিজিটাল সংখ্যা। খেসারি লাল যাদবের ‘সাজ কে সওয়ার কে’ গানের ভিউ শুধু ইউটিউবেই ৫৬০+ মিলিয়নেরও বেশি। একটি আঞ্চলিক ভাষার গান হিসেবে অভূতপূর্ব। অথচ এই ভাষার গান আগে মেইনস্ট্রিমে আসতেই সংগ্রাম করত। একইভাবে, পাওয়ান সিংয়ের ‘সরি সরি’ ৩৩+ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ হয়েছে এবং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় জনপ্রিয় অডিও হয়ে উঠেছে। এই সংখ্যাগুলো এক বাস্তবতা দেখাচ্ছে যা বলিউড আর উপেক্ষা করতে পারে না: আজকাল ভাইরাল হওয়াটা মূলধারার সিনেমার উপর নির্ভর করছে না, নির্ভর করছে সেই রিদমে যা শুনলে মানুষ স্বাভাবিকভাবে নাচতে শুরু করে। আর এক্ষেত্রে, ভোজপুরি সংগীতের তীব্র, ক্যাচি, হাই এনার্জি বিটগুলো সহজেই প্রাধান্য ধরে রাখে।
এই পরিবর্তন থেকে উঠে আসা গল্প ড. কানোজিয়ার ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে মেলে: আঞ্চলিক মিডিয়া, যা একসময় প্রান্তে ঠেলা হয়েছিল, এখন শক্তি পাচ্ছে মূলধারাকে নকল করে নয়, বরং নিজের সাংস্কৃতিক ব্যাকরণে ভর দিয়ে। ভোজপুরি সংগীতের উত্থান কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়; এটি ইতিহাস, অভিবাসন, লোকধারা, আবেগগত গ্রহণযোগ্যতা এবং সর্বোপরি সেই বিটের ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা শ্রোতাকে শান্ত থাকতে দেয় না। ভোজপুরি গানকে একধরনের প্রতিরোধের রূপ, যা কেবল তার নিখুঁত মঞ্চ খুঁজে পেয়েছে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ধারার কেন্দ্রবিন্দু বদলে গেছে। একসময় যেসব গান বলত শ্রমের ছন্দ, বা ভক্তি কিংবা অভিবাসী জীবনের টানাপোড়েন, সেই ভোজপুরি গানের জগৎ ভর করে আছে জমকালো ভিজ্যুয়াল, রোমান্টিকতা, নাটকীয় অটো-টিউন আর ভাইরাল হওয়ার জন্য তৈরি নির্দিষ্ট ফর্মুলায়। ‘গঙ্গা মাইয়া তোহে পিয়ারি ছড়াইবো’ - ১৯৬৩ সালের মুক্তি পাওয়া সিনেমার গান। গানটির সাথে জড়িয়ে ছিল সাথে ভক্তি, প্রেম। তা রিপ্লেসড হয়ে গেলো ২০১৯ সালের মুক্তি পাওয়া ‘হ্যালো কউন,’ যা পেয়েছিলো ১ বিলিয়ন ভিউ। যাহোক, আমার বক্তব্য এমন না যে ‘আগেই ভালো ছিলাম!’; বরং এইটা দেখানো যে ভোজপুরি কিভাবে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গেলো; ভাইরাল ট্রেন্ডের জোয়ারে ভেসে গেলো।
ভোজপুরি গানের একটা খ্যাতি বহুদিন ধরেই আছে যে ধামাকা বিট, আর অটো টিউন দিয়ে ভরা। ভোজপুরির গানের নেট কাঁপানো ভাইরালিটির কারণে স্বয়ং ভাইরাল ইয়াশরাজ মুখাতে একটি গান বানাতে বাধ্য হয়েছিলেন। যশরাজের মতে অনেকখানি অটোটিউন, কিছু নারীদের পোশাকের নাম, একটু কোমড় দুলানোর আলাপ, আর হ্যাঁ! ‘হেই হেই, হৈ হৈ’ আর একটু নারী কণ্ঠে ‘উফফ, হ্যালো, ওহ নো’ ইত্যাদি।
‘তোরাহ্ লেহেঙ্গা উঠা দে রিমোট সে’, ‘ললিপপ লাগেলু’, ‘হুক রাজা জি’র মতো গানের জন্য অনেকেই ধারাটাকে ‘লো-ব্রাউ’ বলে উড়িয়ে দিত। কিন্তু রিল কালচার ছবিটা পুরো বদলে দিয়েছে। ইনস্টাগ্রাম বা টিকটকে কোনো গানের ১৫ সেকেন্ডের ক্লিপ ঢুকলেই সবাই আগের সব নাক-সিটকানো ভুলে একেবারে তাল মেলাতে শুরু করেছে। এখন আর “রিজ্” আছে কি নেই, সেই বিচার থাকে নেই। শুধু বিটটা আপনাকে নাচাতে পারল কি না এটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ।
আর আমরা সবাই? একসাথে— ভাইবিং!

রিলস স্ক্রল করলে বুঝতেই পারি না কখন থাম্ব থমথম করে, আর চোখ আটকে যায় অটো-টিউন দিয়ে ভরা ভোজপুরি হিটে। কয়েক সপ্তাহ আগেও ভোজপুরি হঠাৎ পার্টির প্রাণ হয়ে উঠল। সবসময় ডাবল মিনিং আর ‘নট সো ক্লাসি’ ট্যাগ খাওয়া ভোজপুরি গান হঠাৎ কিভাবে হিট হয়ে গেল? এই লেখায় বোঝার চেষ্টা করবো কিভাবে ভোজপুরি গান হয়ে গেলো ভাইরাল আর কিভাবে ভোজপুরি ক্রেজ আমাদের না চাইতেও নাচিয়ে দিল।
আচ্ছা, আপনাদের কি কখনো এমন হয়েছে, কোনো গান হঠাৎ মাথায় ঢুকে গেছে আর বেরোয় না?
গিল্টি অ্যাজ চার্জড। এমন ঘটনা আমার সাথে ঘটেছে। আমার ও আমার বন্ধু ইভার সাথে হওয়া একটা ঘটনা বলি। ঘটনার শুরু একটি ঝগড়া দিয়ে। একে অপরের সঙ্গে কথা বন্ধ; পুরো গরম অবস্থা। পরদিন ইভা ফোন করে, কাঁদতে কাঁদতে ‘স্যরি’ বললো। আর তারপর… হঠাৎ ঘটে গেল। একজন স্বাভাবিক মানুষ এই সময়ে কী করবে? নিজে কাঁদবে নাহলে বান্ধবীর কান্না থামানোর চেষ্টা করবে। আমি কী করেছি, বলেন তো!
ও যেই মুহূর্তে ‘স্যরি’ বলল, আমার মাথায় খেলে গেলো একটি গান:
একটি ভোজপুরি গান। আমি আগে রিলস-এ দেখেছি। এই গানের অর্থও আমি জানি না। আর এতো দেখেছি যে কি বলবো, থাক!
তো, গল্পে ফিরি। ইমোশনাল ক্রাইসিসের মধ্যেই, আমি শুরু করলাম গানটা গাওয়া; যেন আমি কোনো সার্টিফায়েড ভোজপুরি পপ স্টার। আমার ফ্রেন্ড কাঁদে আর স্যরি বলে আর আমি বলি ‘ববি দেহ মেহ ছুঁয়া কে’। ইভা এক পর্যায়ে হাসতে শুরু করল। এরপর আমিও হাসতে শুরু করলাম। যাক ঝগড়াটা মিটলো!
এখনো, যখন রিলগুলো দেখি, আমি হাসতে আর নাচতে বাধ্য হই। এই দেখা যায় বাপ-ছেলে নাচে, আবার দেখা যায় অরুণাচল প্রদেশের কেউ নাচে। অবিশ্বাস্য হলেও কতো সহজে কয়েকটা অজানা শব্দ আর এক ঝাঁক বিট আমাদের মাথা দখল করে নিতে পারে, হাসি ফোটাতে পারে, আর ইমোশনাল স্পেসকে এক মিনি ড্যান্স পার্টিতে রূপান্তরিত করতে পারে।
ভোজপুরি গানের ‘রিল ওয়েভ’ কিন্তু কোনো ক্লাসিক ফোক গান দিয়ে আসেনি, বরং শুরু হল একটা ডান্স ট্রেন্ড দিয়ে। সেই ভাইরাল রিল ছিল ‘সাজ কে সওয়ার কে ’–পাওয়ান সিং ও খেসারি লাল ইয়াদাভের হুক স্টেপ দিয়ে। আপনারাও দেখেছেন নিশ্চয়ই; দুটো সাদা টিশার্ট পড়া লোক সাপের মতো নাচছে?
এইক্লিপটা এমনভাবে ছড়িয়ে পড়ল যে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে মিলিয়ন মিলিয়ন ভিউ। যারা আগে ভোজপুরি গান শোনেনি, তারাও হঠাৎ ‘Use Audio’ চাপতে লাগল, পুরো গানটা খুঁজে বের করল, আর গানের লিরিক্স বোঝার আগেই নাচতে শুরু করলো। ভাষার বাধাকে তোয়াক্কা না করে বিটের মন্ত্রে মানুষকে টানতে শুরু করলো একটি গান।
মজার বিষয় হলো, সবাই যখন এই রিল বা গানটা নিয়ে মজা ও নাচানাচিতে ব্যস্ত তখনই আবিষ্কৃত হলো ‘আরেহ! এ তো ভোজপুরি গান!’ - খুব কম মানুষই বুঝেছে যে, যারা গানটা নিয়ে মজা করেছে, বন্ধুদের সাথে শেয়ার করেছে, বা বিয়ে বা পার্টিতে নেচেছে, সেই গানগুলোও আসলে ভোজপুরি।
এরকম গান কিন্তু নতুন না; আগে থেকেই ট্রেন্ডে ছিল যা আমরা হয়তো এড়িয়ে গেছি বা খোঁজাখুঁজি করিনি। যেমন, ‘কাইসে বানি’ । এই গান সালমান খানের দাবাং এর মাধ্যমে ট্রেন্ডিংয়ে এলেও, সরল অথচ ফানি গান কিন্তু ভোজপুরি। ফোক আর ইংরেজি মেটাফোরে ভরা গানটির মাঝে আছে গভীর রসবোধ। আর ‘তোরা লেহেঙ্গা উঠা দে রিমোট সে’ নামটা এতই বেপরোয়া যে অনেকেই ভাববে এটা মিম গান… কিন্তু না, এটাও ভোজপুরির দান।
আরও আছে। ‘ললিলপ লাগেলু’—রিলসের আগেও বিশ্বজুড়ে দেশি এ্যান্থেম হয়ে উঠেছিল। আছে রিঙ্কিয়া কে পাপা যা কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের রিয়্যাকশন ভিডিওর কারণে ভাইরাল হয়েছিল; কারণ হুকটা এত মজার যে সবাই নাচতে বাধ্য।
এইসব গান সেই সাউন্ড জগতের অংশ, যেখানে ফোক রুট, আধুনিক প্রোডাকশন, ডাবল মিনিং লিরিক্স এবং চরম ক্যাচি রিদম একসাথে মিশে একাকার।
রিল ক্রেজ শুধু একটি গানকে জনপ্রিয় করেছে না; বরং মিউজিকের এক ভিন্ন ল্যান্ডস্কেপ আমাদের সামনে খুলে দিয়েছে। যা আগে ‘রিজিওনাল’ বা ‘লো’ ক্যাটাগরি হিসেবে অবহেলা করা হত, তা এখন ‘গিলটি প্লেজার’ হয়ে গেছে বার্থডে পার্টি, বিয়ে, ক্লাস পার্টি, আর হ্যাঁ, কলেজ স্টেজেও, যেখানে মানুষ আগে নাচে, পরে গুগল করে গানের অর্থ খুঁজে।
ভোজপুরি গান মূলত বিহার, পূর্ব উত্তর প্রদেশ ও সংলগ্ন অঞ্চলের ভাষার গান। ঐতিহ্যগতভাবে এই সংগীতের জগৎ গড়ে উঠেছিল গ্রামীণ লোকসংস্কৃতির ওপর যা সন্তানের জন্ম, বিয়ে, মৌসুমি কাজ, কৃষিকাজের ছন্দ, আর উৎসব-অনুষ্ঠানের গানের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা।
কিন্তু ভোজপুরি সংগীত সেই শেকড় ছাড়িয়ে আরও বহু দূর পৌঁছে গেছে। ভোজপুরি সিনেমার উত্থান, সহজলভ্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম, দেশ–বিদেশে ছড়িয়ে থাকা অভিবাসী শ্রমজীবী দর্শক, আর স্বল্প বাজেটে বিপুল উৎপাদন—এই সবকিছুর মিলিত প্রভাবে ভোজপুরি সংগীত আজ এক অত্যন্ত গতিশীল সাংস্কৃতিক রূপে বদলে গেছে। সব থেকে বড় ব্যাপার হলো ইন্টারনেটের যুগে ভোজপুরি গান পেয়েছে এক নতুন আঙিনা। ভোজপুরি গান এখন একই সঙ্গে আঞ্চলিক, বাণিজ্যিক এবং আশ্চর্য রকমের বৈশ্বিক—যেখানে লোকজ ঐতিহ্য, বাজারচাহিদা, প্রযুক্তি, আর অভিবাসী জীবনের অভিজ্ঞতা একসাথে মিশে নতুন এক সাউন্ডস্কেপ তৈরি করেছে।
ভোজপুরি সঙ্গীত এক স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক কণ্ঠ তৈরি করেছে। কোনোভাবেই আর আঞ্চলিক বা তুচ্ছ বিনোদন বলে উড়িয়ে দেওয়া যায় না। গবেষক ড. অতুল কুমার কানোজিয়া মিথ, হিস্ট্রি, এন্ড রেজিস্টেন্স: পোস্টকলোনিয়াল ন্যারেটিভস ইন ভোজপুরি এন্ড আওয়াধি রিজিওনাল সিনেমাজ নামের গবেষণাপত্রে দেখিয়েছেন যে ভোজপুরি ও আওধি উভয় ধারার মিউজিক মূলত মিথ, প্রতিরোধ ও জনগোষ্ঠীর নিজস্ব সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তির দীর্ঘ ইতিহাস থেকে উঠে এসেছে যা বহুদিন ধরে মূলধারার ভারতীয় সিনেমার ছায়ার বাইরে টিকে ছিল। রত্নাকর ত্রিপাঠীর ম্যাপিং দ্য ইনভিজিবল ওয়ার্ল্ড অব ভোজপুরি সিনেমা এন্ড ইটস চেঞ্জিং অডিয়েন্সও ভোজপুরি সিনেমার এক ‘অদৃশ্য জগত’-এর চিত্রায়ণ করে যা দশকের পর দশক বলিউড-নির্ভর শিল্পের সমান্তরালে থাকলেও কখনোই প্রকৃত স্বীকৃতি পায়নি। অদ্ভুতভাবে, এই দীর্ঘ ঐতিহাসিক প্রান্তিকতা ভোজপুরি সঙ্গীতকে দুর্বল না করে নাই বরং এমন এক শক্তভিত্তি তৈরি করেছে যে তার ওপর দাঁড়িয়ে পরে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে এর ব্যাপক বিস্ফোরণ সম্ভব হয়েছে।
গ্রামীণ পরিবার, অভিবাসী শ্রমিক এবং যারা গ্রাম আর শহরের মধ্যে পড়ে থাকে তাদের বাস্তব অভিজ্ঞতাই মূলত ভোজপুরি সংগীতের বিষয়। বিচ্ছেদ, বাসনা, নস্টালজিয়া এবং স্থানচ্যুতি—এই থিমগুলো প্রায়ই গানগুলোতে দেখা যায়। এ বিষয়গুলো মূলধারার গল্পে প্রায়শ বাদ পড়া ভোজপুরীভাষীদেরকে একটি আবেগগত পরিচয় দেয়। ত্রিপাঠী তাঁর শ্রোতা-সমীক্ষায় তুলে ধরেছেন: একটি বিস্তীর্ণ, ছড়ানো জনসংখ্যা যাদের কাছে ভোজপুরি সংগীত শুধুমাত্র বিনোদন নয়, সাংস্কৃতিক সংযোগের মাধ্যমও।
যদিও বলিউড বহু দশক ধরে ফ্লাশি প্রোডাকশন, তারকা ক্ষমতা এবং বিশাল ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমের মাধ্যমে প্রাধান্য বজায় রেখেছে, সাম্প্রতিক সময়ে ভাইরাল ল্যান্ডস্কেপ শাসন করছে ভোজপুরি সংগীত। বলিউডের গানগুলো দীর্ঘ বিল্ড-আপ এবং ন্যারেটিভ ভিত্তিক স্ট্রাকচারের কারণে, রিল বা টিকটকের সংক্ষিপ্ত, সরাসরি এবং পাঞ্চি তালের সঙ্গে সহজে খাপ খায় না। কিন্তু ভোজপুরি গান খাপ খায় পুরোপুরি। তাদের হুক গানের শুরু হতেই চলে আসে যা দর্শকের মাথায় গেঁথে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট। গানের বিটগুলো খুব জোরালো—এমন বিট যে শরীর নিজে থেকেই নেচে ওঠে। গানগুলোতে আবেগও লুকিয়ে বা ঘুরিয়ে বলা হয় না। খুব সোজাসাপ্টা ও খোলামেলাভাবেই গানের লিরিক লেখা। হ্যা! ডাবল মিনিংও আছে, কিন্তু সহজ মানে তো ভোজপুরিয়ানদের জন্য সহজ।
এই পরিবর্তনের সবচেয়ে বড় প্রমাণ হলো ডিজিটাল সংখ্যা। খেসারি লাল যাদবের ‘সাজ কে সওয়ার কে’ গানের ভিউ শুধু ইউটিউবেই ৫৬০+ মিলিয়নেরও বেশি। একটি আঞ্চলিক ভাষার গান হিসেবে অভূতপূর্ব। অথচ এই ভাষার গান আগে মেইনস্ট্রিমে আসতেই সংগ্রাম করত। একইভাবে, পাওয়ান সিংয়ের ‘সরি সরি’ ৩৩+ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ হয়েছে এবং সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ায় জনপ্রিয় অডিও হয়ে উঠেছে। এই সংখ্যাগুলো এক বাস্তবতা দেখাচ্ছে যা বলিউড আর উপেক্ষা করতে পারে না: আজকাল ভাইরাল হওয়াটা মূলধারার সিনেমার উপর নির্ভর করছে না, নির্ভর করছে সেই রিদমে যা শুনলে মানুষ স্বাভাবিকভাবে নাচতে শুরু করে। আর এক্ষেত্রে, ভোজপুরি সংগীতের তীব্র, ক্যাচি, হাই এনার্জি বিটগুলো সহজেই প্রাধান্য ধরে রাখে।
এই পরিবর্তন থেকে উঠে আসা গল্প ড. কানোজিয়ার ভবিষ্যদ্বাণীর সঙ্গে মেলে: আঞ্চলিক মিডিয়া, যা একসময় প্রান্তে ঠেলা হয়েছিল, এখন শক্তি পাচ্ছে মূলধারাকে নকল করে নয়, বরং নিজের সাংস্কৃতিক ব্যাকরণে ভর দিয়ে। ভোজপুরি সংগীতের উত্থান কোনো আকস্মিক ঘটনা নয়; এটি ইতিহাস, অভিবাসন, লোকধারা, আবেগগত গ্রহণযোগ্যতা এবং সর্বোপরি সেই বিটের ওপর ভিত্তি করে তৈরি, যা শ্রোতাকে শান্ত থাকতে দেয় না। ভোজপুরি গানকে একধরনের প্রতিরোধের রূপ, যা কেবল তার নিখুঁত মঞ্চ খুঁজে পেয়েছে।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই ধারার কেন্দ্রবিন্দু বদলে গেছে। একসময় যেসব গান বলত শ্রমের ছন্দ, বা ভক্তি কিংবা অভিবাসী জীবনের টানাপোড়েন, সেই ভোজপুরি গানের জগৎ ভর করে আছে জমকালো ভিজ্যুয়াল, রোমান্টিকতা, নাটকীয় অটো-টিউন আর ভাইরাল হওয়ার জন্য তৈরি নির্দিষ্ট ফর্মুলায়। ‘গঙ্গা মাইয়া তোহে পিয়ারি ছড়াইবো’ - ১৯৬৩ সালের মুক্তি পাওয়া সিনেমার গান। গানটির সাথে জড়িয়ে ছিল সাথে ভক্তি, প্রেম। তা রিপ্লেসড হয়ে গেলো ২০১৯ সালের মুক্তি পাওয়া ‘হ্যালো কউন,’ যা পেয়েছিলো ১ বিলিয়ন ভিউ। যাহোক, আমার বক্তব্য এমন না যে ‘আগেই ভালো ছিলাম!’; বরং এইটা দেখানো যে ভোজপুরি কিভাবে রূপান্তরের মধ্য দিয়ে গেলো; ভাইরাল ট্রেন্ডের জোয়ারে ভেসে গেলো।
ভোজপুরি গানের একটা খ্যাতি বহুদিন ধরেই আছে যে ধামাকা বিট, আর অটো টিউন দিয়ে ভরা। ভোজপুরির গানের নেট কাঁপানো ভাইরালিটির কারণে স্বয়ং ভাইরাল ইয়াশরাজ মুখাতে একটি গান বানাতে বাধ্য হয়েছিলেন। যশরাজের মতে অনেকখানি অটোটিউন, কিছু নারীদের পোশাকের নাম, একটু কোমড় দুলানোর আলাপ, আর হ্যাঁ! ‘হেই হেই, হৈ হৈ’ আর একটু নারী কণ্ঠে ‘উফফ, হ্যালো, ওহ নো’ ইত্যাদি।
‘তোরাহ্ লেহেঙ্গা উঠা দে রিমোট সে’, ‘ললিপপ লাগেলু’, ‘হুক রাজা জি’র মতো গানের জন্য অনেকেই ধারাটাকে ‘লো-ব্রাউ’ বলে উড়িয়ে দিত। কিন্তু রিল কালচার ছবিটা পুরো বদলে দিয়েছে। ইনস্টাগ্রাম বা টিকটকে কোনো গানের ১৫ সেকেন্ডের ক্লিপ ঢুকলেই সবাই আগের সব নাক-সিটকানো ভুলে একেবারে তাল মেলাতে শুরু করেছে। এখন আর “রিজ্” আছে কি নেই, সেই বিচার থাকে নেই। শুধু বিটটা আপনাকে নাচাতে পারল কি না এটাই এখন গুরুত্বপূর্ণ।
আর আমরা সবাই? একসাথে— ভাইবিং!

দেশের ডিজিটাল স্পেসজুড়ে এখন চলছে বটের রাজত্ব। বিটিভির ভাষায় বললে বট আইডির বাম্পার ফলন। ১৬ কোটি মানুষের ৩২ কোটি বট। মহা সমারোহে চলছে ‘একটি মানুষ একটি বট আইডি’ প্রকল্প। চলুন জানি, নানা ধরণের বটের কর্মকান্ড; ঘুরে আসি বাংলার ডিজিটাল বটমূল।
২ দিন আগে
শূন্য দশক বাংলা মিউজিকের একটা ক্রান্তিকাল। নিউজিকে নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাব এবং ট্রাডিশনাল মিউজিকের নতুন উপস্থাপনের দশক। শিরিনের বিখ্যাত গান পাঞ্জাবিওয়ালাকে কেন্দ্র করে, শূন্য দশকের ফোক ফিউশন নিয়ে এই লেখা।
৭ দিন আগে
আজ বিশ্ব টয়লেট দিবস। টয়লেট বিষয়ে দার্শনিকেরা রহস্যজনকভাবে নীরব। কিন্তু কেন?—জিজ্ঞাসার উত্তর খোজার চেষ্টা এই লেখা।
৯ দিন আগে
আজ বিশ্ব টয়লেট দিবস। শিবরাম থেকে স্লাভয় জিজেক— নানা ধরণের টয়লেট চিন্তা ও টয়লেট সম্পর্কিত চিন্তা নিয়ে এই লেখা।
৯ দিন আগে