সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর আমাদের মধ্যে নেই—এই সংবাদ আমার ও আমাদের গভীরভাবে শোকাহত করেছে। তাঁর মৃত্যু শুধু একজন শিক্ষকের চলে যাওয়া নয়, বরং বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানবিক জগতের বিশাল এক শূন্যতা।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সঙ্গে আমার পরিচয় অনেক দিনের। তাঁর সঙ্গে কত যে স্মৃতি, সেসব এখন ছবির মতো মনে পড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ছাত্র হিসেবে আমি যেমন তাঁকে পেয়েছি, পরে সহকর্মী হিসেবেও তাঁর সঙ্গ লাভ করেছি। সেই সূত্রে বলতে পারি, তাঁকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমরা একসঙ্গে অনেক কাজ করেছি, অনেক আলোচনা করেছি—তাঁর চিন্তা, মনন ও দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সবসময় স্পষ্ট, সংযমী ও মানবিক। তিনি আগাগোড়া একজন ‘শিক্ষক মানুষ’ ছিলেন। শিক্ষকতাই ছিল তাঁর নেশা ও পেশা—অন্য কোনো পেশায় তাঁকে কল্পনাই করা যায় না।
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও চারুকলার প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল। চিত্রকলার বিভিন্ন বিষয়-আশয় বা শিল্পচর্চা নিয়ে তিনি যেভাবে ভাবতেন, আমাদের দেশের বাস্তবতায় তা সচরাচর দেখা যায় না। বিশেষত, যখন তিনি শিল্প সমালোচনা শুরু করেছিলেন, সেই সময় দেশে এটি তেমন প্রচলিত কিছু ছিল না। কিন্তু তিনি সেই পরিসরটিকেও নন্দনতত্ত্ব ও সমাজবোধের সঙ্গে যুক্ত করে নতুনভাবে দেখতে চেয়েছিলেন; দেখেছেনও। অসাধারণ সব কথাসাহিত্য আমরা পেয়েছি তাঁর কাছ থেকে। আসলে শিল্প ও সাহিত্যকে তিনি আলাদা করে দেখতেন না; বরং মানুষের জীবন, সমাজ ও সময়ের সঙ্গে তাদের যোগসূত্রের ওপর জোর দিতেন। তাঁর কথাসাহিত্যে সেসব দারুণভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শিক্ষক সত্তার কথা আগেই বলেছি। এর বাইরে তিনি ছিলেন দায়িত্বশীল সহকর্মী, সর্বোপরি একজন সৎ মানুষ। কাজের প্রতি ছিল অগাধ নিষ্ঠা। অসুস্থ অবস্থায়ও নিয়মিত পড়াতেন, লিখতেন, ভাবতেন। রাতে বিশ্রাম নেওয়ার আগেও তিনি কাজ নিয়ে চিন্তা করতেন, পরিকল্পনা করতেন, ছাত্রদের নিয়ে ভাবতেন।
সপ্তাহ খানেক আগেও তিনি কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, শেখাতে চেয়েছেন, গড়তে চেয়েছেন নতুন প্রজন্মকে। তিনি ছিলেন এমন এক শিক্ষক, যিনি শুধু পাঠদান করতেন না—শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন চিন্তার আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারতেন।
তাঁর মৃত্যুতে আমরা একজন প্রাজ্ঞ শিক্ষক, এক সৎ বুদ্ধিজীবী এবং একজন সংস্কৃতিমনা মানুষকে হারালাম। এ শূন্যতা সত্যিই পূরণ হওয়ার নয়। আমি তাঁর পরিবারের সদস্য, সহকর্মী, ছাত্রছাত্রী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের আত্মার প্রতিও আমার শ্রদ্ধা-ভালোবাসা রইল। যে মূল্যবোধে তিনি বিশ্বাস করতেন, সেটাই যেন আমাদের পথচলার আলোকবর্তিকা হয়ে থাকে।
লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক

শিক্ষাবিদ সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম আর আমাদের মধ্যে নেই—এই সংবাদ আমার ও আমাদের গভীরভাবে শোকাহত করেছে। তাঁর মৃত্যু শুধু একজন শিক্ষকের চলে যাওয়া নয়, বরং বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক ও মানবিক জগতের বিশাল এক শূন্যতা।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের সঙ্গে আমার পরিচয় অনেক দিনের। তাঁর সঙ্গে কত যে স্মৃতি, সেসব এখন ছবির মতো মনে পড়ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে ছাত্র হিসেবে আমি যেমন তাঁকে পেয়েছি, পরে সহকর্মী হিসেবেও তাঁর সঙ্গ লাভ করেছি। সেই সূত্রে বলতে পারি, তাঁকে আমি খুব কাছ থেকে দেখেছি। দীর্ঘ সময় ধরে তাঁর সঙ্গে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমরা একসঙ্গে অনেক কাজ করেছি, অনেক আলোচনা করেছি—তাঁর চিন্তা, মনন ও দৃষ্টিভঙ্গি ছিল সবসময় স্পষ্ট, সংযমী ও মানবিক। তিনি আগাগোড়া একজন ‘শিক্ষক মানুষ’ ছিলেন। শিক্ষকতাই ছিল তাঁর নেশা ও পেশা—অন্য কোনো পেশায় তাঁকে কল্পনাই করা যায় না।
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও চারুকলার প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল। চিত্রকলার বিভিন্ন বিষয়-আশয় বা শিল্পচর্চা নিয়ে তিনি যেভাবে ভাবতেন, আমাদের দেশের বাস্তবতায় তা সচরাচর দেখা যায় না। বিশেষত, যখন তিনি শিল্প সমালোচনা শুরু করেছিলেন, সেই সময় দেশে এটি তেমন প্রচলিত কিছু ছিল না। কিন্তু তিনি সেই পরিসরটিকেও নন্দনতত্ত্ব ও সমাজবোধের সঙ্গে যুক্ত করে নতুনভাবে দেখতে চেয়েছিলেন; দেখেছেনও। অসাধারণ সব কথাসাহিত্য আমরা পেয়েছি তাঁর কাছ থেকে। আসলে শিল্প ও সাহিত্যকে তিনি আলাদা করে দেখতেন না; বরং মানুষের জীবন, সমাজ ও সময়ের সঙ্গে তাদের যোগসূত্রের ওপর জোর দিতেন। তাঁর কথাসাহিত্যে সেসব দারুণভাবে প্রতিফলিত হয়েছে।

সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের শিক্ষক সত্তার কথা আগেই বলেছি। এর বাইরে তিনি ছিলেন দায়িত্বশীল সহকর্মী, সর্বোপরি একজন সৎ মানুষ। কাজের প্রতি ছিল অগাধ নিষ্ঠা। অসুস্থ অবস্থায়ও নিয়মিত পড়াতেন, লিখতেন, ভাবতেন। রাতে বিশ্রাম নেওয়ার আগেও তিনি কাজ নিয়ে চিন্তা করতেন, পরিকল্পনা করতেন, ছাত্রদের নিয়ে ভাবতেন।
সপ্তাহ খানেক আগেও তিনি কাজ নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন, শেখাতে চেয়েছেন, গড়তে চেয়েছেন নতুন প্রজন্মকে। তিনি ছিলেন এমন এক শিক্ষক, যিনি শুধু পাঠদান করতেন না—শিক্ষার্থীদের মধ্যে নতুন চিন্তার আগুন জ্বালিয়ে দিতে পারতেন।
তাঁর মৃত্যুতে আমরা একজন প্রাজ্ঞ শিক্ষক, এক সৎ বুদ্ধিজীবী এবং একজন সংস্কৃতিমনা মানুষকে হারালাম। এ শূন্যতা সত্যিই পূরণ হওয়ার নয়। আমি তাঁর পরিবারের সদস্য, সহকর্মী, ছাত্রছাত্রী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই।
সৈয়দ মনজুরুল ইসলামের আত্মার প্রতিও আমার শ্রদ্ধা-ভালোবাসা রইল। যে মূল্যবোধে তিনি বিশ্বাস করতেন, সেটাই যেন আমাদের পথচলার আলোকবর্তিকা হয়ে থাকে।
লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক

আমাদের সমাজ ও রাজনীতিতে কথার ফুলঝুরি থাকলেও প্রকৃত ‘কাজের মানুষ’-এর অভাব প্রকট। অথচ সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গড়তে হলে বাগাড়ম্বর নয়, প্রয়োজন দক্ষতা, সততা ও কঠোর পরিশ্রম। এই নিবন্ধে কথার বৃত্ত ভেঙে দক্ষতা ও দায়বদ্ধতার সমন্বয়ে রাষ্ট্র ও সমাজ গঠনের অপরিহার্যতা তুলে ধরা হয়েছে।
১৪ ঘণ্টা আগে
ঢাকার মানচিত্রে কড়াইল অদ্ভুত এক জনপদ। গুলশান লেকের ওপারে তাকালে ঘিঞ্জি ও ব্যস্ত যে বসতি, সেটিই কড়াইল। দূর থেকে প্রথম দেখলে একে দারিদ্র্যের একঘেয়ে মানচিত্র মনে হবে। পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গুলশান-বনানীর জৌলুসপূর্ণ অট্টালিকা দেখলে কড়াইল নিয়ে যে কারও মনে জাগবে বাড়তি কৌতূহল।
১ দিন আগে
জুলাই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও ভোট গ্রহণের দিন-তারিখ নিয়ে জনমনে এখনো ধোঁয়াশা রয়ে গেছে। সরকার আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা দিলেও সংস্কার ও প্রস্তুতির ঘাটতি ভাবাচ্ছে অনেককে।
২ দিন আগে
গণ-অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব প্রায় শেষের দিকে। এক বছরের বেশি সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা এই সরকারের কার্যক্রম, সাফল্য, ব্যর্থতা এবং দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ঢাকা স্ট্রিম–এর সঙ্গে কথা বলেছেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক মাহবুব উল্লাহ।
৩ দিন আগে