বাংলাদেশের শেখ মুজিবই পোস্ট-কলোনিয়াল দুনিয়ার প্রথম নেতা, যাঁকে সপরিবার হত্যা করা হয়। তাঁর হত্যার ঘটনাকে নানাভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। এর ফলে কী ক্ষতি হয়েছে এ নেতার?
সুমন রহমান
শেখ মুজিবুর রহমান, রবার্ট গ্যাবরিয়েল মুগাবে, সুকর্ণ ও কোয়ামে নক্রুমা প্রত্যেকেই যাঁর যাঁর দেশের অবিসংবাদিত জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। পরবর্তীকালে একনায়ক হয়ে উঠেছিলেন। এঁদের প্রত্যেকেরই পতন হয় অভ্যুত্থানে। কিন্তু শেখ মুজিব ছাড়া কেউই নিহত হননি। জিম্বাবুয়ের সাবেক শাসক রবার্ট মুগাবে অবসর নিয়েছিলেন, ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি সুকর্ণ গৃহবন্দি ছিলেন আর ঘানার প্রধানমন্ত্রী নক্রুমা দেশান্তরী হন। এঁদের প্রত্যেককে যাঁর যাঁর স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ স্মরণ করে। মর্যাদা দেয়।
এর আগে সশস্ত্র বিপ্লবে বা গণ-অভ্যুত্থানে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই মনার্ক ছিলেন। যেমন, রাশিয়ার জার নিকোলাস, ইথিওপিয়ার হাইলে সেলাসি, ফরাসি সম্রাট লুই। তাঁরা কেউই পোস্ট-কলোনিয়াল জাতীয়তাবাদী মুক্তিসংগ্রামের নেতা ছিলেন না। বাংলাদেশের শেখ মুজিবই পোস্ট-কলোনিয়াল দুনিয়ার প্রথম নেতা, যাঁকে সপরিবার হত্যা করা হয়। এর বহুদিন পর, ২০১১ সালে, লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি সপরিবারে নিহত হয়ে শেখ মুজিবের উত্তরসুরী হন।
স্বাধীনতার আগে ও পরে শেখ মুজিব দুই রকম। এ কথা অনেকেই বলেন। স্বাধীনতার পরের স্বৈরাচারী মুজিবকে উপড়াতে গিয়ে আমরা স্বাধীনতার নেতৃত্বে থাকা মুজিবকেও উপড়ে ফেলেছি। এটা জাস্টিফাই করার জন্য মুজিবের পক্ষ-বিপক্ষ দুই দলই হাত দিয়েছে ইতিহাসে। কেউ সুপার-হিউম্যানাইজ করেছে, কেউ ডেমোনাইজ করেছে। এভাবে আমরা শেখ মুজিবকে টেক্সচুয়ালি ডিহিউম্যানাইজ করেছি। দ্বিতীয় মৃত্যু।
শেখ মুজিবের হত্যার ঘটনাকে নানাভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। এভাবে তিনি দ্বিতীয়বার নিহত হতে থাকলেন। অথচ তাঁর এমনিতেই অমর হয়ে থাকার কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে তাঁর অমরতা একনায়কতন্ত্র ফিরে আসার হুমকি হিসেবে পঠিত হলো। যে কারণে চব্বিশের জুলাই প্রলম্বিত হতে থাকল ছত্রিশ জুলাই পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত জুলাই অভ্যুত্থানে এটা সবচে বড় প্রতীকী ঘটনা। এভাবে তরুণেরা আওয়ামী লীগের দেরাজে থাকা আগস্টকে মোকাবিলা করেছে। শত সীমাবদ্ধতা সত্বেও শেখ মুজিব পুরো দেশের ছিলেন। তাঁকে একটা দলের কাল্ট ফিগার হিসেবে সীমিত করা হয়েছে।
শেখ মুজিবের সপরিবার মৃত্যু অবশ্যই একটা জাতীয় শোকাবহ ঘটনা। কিন্তু আওয়ামী লীগের শোকের রাজনীতির বাইরে গিয়ে এই ঘটনাকে পড়তে পারতে হবে। জানতে হবে, কেন এক সময়ের সাংঘাতিক জনপ্রিয় বিপ্লবী নেতারা ক্ষমতায় গিয়ে স্বৈরাচার হয়ে ওঠেন? আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্যে সেই শর্তগুলোকে অ্যাড্রেস করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ স্বৈরাচার হয়ে না ওঠে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক; প্রাবন্ধিক
শেখ মুজিবুর রহমান, রবার্ট গ্যাবরিয়েল মুগাবে, সুকর্ণ ও কোয়ামে নক্রুমা প্রত্যেকেই যাঁর যাঁর দেশের অবিসংবাদিত জাতীয়তাবাদী নেতা ছিলেন। রাষ্ট্রক্ষমতায় ছিলেন। পরবর্তীকালে একনায়ক হয়ে উঠেছিলেন। এঁদের প্রত্যেকেরই পতন হয় অভ্যুত্থানে। কিন্তু শেখ মুজিব ছাড়া কেউই নিহত হননি। জিম্বাবুয়ের সাবেক শাসক রবার্ট মুগাবে অবসর নিয়েছিলেন, ইন্দোনেশিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি সুকর্ণ গৃহবন্দি ছিলেন আর ঘানার প্রধানমন্ত্রী নক্রুমা দেশান্তরী হন। এঁদের প্রত্যেককে যাঁর যাঁর স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ স্মরণ করে। মর্যাদা দেয়।
এর আগে সশস্ত্র বিপ্লবে বা গণ-অভ্যুত্থানে যাঁরা নিহত হয়েছেন, তাঁদের বেশির ভাগই মনার্ক ছিলেন। যেমন, রাশিয়ার জার নিকোলাস, ইথিওপিয়ার হাইলে সেলাসি, ফরাসি সম্রাট লুই। তাঁরা কেউই পোস্ট-কলোনিয়াল জাতীয়তাবাদী মুক্তিসংগ্রামের নেতা ছিলেন না। বাংলাদেশের শেখ মুজিবই পোস্ট-কলোনিয়াল দুনিয়ার প্রথম নেতা, যাঁকে সপরিবার হত্যা করা হয়। এর বহুদিন পর, ২০১১ সালে, লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফি সপরিবারে নিহত হয়ে শেখ মুজিবের উত্তরসুরী হন।
স্বাধীনতার আগে ও পরে শেখ মুজিব দুই রকম। এ কথা অনেকেই বলেন। স্বাধীনতার পরের স্বৈরাচারী মুজিবকে উপড়াতে গিয়ে আমরা স্বাধীনতার নেতৃত্বে থাকা মুজিবকেও উপড়ে ফেলেছি। এটা জাস্টিফাই করার জন্য মুজিবের পক্ষ-বিপক্ষ দুই দলই হাত দিয়েছে ইতিহাসে। কেউ সুপার-হিউম্যানাইজ করেছে, কেউ ডেমোনাইজ করেছে। এভাবে আমরা শেখ মুজিবকে টেক্সচুয়ালি ডিহিউম্যানাইজ করেছি। দ্বিতীয় মৃত্যু।
শেখ মুজিবের হত্যার ঘটনাকে নানাভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়েছে। এভাবে তিনি দ্বিতীয়বার নিহত হতে থাকলেন। অথচ তাঁর এমনিতেই অমর হয়ে থাকার কথা। কিন্তু আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে তাঁর অমরতা একনায়কতন্ত্র ফিরে আসার হুমকি হিসেবে পঠিত হলো। যে কারণে চব্বিশের জুলাই প্রলম্বিত হতে থাকল ছত্রিশ জুলাই পর্যন্ত। এখন পর্যন্ত জুলাই অভ্যুত্থানে এটা সবচে বড় প্রতীকী ঘটনা। এভাবে তরুণেরা আওয়ামী লীগের দেরাজে থাকা আগস্টকে মোকাবিলা করেছে। শত সীমাবদ্ধতা সত্বেও শেখ মুজিব পুরো দেশের ছিলেন। তাঁকে একটা দলের কাল্ট ফিগার হিসেবে সীমিত করা হয়েছে।
শেখ মুজিবের সপরিবার মৃত্যু অবশ্যই একটা জাতীয় শোকাবহ ঘটনা। কিন্তু আওয়ামী লীগের শোকের রাজনীতির বাইরে গিয়ে এই ঘটনাকে পড়তে পারতে হবে। জানতে হবে, কেন এক সময়ের সাংঘাতিক জনপ্রিয় বিপ্লবী নেতারা ক্ষমতায় গিয়ে স্বৈরাচার হয়ে ওঠেন? আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারের মধ্যে সেই শর্তগুলোকে অ্যাড্রেস করতে হবে। যাতে ভবিষ্যতে আর কেউ স্বৈরাচার হয়ে না ওঠে।
লেখক: কথাসাহিত্যিক; প্রাবন্ধিক
২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলনের পর আমরা তো নিজেরাই অনুভব করতে পারছি, যেকোনো রাজনৈতিক পরিস্থিতি বা জরুরি পরিস্থিতি শারীরিক-মানসিক স্বাস্থ্যকে কতটা গভীরভাবে প্রভাবিত করে।
৩ ঘণ্টা আগেকদিন আগেই ভারতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত হিসাবে সের্জিও গরের নাম ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প; যিনি শিগগিরই নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে তাঁর ডিপ্লোম্যাটিক ক্রিডেনশিয়াল পেশ করতে যাচ্ছেন। এমনটা তো হতেই পারত যে, এই নিয়োগে নয়াদিল্লির সাউথ ব্লক যারপরনাই আনন্দিত হয়েছে। তা কিন্তু হয়নি! অথচ মার
১ দিন আগেএকটা রাষ্ট্রে কর্তৃত্বপরায়ণ শাসকেরা ক্ষমতায় থাকার সময় কী করে? তারা যে সব সময় টাকাপয়সার জোরে কিম্বা অস্ত্রপাতি আর বাহিনীর জোরে টিকে থাকে এমন নয়। বরং তারা শিল্প-সাহিত্য, কবিতা, আর্ট-কালচার, থিয়েটার, সিনেমা, মিডিয়া, ক্রীড়া-বিনোদন ইত্যাদি যত সফট পাওয়ার আছে—তার সব কিছু দিয়ে জনগণ তথা শাসিতদের মনে নিজেদের
২ দিন আগেইসরায়েলি বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন বাংলাদেশের প্রখ্যাত আলোকচিত্রী, শিক্ষক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহিদুল আলম। এ সংবাদে তাঁর সহকর্মীরাই শুধু নন, উদ্বিগ্ন সমগ্র বাংলাদেশ। শহিদুলের কাজ ও ব্যক্তিত্বের ধরন প্রসঙ্গে লিখেছেন তাঁর সহকর্মী তানভীর মুরাদ তপু।
২ দিন আগে