মমতার ভাষা আন্দোলনের ডাক, উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি
বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক ও বাংলাদেশে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দেওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। এ পরিস্থিতিতে ‘বাঙালি অস্মিতা’কে ভোটের অস্ত্র বানিয়ে মাঠে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিয়েছেন ভাষা আন্দোলনের ডাক। তবে এ ঘটনায় কলকাতার বুদ্ধিজীবীরা কীভাবে দেখছেন?
স্ট্রিম প্রতিবেদক
বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক ও বাংলাদেশে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দেওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। ঘটনার শুরু দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকেরা আক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে। এরপর যখন তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলে বাংলাদেশে পাঠানোর আয়োজন চলছে, তখন ‘বাঙালি অস্মিতা’ বা আত্মপরিচয় নিয়ে বাঙালির যে জাত্যভিমান, তাকেই এবার ভোটের অস্ত্র বানিয়ে মাঠে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে হবে বিধানসভা নির্বাচন। আর এ নির্বাচনে এবার অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে উঠেছে বাঙালি অস্মিতা। তৃণমূল বনাম বিজেপির এ লড়াইয়ে বিজেপি যখন বাংলাভাষী অনেককে বাংলাদেশে পুশব্যাক করাতে চায়, তখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় ২১ জুলাই সোমবার কলকাতার ধর্মতলায় শহীদ স্মরণ মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘটনাটির শুধু প্রতিবাদই করেননি, বাঙালির পক্ষে দিয়েছেন ভাষা আন্দোলনের ডাক।
এ ঘটনায় সরব হয়েছেন কবি, লেখক, শিক্ষক—বুদ্ধিজীবীরা। তাঁরা বলছেন, বাঙালি দেখলে বাংলাদেশি মনে করা—এটা খুবই অন্যায়। এ ঘটনায় কেউ কেউ আবার এতে মমতাকেও ছেড়ে কথা বলছেন না। তাঁদের বক্তব্য হলো, একে তিনি ‘রাজনৈতিক হাতিয়ার’ বানাচ্ছেন।
বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ করতে ২১ জুলাই শহীদ স্মরণ দিবসে তৃণমূলপ্রধান মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়ে বলেছিলেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। ২০২৬ সালের ভোটকে পাখির চোখ করেই এ কর্মসূচি দিয়েছিলেন তিনি। পরে ২৯ জুলাই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণদিবসে বীরভূমের মাটি থেকে আন্দোলনটি শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি, ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সোচ্চার মমতা—এমন দৃশ্য তৃর্ণমূল প্রধানকে রাজনৈতিকভাবে যেমন সুবিধা দিতে পারে, তেমনি তিনি যে আন্দোলন থেকে উঠে আসা নেত্রী, তাঁর কাছে সেটা প্রমাণের আরও একটা সুযোগ এসেছে। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত হলো, মমতা যেভাবে বাঙালির অপমানের বিরুদ্ধে সরব হয়ে পথে নেমেছেন এবং একে ভোটের ইস্যু বানিয়ে ফেলেছেন, তা দিয়ে তিনি এটা প্রমাণ করতে পেরেছেন যে পশ্চিমবঙ্গে মমতাই শাসক, মমতাই বিরোধী।
কিন্তু এখানেই খ্যান্ত দেননি তৃর্ণমূলকর্তা, কলকাতার বুদ্ধিজীবী সমাজকেও ভিনরাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার প্রতিবাদ করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী ও গীতিকার কবীর সুমন। দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় এ শিল্পী বলেন, ‘জানি না আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী করছে। জানতে পেরেছি, একাধিক বামপন্থী দল এ ঘটনার বিরোধিতা করেছে, মিছিল করেছে। এক সময়ের তৃণমূলের সাংসদ আরও বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলও এর বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। আসলে হিংসার মাধ্যমে কোনো কিছুর সমাধান হয় না। দলবদ্ধভাবে নানান ভাষার মানুষকে এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তার মধ্যে হিন্দিভাষীরাও থাকবেন, পাঞ্জাবিরাও থাকবেন। কলকাতা শহরে কত ভাষাভাষী মানুষ থাকেন, আমরা সবাই সৌভাতৃত্বের বন্ধনে বাঁধা। আমরা হাতে হাত ধরে এই ঘটনার বিরুদ্ধাচরণ করব।’
ঘটনাটি যে অন্যায়, সে বিষয়ে একমত কবি জয় গোস্বামীও। এ ঘটনায় পাঠকপ্রিয় এ কবির ভাষ্য হলো, ‘প্রদেশে প্রদেশে এই যে ভেদ, বাঙালি দেখলে বাংলাদেশি মনে করা—এই ভেদ কী করে দূর করতে হয় জানি না। কিন্তু যাঁরা এ কাজ করছে, ভারত রাষ্ট্র যদি তাঁদের বিরুদ্ধে কঠিন ভূমিকা নেয়, প্রতিটি প্রদেশের প্রশাসন যদি কঠোর হয়, তাহলে এটা আটাকানো সম্ভব। ভারতবর্ষ চিরকালই শান্তির বার্তা দিয়েছে, একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার বার্তা দিয়েছে, সমন্বয়য়ের বার্তা দিয়েছে।’
মমতা বন্দ্যোপাধায়ের ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এ আন্দোলন খুবই সময়োচিত আর খুবই দরকারি।’ এ সময় সৌরভ গাঙ্গুলির উদাহরণ দিয়ে জয় গোস্বামী বলেন, ‘একমাত্র সৌরভ গাঙ্গুলি ছাড়া আর কোনো বাঙালি ক্রিকেটার ভারতীয় ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাননি। বহুদিন ধরেই দেশজুড়ে বাঙালির প্রতি আক্রোশ ছড়িয়ে আছে। কে কোন দলের রাজনীতি করে দেখার দরকার নেই, সবারই এর প্রতিবাদ করা উচিত।’
‘এটা শুধুই বিজেপি করছে তা নয়, এর পেছনে ব্যবসায়িক মহলের বড় অবদান আছে।’—বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অভিনয়শিল্পী কৌশিক সেন শুরু করলেন এভাবেই। ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারে থাকা শাসক দলের নাম উল্লেখ না করে চলচ্চিত্র ও থিয়েটারের এ অভিনেতা বলেন, ‘বিভিন্ন রাজ্যে কাজে গিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বললে “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী” বলে মারধর করে এবং বাংলাদেশে “ঘাড়ধাক্কা” দিয়ে মানুষের সমর্থন পেতে চাইছে তারা। মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, এর কারণেই আমার উন্নতি হচ্ছে না। এভাবে একটা ফলস ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।’
‘বাংলাকে প্রভাবশালী ভাষা’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ও লেখক মীরাতুন নাহার বলেন, ‘হিন্দু ভারত ও হিন্দি ভাষাভাষী ভারত তৈরির লক্ষ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতির ওপরে নির্যাতন করা হচ্ছে। ভারতবর্ষজুড়ে হিন্দি ভাষা চাপানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় শাসকদলের মধ্যে।’ একে একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বলেই মনে করেন দর্শনের এই অধ্যাপক।
এ ঘটনাকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে দেখছেন অভিনেতা-নাট্যকার চন্দন সেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল সবসময় একটা ইস্যু খোঁজে, যাতে জনসাধারণ উত্তপ্ত হয় এবং তাঁদের আখের গোছানো যায়। মুখ্যমন্ত্রী যদি সত্যিই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ভাবতেন, তাহলে রাজ্যে যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি করতেন।’
চন্দন সেনের মতো লেখক সাদিক হোসেনেরও একই মত। স্পষ্টভাবেই তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা নিয়ে রাজনীতি করছেন। যে কোনো রাজনৈতিক দলই তা-ই করবে। তবে সব সংকীর্ণ রাজনৈতিক জায়গা থেকে বেরিয়ে আমাদের বৃহত্তর এমন নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, যাতে করে বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়।’
এ পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কেই দায়ী করেন লেখক অনির্বাণ বসু। তাঁর কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই রাজ্যে আরএসএসের জমি প্রশস্ত হয়েছে। আরএসএস বাঙালিকে ঘৃণা করে, আমরা এটা স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস থেকেই বুঝি। চিরকালই আরএসএস বাঙালি বিদ্বেষী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা আন্দোলন করছেন মূলত ২০২৬ সালের ভোটকে লক্ষ্য করেই।’
বাংলাভাষীদের ‘বাংলাদেশি’ সন্দেহে আটক ও বাংলাদেশে ‘ঘাড়ধাক্কা’ দেওয়ার ঘটনায় ইতিমধ্যেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি। ঘটনার শুরু দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে পশ্চিমবঙ্গের পরিযায়ী শ্রমিকেরা আক্রান্ত হওয়ার মাধ্যমে। এরপর যখন তাঁদের ‘বাংলাদেশি’ বলে বাংলাদেশে পাঠানোর আয়োজন চলছে, তখন ‘বাঙালি অস্মিতা’ বা আত্মপরিচয় নিয়ে বাঙালির যে জাত্যভিমান, তাকেই এবার ভোটের অস্ত্র বানিয়ে মাঠে নেমেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গে হবে বিধানসভা নির্বাচন। আর এ নির্বাচনে এবার অন্যতম প্রধান ইস্যু হয়ে উঠেছে বাঙালি অস্মিতা। তৃণমূল বনাম বিজেপির এ লড়াইয়ে বিজেপি যখন বাংলাভাষী অনেককে বাংলাদেশে পুশব্যাক করাতে চায়, তখন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায় ২১ জুলাই সোমবার কলকাতার ধর্মতলায় শহীদ স্মরণ মঞ্চে দাঁড়িয়ে ঘটনাটির শুধু প্রতিবাদই করেননি, বাঙালির পক্ষে দিয়েছেন ভাষা আন্দোলনের ডাক।
এ ঘটনায় সরব হয়েছেন কবি, লেখক, শিক্ষক—বুদ্ধিজীবীরা। তাঁরা বলছেন, বাঙালি দেখলে বাংলাদেশি মনে করা—এটা খুবই অন্যায়। এ ঘটনায় কেউ কেউ আবার এতে মমতাকেও ছেড়ে কথা বলছেন না। তাঁদের বক্তব্য হলো, একে তিনি ‘রাজনৈতিক হাতিয়ার’ বানাচ্ছেন।
বাঙালিদের ঐক্যবদ্ধ করতে ২১ জুলাই শহীদ স্মরণ দিবসে তৃণমূলপ্রধান মমতা বন্দ্যেপাধ্যায় ভাষা আন্দোলনের ডাক দিয়ে বলেছিলেন, আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে। ২০২৬ সালের ভোটকে পাখির চোখ করেই এ কর্মসূচি দিয়েছিলেন তিনি। পরে ২৯ জুলাই ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের প্রয়াণদিবসে বীরভূমের মাটি থেকে আন্দোলনটি শুরু করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি, ভাষা আন্দোলনের পক্ষে সোচ্চার মমতা—এমন দৃশ্য তৃর্ণমূল প্রধানকে রাজনৈতিকভাবে যেমন সুবিধা দিতে পারে, তেমনি তিনি যে আন্দোলন থেকে উঠে আসা নেত্রী, তাঁর কাছে সেটা প্রমাণের আরও একটা সুযোগ এসেছে। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক মহলের একাংশের মত হলো, মমতা যেভাবে বাঙালির অপমানের বিরুদ্ধে সরব হয়ে পথে নেমেছেন এবং একে ভোটের ইস্যু বানিয়ে ফেলেছেন, তা দিয়ে তিনি এটা প্রমাণ করতে পেরেছেন যে পশ্চিমবঙ্গে মমতাই শাসক, মমতাই বিরোধী।
কিন্তু এখানেই খ্যান্ত দেননি তৃর্ণমূলকর্তা, কলকাতার বুদ্ধিজীবী সমাজকেও ভিনরাজ্যে বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের হেনস্থার প্রতিবাদ করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী ও গীতিকার কবীর সুমন। দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় এ শিল্পী বলেন, ‘জানি না আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো কী করছে। জানতে পেরেছি, একাধিক বামপন্থী দল এ ঘটনার বিরোধিতা করেছে, মিছিল করেছে। এক সময়ের তৃণমূলের সাংসদ আরও বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের শাসকদলও এর বিরুদ্ধে মিছিল করেছে। আসলে হিংসার মাধ্যমে কোনো কিছুর সমাধান হয় না। দলবদ্ধভাবে নানান ভাষার মানুষকে এর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। তার মধ্যে হিন্দিভাষীরাও থাকবেন, পাঞ্জাবিরাও থাকবেন। কলকাতা শহরে কত ভাষাভাষী মানুষ থাকেন, আমরা সবাই সৌভাতৃত্বের বন্ধনে বাঁধা। আমরা হাতে হাত ধরে এই ঘটনার বিরুদ্ধাচরণ করব।’
ঘটনাটি যে অন্যায়, সে বিষয়ে একমত কবি জয় গোস্বামীও। এ ঘটনায় পাঠকপ্রিয় এ কবির ভাষ্য হলো, ‘প্রদেশে প্রদেশে এই যে ভেদ, বাঙালি দেখলে বাংলাদেশি মনে করা—এই ভেদ কী করে দূর করতে হয় জানি না। কিন্তু যাঁরা এ কাজ করছে, ভারত রাষ্ট্র যদি তাঁদের বিরুদ্ধে কঠিন ভূমিকা নেয়, প্রতিটি প্রদেশের প্রশাসন যদি কঠোর হয়, তাহলে এটা আটাকানো সম্ভব। ভারতবর্ষ চিরকালই শান্তির বার্তা দিয়েছে, একসঙ্গে মিলেমিশে থাকার বার্তা দিয়েছে, সমন্বয়য়ের বার্তা দিয়েছে।’
মমতা বন্দ্যোপাধায়ের ভাষা আন্দোলন প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, এ আন্দোলন খুবই সময়োচিত আর খুবই দরকারি।’ এ সময় সৌরভ গাঙ্গুলির উদাহরণ দিয়ে জয় গোস্বামী বলেন, ‘একমাত্র সৌরভ গাঙ্গুলি ছাড়া আর কোনো বাঙালি ক্রিকেটার ভারতীয় ক্রিকেটে গুরুত্বপূর্ণ স্থান পাননি। বহুদিন ধরেই দেশজুড়ে বাঙালির প্রতি আক্রোশ ছড়িয়ে আছে। কে কোন দলের রাজনীতি করে দেখার দরকার নেই, সবারই এর প্রতিবাদ করা উচিত।’
‘এটা শুধুই বিজেপি করছে তা নয়, এর পেছনে ব্যবসায়িক মহলের বড় অবদান আছে।’—বাঙালি পরিযায়ী শ্রমিকদের ওপর অত্যাচার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে অভিনয়শিল্পী কৌশিক সেন শুরু করলেন এভাবেই। ভারতে কেন্দ্রীয় সরকারে থাকা শাসক দলের নাম উল্লেখ না করে চলচ্চিত্র ও থিয়েটারের এ অভিনেতা বলেন, ‘বিভিন্ন রাজ্যে কাজে গিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বললে “বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী” বলে মারধর করে এবং বাংলাদেশে “ঘাড়ধাক্কা” দিয়ে মানুষের সমর্থন পেতে চাইছে তারা। মানুষের মাথায় ঢুকিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে, এর কারণেই আমার উন্নতি হচ্ছে না। এভাবে একটা ফলস ন্যারেটিভ তৈরি করা হচ্ছে।’
‘বাংলাকে প্রভাবশালী ভাষা’ উল্লেখ করে অধ্যাপক ও লেখক মীরাতুন নাহার বলেন, ‘হিন্দু ভারত ও হিন্দি ভাষাভাষী ভারত তৈরির লক্ষ্যে বাংলা ভাষা ও বাঙালি জাতির ওপরে নির্যাতন করা হচ্ছে। ভারতবর্ষজুড়ে হিন্দি ভাষা চাপানোর প্রবণতা দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রীয় শাসকদলের মধ্যে।’ একে একটা রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বলেই মনে করেন দর্শনের এই অধ্যাপক।
এ ঘটনাকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে দেখছেন অভিনেতা-নাট্যকার চন্দন সেন। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক দল সবসময় একটা ইস্যু খোঁজে, যাতে জনসাধারণ উত্তপ্ত হয় এবং তাঁদের আখের গোছানো যায়। মুখ্যমন্ত্রী যদি সত্যিই পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে ভাবতেন, তাহলে রাজ্যে যথেষ্ট কর্মসংস্থান তৈরি করতেন।’
চন্দন সেনের মতো লেখক সাদিক হোসেনেরও একই মত। স্পষ্টভাবেই তিনি বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা নিয়ে রাজনীতি করছেন। যে কোনো রাজনৈতিক দলই তা-ই করবে। তবে সব সংকীর্ণ রাজনৈতিক জায়গা থেকে বেরিয়ে আমাদের বৃহত্তর এমন নাগরিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে, যাতে করে বাঙালি জাতির আত্মমর্যাদা সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়।’
এ পরিস্থিতির জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়কেই দায়ী করেন লেখক অনির্বাণ বসু। তাঁর কথায়, ‘মমতা বন্দ্যোপাধায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরই রাজ্যে আরএসএসের জমি প্রশস্ত হয়েছে। আরএসএস বাঙালিকে ঘৃণা করে, আমরা এটা স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস থেকেই বুঝি। চিরকালই আরএসএস বাঙালি বিদ্বেষী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাষা আন্দোলন করছেন মূলত ২০২৬ সালের ভোটকে লক্ষ্য করেই।’
হাজারো মুসলমান পরিবারকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করে উচ্ছেদের অভিযোগ উঠছে ভারতের আসাম রাজ্যে। বিজেপি শাসিত এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘৃণা ও মেরুকরণের রাজনীতির মাধ্যমে একটি গোষ্ঠীকে বিপদের মুখে ফেলছেন, এমন মনে করছেন রাজ্যটির নাগরিক সমাজের বড় অংশ।
১ দিন আগেবছরের পর বছর যায়, বেসরকারি খাতে সরকারের পক্ষ থেকে মজুরির হার হালনাগাদ করা হয় না। অন্যদিকে স্বাধীনতার পর সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য আট দফায় নতুন বেতন স্কেল ঘোষণা করা হয়। আরও একটি পে-স্কেল ঘোষণার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
৩ দিন আগেমোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্প। রাজধানীর এই এলাকা যেন মাদকের ‘হটস্পট’। রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিশোর বিক্রি করছে গাঁজা। নারী-শিশুদের হাতে ইয়াবা, হেরোইন। এই মাদক কারবারের পেছনে রয়েছে অদৃশ্য রাজনৈতিক ছায়া আর প্রশাসনিক দুর্বলতা। স্ট্রিম অনুসন্ধান করেছে এই মাদক কারবারের ভেতরকার গল্প।
৪ দিন আগেআমাদের ছেলে সূর্য সময় বিশ্বাস। মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ইংরেজি ভার্সনে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। আর একই বিদ্যায়তনের কলেজ শাখায় শিক্ষকতা করি আমি। প্রতিদিন ছেলেকে আমিই স্কুলে নিয়ে আসি। তবে বিমান বিধ্বস্তের ঘটনার আগের দিন (২০ জুলাই) সূর্য স্কুলে যায়নি।
৭ দিন আগে