সজল মিত্র রিচার্ড
বাংলাদেশের ক্রিকেট, এ যেন এক অন্তহীন আবেগের নাম। মাঠে যখন ব্যাট ঘোরে, প্রতিপক্ষের উইকেট উড়ে যায় বা গ্যালারিতে যখন জনতার ঢেউ দোল খায়; তখন এই জাতি ভুলে যায় দুঃখকষ্ট, ভুলে যায় বিভাজন। ক্রিকেট হয়ে ওঠে এক সমবেত প্রার্থনা, এক অমলিন আনন্দ। অথচ সেই ক্রিকেটের প্রাণকেন্দ্র, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনকে ঘিরে গ্যালারির উল্লাস মিলিয়ে যায় রাজনৈতিক নকশা আর ক্ষমতার কূটকৌশলে। ২০২৫ সালের এই নির্বাচন যেন তারই এক অমোঘ প্রতিচ্ছবি। যেখানে ভোটের উৎসব নয়, বরং অভিযোগ, অনাস্থা আর অস্থিরতার বিষবাষ্পে ভরে মিরপুরের বাতাস।
বিসিবি নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এই তালিকাটিই নির্বাচনের মূলভিত্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে স্বচ্ছতার আলো কম, সন্দেহের ছায়া বেশি। সময়মতো তালিকা প্রকাশ হয়নি, সংশোধন নিয়ে বিতর্ক, এমনকি কাউন্সিলরদের বৈধতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ক্লাব ও জেলা পর্যায়ে অনেকে অভিযোগ তুলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নির্দিষ্ট মহলের প্রভাবেই নাম অন্তর্ভুক্ত বা বর্জন করা হয়েছে। ভোটের পূর্বাভাস যদি শুরুতেই একপাক্ষিকতার দিকে ইঙ্গিত দেয়, তবে সেই নির্বাচনের ফল কেমন হতে পারে, তা আন্দাজ করাই যায়। যেন খেলার আগেই স্কোরবোর্ড লিখে রাখা হয়েছে। শুধু আনুষ্ঠানিকতার খাতিরে মাঠে গড়ানো হচ্ছে বল।
এই নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো তামিম ইকবালের মনোনয়ন এবং পরবর্তী সময়ে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া। তামিম, যিনি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের রত্ন, যিনি একদিন দেশের কিশোরদের শেখাতেন কীভাবে চোখের আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষের বোলারদের বশ মানাতে হয়, সেই মানুষই নির্বাচন প্রক্রিয়ার অন্ধকার দেখে সরে দাঁড়ালেন। তার কণ্ঠে কষ্ট মেশানো অভিযোগ— এটা কোনো নির্বাচন নয়, যা হচ্ছে তাতে ক্রিকেট সৌন্দর্য হারাচ্ছে। শুধু তামিম একা নন, মোট ১৬ জন প্রার্থী একযোগে প্রত্যাহার করলেন তাঁদের মনোনয়নপত্র। অভিযোগ উঠল, প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই ফল নির্ধারিত। আর যাঁরা পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছিলেন, তাঁদের ঠেকাতে নানা অপচেষ্টা চলছে। অন্যদিকে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়াও ইঙ্গিত দিয়েছেন, তামিমের অনুসারীরা নাকি ‘ভোট ফিক্সিংয়ের’ ফাঁদ পাতার চেষ্টা করেছিলেন। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে জর্জরিত হলো এই প্রক্রিয়া। তখন সাধারণ ক্রীড়ামোদীদের কাছে এই নির্বাচনের আর কোনো ইতিবাচক দিক বাকি থাকা কি সম্ভব?
এই কাহিনিতে এক অদ্ভুত বাঁক আনল সংগীতশিল্পী আসিফ আকবরের নাম। বাংলা গানের ইতিহাসে যিনি জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিলেন, সেই আসিফ এবার নির্বাচনী ময়দানে বিসিবির পরিচালক পদে দাঁড়ালেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই তিনি নির্বাচিত হয়েও গেলেন। ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনায় এক গায়ক। যদিও তিনি জেলা পর্যায়ের ক্রিকেটার ছিলেন, খেলেছেন হাবিবুল বাশারদের সঙ্গেও। তারপরও তাঁর জনপ্রিয়তা একজন গায়ক হিসেবেই। প্রশ্ন উঠল, এটি কি ক্রিকেটের পরিধি বাড়ানো নাকি দক্ষতার বাইরে থেকে ক্ষমতার সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসা? একদিকে যখন অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা অভিযোগে বিদ্ধ হয়ে প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। অন্যদিকে একজন শিল্পী নির্বাচিত হয়ে যাচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন পথে। এটি কি ক্রিকেট বোর্ডের প্রগতির প্রতীক, নাকি কেবল জনপ্রিয়তার মোহে ঢেকে দেওয়া এক প্রহসন?
কিন্তু যে অভিযোগ সবচেয়ে ভয়ংকর, তা হলো নির্বাচনে সরকারের হস্তক্ষেপ। ক্রীড়া উপদেষ্টা যাঁকে পছন্দ করছেন, তাঁরাই নির্বাচনে সুবিধা পাচ্ছেন, তাঁরাই হচ্ছেন মূল নিয়ন্ত্রক। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ছায়া যখন নির্বাচনের কক্ষে প্রবেশ করে, তখন নির্বাচন আর নির্বাচন থাকে না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তা হয়ে যায় ক্ষমতার এক নাটক, যেখানে পর্দার আড়ালে লেখা থাকে চিত্রনাট্য। প্রশ্ন জাগে ক্রিকেট বোর্ড কি তবে আর ক্রিকেটের নেই? নাকি তা হয়ে যাচ্ছে রাজনীতির এক ক্ষুদ্র উপনিবেশ?
এই প্রহসনের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপের অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এক সময়ে ছিলেন জাতীয় দলের ব্যাটিং স্তম্ভ। বর্তমানে সভাপতি হওয়ার দৌড়ে তিনি একক প্রাধান্যের অধিকারী। যে বোর্ডে সভাপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন অনেকেই, সেখানে এখন বুলবুলকে একচ্ছত্র প্রতিদ্বন্দ্বীহীন অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। একদিকে মনোনয়ন প্রত্যাহার, অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন প্রার্থিতা।
এই নির্বাচনের প্রতিটি ধাপে ফুটে উঠছে নেতিবাচকতার চিত্র। ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতার অভাব, প্রার্থী প্রত্যাহারে নাটকীয়তা, অভিযোগ- পাল্টা অভিযোগের দোলাচল, শিল্পীর অপ্রত্যাশিত জয়, সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ; সব মিলিয়ে এ যেন গণতন্ত্র নয়, বরং ক্রীড়া রাজনীতির এক নতুন অঙ্কুরোদগম। যে বিসিবি একদিন স্বপ্ন দেখেছিল স্বাধীন ও স্বচ্ছ পরিচালনার, সেই বোর্ড এখন একটি দলের হাতে বন্দি হওয়ার পথে।
এই অবস্থার ফল কী হতে পারে? প্রথমত, ক্রিকেটারদের মধ্যে আস্থাহীনতা। যখন তারা দেখবে মাঠের বাইরে সিদ্ধান্ত হচ্ছে রাজনীতির প্রভাবে, তখন তারা মাঠে হারাবে নিষ্ঠা ও অনুপ্রেরণা। দ্বিতীয়ত, সাধারণ মানুষ, যারা ক্রিকেটকে হৃদয়ের খেলার আসনে বসিয়েছে, তারাও ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নেবে। বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। আইসিসি ও অন্যান্য সংস্থা যখন দেখবে নির্বাচনই স্বচ্ছভাবে হচ্ছে না, তখন তারা প্রশ্ন তুলবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে। তৃতীয়ত, এই প্রহসনমূলক নির্বাচন হয়তো নিয়ে আসবে আইনি জটিলতা, আদালতের দ্বারস্থ হবেন বঞ্চিত প্রার্থীরা। আর ক্রিকেটের গতি থমকে যাবে অব্যবস্থাপনার জালে।
বিসিবির নির্বাচন কেবল ক্ষমতার নয়, ক্রিকেটের অস্তিত্বের প্রশ্ন। এখনই সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ক্রিকেট হয়ে উঠবে এক অন্ধকার রাজনীতির বলি। যেখানে গণতন্ত্র-স্বচ্ছতা নেই, সেই প্রতিষ্ঠান কার্যকরভাবে টিকে থাকতে পারে না। ক্রিকেট টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন মুক্ত বোর্ড, মুক্ত নির্বাচন এবং মুক্ত মতপ্রকাশ।
বাংলাদেশের ক্রিকেট, এ যেন এক অন্তহীন আবেগের নাম। মাঠে যখন ব্যাট ঘোরে, প্রতিপক্ষের উইকেট উড়ে যায় বা গ্যালারিতে যখন জনতার ঢেউ দোল খায়; তখন এই জাতি ভুলে যায় দুঃখকষ্ট, ভুলে যায় বিভাজন। ক্রিকেট হয়ে ওঠে এক সমবেত প্রার্থনা, এক অমলিন আনন্দ। অথচ সেই ক্রিকেটের প্রাণকেন্দ্র, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) নির্বাচনকে ঘিরে গ্যালারির উল্লাস মিলিয়ে যায় রাজনৈতিক নকশা আর ক্ষমতার কূটকৌশলে। ২০২৫ সালের এই নির্বাচন যেন তারই এক অমোঘ প্রতিচ্ছবি। যেখানে ভোটের উৎসব নয়, বরং অভিযোগ, অনাস্থা আর অস্থিরতার বিষবাষ্পে ভরে মিরপুরের বাতাস।
বিসিবি নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পর থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে। এই তালিকাটিই নির্বাচনের মূলভিত্তি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেখানে স্বচ্ছতার আলো কম, সন্দেহের ছায়া বেশি। সময়মতো তালিকা প্রকাশ হয়নি, সংশোধন নিয়ে বিতর্ক, এমনকি কাউন্সিলরদের বৈধতা নিয়েও উঠেছে প্রশ্ন। ক্লাব ও জেলা পর্যায়ে অনেকে অভিযোগ তুলেছেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে নির্দিষ্ট মহলের প্রভাবেই নাম অন্তর্ভুক্ত বা বর্জন করা হয়েছে। ভোটের পূর্বাভাস যদি শুরুতেই একপাক্ষিকতার দিকে ইঙ্গিত দেয়, তবে সেই নির্বাচনের ফল কেমন হতে পারে, তা আন্দাজ করাই যায়। যেন খেলার আগেই স্কোরবোর্ড লিখে রাখা হয়েছে। শুধু আনুষ্ঠানিকতার খাতিরে মাঠে গড়ানো হচ্ছে বল।
এই নির্বাচনকে ঘিরে সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হলো তামিম ইকবালের মনোনয়ন এবং পরবর্তী সময়ে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া। তামিম, যিনি বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের রত্ন, যিনি একদিন দেশের কিশোরদের শেখাতেন কীভাবে চোখের আগুন দিয়ে প্রতিপক্ষের বোলারদের বশ মানাতে হয়, সেই মানুষই নির্বাচন প্রক্রিয়ার অন্ধকার দেখে সরে দাঁড়ালেন। তার কণ্ঠে কষ্ট মেশানো অভিযোগ— এটা কোনো নির্বাচন নয়, যা হচ্ছে তাতে ক্রিকেট সৌন্দর্য হারাচ্ছে। শুধু তামিম একা নন, মোট ১৬ জন প্রার্থী একযোগে প্রত্যাহার করলেন তাঁদের মনোনয়নপত্র। অভিযোগ উঠল, প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগেই ফল নির্ধারিত। আর যাঁরা পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখছিলেন, তাঁদের ঠেকাতে নানা অপচেষ্টা চলছে। অন্যদিকে ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূইয়াও ইঙ্গিত দিয়েছেন, তামিমের অনুসারীরা নাকি ‘ভোট ফিক্সিংয়ের’ ফাঁদ পাতার চেষ্টা করেছিলেন। অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগে জর্জরিত হলো এই প্রক্রিয়া। তখন সাধারণ ক্রীড়ামোদীদের কাছে এই নির্বাচনের আর কোনো ইতিবাচক দিক বাকি থাকা কি সম্ভব?
এই কাহিনিতে এক অদ্ভুত বাঁক আনল সংগীতশিল্পী আসিফ আকবরের নাম। বাংলা গানের ইতিহাসে যিনি জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছেছিলেন, সেই আসিফ এবার নির্বাচনী ময়দানে বিসিবির পরিচালক পদে দাঁড়ালেন। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাড়াই তিনি নির্বাচিত হয়েও গেলেন। ক্রিকেট বোর্ডের পরিচালনায় এক গায়ক। যদিও তিনি জেলা পর্যায়ের ক্রিকেটার ছিলেন, খেলেছেন হাবিবুল বাশারদের সঙ্গেও। তারপরও তাঁর জনপ্রিয়তা একজন গায়ক হিসেবেই। প্রশ্ন উঠল, এটি কি ক্রিকেটের পরিধি বাড়ানো নাকি দক্ষতার বাইরে থেকে ক্ষমতার সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসা? একদিকে যখন অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা অভিযোগে বিদ্ধ হয়ে প্রক্রিয়া থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন। অন্যদিকে একজন শিল্পী নির্বাচিত হয়ে যাচ্ছেন প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন পথে। এটি কি ক্রিকেট বোর্ডের প্রগতির প্রতীক, নাকি কেবল জনপ্রিয়তার মোহে ঢেকে দেওয়া এক প্রহসন?
কিন্তু যে অভিযোগ সবচেয়ে ভয়ংকর, তা হলো নির্বাচনে সরকারের হস্তক্ষেপ। ক্রীড়া উপদেষ্টা যাঁকে পছন্দ করছেন, তাঁরাই নির্বাচনে সুবিধা পাচ্ছেন, তাঁরাই হচ্ছেন মূল নিয়ন্ত্রক। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার ছায়া যখন নির্বাচনের কক্ষে প্রবেশ করে, তখন নির্বাচন আর নির্বাচন থাকে না। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় তা হয়ে যায় ক্ষমতার এক নাটক, যেখানে পর্দার আড়ালে লেখা থাকে চিত্রনাট্য। প্রশ্ন জাগে ক্রিকেট বোর্ড কি তবে আর ক্রিকেটের নেই? নাকি তা হয়ে যাচ্ছে রাজনীতির এক ক্ষুদ্র উপনিবেশ?
এই প্রহসনের কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন বাংলাদেশের হয়ে প্রথম বিশ্বকাপের অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এক সময়ে ছিলেন জাতীয় দলের ব্যাটিং স্তম্ভ। বর্তমানে সভাপতি হওয়ার দৌড়ে তিনি একক প্রাধান্যের অধিকারী। যে বোর্ডে সভাপতি হওয়ার স্বপ্ন দেখতেন অনেকেই, সেখানে এখন বুলবুলকে একচ্ছত্র প্রতিদ্বন্দ্বীহীন অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। একদিকে মনোনয়ন প্রত্যাহার, অন্যদিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাহীন প্রার্থিতা।
এই নির্বাচনের প্রতিটি ধাপে ফুটে উঠছে নেতিবাচকতার চিত্র। ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতার অভাব, প্রার্থী প্রত্যাহারে নাটকীয়তা, অভিযোগ- পাল্টা অভিযোগের দোলাচল, শিল্পীর অপ্রত্যাশিত জয়, সরকারের হস্তক্ষেপের অভিযোগ; সব মিলিয়ে এ যেন গণতন্ত্র নয়, বরং ক্রীড়া রাজনীতির এক নতুন অঙ্কুরোদগম। যে বিসিবি একদিন স্বপ্ন দেখেছিল স্বাধীন ও স্বচ্ছ পরিচালনার, সেই বোর্ড এখন একটি দলের হাতে বন্দি হওয়ার পথে।
এই অবস্থার ফল কী হতে পারে? প্রথমত, ক্রিকেটারদের মধ্যে আস্থাহীনতা। যখন তারা দেখবে মাঠের বাইরে সিদ্ধান্ত হচ্ছে রাজনীতির প্রভাবে, তখন তারা মাঠে হারাবে নিষ্ঠা ও অনুপ্রেরণা। দ্বিতীয়ত, সাধারণ মানুষ, যারা ক্রিকেটকে হৃদয়ের খেলার আসনে বসিয়েছে, তারাও ধীরে ধীরে মুখ ফিরিয়ে নেবে। বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। আইসিসি ও অন্যান্য সংস্থা যখন দেখবে নির্বাচনই স্বচ্ছভাবে হচ্ছে না, তখন তারা প্রশ্ন তুলবে বাংলাদেশের ক্রিকেটের প্রশাসনিক কাঠামো নিয়ে। তৃতীয়ত, এই প্রহসনমূলক নির্বাচন হয়তো নিয়ে আসবে আইনি জটিলতা, আদালতের দ্বারস্থ হবেন বঞ্চিত প্রার্থীরা। আর ক্রিকেটের গতি থমকে যাবে অব্যবস্থাপনার জালে।
বিসিবির নির্বাচন কেবল ক্ষমতার নয়, ক্রিকেটের অস্তিত্বের প্রশ্ন। এখনই সঠিক পদক্ষেপ না নেওয়া হলে ক্রিকেট হয়ে উঠবে এক অন্ধকার রাজনীতির বলি। যেখানে গণতন্ত্র-স্বচ্ছতা নেই, সেই প্রতিষ্ঠান কার্যকরভাবে টিকে থাকতে পারে না। ক্রিকেট টিকিয়ে রাখতে হলে প্রয়োজন মুক্ত বোর্ড, মুক্ত নির্বাচন এবং মুক্ত মতপ্রকাশ।
বিশ্বের অনেক দেশ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ২১-পদক্ষেপের প্রস্তাবকে সমর্থন জানিয়েছে। এই প্রস্তাবের লক্ষ্য প্রায় দুই বছর ধরে চলা ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ শেষ করা এবং গাজা স্ট্রিপ পুনর্গঠন করা। তবে বিশ্লেষকরা প্রস্তাব বাস্তবায়নের পথ নিয়ে সন্দিহান।
১ দিন আগেভারত কি বাংলাদেশের বন্ধু? মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন। আপনি যেকোনো আওয়ামী লীগের সমর্থক বা কর্মীকে প্রশ্নটি করলে তাঁরা কোনো দ্বিধা না করে বলবেন, অবশ্যই। এমনকি এটাও বলতে পারেন, ভারত না থাকলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব থাকত না।
২ দিন আগে‘নির্বাচনী রাজনীতিতে ধর্মীয় দলগুলো পিছিয়ে কেন’ শিরোনামটি প্রাসঙ্গিকভাবেই আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসের দিকে টেনে নিয়ে যায়। তাই লেখাটি একটু পেছন থেকে শুরু করা যাক।
৩ দিন আগে২০২৫ সালে এসে একটি প্রাসঙ্গিক প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান বাস্তবতা কী। এ প্রশ্ন আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ২০২৪ সালের পরে। গত বছরের ঘটনা প্রবাহের পর বদলে গেছে এদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক চালচিত্র।
৩ দিন আগে