জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় ও পদ্ধতি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আবারও সভা করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আজ শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।
জুলাই সনদের সংবিধানসংক্রান্ত বিষয়গুলো সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বাস্তবায়নের সুপারিশ করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বিশেষজ্ঞ প্যানেল। যা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন গণভোটের মাধ্যমে জনগণের বৈধতা নিতে বলছেন তারা।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রিয়াজ জানিয়েছেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়নের ক্ষমতা কমিশনের নেই এবং কমিশন কোনো কিছু জোর করে চাপিয়ে দেবে না। তিনি বলেন, কমিশন কেবল সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করে সরকারকে সুপারিশ করতে পারে।
'নতুন সাংবিধানিক ব্যবস্থার প্রবর্তন বিপ্লব নয়, ক্যু হিসেবে গণ্য হবে' উল্লেখ করে জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন পদ্ধতি নিয়ে জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)
এখন পর্যন্ত মোট ২৬টি রাজনৈতিক দল জুলাই সনদ পর্যালোচনা করে এর ওপর নিজেদের মতামত জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বরাবর জমা দিয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, আজ বেলা ১টা পর্যন্ত ২৫তম ও ২৬তম দল হিসেবে কমিশনের কাছে মতামত জমা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও নাগরিক ঐক্য।
জুলাই জাতীয় সনদের খসড়ার ওপর মতামত জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে জমা দিয়েছে সংলাপের অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলো। বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) জামায়াতে ইসলামীসহ খেলাফত মজলিস, এলডিপি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি) এবং বাসদ-মার্কসবাদী তাদের মতামত জমা দিয়েছে। এর আগে গতকাল বিএনপি, এবি পার্টি, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস,
জুলাই সনদের ভিত্তিতে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছে এবি পার্টি। সনদের সাংবিধানিক মর্যাদা, আইনগত ভিত্তি ও এর বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে দ্রুত বৈঠক শুরুর তাগিদ দিয়েছে তারা।
জুলাই সনদকে ঘিরে রাজনৈতিক বিভাজন, রাজনৈতিক বিভাজন মোকাবিলায় রাজনৈতিক দল বিএনপির ভূমিকা, জুলাই সনদ নিয়ে নতুন করে ভাবার সুযোগ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষক ও গবেষক সৈয়দ নিজার।
জুলাই জাতীয় সনদের চূড়ান্ত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোকে পাঠিয়েছে সরকার। এই খসড়ায় কিছু বিষয়ে ‘অসামঞ্জস্য’ আছে এবং কিছু বিষয় ‘যথাযথভাবে উপস্থাপিত’ হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
জুলাই সনদ নিয়ে নিজেদের অবস্থান। স্ট্রিমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি স্ট্রিমকে বলেছেন, জুলাই সনদে কিন্তু শুধু ঐকমত্যের জায়গাই নেই, সঙ্গে নোট অব ডিসেন্টও আছে। আমরা সই করেছি ঐকমত্য এবং নোট অব ডিসেন্ট–দুটো বিষয় নিয়েই।
সাক্ষাৎকার
জুলাই সনদ নিয়ে স্ট্রিমের সঙ্গে কথা বলেছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। সাক্ষাৎকারে তাঁরা জানিয়েছেন জুলাই সনদ নিয়ে নিজেদের অবস্থান। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও দলীয় মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদে তাঁদের কয়েকটি মৌলিক দাবি বাদ পড়েছে।
সাক্ষাৎকার
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান ভূঁইয়া মঞ্জু স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, জুলাই সনদের অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের বিষয়ে এখনো ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি। এক্ষেত্রে বিএনপি যদি একটু উদারতা ও আন্তরিকতা দেখায়, আশা করি একটা সমাধানে পৌঁছানো সম্ভব হবে।
সাক্ষাৎকার
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, জুলাই সনদে মুক্তিযুদ্ধের চার মূলনীতি, জাতীয়তার প্রশ্ন, এমনকি মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সম্পর্কেও কিছু শব্দ এমনভাবে ঢোকানো হয়েছে, যাতে মনে হচ্ছে এটা বিশেষ কোনো গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে লেখা হয়েছে।
সাক্ষাৎকার
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, আলোচনার মাধ্যমে যদি কোনো জায়গায় পরিবর্তনের সুযোগ থাকে, সেখানে পরিবর্তন আসতে পারে। তবে যেখানে পরিবর্তনের সুযোগ নেই, সেখানে একপক্ষ অন্যপক্ষের চিন্তা চাপিয়ে দিতে পারবে না।
সাক্ষাৎকার
জাতীয় নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, আইনসভা ও গণপরিষদ নির্বাচন একসঙ্গে হলে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন টেকসই হবে। তবে পিআর পদ্ধতি ও সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে কিছু বিতর্ক এখনো বিদ্যমান।
সাক্ষাৎকার
জামায়াতে ইসলামীর সিনিয়র নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক মুজিবুর রহমান স্ট্রিমকে জানিয়েছেন, জুলাই সনদের সাংবিধানিক ভিত্তি দিতে হবে।