বাউল আবুল সরকারের ‘আল্লাহদ্রোহী, অবমাননাকর ও ঈমান-বিধ্বংসী’ বক্তব্যের কারণে সৃষ্ট ক্ষোভের জেরে তাঁর গ্রেপ্তার হওয়াকে আইনের শাসন রক্ষার স্বস্তিদায়ক পদক্ষেপ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক। একইসঙ্গে তিনি বাউলদের ওপর হামলার ঘটনা ‘উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠীর কাজ’ বলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মন্তব্যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) এক বিবৃতিতে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, ‘এমন বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। জনগণের ন্যায্য দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তার গ্রেপ্তার আইনের শাসন রক্ষারই স্বস্তিদায়ক পদক্ষেপ।’
এর আগে গত বুধবার ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির কার্যালয় উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘বাউলরা বাংলাদেশের আবহমান সংস্কৃতি, গ্রাম বাংলার সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ, যারা মাঠে-ঘাটে-প্রান্তরে গান গেয়ে বেড়ান। তাদের ওপর হামলা উগ্র ধর্মান্ধদের কাজ। এটা সঠিক নয়। এই ধরনের হিংসার পথ বেছে নেওয়া কারো কাম্য নয়। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানাই।’
এর পরদিন বিবৃতি দেন মাওলানা মামুনুল হক। বিবৃতিতে তিনি বিএনপির নাম উল্লেখ না করে বলেন, ‘একটি রাজনৈতিক দল, কিছু বুদ্ধিজীবী ও ইসলামবিরোধী চক্র আল্লাহর প্রতি চরম অবমাননাকর বক্তব্যকে আড়াল করে কুখ্যাত এই বাউলের পক্ষাবলম্বন করছে।’ এমনকি, একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দলের মহাসচিব ঠাকুরগাঁওয়ের ঘটনাকে কেন্দ্র করে তৌহিদী জনতার ন্যায্য প্রতিবাদকে ‘উগ্রবাদী-ধর্মান্ধ চক্রের কাজ’ বলেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মামুনুল হক অভিযোগ করেন, আবুল সরকারের পক্ষাবলম্বী সব গোষ্ঠী অপরাধীর ধর্মবিরোধী বক্তব্য নিয়ে একটি শব্দও উচ্চারণ না করে উল্টো মুসলিম জনতার স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদকে ‘উগ্রবাদ’ বলছে, যা বিগত ফ্যাসিবাদী ভাষাচর্চারই পুনরাবৃত্তি। তিনি তৌহিদী জনতার শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদকে ‘ধর্মান্ধতা’ বলাকে সংঘাত উসকে দেওয়ার শামিল বলেও মন্তব্য করেন।
মামুনুল হক বলেন, আবুল সরকারের আল্লাহদ্রোহী বক্তব্য জঘন্য ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তার বিরুদ্ধে তৌহিদী জনতার প্রতিক্রিয়া ছিল শান্তিপূর্ণ ও ঈমানি দায়িত্ববোধের বহিঃপ্রকাশ। তিনি মনে করেন, অপরাধীকে রক্ষা করতে গিয়ে প্রতিবাদকারীদের ওপর দোষ চাপানো অবিচার ও ইসলামী চেতনার প্রতি স্পষ্ট অবজ্ঞা।
মামুনুল হক সরকারের প্রতি দাবি জানান—আবুল সরকারের দৃষ্টান্তমূলক আইনি শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারীদের প্রতি শূন্য সহনশীলতার নীতি কার্যকর করতে হবে। এছাড়াও রাজনৈতিক মহলকে ধর্মীয় বিষয়ে সংযত, দায়িত্বশীল ও ভারসাম্যপূর্ণ বক্তব্য প্রদানের চর্চা গড়ে তোলার অনুরোধ জানান তিনি।