সেই গান তাঁর আর গাওয়া হয়নি
আজ হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের প্রথম মৃত্যুদিন। অনেকগুলো পরিচয় তাঁর—সংগীতশিল্পী, সংগঠক, উপস্থাপক ও পড়ুয়া একজন মানুষ। তরুণ শিল্পীদের বরাবরই উৎসাহিত করতেন বরিশালে জন্ম নেওয়া এই শিল্পী। তাঁকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন এ প্রজন্মের শিল্পী জয় শাহরিয়ার
জয় শাহরিয়ার
১.
হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল—জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় ‘কুয়াশা প্রহর’ দিয়ে। বাচ্চু ভাইয়ের (আইয়ুব বাচ্চু) সুরে জুয়েল ভাইয়ের প্রথম অ্যালবাম। একটা হালকা নীল রঙের ঝাপসা ছবির প্রচ্ছদ। তারপর এল ‘এক বিকেলে’। ‘সেদিনের এক বিকেলে’ দিয়ে বাংলা গানের অসংখ্য শ্রোতার মতো হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের গানে বুঁদ হলাম আমিও। তারপর ‘আমার আছে অন্ধকার’ থেকে শুরু করে ‘এমন হলো কই’ পর্যন্ত সেই মুগ্ধতা কমেনি এক রত্তিও।
গান শুনে মুগ্ধ হওয়ার পর জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে প্রথম পরিচয় ঘটে ২০০৮ সালে। এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দূর থেকে দেখেছি। এবার ভাইয়ার সঙ্গে পরিচয় হলো খুলনায় একটা ওপেনএয়ার কনসার্টে। স্বাধীনতা দিবসের সে কনসার্টে জুয়েল ভাই ছিলেন উপস্থাপক। খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বিশাল আয়োজন। আমরা ঢাকা থেকে যাওয়া নতুন ব্যান্ড। বছর দেড়েক আগে আমাদের ব্যান্ড ‘নির্ঝর’-এর প্রথম অ্যালবাম বেড়িয়েছে। ঢাকার বাইরে প্রথম এত বড় কনসার্টে গাইতে গিয়েছি। টেনশন তো একটু কাজ করছেই, দর্শকেরা কীভাবে আমাদের নেন!
শুরুতেই বাঁধল বিপত্তি। আমাদের গানের স্লট ছিল তিন নম্বরে। দুই নম্বরে গাইবেন একজন একক শিল্পী। আর অনুষ্ঠানের শুরুতে খুলনার এক ব্যান্ডের ওঠার কথা। কনসার্টের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে যা হয়, কেউ অনুষ্ঠানের শুরুতে গাইতে চায় না। আমরা ঢাকা থেকে আগের রাতে জার্নি করে গিয়েও সময় মতোই পৌঁছালাম।
কিন্তু খুলনার স্থানীয় ব্যান্ডের সবাই তখনো পৌঁছাতে পারেননি। আসলে এ রকম কেন হয় তা সবারই জানা। আমরা স্টেজে উঠলেই তারা পৌঁছে যাবে ঠিক। আসলে এগুলো হলো স্টেজে পরে ওঠার বাহানা।
এদিকে অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় স্লটে থাকা এক নারী শিল্পী, যিনি এককভাবে গান গাইবেন, তিনিও প্রথমে স্টেজে উঠতে সাহস পাচ্ছেন না। অগত্যা জুয়েল ভাই আমার কাছে এলেন। বললেন, ‘তোমরা কি শুরু করতে পারো অনুষ্ঠান? তাহলে আর দেরি করতে চাই না।’ সে সময় আয়োজক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন এসে বললেন, ‘আপনারা যদি শুরু করে দেন, তাহলে ভালো হয়। আর যারা সময় মতো আসেনি, তারা ওঠার সুযোগ পাবে না। আপনারা শুরু করুন প্লিজ।’
কী করব, আমরা স্টেজে উঠে গেলাম। একটানা তিনটে গান করলাম। স্টেজ থেকে যখন নামছি, শুনলাম জুয়েল ভাই মাইক্রোফোনেই আমাদের প্রশংসা করছেন। কাঠফাঁটা রোদ্দুরে উন্মুক্ত মঞ্চে গান করা সোজা কথা তো নয়।
আমাদের প্রথম গান শুরু হওয়ার সময়েই নাকি খুলনার সেই ব্যান্ড ব্যাক স্টেজে উপস্থিত হয়, যা আমরা পরে শুনেছি। আয়োজকেরা তাদের আর পারফর্ম করতে দিতে রাজি না হলে আমাদের কাছে অনুরোধ আসে, আমরা যদি অনুমতি দিই তবে তাদের স্টেজে উঠতে দেওয়া হবে। আমরা বলেছিলাম, আমাদের তো সমস্যা নেই। ওনারা গান করুক। আগে আর পরে ওঠা দিয়ে কী আসে যায়, শিল্পীর পরিচয় তো গানে।
পরে ব্যাকস্টেজে জুয়েল ভাই আমার পিঠ চাপড়ে দিলেন। বললেন, ‘খুব ভালো পারফর্ম করেছ তোমরা। আর এই যে তোমাদের জন্য অনুষ্ঠানটা সময়মতো শুরু করতে পারলাম, সেজন্যও ধন্যবাদ। কেন আগের ব্যান্ড সময়মতো আসেনি সেটা তোমরাও যেমন বোঝো, আমিও বুঝি। কিন্তু এত সংকীর্ণতা নিয়ে মিউজিক হয় না। তোমরা সেই সংকীর্ণতা থেকে দূরে থাকতে পেরেছ। এটা বজায় রেখো, সামনে এগিয়ে যেতে পারবে।’
এরপর দিন গড়িয়েছে। বিভিন্ন আয়োজনে দেখা হয়েছে জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে। একসঙ্গে আমরা কাজও করেছি কিছু। বাপ্পা মজুমদার—বাপ্পা ভাইয়ের সুরে বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় একটা গান করেছিলাম। মনে আছে, গানটির শ্যুটিংয়ে এফডিসিতে বেশ মজা করেছিলাম সবাই। পরে জুয়েল ভাইয়ের পরিচালনায় একটা ইভেন্টের গালা নাইটে রিয়াদের আয়োজনেও আরেকটা কাজ করেছিলাম অনেকের সঙ্গে মিলে।
করোনার আগের কথা। একদিন হঠাৎ জুয়েল ভাই নক দিয়ে বললেন, ‘আসোতো আমার অফিসে। তোমার সাথে একটা আলাপ আছে।’ পরের সপ্তাহে তাঁর অফিসে গেলাম। তিনি একটা দারুণ ইভেন্টের কথা বললেন, যে ইভেন্টের স্বপ্ন আমিও দেখি অনেক দিন ধরে। কিন্তু এর মধ্যে দেশে করোনা হানা দেওয়ায় ইভেন্টটি আর করা হলো না। তবে আপনাকে বলছি জুয়েল ভাই, এই ইভেন্টটা আমি একদিন করবই।
শো করবা কিন্তু কোনো ফিক্সড রেমুনারেশন থাকবে না। ফিক্সড ভেন্যু থাকবে না। হতে পারে কারও বাসায় দুজন তোমার গান শুনতে চায়, গান শোনাতে সেখানে চলে যাবে। কোনো অফিসে এক শজন গান শুনতে চায়, চলে যাবে সেই অফিসে। শ্রোতারা তাঁদের সাধ্যমতো সম্মানী দেবেন।হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল
জুয়েল ভাই মাঝখানে আরেকটা দারুণ আইডিয়া দিয়েছিলেন আমাকে। তা-ও পরে আর সাহস করে করা হয়ে ওঠেনি। তিনি আইডিয়াটি দিয়ে বলেছিলেন, ‘শো করবা কিন্তু কোনো ফিক্সড রেমুনারেশন থাকবে না। ফিক্সড ভেন্যু থাকবে না। হতে পারে কারও বাসায় দুজন তোমার গান শুনতে চায়, গান শোনাতে সেখানে চলে যাবে। কোনো অফিসে এক শজন গান শুনতে চায়, চলে যাবে সেই অফিসে। শ্রোতারা তাঁদের সাধ্যমতো সম্মানী দেবেন। তোমার শোয়ের বুকিং আর সময় শেয়ার করবে অনলাইনে। সেখান থেকেই তোমার শিডিউল নেবে আগ্রহী শ্রোতারা।’
এমন সব দারুণ আইডিয়া মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন জুয়েল ভাই।
২.
জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে আমার সখ্য মূলত করোনাকালে সংগীত সংগঠন করতে গিয়ে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি আমরা কণ্ঠশিল্পীদের অধিকার আদায়ে ‘সিঙ্গার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ নিয়ে কাজ শুরু করি। ওই সংগঠনের সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন জুয়েল ভাই। আমি ছিলাম সাংগঠনিক সম্পাদক। সংগঠনের শুরু থেকে জুয়েল ভাইয়ের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। তাঁর মতো গোছাল সংগঠক জীবনে আমি খুব কমই দেখেছি।
সংগঠনের শুরু থেকে যেকোনো প্রয়োজনে জুয়েল ভাই আর বিশ্বদাকে (কুমার বিশ্বজিৎ) পেয়েছি সবসময়। তাঁদের নেতৃত্বে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে পুরোদমে কাজ শুরু হয় আমাদের। পরবর্তীকালে শিল্পী, সুরকার ও গীতিকবিদের সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘সংগীত ঐক্য’ নামে একটি সংগঠন, যেখানে কণ্ঠশিল্পীদের প্রতিনিধিত্বকারীদের মধ্যে জুয়েল ভাইও ছিলেন। আর আমি ছিলাম কনিষ্ঠতম সদস্য। খুব অল্পদিনের প্রস্তুতিতে আমরা চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সংগীতের জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করেছিলাম। যথারীতি এখানে অন্যতম মুখ্য সংগঠনের ভূমিকা পালন করেন। নিজের উদ্যোগে তিনি সারাদেশ থেকে শিল্পীদের আনার ব্যবস্থা করেছিলেন, যা প্রথমে আমাদের কাছে অসম্ভব মনে হয়েছিল। কিন্তু জুয়েল ভাই-ই এটা সম্ভব করেছিলেন।
বলার কথা হলো, এই পুরো সময়টাতে জুয়েল ভাই লড়ে গেছেন অসুখের সঙ্গে। অথচ কখনো আমাদের সেভাবে বুঝতে দেননি। তিনি ছিলেন প্রবল শক্ত মানসিকতার। সভাসহ সবখানে সময়মতো অংশ নিতেন। সে সময় অবশ্য বেশির ভাগ সভা অনলাইনে হতো। সভাশেষে হয়তো আমরা আবিষ্কার করতাম, তাঁর শরীর খারাপ—হয় আগের সপ্তাহে কেমো দিয়েছেন বা পরের সপ্তাহে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবেন। লন্ডনে চিকিৎসাকালীন সময়েও তিনি সংগঠনের কাজে সময় দিয়েছেন। আসলে সাংগঠনিক দিক দিয়ে জুয়েল ভাই অতুলনীয়। তাঁর শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয়।
৩.
বাংলাদেশে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের অন্যতম পথিকৃৎ হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। তিনি দেখিয়েছেন আইডিয়ার ভিন্নতা ও রূচি বজায় রেখেও কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে সফল ইভেন্ট করা সম্ভব। আমার জানামতে, আমাদের দেশের ইভেন্ট দেশের বাইরেও প্রথমবার নিয়ে গেছেন জুয়েল ভাই।
৪.
হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের গান নিয়ে বলার মতো যোগ্যতা আমার নেই। তবে গেল তিরিশ বছরে বাংলাদেশের অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি একজন অনন্য একজন শিল্পী। কারণ, নব্বই দশক থেকে তিনিই একমাত্র গায়ক, যিনি রক ঘরানার ব্যান্ডের সঙ্গে বাংলা আধুনিক গানের একক শিল্পীদের মধ্যে সেতুবন্ধের মতো কাজ করেছেন। একক শিল্পী হিসেবেই তিনি কাজ করতেন, কিন্তু তাঁর সবগুলো অ্যালবাম করতেন রক কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু। ফলে একক গানের শ্রোতারাও যেমন তাঁর গান গ্রহণ করেছিল, তেমনি রক গানের শ্রোতারাও সমানভাবে পছন্দ করতো তাঁকে। সম্ভবত এ কারণেই সব ব্যান্ড ভোকালিস্টদের নিয়ে করা মিক্সড অ্যালবামে জুয়েল ভাইয়ের গান যেমন থাকত, আবার একক শিল্পীদের মিক্সড অ্যালবামেও জায়গা ছিল তাঁর। আমাদের সংগীত ইন্ডাস্ট্রিতে এটা একটা বিরল উদাহরণই ছিল সে সময়।
৫.
জুয়েল ভাইয়ের আরেকটা পরিচয় এদেশের মানুষ মনে রাখবে সবসময়—উপস্থাপক। এত সুন্দর, সাবলীল উপস্থাপনা বাংলাদেশে হাতেগোনা কজন মানুষ করতে পেরেছেন গত পাঁচ দশকে? তাঁর মূল পরিচয় সংগীতশিল্পী হলেও উপস্থাপক পরিচয়টাও তাই এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
তিনি গোছালো মানুষ আগেই বলেছি। কিন্তু কতটা গোছালো তার একটা উদাহরণ দিই। একদিন তাঁর অফিসে দেখা করতে গিয়ে বললাম, ভাইয়া, আপনার সর্বশেষ অ্যালবামটা নেই আমার কাছে। আপনার কাছে থাকলে দেন। তিনি পাশে থাকা আলমারি দেখিয়ে বললেন, ‘ওপরের তাকে আছে। চেয়ারের ওপরে দাঁড়িয়ে যে কয়টা লাগে নিয়ে নাও।’ মূলত এ সময়েই আমি বেশি করে খেয়াল করলাম যে আলমারিতে ভাইয়ার সব অ্যালবামের ক্যাসেট আর সিডি গোছানো আছে। আমাদের দেশের জন্য এটা বেশ বিরল ঘটনাই বটে। আমাদের বেশির ভাগ শিল্পীর কাছেই আমি তাঁদের নিজেদের ক্যাসেট ও সিডি পাইনি।
৬.
জুয়েল ভাইকে নিয়ে দুটো আক্ষেপ আছে আমার। ‘প্রিয় শহর’ নামে আমার লেখা ও সুরে একটা গান গাওয়ার কথা ছিল ভাইয়ার। ভয়েস দিতে আসার দিন তিনি বললেন, ‘কাল দেশের বাইরে যাবো, ফিরে এসে শরীরটা একটু ভালো হলে ভয়েসটা দিই।’
সেই গান তাঁর আর গাওয়া হয়নি। দেবো, দিচ্ছি করে গানটি গাওয়ার আগেই তিনি চলে গেলেন। অথচ আমার গানের প্রজেক্টে এখনো জুয়েল ভাইয়ের ভয়েস নেওয়ার জন্য ট্র্যাক সিলেক্ট করা আছে।
আরেকটা আক্ষেপ হলো জুয়েল ভাইয়ের বই। রাশিদ খান ভাইয়ের বই নিয়ে আলাপের দিন আমি আর রাশিদ ভাই দুজন মিলে জুয়েল ভাইকে ধরলাম, ভাইয়ার নিজের আত্মকথা, নিজের তোলা ছবি এগুলো নিয়ে একটা বই করুন। তিনি বললেন, করবেন। করা আর হলো না।
জুয়েল ভাই আমার প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘আজব প্রকাশ’ থেকে গায়ক ও গান সম্পর্কিত যেসব বই বের হতো, সেগুলো আগ্রহ নিয়ে সংগ্রহ করতেন। পড়ে আমাকে ফিডব্যাকও দিতেন। লেখা থেকে বইয়ের প্রোডাকশন—সব কিছু নিয়েই আলাপ করতেন তিনি।
এরপর একদিন আমার প্রিয় জুয়েল ভাই দুম করে চলে গেলেন। মনে আছে, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে আমার শেষ মেসেজ ছিল গেল জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে। লিখেছিলাম, ‘ভাইয়া, কেমন আছেন? অনেকদিন কথা হয় না আপনার সাথে।’
সেই মেসেজের উত্তর আর পাওয়া হয়নি। পরে শুনেছি, শেষের দিকে তিনি যখন জেনে গেছেন, আর কিছু করার নেই, তখন সবার কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
জুয়েল ভাই নেই, এটা আমি ভাবতে পারি না, ভাবতে চাইও না। আমার মনে হয়, তিনি ঠিকই আছেন। অনেকদিন শুধু কথা হয় না।
অথচ নির্মম বাস্তবতা হলো, জুয়েল ভাই তাঁর গানের কথাকে সত্যি করেই চলে গেছেন—‘আর দেখা হবে না, দেখা হবে না...।’
লেখক: সংগীতশিল্পী; প্রকাশক।
১.
হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল—জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে আমার পরিচয় ‘কুয়াশা প্রহর’ দিয়ে। বাচ্চু ভাইয়ের (আইয়ুব বাচ্চু) সুরে জুয়েল ভাইয়ের প্রথম অ্যালবাম। একটা হালকা নীল রঙের ঝাপসা ছবির প্রচ্ছদ। তারপর এল ‘এক বিকেলে’। ‘সেদিনের এক বিকেলে’ দিয়ে বাংলা গানের অসংখ্য শ্রোতার মতো হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের গানে বুঁদ হলাম আমিও। তারপর ‘আমার আছে অন্ধকার’ থেকে শুরু করে ‘এমন হলো কই’ পর্যন্ত সেই মুগ্ধতা কমেনি এক রত্তিও।
গান শুনে মুগ্ধ হওয়ার পর জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগতভাবে প্রথম পরিচয় ঘটে ২০০৮ সালে। এর আগে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে দূর থেকে দেখেছি। এবার ভাইয়ার সঙ্গে পরিচয় হলো খুলনায় একটা ওপেনএয়ার কনসার্টে। স্বাধীনতা দিবসের সে কনসার্টে জুয়েল ভাই ছিলেন উপস্থাপক। খুলনা জেলা স্টেডিয়ামে বিশাল আয়োজন। আমরা ঢাকা থেকে যাওয়া নতুন ব্যান্ড। বছর দেড়েক আগে আমাদের ব্যান্ড ‘নির্ঝর’-এর প্রথম অ্যালবাম বেড়িয়েছে। ঢাকার বাইরে প্রথম এত বড় কনসার্টে গাইতে গিয়েছি। টেনশন তো একটু কাজ করছেই, দর্শকেরা কীভাবে আমাদের নেন!
শুরুতেই বাঁধল বিপত্তি। আমাদের গানের স্লট ছিল তিন নম্বরে। দুই নম্বরে গাইবেন একজন একক শিল্পী। আর অনুষ্ঠানের শুরুতে খুলনার এক ব্যান্ডের ওঠার কথা। কনসার্টের ক্ষেত্রে আমাদের দেশে যা হয়, কেউ অনুষ্ঠানের শুরুতে গাইতে চায় না। আমরা ঢাকা থেকে আগের রাতে জার্নি করে গিয়েও সময় মতোই পৌঁছালাম।
কিন্তু খুলনার স্থানীয় ব্যান্ডের সবাই তখনো পৌঁছাতে পারেননি। আসলে এ রকম কেন হয় তা সবারই জানা। আমরা স্টেজে উঠলেই তারা পৌঁছে যাবে ঠিক। আসলে এগুলো হলো স্টেজে পরে ওঠার বাহানা।
এদিকে অনুষ্ঠান শুরু হতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। দ্বিতীয় স্লটে থাকা এক নারী শিল্পী, যিনি এককভাবে গান গাইবেন, তিনিও প্রথমে স্টেজে উঠতে সাহস পাচ্ছেন না। অগত্যা জুয়েল ভাই আমার কাছে এলেন। বললেন, ‘তোমরা কি শুরু করতে পারো অনুষ্ঠান? তাহলে আর দেরি করতে চাই না।’ সে সময় আয়োজক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন এসে বললেন, ‘আপনারা যদি শুরু করে দেন, তাহলে ভালো হয়। আর যারা সময় মতো আসেনি, তারা ওঠার সুযোগ পাবে না। আপনারা শুরু করুন প্লিজ।’
কী করব, আমরা স্টেজে উঠে গেলাম। একটানা তিনটে গান করলাম। স্টেজ থেকে যখন নামছি, শুনলাম জুয়েল ভাই মাইক্রোফোনেই আমাদের প্রশংসা করছেন। কাঠফাঁটা রোদ্দুরে উন্মুক্ত মঞ্চে গান করা সোজা কথা তো নয়।
আমাদের প্রথম গান শুরু হওয়ার সময়েই নাকি খুলনার সেই ব্যান্ড ব্যাক স্টেজে উপস্থিত হয়, যা আমরা পরে শুনেছি। আয়োজকেরা তাদের আর পারফর্ম করতে দিতে রাজি না হলে আমাদের কাছে অনুরোধ আসে, আমরা যদি অনুমতি দিই তবে তাদের স্টেজে উঠতে দেওয়া হবে। আমরা বলেছিলাম, আমাদের তো সমস্যা নেই। ওনারা গান করুক। আগে আর পরে ওঠা দিয়ে কী আসে যায়, শিল্পীর পরিচয় তো গানে।
পরে ব্যাকস্টেজে জুয়েল ভাই আমার পিঠ চাপড়ে দিলেন। বললেন, ‘খুব ভালো পারফর্ম করেছ তোমরা। আর এই যে তোমাদের জন্য অনুষ্ঠানটা সময়মতো শুরু করতে পারলাম, সেজন্যও ধন্যবাদ। কেন আগের ব্যান্ড সময়মতো আসেনি সেটা তোমরাও যেমন বোঝো, আমিও বুঝি। কিন্তু এত সংকীর্ণতা নিয়ে মিউজিক হয় না। তোমরা সেই সংকীর্ণতা থেকে দূরে থাকতে পেরেছ। এটা বজায় রেখো, সামনে এগিয়ে যেতে পারবে।’
এরপর দিন গড়িয়েছে। বিভিন্ন আয়োজনে দেখা হয়েছে জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে। একসঙ্গে আমরা কাজও করেছি কিছু। বাপ্পা মজুমদার—বাপ্পা ভাইয়ের সুরে বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় একটা গান করেছিলাম। মনে আছে, গানটির শ্যুটিংয়ে এফডিসিতে বেশ মজা করেছিলাম সবাই। পরে জুয়েল ভাইয়ের পরিচালনায় একটা ইভেন্টের গালা নাইটে রিয়াদের আয়োজনেও আরেকটা কাজ করেছিলাম অনেকের সঙ্গে মিলে।
করোনার আগের কথা। একদিন হঠাৎ জুয়েল ভাই নক দিয়ে বললেন, ‘আসোতো আমার অফিসে। তোমার সাথে একটা আলাপ আছে।’ পরের সপ্তাহে তাঁর অফিসে গেলাম। তিনি একটা দারুণ ইভেন্টের কথা বললেন, যে ইভেন্টের স্বপ্ন আমিও দেখি অনেক দিন ধরে। কিন্তু এর মধ্যে দেশে করোনা হানা দেওয়ায় ইভেন্টটি আর করা হলো না। তবে আপনাকে বলছি জুয়েল ভাই, এই ইভেন্টটা আমি একদিন করবই।
শো করবা কিন্তু কোনো ফিক্সড রেমুনারেশন থাকবে না। ফিক্সড ভেন্যু থাকবে না। হতে পারে কারও বাসায় দুজন তোমার গান শুনতে চায়, গান শোনাতে সেখানে চলে যাবে। কোনো অফিসে এক শজন গান শুনতে চায়, চলে যাবে সেই অফিসে। শ্রোতারা তাঁদের সাধ্যমতো সম্মানী দেবেন।হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল
জুয়েল ভাই মাঝখানে আরেকটা দারুণ আইডিয়া দিয়েছিলেন আমাকে। তা-ও পরে আর সাহস করে করা হয়ে ওঠেনি। তিনি আইডিয়াটি দিয়ে বলেছিলেন, ‘শো করবা কিন্তু কোনো ফিক্সড রেমুনারেশন থাকবে না। ফিক্সড ভেন্যু থাকবে না। হতে পারে কারও বাসায় দুজন তোমার গান শুনতে চায়, গান শোনাতে সেখানে চলে যাবে। কোনো অফিসে এক শজন গান শুনতে চায়, চলে যাবে সেই অফিসে। শ্রোতারা তাঁদের সাধ্যমতো সম্মানী দেবেন। তোমার শোয়ের বুকিং আর সময় শেয়ার করবে অনলাইনে। সেখান থেকেই তোমার শিডিউল নেবে আগ্রহী শ্রোতারা।’
এমন সব দারুণ আইডিয়া মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়াতেন জুয়েল ভাই।
২.
জুয়েল ভাইয়ের সঙ্গে আমার সখ্য মূলত করোনাকালে সংগীত সংগঠন করতে গিয়ে। ২০২০ সালের মাঝামাঝি আমরা কণ্ঠশিল্পীদের অধিকার আদায়ে ‘সিঙ্গার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ’ নিয়ে কাজ শুরু করি। ওই সংগঠনের সহসাধারণ সম্পাদক ছিলেন জুয়েল ভাই। আমি ছিলাম সাংগঠনিক সম্পাদক। সংগঠনের শুরু থেকে জুয়েল ভাইয়ের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। তাঁর মতো গোছাল সংগঠক জীবনে আমি খুব কমই দেখেছি।
সংগঠনের শুরু থেকে যেকোনো প্রয়োজনে জুয়েল ভাই আর বিশ্বদাকে (কুমার বিশ্বজিৎ) পেয়েছি সবসময়। তাঁদের নেতৃত্বে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে পুরোদমে কাজ শুরু হয় আমাদের। পরবর্তীকালে শিল্পী, সুরকার ও গীতিকবিদের সংগঠনের সমন্বয়ে গঠিত হয় ‘সংগীত ঐক্য’ নামে একটি সংগঠন, যেখানে কণ্ঠশিল্পীদের প্রতিনিধিত্বকারীদের মধ্যে জুয়েল ভাইও ছিলেন। আর আমি ছিলাম কনিষ্ঠতম সদস্য। খুব অল্পদিনের প্রস্তুতিতে আমরা চট্টগ্রাম ও ঢাকায় সংগীতের জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করেছিলাম। যথারীতি এখানে অন্যতম মুখ্য সংগঠনের ভূমিকা পালন করেন। নিজের উদ্যোগে তিনি সারাদেশ থেকে শিল্পীদের আনার ব্যবস্থা করেছিলেন, যা প্রথমে আমাদের কাছে অসম্ভব মনে হয়েছিল। কিন্তু জুয়েল ভাই-ই এটা সম্ভব করেছিলেন।
বলার কথা হলো, এই পুরো সময়টাতে জুয়েল ভাই লড়ে গেছেন অসুখের সঙ্গে। অথচ কখনো আমাদের সেভাবে বুঝতে দেননি। তিনি ছিলেন প্রবল শক্ত মানসিকতার। সভাসহ সবখানে সময়মতো অংশ নিতেন। সে সময় অবশ্য বেশির ভাগ সভা অনলাইনে হতো। সভাশেষে হয়তো আমরা আবিষ্কার করতাম, তাঁর শরীর খারাপ—হয় আগের সপ্তাহে কেমো দিয়েছেন বা পরের সপ্তাহে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যাবেন। লন্ডনে চিকিৎসাকালীন সময়েও তিনি সংগঠনের কাজে সময় দিয়েছেন। আসলে সাংগঠনিক দিক দিয়ে জুয়েল ভাই অতুলনীয়। তাঁর শূন্যস্থান পূরণ হওয়ার নয়।
৩.
বাংলাদেশে ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের অন্যতম পথিকৃৎ হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল। তিনি দেখিয়েছেন আইডিয়ার ভিন্নতা ও রূচি বজায় রেখেও কীভাবে বাণিজ্যিকভাবে সফল ইভেন্ট করা সম্ভব। আমার জানামতে, আমাদের দেশের ইভেন্ট দেশের বাইরেও প্রথমবার নিয়ে গেছেন জুয়েল ভাই।
৪.
হাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের গান নিয়ে বলার মতো যোগ্যতা আমার নেই। তবে গেল তিরিশ বছরে বাংলাদেশের অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি একজন অনন্য একজন শিল্পী। কারণ, নব্বই দশক থেকে তিনিই একমাত্র গায়ক, যিনি রক ঘরানার ব্যান্ডের সঙ্গে বাংলা আধুনিক গানের একক শিল্পীদের মধ্যে সেতুবন্ধের মতো কাজ করেছেন। একক শিল্পী হিসেবেই তিনি কাজ করতেন, কিন্তু তাঁর সবগুলো অ্যালবাম করতেন রক কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চু। ফলে একক গানের শ্রোতারাও যেমন তাঁর গান গ্রহণ করেছিল, তেমনি রক গানের শ্রোতারাও সমানভাবে পছন্দ করতো তাঁকে। সম্ভবত এ কারণেই সব ব্যান্ড ভোকালিস্টদের নিয়ে করা মিক্সড অ্যালবামে জুয়েল ভাইয়ের গান যেমন থাকত, আবার একক শিল্পীদের মিক্সড অ্যালবামেও জায়গা ছিল তাঁর। আমাদের সংগীত ইন্ডাস্ট্রিতে এটা একটা বিরল উদাহরণই ছিল সে সময়।
৫.
জুয়েল ভাইয়ের আরেকটা পরিচয় এদেশের মানুষ মনে রাখবে সবসময়—উপস্থাপক। এত সুন্দর, সাবলীল উপস্থাপনা বাংলাদেশে হাতেগোনা কজন মানুষ করতে পেরেছেন গত পাঁচ দশকে? তাঁর মূল পরিচয় সংগীতশিল্পী হলেও উপস্থাপক পরিচয়টাও তাই এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই।
তিনি গোছালো মানুষ আগেই বলেছি। কিন্তু কতটা গোছালো তার একটা উদাহরণ দিই। একদিন তাঁর অফিসে দেখা করতে গিয়ে বললাম, ভাইয়া, আপনার সর্বশেষ অ্যালবামটা নেই আমার কাছে। আপনার কাছে থাকলে দেন। তিনি পাশে থাকা আলমারি দেখিয়ে বললেন, ‘ওপরের তাকে আছে। চেয়ারের ওপরে দাঁড়িয়ে যে কয়টা লাগে নিয়ে নাও।’ মূলত এ সময়েই আমি বেশি করে খেয়াল করলাম যে আলমারিতে ভাইয়ার সব অ্যালবামের ক্যাসেট আর সিডি গোছানো আছে। আমাদের দেশের জন্য এটা বেশ বিরল ঘটনাই বটে। আমাদের বেশির ভাগ শিল্পীর কাছেই আমি তাঁদের নিজেদের ক্যাসেট ও সিডি পাইনি।
৬.
জুয়েল ভাইকে নিয়ে দুটো আক্ষেপ আছে আমার। ‘প্রিয় শহর’ নামে আমার লেখা ও সুরে একটা গান গাওয়ার কথা ছিল ভাইয়ার। ভয়েস দিতে আসার দিন তিনি বললেন, ‘কাল দেশের বাইরে যাবো, ফিরে এসে শরীরটা একটু ভালো হলে ভয়েসটা দিই।’
সেই গান তাঁর আর গাওয়া হয়নি। দেবো, দিচ্ছি করে গানটি গাওয়ার আগেই তিনি চলে গেলেন। অথচ আমার গানের প্রজেক্টে এখনো জুয়েল ভাইয়ের ভয়েস নেওয়ার জন্য ট্র্যাক সিলেক্ট করা আছে।
আরেকটা আক্ষেপ হলো জুয়েল ভাইয়ের বই। রাশিদ খান ভাইয়ের বই নিয়ে আলাপের দিন আমি আর রাশিদ ভাই দুজন মিলে জুয়েল ভাইকে ধরলাম, ভাইয়ার নিজের আত্মকথা, নিজের তোলা ছবি এগুলো নিয়ে একটা বই করুন। তিনি বললেন, করবেন। করা আর হলো না।
জুয়েল ভাই আমার প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘আজব প্রকাশ’ থেকে গায়ক ও গান সম্পর্কিত যেসব বই বের হতো, সেগুলো আগ্রহ নিয়ে সংগ্রহ করতেন। পড়ে আমাকে ফিডব্যাকও দিতেন। লেখা থেকে বইয়ের প্রোডাকশন—সব কিছু নিয়েই আলাপ করতেন তিনি।
এরপর একদিন আমার প্রিয় জুয়েল ভাই দুম করে চলে গেলেন। মনে আছে, তাঁর হোয়াটসঅ্যাপে আমার শেষ মেসেজ ছিল গেল জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে। লিখেছিলাম, ‘ভাইয়া, কেমন আছেন? অনেকদিন কথা হয় না আপনার সাথে।’
সেই মেসেজের উত্তর আর পাওয়া হয়নি। পরে শুনেছি, শেষের দিকে তিনি যখন জেনে গেছেন, আর কিছু করার নেই, তখন সবার কাছ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন।
জুয়েল ভাই নেই, এটা আমি ভাবতে পারি না, ভাবতে চাইও না। আমার মনে হয়, তিনি ঠিকই আছেন। অনেকদিন শুধু কথা হয় না।
অথচ নির্মম বাস্তবতা হলো, জুয়েল ভাই তাঁর গানের কথাকে সত্যি করেই চলে গেছেন—‘আর দেখা হবে না, দেখা হবে না...।’
লেখক: সংগীতশিল্পী; প্রকাশক।
রাশিয়ার পূর্ব উপকূলে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প ও তার পরপরই সুনামির ঢেউ আবার নতুন করে মনে করিয়ে দেয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সামনে মানুষ কতটা অসহায়। এই ঘটনায় রাশিয়া, জাপান, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও জারি হয়েছে সুনামি সতর্কতা। এমন খবরের পর প্রশ্ন উঠতেই পারে, বাংলাদেশ কি সুনামির ঝুঁকিতে আছে?
২০ ঘণ্টা আগেসম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে জুলাই আন্দোলনে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র স্মরণে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘প্রিয় আননোন থার্টি ওয়াই’। গত শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে হয়ে গেল সিনেমাটির প্রিমিয়ার শো। কী দেখিয়েছে সিনেমাটি?
৩ দিন আগেশাফিন আহমেদের মৃত্যুর এক বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু বাংলা গান এখনো তাঁকে হারানোর ব্যথা ভুলতে পারেনি। সংগীতপ্রেমীরা টের পাচ্ছেন তাঁর শূন্যতা। আজ আমরা ফিরে তাকাতে চাই ১৮ বছরের এক তরুণ শাফিন আহমেদের দিকে। কীভাবে তিনি ‘মাইলস’ব্যান্ডে যোগ দিয়েছিলেন—শুরুর সেই ঘটনা আজ মনে করতে চাই।
৪ দিন আগেএকটি দেশের পোশাকের সঙ্গে রয়েছে সে দেশের পরিবেশ ও আবহাওয়ার সম্পর্ক। কেননা, পোশাকেরও রয়েছে সংস্কৃতি ও ইতিহাস। আছে রাজনীতি। তা ছাড়া বলা দরকার, কোনো দেশের পোশাক কেমন হবে, তা ওই দেশের আবহাওয়ার ওপর অনেকাংশেই নির্ভরশীল।
৫ দিন আগে