যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক
গত বছর বাংলাদেশ থেকে রপ্তানিকৃত পণ্যের ওপর গড়ে শুল্কহার ছিল ১৫ শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে পাঠানো ৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পণ্য থেকে এই শুল্কহারে শুল্ক আদায় করেছে ১২৭ কোটি ডলার।
বাংলাদেশের পণ্যের ওপর শুল্ক ৩৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ২০ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। আর এই শুল্ক কমাতে যুক্তরাষ্টের সঙ্গে গোপন চুক্তি হয়েছে বলে যে গুঞ্জন ছড়িয়েছে তা নাকচ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বাংলাদেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্র যে উচ্চমাত্রার সম্পূরক শুল্ক আরোপ করেছিল, তা কমিয়ে ২০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে হোয়াইট হাউস। শুক্রবার (বাংলাদেশ সময়) এই ঘোষণা দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন জানায়, একাধিক দফা আলোচনার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে দুই দেশ।
মর্কিন শুল্ক ২০ শতাংশের নিচে আরোপ করা হবে বলে আশা করেছিলেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তবে শুল্ক ২০ শতাংশ করায় যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি বাধাগ্রস্ত হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেন, ‘আজ আমরা সম্ভাব্য ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক এড়াতে সক্ষম হয়েছি। এটি আমাদের পোশাক খাত এবং লাখ লাখ মানুষের জন্য সুখবর। আমরা আমাদের বৈশ্বিক প্রতিযোগিতাও ধরে রেখেছি এবং বিশ্বের বৃহত্তম ভোক্তা বাজারে প্রবেশের নতুন সুযোগও তৈরি করেছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৃতীয় দফা আলোচনা
বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার তৃতীয় দফার বাণিজ্যিক আলোচনার প্রথম দিনেই ইতিবাচক অগ্রগতি হয়েছে। ওয়াশিংটন ডিসিতে সোমবার (২৯ জুলাই) শুরু হওয়া এই বৈঠকে যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক (রেসিপ্রোকাল ট্যারিফ) কমানোর বিষয়ে সবুজ সংকেত পেয়েছে বাংলাদেশ।
সফরের বিষয়ে এক বিবৃতিতে অ্যালবানিজ বলেন, চীনের সঙ্গে আমাদের সরকার যতটা সম্ভব মতপার্থক্য ঘোচানোর চেষ্টা করবে। আবার প্রয়োজনে কিছু জায়গায় মতপার্থক্য হবে এবং আমাদের জাতীয় স্বার্থ প্রাধান্য পাবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারের কার্যালয়ে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দুপক্ষের আলোচনায় শুল্ক বিষয়ে অগ্রগতি হয়েছে বলে জানা গেছে।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক ইস্যু নিয়ে আলোচনার প্রথম দিন শেষ হয়েছে। কাল, পরশুও আলোচনা চলবে। যুক্তি-তর্কে অধিকাংশ বিষয়ে দুইপক্ষ একমত হয়েছে। তবে এখনই শুল্ক ইস্যু নিয়ে মন্তব্য করা যাবে না।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল সোমবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসকে পাঠানো এক চিঠিতে এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের বাণিজ্য সম্পর্কের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এই শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। ভিয়েতনাম-যুক্তরাষ্ট্র নতুন বাণিজ্য চুক্তি ভিয়েতনামের জন্য সুবিধা নিয়ে এলেও বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে রয়েছে।
একদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্কনীতির শঙ্কা, অন্যদিকে স্বৈরাচার পতনের পর সৃষ্ট রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা—সব মিলিয়ে দেশের পোশাক খাত ও সামগ্রিক অর্থনীতি পড়েছে গভীর উদ্বেগের মুখে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত ৩৭ শতাংশ শুল্ক সাময়িকভাবে স্থগিত থাকলেও, সেই আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন লাখ লাখ পোশাক শ্রমিক।
গাজায় ইসরায়েলের সামরিক অভিযান ও বেসামরিক জনগণের ওপর ব্যাপক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলের সঙ্গে নতুন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আলোচনা স্থগিত করেছে যুক্তরাজ্য। পাশাপাশি পশ্চিম তীরে অবৈধ বসতি স্থাপন ও সহিংসতায় জড়িত ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপরে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে লন্ডন।
ভারত বাংলাদেশ থেকে স্থলপথে তৈরি পোশাকসহ ছয় ধরনের পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করায় দুই দেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। ১৭ মে ভারতের ডিরেক্টোরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড (ডিজিএফটি) এক নির্দেশনায় জানায়, এসব পণ্য এখন থেকে শুধু ভারতের নভো সেবা ও কলকাতা