leadT1ad

২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়ার গ্যাস আমদানি বন্ধ করবে ইইউ

স্ট্রিম ডেস্ক
স্ট্রিম ডেস্ক

প্রকাশ : ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭: ০০
২০২৭ সালের মধ্যে রাশিয়ার গ্যাস আমদানি বন্ধ করতে চায় ইইউ। সংগৃহীত ছবি

রাশিয়ার গ্যাস আমদানি বন্ধে ইউরোপিয়ান কাউন্সিল ও ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট অস্থায়ী চুক্তিতে সম্মত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে ২০২৭ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে রাশিয়ার গ্যাস আমদানি বন্ধ করবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।

আজ বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়। চুক্তির পর ইইউ কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লেন বলেন, এটা নতুন যুগের সূচনা, যে যুগ রাশিয়া থেকে ইউরোপের পূর্ণ জ্বালানি স্বাধীনতার যুগ।

তিনি বলেন, ইউক্রেন যুদ্ধের শুরুতে রাশিয়া থেকে গ্যাস আমদানি বা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এবং পাইপলাইনে গ্যাস আমদানি ৪৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৩ শতাংশ করা হয়েছে। আর কয়লা আমদানি ৫১ শতাংশ থেকে কমিয়ে শূন্য শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া অপরিশোধিত তেল আমদানি ২৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২ শতাংশ করা হয়েছে।

ইউরোপিয়ান কাউন্সিল বলেছে, গ্যাস সরবরাহকে রাশিয়া যখন যুদ্ধের হাতিয়ার করেছে তার পরই রাশিয়ার জ্বালানি সরবরাহের ওপর নির্ভরশীলতা শেষ করার লক্ষ্য নেওয়া হয়। যা ইউরোপিয়ান জ্বালানি বাজারে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে।

পশ্চিমা দেশগুলোতে জ্বালানি আমদানি করে বিলিয়ন ডলার আয় করে রাশিয়া। সংগৃহীত ছবি
পশ্চিমা দেশগুলোতে জ্বালানি আমদানি করে বিলিয়ন ডলার আয় করে রাশিয়া। সংগৃহীত ছবি

গত মে মাসে রাশিয়ার জ্বালানি নির্ভরতা শেষ করার জন্য ‘রূপরেখা’ প্রকাশ করে ইউরোপিয়ান কমিশন। অবশ্য এরপরই ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছিল, ইউরোপ নিজের পায় নিজে কুড়াল মেরেছে।

প্রসঙ্গত, গতকাল ইউক্রেন ইস্যুতে একটি শান্তি চুক্তি করতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধিদের সঙ্গে রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন টানা পাঁচ ঘণ্টা বৈঠক করেছেন। তাতেও কোনো ধরনের সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি দুই দেশের আলোচকরা।

বৈঠক শেষে ক্রেমিলিনের এক মুখপাত্র বলেছেন, মস্কো বৈঠক খুবই ‘গঠনমূলক’ ছিল, তবে পরিকল্পনার অংশবিশেষ এখনো রাশিয়ার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়।

এদিকে, মস্কো ত্যাগ করার পর যুক্তরাষ্ট্রের আলোচক দল এখনো কোনো মন্তব্য করেনি। ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে টানা এক সপ্তাহ কূটনৈতিক তৎপরতা চালানোর পর বৈঠকে ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকভ এবং জামাতা জার্ড কোশনার উপস্থিত ছিলেন।

অন্যদিকে, মঙ্গলবারের শুরুতে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত শান্তি পরিকল্পনায় কিয়েভ ও ইউরোপ যে পরিবর্তগুলো এনেছে তা অগ্রহণযোগ্য।

শুধু তাই নয়, পুতিন বলেন, যদি ইউরোপও যু্দ্ধে যেতে চায় এবং শুরু করতে চায়, আমরা এই মুহূর্ত থেকে লড়তে প্রস্তুত আছি।

ইউক্রেন এবং তার মিত্ররা প্রস্তাবিত খড়সা শান্তি চুক্তি সংশোধনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ধরনা দিয়েছিল। আবার হোয়াইট হাউস চাচ্ছে দ্রুত চুক্তিতে পৌঁছাতে। এছাড়া ক্রেমলিন আগে এই চুক্তি গ্রহণযোগ্য হবে বলে ইঙ্গিতও দিয়েছিল। তবে নভেম্বরে খসড়া চুক্তিটি সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হওয়ার পর আপাত দৃষ্টিতে মনে হচ্ছিল তা রাশিয়ার জন্য সুবিধাজনক হবে। যদিও সাম্প্রতিক সপ্তাহে এতে বেশকিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

এদিকে, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে চলমান আলোচনা নিয়ে বৈঠক করতে ব্রাসেলসে আছেন ন্যাটোভুক্ত দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা।

বৈঠকের আগে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াদেফুল বলেন, তিনি যুদ্ধ বন্ধে ‘সব ধরনের আলোচনাকে’ স্বাগত জানান। কিন্তু রাশিয়ার পক্ষ থেকে আলোচনায় যাওয়ার ‘প্রকৃত কোনো ইচ্ছা’ তিনি দেখেন না।

অন্যদিকে, রাতভর যুক্তরাষ্ট্র-রাশিয়ার আলোচনার কথা উল্লেখ করে এস্তোনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্গাস সাহকনা বলেছেন, ইউরোপ মহাদেশে কী ঘটবে তা অবশ্যই ইউরোপকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আমাদের ব্যাপারে পুতিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না… আবার আমাদের পরিবর্তে যুক্তরাষ্ট্রও সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।

Ad 300x250

সম্পর্কিত