leadT1ad

জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে ইন্দোনেশিয়ার বিক্ষোভের মিল কোথায়

ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভের মূল কারণ অভিজাতদের ব্যাপক দুর্নীতি ও জনগণের সম্পদে বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং আর্থ-সামাজিক বৈষম্য।

মাহবুবুল আলম তারেক
প্রকাশ : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ৫৮
আপডেট : ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১০: ৫৮
স্ট্রিম গ্রাফিক

ইন্দোনেশিয়ায় গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে সহিংস সরকারবিরোধী বিক্ষোভ চলছে। রাজধানী জাকার্তাসহ বিভিন্ন শহরে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি ভবন পোড়ানো ও লুট করা হয়েছে। হামলা হয়েছে সংসদ সদস্য ও মন্ত্রীদের বাড়িতেও।

বিক্ষোভের মূল কারণ অভিজাতদের ব্যাপক দুর্নীতি ও জনগণের সম্পদে বিলাসবহুল জীবনযাপন এবং আর্থ-সামাজিক বৈষম্য। গত ২৫ আগস্ট সংসদ সদস্যদের জন্য বাড়তি আবাসন ভাতা ঘোষণার পর এই বিক্ষোভ শুরু হয়। জনতার অভিযোগ, এমপিদের জন্য বরাদ্দ করা বাড়তি আবাসন ভাতা জাকার্তার ন্যূনতম মজুরির প্রায় দশ গুণ বেশি।

অথচ এর আগে প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো জনগণের জন্য রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন খাতের ব্যয়ে কঠোর কৃচ্ছ্রসাধন নীতি চালু করেছেন। কমানো হয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও গণপূর্ত খাতের বাজেট। সরকারের এসব নীতি মূলত বড় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ও সেনাবাহিনীর স্বার্থ রক্ষা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

২৮ আগস্ট বিক্ষোভ সহিংস রূপ নেয়। সেদিন জাকার্তায় অভিজাত প্যারামিলিটারি পুলিশের একটি সাঁজোয়া গাড়ির ধাক্কায় ২১ বছরের এক রাইড শেয়ারকারী মোটরসাইকেল চালক নিহত হন। এতে সহিংস বিক্ষোভ দাবানলের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অসন্তোষের কারণে সৃষ্ট এই বিক্ষোভ শেষমেশ সরকার পতনের বৃহত্তর আন্দোলনে রূপ নিতে পারে।

ইন্দোনেশিয়ার এই বিক্ষোভ বাংলাদেশের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোড়ন তুলেছে। অনেকেই একে বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে তুলনা করছেন। কারণ, দুটি আন্দোলনই মূলত আর্থ-সামাজিক বৈষম্য থেকে তৈরি হয়েছে।

ইন্দোনেশিয়ার এই বিক্ষোভ ও বাংলাদেশের ২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের (কোটা সংস্কার থেকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন এবং পরে গণ-আন্দোলন) মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য মিল রয়েছে।

ছাত্র ও তরুণদের নেতৃত্ব

ইন্দোনেশিয়ার এই বিক্ষোভের নেতৃত্বে আছে একাধিক ছাত্র সংগঠন। যেমন, গেজায়ান মেমাঙ্গগিল ও অল-ইন্দোনেশিয়ান স্টুডেন্টস ইউনিয়ন। রাইড-শেয়ার চালক আফান কুরনিওয়ানের মৃত্যুর পর তরুণরাই আন্দোলনকে তীব্র করে তোলে ও তা দেশজুড়ে গণবিক্ষোভে রূপ নেয়।

২০২৪ সালে বাংলাদেশের জুলাই আন্দোলনও শুরু হয়েছিল ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, যা পরে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’-এর নেতৃত্বে গণ-আন্দোলনে রূপ নেয়। আবু সাঈদের মতো তরুণ ছাত্রনেতার মৃত্যু জনগণের ক্রোধকে আরও বাড়িয়ে দেয়। জুলাই আন্দোলনেও তরুণরাই মূল ভূমিকা পালন করে।

ইন্দোনেশিয়ার তরুণরাই আন্দোলনকে তীব্র করে তোলে। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া
ইন্দোনেশিয়ার তরুণরাই আন্দোলনকে তীব্র করে তোলে। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

অর্থনৈতিক ও সামাজিক অসন্তোষ

নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তা ধীরে ধীরে জাভা সাগরে ডুবে যাচ্ছে। শহরের ভূগর্ভস্থ পানি শূন্য হয়ে পড়েছে, নদীগুলোও অতিরিক্ত বাসিন্দার চাপে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ধনী-গরিবের ব্যবধান ক্রমেই বাড়ছে। অভিজাত শ্রেণি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত গাড়িতে করে বিলাসবহুল শপিং মলে যায়। অন্যদিকে সাধারণ মানুষ মোটরসাইকেলে বসে যানজটে আটকে থেকে দূষিত বাতাসে শ্বাস নেয়।

বিশ্বের চতুর্থ জনবহুল দেশ ইন্দোনেশিয়ায় মধ্যবিত্ত শ্রেণি ক্রমেই সংকুচিত হচ্ছে। যুব বেকারত্ব ১৬ শতাংশ ছাড়িয়েছে। হাজার হাজার বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণ চাকরি খুঁজে পাচ্ছে না। এছাড়া দেশটির ৬০ শতাংশ কর্মজীবী অনানুষ্ঠানিক খাতে কাজ করেন, যাদের জীবন-জীবিকার টেকসই কোনো নিশ্চয়তাও নেই। এই সবকিছুই দেশটির জনগণের ক্রোধকে উসকে দিয়েছে।

বাংলাদেশের আন্দোলনের পেছনেও ছিল কোটা ব্যবস্থার বৈষম্য, দুর্নীতির অভিযোগ ও অর্থনৈতিক দুরবস্থা। স্বাভাবিক জীবনযাত্রার অস্বাভাবিক ব্যয় বৃদ্ধি ও খাদ্য মূল্যস্ফীতির পাশাপাশি দীর্ঘদিনের সরকারি দুর্নীতি এবং স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধেও জনগণের ক্ষোভ ছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকা

ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভ সংগঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, বিশেষ করে টিকটক ও এক্স-এর হ্যাশট্যাগ #ইন্দোনেশিয়াগেলাপ (#IndonesiaGelap) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। এমনকি দেশটির কর্তৃপক্ষ টিকটকের লাইভ ফিচার বন্ধ করে দিয়েছে।

বাংলাদেশেও জুলাই আন্দোলনের সময়ে বিভিন্ন তথ্য ছড়াতে এবং সমর্থন বাড়াতে ব্যাপকভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও হোয়াটসঅ্যাপের ব্যবহার হয়। বাংলাদেশ সরকারও দেশজুড়ে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিয়ে আন্দোলনকারীদের যোগাযোগে বিঘ্ন ঘটায়।

সরকার পতনের সম্ভাবনা

জুলাই আন্দোলনের ফলে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৫ বছরের স্বৈরশাসনের অবসান ঘটে। হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান।

বিশ্লেষকরা বলছেন, ইন্দোনেশিয়ার বিক্ষোভও বৃহত্তর আন্দোলনের দিকে যেতে পারে এবং এতে সরকার পতনের ঝুঁকি রয়েছে। প্রেসিডেন্ট প্রাবোওর এক বছরের শাসন এই বিক্ষোভের মাধ্যমে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।

কোটা সংস্কারের দাবিতে জুলাই আন্দোলনের সূত্রপাত হলেও পরে তা সরকারের পদত্যাগ ও গণতান্ত্রিক সংস্কারের দাবিতে রূপান্তরিত হয়। শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ সরকারের স্বৈরাচারী শাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়।

গাড়িতে আগুন দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া
গাড়িতে আগুন দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

ইন্দোনেশিয়ায়ও শুরুতে এমপিদের আবাসন ভাতা বাতিলের দাবি থাকলেও, পরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশ সংস্কার, দুর্নীতিবাজদের শাস্তি ও রাষ্ট্র সংস্কারের মতো ১৭টি জরুরি সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান এবং ৮টি কাঠামোগত সংস্কারের দাবি তুলেছে।

তবে ইন্দোনেশিয়ার বিক্ষোভ এখনও চলমান এবং সরকার পতনের সম্ভাবনা থাকলেও এখন পর্যন্ত তা ঘটেনি। প্রেসিডেন্ট প্রাবোও সুবিয়ান্তো শুরুতে বিক্ষোভকারীদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ ও ‘সন্ত্রাসী’ বলে আখ্যায়িত করে তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুমকিও দেন। কিন্তু ৩১ আগস্ট হঠাৎ অবস্থান পাল্টে জনগণের দাবি শোনার প্রতিশ্রুতি দেন এবং সংসদ সদস্যদের ভাতা কমানোর কথাও বলেন।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ১৫ বছরের শাসনকালে ডামি নির্বাচন, রাতের ভোটের নির্বাচন, বিরোধীদের দমন ও গণতন্ত্র সংকুচিত করে স্বৈরশাসন চালুর অভিযোগ ছিল।

আর ইন্দোনেশিয়ার প্রাবোও সুবিয়ান্তোর সরকার ক্ষমতায় এসেছে মাত্র এক বছর হলো। তবে তার সামরিক পটভূমি ও সাবেক স্বৈরশাসক জেনারেল সুহার্তোর সঙ্গে সম্পর্ক জনগণের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করেছে। প্রাবোওকে তারা সেনাশাসক সুহার্তোর জামাতা হিসেবে মনে রেখেছেন।

শুরুতে এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিল ‘ইন্দোনেশিয়ান পিপলস রেভল্যুশন’ নামে একটি সংগঠন। তারা সাবেক প্রেসিডেন্ট জোকো উইদোদোর পরিবারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তদন্তের দাবি তুলেছিল।

বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভেঙে দেওয়া ও জিবরান জোকোউইর ছেলে বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট জিবরান রাখাবুমিং রাখাকে অভিশংসনের দাবিও করছে।

ইন্দোনেশিয়ায় প্রেসিডেন্ট ও ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে প্রার্থী হতে হলে বয়স কমপক্ষে ৪০ বছর হতে হয়। কিন্তু ২০২৪ সালের নির্বাচনে জিবরানের বয়স ছিল মাত্র ৩৬। সংবিধান আদালত তখন নিয়ম পরিবর্তন করে। আদালতের প্রধান ছিলেন জিবরানের চাচা আনোয়ার উসমান।

এই আন্দোলনে ইন্দোনেশিয়ার অতীতের সহিংস ও ভীতিকর স্মৃতিও ফিরে আসে। অতীতে রাষ্ট্রীয় সহিংসতা, ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর ব্যবহার ও সংখ্যালঘুদের বলির পাঁঠা বানানো হয়েছে।

দেশটির মূলনীতি ‘বিন্নেকা তুঙ্গাল ইকা’ বা বৈচিত্র্যের মাঝে ঐক্য। কিন্তু প্রাবোও দীর্ঘদিন ধরে রক্ষণশীল ইসলামপন্থী গোষ্ঠীর ওপর নির্ভর করেছেন। তারা তাকে শক্তি জোগায়, কঠোর নীতি পাসে সহায়তা করে ও বিরোধীদের চুপ করায়।

গত কয়েকদিন ধরে ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভ চলছে। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া
গত কয়েকদিন ধরে ইন্দোনেশিয়ায় বিক্ষোভ চলছে। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

২০১৯ সালের শেষে প্রাবোয়ো জোকোউইর জোটে যোগ দিলে ইসলামপন্থীদের সঙ্গে সম্পর্ক বদলায়। তবে সম্প্রতি তা আবার সক্রিয় হয়েছে। ৩০ আগস্ট প্রেসিডেন্ট তাঁর ব্যক্তিগত বাসভবনে ১৬টি ইসলামি সংগঠনকে ডেকে পাঠান। তিনি তাদের নিরাপত্তা ও শান্তি রক্ষায় সরকারের সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান।

এদিকে অনলাইনে চীনা বংশোদ্ভূত ইন্দোনেশিয়ান নারীদের বিরুদ্ধে বর্ণবাদী হুমকি ছড়ানো হচ্ছে। এতে অনেকের কাছে পরিবেশটি ১৯৯৮ সালের মে মাসের দাঙ্গার মতো মনে হচ্ছে। তখন শত শত নারী নির্মমভাবে ধর্ষণের শিকার হন। ব্যাপক লুটপাট ও হত্যাকাণ্ড ঘটে। মানবাধিকারকর্মীরা বলেন, সেবার সেনাবাহিনী ইচ্ছাকৃতভাবে দাঙ্গা উসকে দিয়েছিল।

সে সময় প্রাবোও একজন সেনা কর্মকর্তা ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, সেসময় তিনি মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত ছিলেন। এই কারণে তাকে পরে সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় এবং দুই দশক ধরে তাঁর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল।

গত ৩১ আগস্ট জাকার্তার কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময় লুটপাট শুরু হয়। এমন ঘটনা ১৯৯৮ সালের দাঙ্গার আগেও হয়েছিল। তবে এবার পরিস্থিতি কিছুটা আলাদা। বিক্ষোভকারীরা ইচ্ছাকৃতভাবে চারজন সংসদ সদস্যের বাড়িতে হামলা করেছে। কারণ তারা বেতন বাড়ার পর সাধারণ মানুষকে উপহাস করেছিলেন।

ইন্দোনেশিয়ার অর্থমন্ত্রী শ্রী মুলিয়ানি’র বাড়িও হামলার শিকার হয়। ইন্দোনেশীয়রা মনে করেন, তিনি সাধারণ মানুষের ওপর কঠোর কর নীতি চাপিয়ে ধনী সংসদ সদস্যদের বাঁচিয়ে রেখেছেন।

এখন পর্যন্ত কোনো চীনা ইন্দোনেশীয়কে আক্রমণ করা হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন স্লোগান ছড়িয়েছে— ‘মানুষ মানুষের জন্য।’ অনেকেই মনে করেন, পুরনো কৌশল—চীনা সংখ্যালঘুকে দায়ী করা— এবার কাজ করছে না।

১৯৯৮ সালের মে মাসে তখনকার প্রেসিডেন্ট জেনারেল সুহার্তোর বিরুদ্ধে জনসাধারণের রোষের মূল কারণ ছিল অর্থনৈতিক সংকট। তখন ইন্দোনেশিয়ার চীনা বংশোদ্ভূত জনগণ— যাদের ব্যবসায় তুলনামূলকভাবে সফল বলে মনে করা হতো— সহজ শিকার হয়ে যান। এবার পরিস্থিতি ভিন্ন। অনেক সাধারণ মানুষ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।

এবারের বিক্ষোভ শুধু অর্থনৈতিক অসন্তোষ বা দুর্নীতির ব্যাপার নয়। এটি বিভাজনমূলক শাসন ও কর্তৃত্বের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ। অনেকের ধারণা, বর্তমান লুটপাটকারীদের মধ্যে কিছু ছদ্মবেশী সেনা সদস্যও রয়েছে।

এক রাইড শেয়ারকারী মোটরসাইকেল চালক নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভ তীব্র হয়। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া
এক রাইড শেয়ারকারী মোটরসাইকেল চালক নিহত হওয়ার পর বিক্ষোভ তীব্র হয়। ছবি: এক্স থেকে নেওয়া

প্রেসিডেন্ট প্রাবোও হয়তো এ ধরনের গণপ্রতিক্রিয়া আশা করেননি। তাই তিনি হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন করেছেন। কিন্তু অনেক মানুষ এখনও তাঁর আপসমূলক পদক্ষেপে বিশ্বাস করছে না। তারা এটিকে ছলনা মনে করছে।

এই গণবিক্ষোভ ইতিমধ্যেই ইন্দোনেশিয়ার ৩২টি প্রদেশে ছড়িয়ে পড়েছে এবং শিগগিরই থামবে বলে মনে হচ্ছে না।

ছাত্র ও তরুণদের নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক ও সামাজিক অসন্তোষ, সরকারের সহিংস প্রতিক্রিয়া এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভূমিকা—এসব ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়া ও বাংলাদেশের আন্দোলনের মধ্যে মিল রয়েছে। তবে, বাংলাদেশের আন্দোলন সরকার পতনে সফল হয়েছে, যেখানে ইন্দোনেশিয়ার আন্দোলন এখনও চলমান। এর ফলাফলও অনিশ্চিত।

এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার আন্দোলনে হতাহতের সংখ্যা বাংলাদেশের চেয়ে অনেক কম। ইন্দোনেশিয়ায় এখন পর্যন্ত ১০ জন নিহত ও ২০ জন নিখোঁজ হয়েছেন। আহত হয়েছেন শত শত মানুষ। বাংলাদেশে নিহত হয়েছিল প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন ও আহত হয়েছিল অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। তবে দুটি আন্দোলনই অনেকদিনের ক্ষোভ ও সরকারি নীতির বিরুদ্ধে জনগণের প্রতিরোধের প্রতীক হিসেবে দাঁড়িয়েছে।

তথ্যসূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য কনভারসেশন

Ad 300x250

সম্পর্কিত