leadT1ad

বাস্তবায়ন উপায় নিয়ে দলগুলোর সঙ্গে আবার বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ৪৬
জুলাই সনদ। স্ট্রিম গ্রাফিক

জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আবারও বৈঠক বসবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আগামীকাল রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।

কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকে আগে ঐক্যমত কমিশনের সদস্যরা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক করবেন। প্রধান উপদেষ্টা ঐক্যমত কমিশনের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বে আছেন।

ঐক্যমত কমিশনের পক্ষে থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রোববার সকাল সাড়ে ১১টা থেকে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আলোচনা শুরু হবে।

এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে শনিবার জাতীয় সংসদের কমিশনের কার্যালয়ে কমিশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের সম্ভাব্য উপায় নিয়ে এর আগে বিশেষজ্ঞদের প্রদত্ত মতামত ও পরামর্শগুলো আবার পর্যালোচনা করা হয়। পাশাপাশি এ বিষয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে পাওয়া অভিমতও পুনরায় বিশ্লেষণ করা হয় বলে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

আলী রীয়াজ বলেন, 'আমরা মনে করি না যে সব দল একমত হবে। কিন্তু অধিকাংশ দল একমত হয়ে যদি একটা প্রস্তাব আনতে পারে তাহলে বিবেচনা করা হবে।'

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম দুই ধাপের সংলাপের ভিত্তি ৮৪টি সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে জুলাই জাতীয় সনদ চূড়ান্ত তৈরি করে কমিশন। দলগুলোর পক্ষ থেকে সনদ বাস্তবায়নের উপায় বের করতে কমিশনকে আহ্বান করে। বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে ১১ সেপ্টেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে তৃতীয় ধাপের বৈঠক শুরু করে কমিশন। তিন দিন আলোচনা হলেও এখনো ঐকমত্য হয়নি। যার কারণে রবিবার (৫ অক্টোবর) আবার আলোচনায় বসছে কমিশন।

বৈঠকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐকমত্যে পৌঁছেছে কিনা, সেই বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, 'আমরা মনে করি না যে সব দল একমত হবে। কিন্তু অধিকাংশ দল একমত হয়ে যদি একটা প্রস্তাব আনতে পারে তাহলে বিবেচনা করা হবে।'

সংবিধান-সম্পর্কিত প্রস্তাব বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে মোটাদাগে ছয়টি সুপারিশ পেয়েছিল কমিশন। সেগুলো হলো পূর্ণাঙ্গ সনদ বা তার কিছু অংশ নিয়ে গণভোট, বিশেষ সাংবিধানিক আদেশে বাস্তবায়ন, গণপরিষদ গঠনের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, ত্রয়োদশ সংসদের মাধ্যমে বাস্তবায়ন, সংসদকে সংবিধান সংস্কার সভা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে সনদের বিষয়গুলো সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা এবং সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কাছে এই মর্মে মতামত চাওয়া যে অন্তর্বর্তী সরকার এই সনদ বাস্তবায়ন করতে পারবে কি না।

এদিকে জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত ভাষ্যের ভাষাগত ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকায় সংযোজন-বিয়োজন করছে কমিশন। এতে কিছু শব্দ যুক্ত করছে। সংশোধিত চূড়ান্ত ভাষ্যে অঙ্গীকারনামায় রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তির (নোট অব ডিসেন্ট) কথা যুক্ত করলেও পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেটি বাদ দিয়েছে কমিশন।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর দলগুলোর সঙ্গে আলোচনায় বিশেষজ্ঞদের প্রস্তাব তুলে ধরেছিল কমিশন। সে প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, মৌলিক সংস্কার প্রস্তাবগুলো নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার একটি ‘সংবিধান আদেশ’ জারি করতে পারে। এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে। এরপর আদেশটি নিয়ে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে গণভোট করা যেতে পারে। তবে,বিএনপিসহ বেশ কিছু দল এই প্রস্তাবে আপত্তি জানায়।

সূত্র জানায়, বিশেষজ্ঞদের এই প্রস্তাবটি আরও সুনির্দিষ্ট আকারে আজকের আলোচনায় তুলে ধরা হতে পারে। সেখানে সংবিধান আদেশ, সংবিধানের ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের মতামত এবং গণভোট। বিকল্প হিসেবে গণপরিষদ বা সংবিধান সংস্কার সভা—নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত জাতীয় সংসদ প্রথমে সংবিধান সংস্কার করবে। এ ছাড়া কমিশন আরেকটি তৃতীয় আরেকটি প্রস্তাবের বিষয়ে আলোচনা করছে বলে জানা গেছে।

বৈঠক অংশ নেওয়ার কমিশনের একজন সদস্য জানান, জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সব রাজনৈতিক দলের মতামত প্রতিফলিত হয় এমন বিকল্প প্রস্তাব শেষ পর্যন্ত কমিশন জানাবে। সেখানে কারও মতামত পূর্ণাঙ্গভাবে প্রতিফলিত হবে না।

কমিশন সোমবার বিরতি দিয়ে মঙ্গলবার বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে সবশেষ বৈঠক কমিশন করতে চায় বলে জানিয়েছেন আলী রীয়াজ। রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে পাওয়া মতামত নিয়ে সোমবার বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করতে চায় কমিশন।

আলী রীয়াজ বলেন, কালকে (রোববার) বৈঠকে যদি বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে একমত হতে না পারে তাহলে ৬ অক্টোবর বিরতি দিয়ে ৭ অক্টোবর বৈঠকে বসব। সেখানে বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে সুপারিশ জানানো হবে।

এদিকে জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত ভাষ্যের ভাষাগত ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকায় সংযোজন-বিয়োজন করছে কমিশন। এতে কিছু শব্দ যুক্ত করছে। সংশোধিত চূড়ান্ত ভাষ্যে অঙ্গীকারনামায় রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তির (নোট অব ডিসেন্ট) কথা যুক্ত করলেও পরিস্থিতি বিবেচনা করে সেটি বাদ দিয়েছে কমিশন। সংশোধিত ভাষ্যটি আগামীকাল দলগুলোর কাছে পাঠানো হতে পারে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত