সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান আইন ও বিধির যথাযথ বাস্তবায়নই প্রধান চ্যালেঞ্জ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মঈন উদ্দিন। আজ রোববার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর নগর ভবনে ডিএনসিসি আয়োজিত ‘ওয়ার্ল্ড ডে অফ রিমেমব্রান্স ফর রোড ট্রাফিক ভিকটিমস’ (সড়ক দুর্ঘটনায় হতাহতদের জন্য স্মরণ দিবস) উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ‘সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান আইন ও বিধির যথাযথ বাস্তবায়নই আমাদের মূল চ্যালেঞ্জ। এটি বাস্তবায়নের জন্য পরিবহন মালিক-চালক, আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা, বিআরটিএ এবং সড়ক ব্যবহারকারীসহ সব পক্ষের সহযোগিতা প্রয়োজন।’ তিনি জানান, ডিএনসিসি ফুটপাত, জেব্রা ক্রসিং, রোড মার্কিং এবং ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের মতো অবকাঠামোগত উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ভাইটাল স্ট্র্যাটেজিস-এর কারিগরি পরামর্শক আমিনুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, এ বছরের দিবসটির প্রতিপাদ্য হচ্ছে ‘প্রতিভার মৃত্যু’। সড়ক দুর্ঘটনায় শুধু মানুষের জীবনহানি ঘটে না, তাদের মেধা, সম্ভাবনা ও সমাজের প্রতি তাদের সম্ভাব্য অবদানেরও বিনাশ ঘটে। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি মারা যায় তরুণ ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী, যার ফলে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র অপূরণীয় ক্ষতির শিকার হয়।
অনুষ্ঠানে বিআইজিআরএস-এর ইনিশিয়েটিভ কো-অর্ডিনেটর মো. আবদুল ওয়াদুদ বলেন, বিশ্বজুড়ে ৫ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। তাই এ বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে—‘বিশ্বজুড়ে প্রতিবছর সড়কে ঝরছে ১০ লাখের বেশি প্রতিভার প্রাণ।’
অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনায় সন্তান হারানো অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এস এম সাইফুল ইসলাম তাঁর অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘গত বছর ৯ অক্টোবর বাড্ডায় বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় আমার মেয়ের প্রাণ গেছে। আমি চাই না এভাবে আর কোনো মায়ের কোল খালি হোক।’ এ জন্য তিনি সড়কে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের আহ্বান জানান।
ঢাকা ট্রান্সপোর্ট কো-অর্ডিনেশন অথরিটি (ডিটিসিএ)-এর সিনিয়র রোড সেফটি স্পেশালিস্ট মো. মামুনুর রহমান বলেন, মানসম্মত গাড়ি, উন্নত সড়ক, আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত চালক—সড়ক নিরাপত্তার জন্য সবকিছুই জরুরি।
ব্র্যাকের রোড সেফটি প্রকল্পের প্রধান খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘এই দিনটি শুধু হতাহতদের স্মরণ করার জন্য নয়, বরং ভবিষ্যতে যেন এমন পরিণতি কারো না হয়, তা নিশ্চিত করতে অঙ্গীকার করারও দিন।’
অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট প্রোস্কোভিয়া অকোয়া লায়েতসহ সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য রাখেন।