leadT1ad

আ.লীগ ‘এক্সিস্টেনশিয়াল থ্রেট’, দলগুলোকে শক্ত অবস্থান নেওয়ার আহ্বান শফিকুল আলমের

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ১৫: ০৭
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সংগৃহীত ছবি

বাংলাদেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ সবার জন্য ‘এক্সিস্টেনশিয়াল থ্রেট’ উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, ‘আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগের বিষয়ে পলিটিক্যাল পার্টিগুলোর শক্ত একটা অবস্থান নিতে হবে।’

শনিবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাজনৈতিক দলগুলো তাদের ইশতেহার প্রণয়নে কীভাবে নাগরিক প্রত্যাশার অধিকতর ও কার্যকর প্রতিফলন করতে পারে, সে বিষয়ে এই সংলাপের আয়োজন করে ট্রেস কনসাল্টিং নামে একটি প্লাটফর্ম।

সংলাপে অংশ নিয়ে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিষয়ে সবার ‘একটি স্পষ্ট অবস্থান নেওয়া’ জরুরি বলে মন্তব্য করেন প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘আজও দেখা যাচ্ছে, তিনি (শেখ হাসিনা) যেভাবে কথা বলছেন, তাতে বোঝা যায়—যারা জুলাইয়ের আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন, তাদের সবাইকেই সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে। যারা জুলাই আন্দোলনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত মাঠে ছিলেন। অথচ তাদেরও এখন সন্ত্রাসী বলা হচ্ছে। আমরা যারা লেখালেখি করেছি, মতামত দিয়েছি, তারাও সেই একই অভিযোগের মুখে।

শেখ হাসিনার এই মনোভাব ‘ভয়াবহ’ বলে মনে করেন শফিকুল আলম। তিনি বলেন, ‘এনায়েতুল্লাহ খান একসময় লিখেছিলেন— ১৯৭৪ সালে শেখ মুজিব ৬ কোটি ৫০ লাখ লোককে সহযোগী কোলাবরেটরস বা রাজাকার বানিয়েছিলেন। আর এখন তার মেয়ে (শেখ হাসিনা) ১৮০ মিলিয়নকে বলতেছে টেরোরিস্ট, ১৮ কোটি লোককে উনি টেরোরিস্ট বলে ক্ষমতায় আসতে চাচ্ছেন। এটা কল্পনাতীত।’

একজন মানুষকে যখন ‘সন্ত্রাসী’ বলা হয়, তখন আসলে তাকে হত্যাযোগ্য হিসেবে চিহ্নিত করা হয় মন্তব্য করে প্রেস সচিব বলেন, ‘তিনি কি ক্ষমতায় ফেরার জন্য ১৮ কোটি মানুষকেই শত্রু বানাতে চান? সম্প্রতি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম উইয়ন ও জি নিউজ-এ দেওয়া সাক্ষাৎকারেও শেখ হাসিনা একই ধরনের বক্তব্য রেখেছেন, যেখানে তিনি বাংলাদেশের জনগণকে সন্ত্রাসী বলে আখ্যা দিয়েছেন। আমি মনে করি, এই বক্তব্য বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য অস্তিত্বের হুমকি। তাই এই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দলকেই একত্র হয়ে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে।‘

নির্বাচনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘গভর্নমেন্ট ফুললি কমিটেড ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ইলেকশন করার জন্য। এখন অনেকে বলেন, জুলাই চার্টার নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে। আমি একটা জিনিস বলি—আমাদের পত্রিকাগুলো এক ধরনের ডিবেট চালাচ্ছে, কিন্তু পুরো পৃথিবীতে অনেক জায়গায় শাসনতান্ত্রিক ডিবেট ১০ থেকে ১৫ বছর ধরেও চলে। কোন শাসনব্যবস্থা কার জন্য বেটার, সেটা একদিনে কুইক ফিক্স বলে কিছু নাই। সবাই যদি একই মতে হতো, তাহলে দেশ বাকশাল হতো। দ্বিমত থাকবেই, সেই দ্বিমতের ভিত্তিতেই কনসেন্সাস তৈরি হবে।’

শফিকুল আলম বলেন, ‘যদি রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত না নিতে পারে, সেক্ষেত্রে ইন্টারিম গভর্নমেন্টের ওপর অর্পিত দায়িত্ব অনুযায়ী তারা সিদ্ধান্ত নেবে—এটা খুব দ্রুতই হবে। যেন নির্বাচনের সঙ্গে কোনো অনিশ্চয়তা না থাকে। আমরা এখন একটি ফ্র্যাকচারড পলিটিক্যাল সিচুয়েশন দেখছি। দরকার এমন একটি রাজনৈতিক সেটেলমেন্ট যেখানে যেই গ্রুপই থাকুক—এক্সট্রিম রাইট বা লেফট; সবাই যেন গণতন্ত্রে আস্থা রাখে। না হলে সঠিক ‘রাইট মেসেজিং’ বিদেশে যাবে না, এফডিআই (ফরেইন ডিরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট) আসবে না, ফলে জব গ্রোথও হবে না।’

সংলাপে আরো অংশ নিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আজাদ, ট্রেস-এর প্রধান নির্বাহী ফুয়াদ এম খালিদ হোসেন এবং ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম। অনুষ্ঠানে দেশের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিনিধি ছাড়াও নির্বাচন বিশেষজ্ঞ, কূটনীতিক, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, ডাকসু-জাকসু ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত