যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতি বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গতিপ্রকৃতিকে বদলে দিচ্ছে। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক আচরণে মৌলিক পরিবর্তন আসছে। তৈরি হচ্ছে নতুন অর্থনৈতিক ভূগোল। এই পরিবর্তন বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ম, আচরণ এবং প্রতিষ্ঠানকে আমূল বদলে দিচ্ছে।
মাহবুবুল আলম তারেক
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতি বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গতিপ্রকৃতিকে বদলে দিচ্ছে। এতদিন বিশ্ব অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতিকে নিজের স্বার্থেই নিরাপত্তা দিত। কিন্তু এখন ট্রাম্পের যুগে এসে যুক্তরাষ্ট্র সেই ভূমিকা থেকে সরে এসেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র লক্ষ্য যে কোনও উপায়ের নিজের জন্য বেশি মুনাফা নিশ্চিত করা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজের বলয়ভুক্ত দেশগুলোকে একপ্রকার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদানকারীর ভূমিকা রাখছিল। নিরাপদ সমুদ্রপথ, স্থিতিশীল ডলার, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম-কানুন, সম্পত্তি সুরক্ষার নিশ্চয়তা— সব মিলিয়ে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলেছিল তারা। ফলে মিত্রদেশগুলো ঝুঁকি কমিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়নে মনোযোগ দিতে পেরেছিল। বিনিময়ে, যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক নিয়ম-কানুন প্রণয়নের ক্ষমতা, স্বল্প সুদে ঋণ এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করেছে।
কিন্তু ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতি সেই ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার সীমিত করা, মিত্র দেশগুলোকে মার্কিন অস্ত্র ও পণ্য কিনতে বাধ্য করা এবং চীনের শিল্প বিনিয়োগ বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ‘মুনাফাখোর’ শক্তিতে পরিণত করেছেন। এতে একদিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতি নষ্ট হচ্ছে, সহযোগিতার জায়গা সংকুচিত হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক আচরণেও মৌলিক পরিবর্তন আসছে। তৈরি হচ্ছে নতুন অর্থনৈতিক ভূগোল। এই পরিবর্তন বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ম, আচরণ এবং প্রতিষ্ঠানকে আমূল বদলে দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
গত প্রায় ৮০ বছর ধরে যুক্তরা্যেষ্ট্রর এই ভূমিকার কারণে তাদের গড়ে তোলা অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি কমে গিয়েছিল। ফলে তারা বাণিজ্যে মনোযোগ দিতে পেরেছে এবং তাদের স্থিতি ও প্রবৃদ্ধি এসেছে। এই ব্যবস্থার সবচেয়ে ভালো সময় ছিল ১৯৮০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, উদ্ভাবন এবং প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ স্তরে ছিল। যদিও অর্থনৈতিক অসমতা এবং মার্কিন আরোপিত অন্যায় কিছু ক্ষেত্রে অব্যাহত ছিল।
কিন্তু ট্রাম্পের নতুন নীতির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মিত্রদের জন্য সেই নিরাপত্তার বলয় পুরোপুরি প্রত্যাহার করেছে। এতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং দেশগুলো নিজেদের অর্থৈনৈতিক নিরাপত্তার জন্য নিজেরাই ব্যায় করতে বাধ্য হতে হচ্ছে। ট্রাম্পের নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলো— যেমন জাপান, কানাডা, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাজ্য— সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উদাহরণস্বরুপ, জাপানকেও এখন ১৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে এবং শর্ত অনুযায়ী তাদের জিডিপির ১৪ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। অথচ জাপান দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করেছে এবং নিজ দেশে মার্কিন সেনাদের ঘাঁটি রাখতে দিয়েছে।
ট্রাম্পের একতরফা শুল্ক আরোপ ও বাণিজ্য চুক্তির পুনর্বিন্যাসে কানাডা ও মেক্সিকোর অর্থনীতিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মেক্সিকো, ভিয়েতনাম এবং অন্যান্য দেশকে চীনা শিল্প উপকরণ এবং বিনিয়োগ বন্ধ করতে চাপ দেওয়া হয়েছে। এসবের ফলে তাদের অর্থনৈতিক লাভ কমেছে এবং ঝুঁকি বেড়েছে।
এসব দেশের জনমতেও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে হতাশা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয়তার হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০২৫ সালের জরিপে দেখা গেছে, জাপানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন ১৫ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। কানাডায় কমেছে ২০ পয়েন্ট এবং মেক্সিকোতে ৩২ পয়েন্ট। কানাডা ২০২০ সালের ইউএসএমসিএ চুক্তি সংশোধনের বিরোধিতা করছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে অনেকটা ‘চাঁদাবাজি-ভিত্তিক চুক্তি’তে পরিণত করেছে। এখন হুমকিই হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান হাতিয়ার।
চীনের দিকে ঝোঁক ও নতুন জোট
যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা কমে যাওয়ায় অনেক দেশ বিকল্প খুঁজছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অর্থনৈতিক জোট আসিয়ানভুক্ত দেশ ইন্দোনেশিয়া এখন চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে। ২০২৫ সালে দেশটি চীনের সঙ্গে ৩ বিলিয়ন ডলারের ‘টুইন’ শিল্পপার্ক চুক্তি করেছে। এছাড়া, ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং চীনের পিপলস ব্যাংক স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য বাড়ানোর এবং সমুদ্রপথে সহযোগিতা জোরদারের চুক্তি করেছে। এতে হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য বাড়বে। এই পদক্ষেপগুলো মার্কিন নীতিনির্ধারকদের জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল।
ইন্দোনেশিয়া আসলে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ ইন্দোনেশিয়ার পণ্য রপ্তানিকে প্রভাবিত করছে। যদিও পাম তেল, কোকো এবং রাবার এই শুল্ক থেকে মুক্ত। কিন্তু এই শুল্ক ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি বাজারে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে, যা দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও ধীর করে দিচ্ছে।
একইভাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আসিয়ান নিজেদের মধ্যে এবং চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের সুযোগ কমায় তারা নতুন বিকল্প গড়ে তুলছে। ইউরোপীয় দেশগুলো মার্কিন যুদ্ধবিমান এড়িয়ে ইউরোফাইটার কেনার দিকে ঝুঁকছে।
ডলারের স্থিতিশীলতা হ্রাস
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ডেও হস্তক্ষেপ করছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ওপর উচ্চহারে কর আরোপ এবং ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা দুর্বল করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এতে ডলারের তারল্য ও নিরাপত্তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
ফলে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে মূলধন বেরিয়ে যাচ্ছে এবং শুল্ক আরোপ সত্ত্বেও ডলারের মান কমছে। এটি অতীতের ধারা ভেঙে দিয়েছে। ২০২৫ সালে সুদের হারের বিপরীতে ডলারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে, যা ঐতিহাসিক প্রবণতার বিপরীত।
বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদের অভাবে ভুগছে। সোনা, কাঠ এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো বিকল্প সম্পদের মূল্য বাড়ছে। তবে এসব সম্পদের সীমিত তারল্য আর্থিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি তৈরি করছে।
ইইউ বন্ড মার্কেট এবং ইউরোর আকর্ষণ বাড়ছে, বিশেষ করে ইউক্রেন বলকান এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর জন্য।
উদীয়মান অর্থনীতির বিভাজন
ট্রাম্পের নীতি উদীয়মান বাজারকে দুটি স্তরে বিভক্ত করেছে— বড় উদীয়মান বাজার ও দরিদ্র অর্থনীতি। বড় উদীয়মান অর্থনীতি যেমন ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল ও ভারত অভ্যন্তরীণ সংস্কার এবং চীনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য সুযোগের কারণে তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী হয়েছে।
কিন্তু মধ্য আমেরিকা, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্র অর্থনীতিগুলো আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। বিশেষত ট্রাম্পের নীতির কারণেই তারা বাড়তি ঋণের বোঝা ও সীমিত প্রবৃদ্ধির মুখোমুখি হচ্ছে। ট্রাম্পের বিদেশি সাহায্য হ্রাস এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে আরও সীমিত করেছে।
বৈশ্বিক অর্থনীতির খণ্ডিতকরণ
যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা প্রদানকারীর ভূমিকা থেকে সরে আসায় দেশগুলো নিজেদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পেছনে ব্যয় বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। এজন্য অনেক দেশ আর্থিক দমননীতি গ্রহণ করছে, যা বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে বৈশ্বিক উৎপাদনশীলতা ও বাস্তব আয়ের প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং উদ্ভাবন কমছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতা দুর্বল হলে এই সংকট আরও গভীর হবে।
চীনের তুলনামূলক সুবিধা
ট্রাম্পের নীতির মূল লক্ষ্য ছিল চীনকে দুর্বল করা। কিন্তু চীন তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ, দেশটি আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছিল।
তবে নতুন সুযোগ কাজে লাগাতে চীন কতটা বিশ্বাসযোগ্যভাবে তার মিত্র দেশগুলোকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে তা এখনো অনিশ্চিত। চীনের সামনে এখন নতুন সুযোগ এসেছে সত্য। তবে প্রশ্ন হলো— চীন কি যুক্তরাষ্ট্রের মতো আরেক ‘চাঁদাবাজ নিরাপত্তা প্রদানকারী’ হয়ে উঠবে, নাকি ভিন্ন পথে যাবে?
নতুন অর্থনৈতিক ভূগোল
ট্রাম্পের নীতি একটি নতুন এবং আরও জটিল অর্থনৈতিক ভূগোল সৃষ্টি করছে। ইন্দোনেশিয়ার মতো আসিয়ান দেশগুলো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলো (যেমন সিপিটিপিপি চুক্তির মাধ্যমে) নতুন সহযোগিতার কাঠামো খুঁজছে। তাদের লক্ষ্য বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। এর মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সংস্কারের পরিকল্পনাও রয়েছে।
এগুলো এখনো যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থার সমান কার্যকর হয়ে উঠতে পারেনি। তবুও, মার্কিন নীতির ফাঁকা জায়গা পূরণে এগুলো আংশিক সমাধান দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিণতি
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেও দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রও বৈশ্বিক বাণিজ্য ও প্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। মার্কিন সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যয়বহুল এবং কম বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠছে। ইউরোপীয়, এশীয় এবং এমনকি ব্রাজিলিয়ান ও তুর্কি ব্র্যান্ড মার্কিন কোম্পানির বাজার হারাচ্ছে।
বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস এবং অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতা মার্কিন জীবনযাত্রার মান এবং সামরিক সক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে। উন্নয়নশীল বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাস অভিবাসন প্রবাহ এবং জনস্বাস্থ্য সংকটও বাড়াবে।
সবমিলিয়ে ট্রাম্পের নীতি আসলে একটি ভূমিকম্পের মতো বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিপথ বদলে দিয়েছে। এতে বৈশ্বিক অর্থনীতি খণ্ডিত, ব্যয়বহুল ও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। এই প্রভাব ট্রাম্পের মেয়াদের পরও চলতে পারে। ফলে একসময়কার লাভজনক নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবসা হারিয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্র দাঁড়িয়ে আছে এক ‘শুন্য সুপারশপের মতো’— বাইরে থেকে ঝলমলে দেখালেও ভিতরে শূন্যতা বাড়ছে।
(ফরেন অ্যাফেয়ার্সে প্রকাশিত অ্যাডাম এস. পোজেনের লেখা— ‘দ্য নিউ ইকোনমিক জিওগ্রাফি: হু প্রফিটস ইন এ পোস্ট-আমেরিকান ওয়ার্ল্ড?’ অবলম্বনে)
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থনৈতিক নীতি বিশ্বব্যাপী বাণিজ্য ও বিনিয়োগের গতিপ্রকৃতিকে বদলে দিচ্ছে। এতদিন বিশ্ব অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের অন্যান্য অর্থনীতিকে নিজের স্বার্থেই নিরাপত্তা দিত। কিন্তু এখন ট্রাম্পের যুগে এসে যুক্তরাষ্ট্র সেই ভূমিকা থেকে সরে এসেছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের একমাত্র লক্ষ্য যে কোনও উপায়ের নিজের জন্য বেশি মুনাফা নিশ্চিত করা।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র বিশ্ব অর্থনীতিতে নিজের বলয়ভুক্ত দেশগুলোকে একপ্রকার অর্থনৈতিক নিরাপত্তা প্রদানকারীর ভূমিকা রাখছিল। নিরাপদ সমুদ্রপথ, স্থিতিশীল ডলার, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের নিয়ম-কানুন, সম্পত্তি সুরক্ষার নিশ্চয়তা— সব মিলিয়ে একটি নিরাপদ ও স্থিতিশীল বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবেশ গড়ে তুলেছিল তারা। ফলে মিত্রদেশগুলো ঝুঁকি কমিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য ও উন্নয়নে মনোযোগ দিতে পেরেছিল। বিনিময়ে, যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক নিয়ম-কানুন প্রণয়নের ক্ষমতা, স্বল্প সুদে ঋণ এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে মুনাফা অর্জন করেছে।
কিন্তু ট্রাম্পের নতুন বাণিজ্য নীতি সেই ব্যবস্থাকে ভেঙে দিয়েছে। মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার সীমিত করা, মিত্র দেশগুলোকে মার্কিন অস্ত্র ও পণ্য কিনতে বাধ্য করা এবং চীনের শিল্প বিনিয়োগ বন্ধ করতে চাপ প্রয়োগের মাধ্যমে ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে একটি ‘মুনাফাখোর’ শক্তিতে পরিণত করেছেন। এতে একদিকে বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতি নষ্ট হচ্ছে, সহযোগিতার জায়গা সংকুচিত হচ্ছে এবং যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্ররা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক আচরণেও মৌলিক পরিবর্তন আসছে। তৈরি হচ্ছে নতুন অর্থনৈতিক ভূগোল। এই পরিবর্তন বিশ্ব অর্থনীতির নিয়ম, আচরণ এবং প্রতিষ্ঠানকে আমূল বদলে দিচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র দেশগুলোই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত
গত প্রায় ৮০ বছর ধরে যুক্তরা্যেষ্ট্রর এই ভূমিকার কারণে তাদের গড়ে তোলা অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি কমে গিয়েছিল। ফলে তারা বাণিজ্যে মনোযোগ দিতে পেরেছে এবং তাদের স্থিতি ও প্রবৃদ্ধি এসেছে। এই ব্যবস্থার সবচেয়ে ভালো সময় ছিল ১৯৮০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত। এই সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলোর অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, উদ্ভাবন এবং প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ স্তরে ছিল। যদিও অর্থনৈতিক অসমতা এবং মার্কিন আরোপিত অন্যায় কিছু ক্ষেত্রে অব্যাহত ছিল।
কিন্তু ট্রাম্পের নতুন নীতির মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্র মিত্রদের জন্য সেই নিরাপত্তার বলয় পুরোপুরি প্রত্যাহার করেছে। এতে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে এবং দেশগুলো নিজেদের অর্থৈনৈতিক নিরাপত্তার জন্য নিজেরাই ব্যায় করতে বাধ্য হতে হচ্ছে। ট্রাম্পের নীতির ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশগুলো— যেমন জাপান, কানাডা, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাজ্য— সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উদাহরণস্বরুপ, জাপানকেও এখন ১৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে এবং শর্ত অনুযায়ী তাদের জিডিপির ১৪ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রে বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। অথচ জাপান দীর্ঘদিন ধরে মার্কিন ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করেছে এবং নিজ দেশে মার্কিন সেনাদের ঘাঁটি রাখতে দিয়েছে।
ট্রাম্পের একতরফা শুল্ক আরোপ ও বাণিজ্য চুক্তির পুনর্বিন্যাসে কানাডা ও মেক্সিকোর অর্থনীতিও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। মেক্সিকো, ভিয়েতনাম এবং অন্যান্য দেশকে চীনা শিল্প উপকরণ এবং বিনিয়োগ বন্ধ করতে চাপ দেওয়া হয়েছে। এসবের ফলে তাদের অর্থনৈতিক লাভ কমেছে এবং ঝুঁকি বেড়েছে।
এসব দেশের জনমতেও যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে হতাশা বাড়ছে। যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয়তার হারও উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০২৫ সালের জরিপে দেখা গেছে, জাপানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি সমর্থন ১৫ শতাংশ পয়েন্ট কমেছে। কানাডায় কমেছে ২০ পয়েন্ট এবং মেক্সিকোতে ৩২ পয়েন্ট। কানাডা ২০২০ সালের ইউএসএমসিএ চুক্তি সংশোধনের বিরোধিতা করছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ট্রাম্প প্রশাসন মূলত যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনৈতিক সম্পর্ককে অনেকটা ‘চাঁদাবাজি-ভিত্তিক চুক্তি’তে পরিণত করেছে। এখন হুমকিই হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান হাতিয়ার।
চীনের দিকে ঝোঁক ও নতুন জোট
যুক্তরাষ্ট্রের নির্ভরযোগ্যতা কমে যাওয়ায় অনেক দেশ বিকল্প খুঁজছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশীয় অর্থনৈতিক জোট আসিয়ানভুক্ত দেশ ইন্দোনেশিয়া এখন চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করছে। ২০২৫ সালে দেশটি চীনের সঙ্গে ৩ বিলিয়ন ডলারের ‘টুইন’ শিল্পপার্ক চুক্তি করেছে। এছাড়া, ইন্দোনেশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং চীনের পিপলস ব্যাংক স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য বাড়ানোর এবং সমুদ্রপথে সহযোগিতা জোরদারের চুক্তি করেছে। এতে হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে এবং স্থানীয় মুদ্রায় বাণিজ্য বাড়বে। এই পদক্ষেপগুলো মার্কিন নীতিনির্ধারকদের জন্য অপ্রত্যাশিত ছিল।
ইন্দোনেশিয়া আসলে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা থেকে সরে যাওয়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের ১৯ শতাংশ শুল্ক আরোপ ইন্দোনেশিয়ার পণ্য রপ্তানিকে প্রভাবিত করছে। যদিও পাম তেল, কোকো এবং রাবার এই শুল্ক থেকে মুক্ত। কিন্তু এই শুল্ক ইন্দোনেশিয়ার রপ্তানি বাজারে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করছে, যা দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও ধীর করে দিচ্ছে।
একইভাবে, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আসিয়ান নিজেদের মধ্যে এবং চীনের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও মজবুত করছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে প্রবেশের সুযোগ কমায় তারা নতুন বিকল্প গড়ে তুলছে। ইউরোপীয় দেশগুলো মার্কিন যুদ্ধবিমান এড়িয়ে ইউরোফাইটার কেনার দিকে ঝুঁকছে।
ডলারের স্থিতিশীলতা হ্রাস
ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ডেও হস্তক্ষেপ করছেন। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ওপর উচ্চহারে কর আরোপ এবং ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীনতা দুর্বল করার পদক্ষেপ নিয়েছেন। এতে ডলারের তারল্য ও নিরাপত্তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।
ফলে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে মূলধন বেরিয়ে যাচ্ছে এবং শুল্ক আরোপ সত্ত্বেও ডলারের মান কমছে। এটি অতীতের ধারা ভেঙে দিয়েছে। ২০২৫ সালে সুদের হারের বিপরীতে ডলারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে, যা ঐতিহাসিক প্রবণতার বিপরীত।
বিশ্বের বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ সম্পদের অভাবে ভুগছে। সোনা, কাঠ এবং ক্রিপ্টোকারেন্সির মতো বিকল্প সম্পদের মূল্য বাড়ছে। তবে এসব সম্পদের সীমিত তারল্য আর্থিক অস্থিতিশীলতার ঝুঁকি তৈরি করছে।
ইইউ বন্ড মার্কেট এবং ইউরোর আকর্ষণ বাড়ছে, বিশেষ করে ইউক্রেন বলকান এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর জন্য।
উদীয়মান অর্থনীতির বিভাজন
ট্রাম্পের নীতি উদীয়মান বাজারকে দুটি স্তরে বিভক্ত করেছে— বড় উদীয়মান বাজার ও দরিদ্র অর্থনীতি। বড় উদীয়মান অর্থনীতি যেমন ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল ও ভারত অভ্যন্তরীণ সংস্কার এবং চীনের সঙ্গে নতুন বাণিজ্য সুযোগের কারণে তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী হয়েছে।
কিন্তু মধ্য আমেরিকা, আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দরিদ্র অর্থনীতিগুলো আরও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। বিশেষত ট্রাম্পের নীতির কারণেই তারা বাড়তি ঋণের বোঝা ও সীমিত প্রবৃদ্ধির মুখোমুখি হচ্ছে। ট্রাম্পের বিদেশি সাহায্য হ্রাস এই দেশগুলোর অর্থনৈতিক সম্ভাবনাকে আরও সীমিত করেছে।
বৈশ্বিক অর্থনীতির খণ্ডিতকরণ
যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তা প্রদানকারীর ভূমিকা থেকে সরে আসায় দেশগুলো নিজেদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পেছনে ব্যয় বাড়াতে বাধ্য হয়েছে। এজন্য অনেক দেশ আর্থিক দমননীতি গ্রহণ করছে, যা বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধি কমিয়ে দিচ্ছে। এর ফলে বৈশ্বিক উৎপাদনশীলতা ও বাস্তব আয়ের প্রবৃদ্ধি ধীর হয়ে পড়ছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং উদ্ভাবন কমছে। আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতা দুর্বল হলে এই সংকট আরও গভীর হবে।
চীনের তুলনামূলক সুবিধা
ট্রাম্পের নীতির মূল লক্ষ্য ছিল চীনকে দুর্বল করা। কিন্তু চীন তুলনামূলকভাবে কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কারণ, দেশটি আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীলতা কমানোর পদক্ষেপ নিয়েছিল।
তবে নতুন সুযোগ কাজে লাগাতে চীন কতটা বিশ্বাসযোগ্যভাবে তার মিত্র দেশগুলোকে অর্থনৈতিক নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দেবে তা এখনো অনিশ্চিত। চীনের সামনে এখন নতুন সুযোগ এসেছে সত্য। তবে প্রশ্ন হলো— চীন কি যুক্তরাষ্ট্রের মতো আরেক ‘চাঁদাবাজ নিরাপত্তা প্রদানকারী’ হয়ে উঠবে, নাকি ভিন্ন পথে যাবে?
নতুন অর্থনৈতিক ভূগোল
ট্রাম্পের নীতি একটি নতুন এবং আরও জটিল অর্থনৈতিক ভূগোল সৃষ্টি করছে। ইন্দোনেশিয়ার মতো আসিয়ান দেশগুলো এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন চীনের সঙ্গে বাণিজ্য বাড়াচ্ছে।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের দেশগুলো (যেমন সিপিটিপিপি চুক্তির মাধ্যমে) নতুন সহযোগিতার কাঠামো খুঁজছে। তাদের লক্ষ্য বৈশ্বিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা। এর মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) সংস্কারের পরিকল্পনাও রয়েছে।
এগুলো এখনো যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থার সমান কার্যকর হয়ে উঠতে পারেনি। তবুও, মার্কিন নীতির ফাঁকা জায়গা পূরণে এগুলো আংশিক সমাধান দিতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরিণতি
অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্র নিজেও দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতার মুখোমুখি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রও বৈশ্বিক বাণিজ্য ও প্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। মার্কিন সরবরাহ শৃঙ্খল ব্যয়বহুল এবং কম বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠছে। ইউরোপীয়, এশীয় এবং এমনকি ব্রাজিলিয়ান ও তুর্কি ব্র্যান্ড মার্কিন কোম্পানির বাজার হারাচ্ছে।
বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস এবং অর্থনৈতিক বিচ্ছিন্নতা মার্কিন জীবনযাত্রার মান এবং সামরিক সক্ষমতাকে প্রভাবিত করবে। উন্নয়নশীল বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক হ্রাস অভিবাসন প্রবাহ এবং জনস্বাস্থ্য সংকটও বাড়াবে।
সবমিলিয়ে ট্রাম্পের নীতি আসলে একটি ভূমিকম্পের মতো বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিপথ বদলে দিয়েছে। এতে বৈশ্বিক অর্থনীতি খণ্ডিত, ব্যয়বহুল ও অস্থিতিশীল হয়ে উঠছে। এই প্রভাব ট্রাম্পের মেয়াদের পরও চলতে পারে। ফলে একসময়কার লাভজনক নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবসা হারিয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্র দাঁড়িয়ে আছে এক ‘শুন্য সুপারশপের মতো’— বাইরে থেকে ঝলমলে দেখালেও ভিতরে শূন্যতা বাড়ছে।
(ফরেন অ্যাফেয়ার্সে প্রকাশিত অ্যাডাম এস. পোজেনের লেখা— ‘দ্য নিউ ইকোনমিক জিওগ্রাফি: হু প্রফিটস ইন এ পোস্ট-আমেরিকান ওয়ার্ল্ড?’ অবলম্বনে)
এই রদবদলে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ইভেট্টে কুপারকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে নিয়োগ পেয়েছেন লেবার পার্টির সদস্য ও বিচারমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। তিনি ব্রিটেনের প্রথম মুসলিম নারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
১৬ ঘণ্টা আগেনিজের দল ক্ষমতাসীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) ভাঙন ঠেকাতে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। গত জুলাই মাসের উচ্চকক্ষ নির্বাচনে ভয়াবহ পরাজয়ের দায় নিতে দলীয় আহ্বানের পর ইশিবা এমন সিদ্ধান্ত নিলেন।
১ দিন আগেরাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে কোনো শান্তিচুক্তি সম্পন্ন হলে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের ভেতরে প্রস্তাবিত বিশাল বাফার জোন পর্যবেক্ষণের নেতৃত্ব পেতে পারে। রাশিয়ার হাত থেকে ইউক্রেনকে সুরক্ষিত রাখার একটি উপায় হিসেবে এই বাফার জোনের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
২ দিন আগেসামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ এবার পড়েছেন আরেক মার্ক জাকারবার্গের ঝামেলায়। মার্ক জাকারবার্গের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ইন্ডিয়ানা অঙ্গরাজ্যের আইনজীবী মার্ক জাকারবার্গ একটি মামলা করেছেন।
২ দিন আগে