স্ট্রিম ডেস্ক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার মূল অর্থনৈতিক উৎস—জ্বালানি আয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি চীনকেও একই পথে রাজি করানোর চেষ্টা করবেন। বুধবার সাংবাদিকদের তিনি জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত ‘খুব শিগগিরই’ রুশ তেল আমদানি বন্ধ করবে। বর্তমানে ভারত ও চীন রুশ সমুদ্রবাহী অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
ট্রাম্প চলমান বাণিজ্য আলোচনাকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করছেন ভারতকে চাপ দিতে। গত আগস্টে তিনি ভারতের রুশ তেল আমদানিকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন।
তবে মোদি সরকার এখনো পিছু হটেনি। ভারতীয় কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, রুশ জ্বালানি আমদানি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।
ভারত যদি এখন রুশ তেল আমদানি বন্ধ করে, তা হবে মস্কোর অন্যতম প্রধান ক্রেতার নীতিগত বড় পরিবর্তন। এতে রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনায় বড় প্রভাব পড়তে পারে।
রুশ তেল নিয়ে ভারত–মার্কিন বিরোধ কেন
ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রাখায়, ট্রাম্প গত আগস্টে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে দেশটির ওপর মোট শুল্কের হার দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ।
তবে তিনি চীনের বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা নেননি, যদিও চীনই রুশ তেলের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক।
চীনের শুল্ক তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশটি ১০৯ মিলিয়ন টন রুশ তেল আমদানি করেছে, যা তার মোট জ্বালানি আমদানির প্রায় ২০ শতাংশ। অন্যদিকে, ভারত ২০২৪ সালে ৮৮ মিলিয়ন টন রুশ তেল আমদানি করেছে।
এ কারণে নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণের অভিযোগ করেছে। তাদের অভিযোগ—ওয়াশিংটন কেবল ভারতকেই টার্গেট করছে।
কিছু বিশ্লেষকের মতে, চলমান বাণিজ্য আলোচনায় ভারত ট্রাম্পের কিছু নির্দিষ্ট শর্তে রাজি না হওয়ায় তিনি হতাশ হন। আর এ কারণেই ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে এমন কঠোর অবস্থান নেন।
হংকংয়ের ন্যাটিক্স ব্যাংকের প্রধান এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো আল জাজিরাকে বলেন, ‘ভারতের দীর্ঘদিনের সংরক্ষণবাদী নীতি—যেমন কৃষিপণ্যে উচ্চ শুল্ক ও ওষুধ শিল্পে ভর্তুকি—মার্কিন-ভারত বাণিজ্য আলোচনার মূল বিরোধের বিষয়।’
অন্যদিকে, ট্রাম্প চীনের প্রতি তুলনামূলক নরম অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বাড়তি শুল্ক বা জ্বালানি-সংক্রান্ত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেননি।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প হয়তো চীনের সঙ্গে বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির অপেক্ষায় আছেন, যার মধ্যে দুর্লভ খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকারও থাকতে পারে।
রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ হলো ১৭টি বিশেষ ধাতব উপাদান। এগুলো গাড়ির যন্ত্রাংশ, সামরিক প্রযুক্তি ও অন্যান্য শিল্প উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের জন্য অপরিহার্য।
চীন বহু বছর ধরে এই খনিজের খনন ও প্রক্রিয়াকরণে বিশ্ববাজারে আধিপত্য বজায় রেখেছে এবং বর্তমানে ১২টি উপাদানের রপ্তানি সীমিত করেছে।
অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো বলেন, ‘চীনের প্রভাব ভারতের তুলনায় অনেক বেশি, যা সাম্প্রতিক রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে স্পষ্ট।’
চীন এই সপ্তাহে নতুন নীতিমালা চালু করেছে, যার অধীনে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট রেয়ার আর্থ পণ্য কিনতে হলে বেইজিংয়ের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।
এই পদক্ষেপ এসেছে এমন এক সময়, যখন মাসের শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে।
এর জবাবে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, ১ নভেম্বর থেকে চীনা রপ্তানির ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।
তবে তিনি জানিয়েছেন, বৈঠক নির্ধারিত সময়েই হতে পারে। শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যাই হোক সেখানে থাকব, তাই ধরে নিচ্ছি বৈঠকটি হবে।’
ভারতের রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতা
বর্তমানে রাশিয়াই ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ।
শিপিং বিশ্লেষণ সংস্থা কেপলার-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত প্রতিদিন ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। এর মধ্যে রাশিয়ার অংশ প্রায় ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন ব্যারেল, অর্থাৎ মোট আমদানির ৩৪ শতাংশ।
এটি ২০২২ সালের জানুয়ারির তুলনায় প্রায় ২ হাজার ২৫০ শতাংশ বেশি। তখন রাশিয়া থেকে ভারতের আমদানি ছিল দিনে মাত্র ৬৮ হাজার ব্যারেল।
সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার-এর তথ্য অনুযায়ী, চীনের পর ভারতই রুশ জ্বালানির দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা।
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ার মোট অপরিশোধিত তেল রপ্তানির ৪৭ শতাংশ চীন এবং ৩৮ শতাংশ ভারত আমদানি করেছে।
ভারত এত রুশ তেল কিনছে কেন?
২০২২ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমা দেশগুলো রুশ অপরিশোধিত তেলের ওপর ৬০ ডলারের মূল্যসীমা নির্ধারণ করে। এর ফলে রাশিয়াকে ক্রেতা ধরে রাখতে মূল্য কমিয়ে প্রতিযোগিতা করতে হয়, বিশেষ করে যারা পশ্চিমা পরিবহন ও বীমা সুবিধা ব্যবহার করতে চায়।
এই সুযোগে ভারত তুলনামূলক সস্তায় রুশ তেল আমদানি বাড়িয়ে দেয়, যা এখন তার জ্বালানি সরবরাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হয়ে উঠেছে। সস্তা রুশ তেল ভারতের চলতি হিসাব ঘাটতি কমাতে বড় ভূমিকা রেখেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই ঘাটতি আগের বছরের তুলনায় ৬৫ শতাংশ কমে যায়।
সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড—যা এখন ভারতের সবচেয়ে বড় রুশ তেল আমদানিকারক। ২০২১ সালে রিলায়েন্সের জামনগর রিফাইনারিতে রুশ অপরিশোধিত তেলের অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। কিন্তু ২০২৫ সালের মধ্যে তা বেড়ে প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে।
সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার-এর হিসাবে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত জামনগর রিফাইনারি বিশ্বজুড়ে ৮৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পরিশোধিত তেল রপ্তানি করেছে।
এর মধ্যে প্রায় ৪২ শতাংশ (৩৬ বিলিয়ন ডলার) গেছে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলোতে।
ট্রাম্পের দাবি নিয়ে কী বলছে ভারত
ভারত এখনো সরকারিভাবে নিশ্চিত করেনি যে তারা রুশ তেল কেনা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যেমনটি ট্রাম্প দাবি করেছেন। যুদ্ধ চলাকালেও, ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক সত্ত্বেও, ভারত তার রুশ তেল ক্রয়ের সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শ্রী রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার সেই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে ভারত তার আমদানি ভিত্তিকে বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করতে পারে।
রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘স্থিতিশীল জ্বালানি মূল্য ও নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করা আমাদের জ্বালানি নীতির প্রধান লক্ষ্য। এর মধ্যে উৎসের বৈচিত্র্যও অন্তর্ভুক্ত।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। দেশটির বর্তমান প্রশাসনও এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। আলোচনা চলছে।’
অর্থনীতিবিদ গার্সিয়া হেরেরো মনে করেন, আগামী তিন থেকে ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হলেও বাস্তববাদী সমঝোতার দিকে যাবে।
তার মতে, যদি ভারত রুশ তেল আমদানি সীমিত করে, তবে শুল্ক কমতে পারে এবং ২০২৬ সালের শুরুর দিকেই একটি ছোট পরিসরের বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেছেন, ভারত রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধ করতে রাজি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্য হলো ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে রাশিয়ার মূল অর্থনৈতিক উৎস—জ্বালানি আয়ের ওপর চাপ সৃষ্টি করা।
ট্রাম্প আরও বলেন, তিনি চীনকেও একই পথে রাজি করানোর চেষ্টা করবেন। বুধবার সাংবাদিকদের তিনি জানান, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাকে আশ্বস্ত করেছেন যে ভারত ‘খুব শিগগিরই’ রুশ তেল আমদানি বন্ধ করবে। বর্তমানে ভারত ও চীন রুশ সমুদ্রবাহী অপরিশোধিত তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা।
ট্রাম্প চলমান বাণিজ্য আলোচনাকে কৌশলগতভাবে ব্যবহার করছেন ভারতকে চাপ দিতে। গত আগস্টে তিনি ভারতের রুশ তেল আমদানিকে অজুহাত হিসেবে দেখিয়ে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করেন।
তবে মোদি সরকার এখনো পিছু হটেনি। ভারতীয় কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন, রুশ জ্বালানি আমদানি দেশের জ্বালানি নিরাপত্তার জন্য অপরিহার্য।
ভারত যদি এখন রুশ তেল আমদানি বন্ধ করে, তা হবে মস্কোর অন্যতম প্রধান ক্রেতার নীতিগত বড় পরিবর্তন। এতে রাশিয়ার ইউক্রেন যুদ্ধ পরিচালনায় বড় প্রভাব পড়তে পারে।
রুশ তেল নিয়ে ভারত–মার্কিন বিরোধ কেন
ভারত রুশ তেল কেনা অব্যাহত রাখায়, ট্রাম্প গত আগস্টে অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন। এর ফলে দেশটির ওপর মোট শুল্কের হার দাঁড়ায় ৫০ শতাংশ।
তবে তিনি চীনের বিরুদ্ধে একই ধরনের ব্যবস্থা নেননি, যদিও চীনই রুশ তেলের সবচেয়ে বড় আমদানিকারক।
চীনের শুল্ক তথ্য অনুযায়ী, গত বছর দেশটি ১০৯ মিলিয়ন টন রুশ তেল আমদানি করেছে, যা তার মোট জ্বালানি আমদানির প্রায় ২০ শতাংশ। অন্যদিকে, ভারত ২০২৪ সালে ৮৮ মিলিয়ন টন রুশ তেল আমদানি করেছে।
এ কারণে নয়াদিল্লি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে দ্বিমুখী নীতি গ্রহণের অভিযোগ করেছে। তাদের অভিযোগ—ওয়াশিংটন কেবল ভারতকেই টার্গেট করছে।
কিছু বিশ্লেষকের মতে, চলমান বাণিজ্য আলোচনায় ভারত ট্রাম্পের কিছু নির্দিষ্ট শর্তে রাজি না হওয়ায় তিনি হতাশ হন। আর এ কারণেই ট্রাম্প ভারতের বিরুদ্ধে এমন কঠোর অবস্থান নেন।
হংকংয়ের ন্যাটিক্স ব্যাংকের প্রধান এশিয়া-প্যাসিফিক অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো আল জাজিরাকে বলেন, ‘ভারতের দীর্ঘদিনের সংরক্ষণবাদী নীতি—যেমন কৃষিপণ্যে উচ্চ শুল্ক ও ওষুধ শিল্পে ভর্তুকি—মার্কিন-ভারত বাণিজ্য আলোচনার মূল বিরোধের বিষয়।’
অন্যদিকে, ট্রাম্প চীনের প্রতি তুলনামূলক নরম অবস্থান নিয়েছেন। তিনি বাড়তি শুল্ক বা জ্বালানি-সংক্রান্ত শাস্তিমূলক পদক্ষেপ নেননি।
বিশ্লেষকদের মতে, ট্রাম্প হয়তো চীনের সঙ্গে বৃহত্তর বাণিজ্য চুক্তির অপেক্ষায় আছেন, যার মধ্যে দুর্লভ খনিজ সম্পদে প্রবেশাধিকারও থাকতে পারে।
রেয়ার আর্থ বা বিরল খনিজ হলো ১৭টি বিশেষ ধাতব উপাদান। এগুলো গাড়ির যন্ত্রাংশ, সামরিক প্রযুক্তি ও অন্যান্য শিল্প উৎপাদনে যুক্তরাষ্ট্রসহ অনেক দেশের জন্য অপরিহার্য।
চীন বহু বছর ধরে এই খনিজের খনন ও প্রক্রিয়াকরণে বিশ্ববাজারে আধিপত্য বজায় রেখেছে এবং বর্তমানে ১২টি উপাদানের রপ্তানি সীমিত করেছে।
অর্থনীতিবিদ অ্যালিসিয়া গার্সিয়া হেরেরো বলেন, ‘চীনের প্রভাব ভারতের তুলনায় অনেক বেশি, যা সাম্প্রতিক রপ্তানি নিয়ন্ত্রণে স্পষ্ট।’
চীন এই সপ্তাহে নতুন নীতিমালা চালু করেছে, যার অধীনে বিদেশি কোম্পানিগুলোকে নির্দিষ্ট রেয়ার আর্থ পণ্য কিনতে হলে বেইজিংয়ের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে।
এই পদক্ষেপ এসেছে এমন এক সময়, যখন মাসের শেষে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ও শি জিনপিংয়ের মধ্যে বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে।
এর জবাবে ট্রাম্প হুমকি দিয়েছেন, ১ নভেম্বর থেকে চীনা রপ্তানির ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।
তবে তিনি জানিয়েছেন, বৈঠক নির্ধারিত সময়েই হতে পারে। শুক্রবার সাংবাদিকদের বলেন ট্রাম্প বলেন, ‘আমি যাই হোক সেখানে থাকব, তাই ধরে নিচ্ছি বৈঠকটি হবে।’
ভারতের রুশ জ্বালানির ওপর নির্ভরতা
বর্তমানে রাশিয়াই ভারতের সবচেয়ে বড় তেল সরবরাহকারী দেশ।
শিপিং বিশ্লেষণ সংস্থা কেপলার-এর তথ্য অনুযায়ী, ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ভারত প্রতিদিন ৪ দশমিক ৫ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল আমদানি করেছে। এর মধ্যে রাশিয়ার অংশ প্রায় ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন ব্যারেল, অর্থাৎ মোট আমদানির ৩৪ শতাংশ।
এটি ২০২২ সালের জানুয়ারির তুলনায় প্রায় ২ হাজার ২৫০ শতাংশ বেশি। তখন রাশিয়া থেকে ভারতের আমদানি ছিল দিনে মাত্র ৬৮ হাজার ব্যারেল।
সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার-এর তথ্য অনুযায়ী, চীনের পর ভারতই রুশ জ্বালানির দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রেতা।
২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসে রাশিয়ার মোট অপরিশোধিত তেল রপ্তানির ৪৭ শতাংশ চীন এবং ৩৮ শতাংশ ভারত আমদানি করেছে।
ভারত এত রুশ তেল কিনছে কেন?
২০২২ সালের ডিসেম্বরে পশ্চিমা দেশগুলো রুশ অপরিশোধিত তেলের ওপর ৬০ ডলারের মূল্যসীমা নির্ধারণ করে। এর ফলে রাশিয়াকে ক্রেতা ধরে রাখতে মূল্য কমিয়ে প্রতিযোগিতা করতে হয়, বিশেষ করে যারা পশ্চিমা পরিবহন ও বীমা সুবিধা ব্যবহার করতে চায়।
এই সুযোগে ভারত তুলনামূলক সস্তায় রুশ তেল আমদানি বাড়িয়ে দেয়, যা এখন তার জ্বালানি সরবরাহের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি হয়ে উঠেছে। সস্তা রুশ তেল ভারতের চলতি হিসাব ঘাটতি কমাতে বড় ভূমিকা রেখেছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এই ঘাটতি আগের বছরের তুলনায় ৬৫ শতাংশ কমে যায়।
সবচেয়ে বেশি লাভবান হয়েছে রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড—যা এখন ভারতের সবচেয়ে বড় রুশ তেল আমদানিকারক। ২০২১ সালে রিলায়েন্সের জামনগর রিফাইনারিতে রুশ অপরিশোধিত তেলের অংশ ছিল মাত্র ৩ শতাংশ। কিন্তু ২০২৫ সালের মধ্যে তা বেড়ে প্রায় ৫০ শতাংশে পৌঁছেছে।
সেন্টার ফর রিসার্চ অন এনার্জি অ্যান্ড ক্লিন এয়ার-এর হিসাবে, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত জামনগর রিফাইনারি বিশ্বজুড়ে ৮৫ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলারের পরিশোধিত তেল রপ্তানি করেছে।
এর মধ্যে প্রায় ৪২ শতাংশ (৩৬ বিলিয়ন ডলার) গেছে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপকারী দেশগুলোতে।
ট্রাম্পের দাবি নিয়ে কী বলছে ভারত
ভারত এখনো সরকারিভাবে নিশ্চিত করেনি যে তারা রুশ তেল কেনা বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যেমনটি ট্রাম্প দাবি করেছেন। যুদ্ধ চলাকালেও, ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক সত্ত্বেও, ভারত তার রুশ তেল ক্রয়ের সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র শ্রী রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার সেই অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তবে তিনি ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে ভারত তার আমদানি ভিত্তিকে বৈচিত্র্যময় করার চেষ্টা করতে পারে।
রণধীর জয়সওয়াল বৃহস্পতিবার বলেন, ‘স্থিতিশীল জ্বালানি মূল্য ও নিরাপদ সরবরাহ নিশ্চিত করা আমাদের জ্বালানি নীতির প্রধান লক্ষ্য। এর মধ্যে উৎসের বৈচিত্র্যও অন্তর্ভুক্ত।’
তিনি আরও যোগ করেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, আমরা দীর্ঘদিন ধরে জ্বালানি সহযোগিতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। দেশটির বর্তমান প্রশাসনও এ বিষয়ে আগ্রহ দেখিয়েছে। আলোচনা চলছে।’
অর্থনীতিবিদ গার্সিয়া হেরেরো মনে করেন, আগামী তিন থেকে ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্র–ভারত বাণিজ্য সম্পর্ক উত্তেজনাপূর্ণ হলেও বাস্তববাদী সমঝোতার দিকে যাবে।
তার মতে, যদি ভারত রুশ তেল আমদানি সীমিত করে, তবে শুল্ক কমতে পারে এবং ২০২৬ সালের শুরুর দিকেই একটি ছোট পরিসরের বাণিজ্য চুক্তি হতে পারে।
পেরুতে একদিন আগে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়া হোসে জেরির বিরুদ্ধেও জেন-জি বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। বিক্ষোভ চলাকালে এখন পর্যন্ত একজন নিহত ও কয়েক ডজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজধানী লিমায় জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।
১ দিন আগেইসরায়েল গাজা থেকে ট্যাংক সরিয়ে নিয়েছে, যুদ্ধবিমানও অনেকটা নীরব। কিন্তু এর মানে এই নয় যে যুদ্ধ শেষ হয়ে গেছে। এ পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছে, লক্ষাধিক ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে, এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ গৃহহীন হয়েছে।
১ দিন আগেইসরায়েলি হামলায় ইয়েমেনের হুতিদের সামরিক প্রধান মোহাম্মদ আল-করিম আল-ঘামারি নিহত হয়েছেন। তিনি হুতিদের সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে অন্যতম শীর্ষ কর্মকর্তা ছিলেন।
১ দিন আগেনিজের করা যুদ্ধবিরতির চুক্তি ভেঙে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস সদস্যদের হত্যার হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
১ দিন আগে