leadT1ad

জাতীয়-ঐকমত্য-কমিশন /খসড়া জুলাই সনদে আপত্তি এনসিপি-জামায়াতের, বেশিরভাগ বিষয়ে একমত বিএনপি

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৮: ১১
আপডেট : ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৯: ৪৫
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। স্ট্রিম গ্রাফিক

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেওয়া জুলাই সনদে খসড়া নিয়ে আপত্তি তুলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। তবে বেশিরভাগ বিষয়ে বিএনপি একমত বলে জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

আজ মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) দুপুরে ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় মধ্যাহ্নভোজ বিরতির সময় সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন ও জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরসহ গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা। পরে বিএনপি নেতা সালাহউদ্দিনও কথা বলেন গণমাধ্যমে।

বৈঠক থেকে বের হয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, তাঁরা জুলাই সনদে খসড়া বেশিরভাগ বিষয়ের সঙ্গে প্রাথমিকভাবে একমত। তবে কিছু ক্ষেত্রে শব্দ চয়ন নিয়ে তাঁদের আপত্তি আছে। সেসব বিষয় তাঁরা পরে জানাবেন।

এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাভেদ রাসিন বলেন, ‘আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, তা নির্বাচনের আগেই আইনগত ভিত্তি পেতে হবে এবং সেই ভিত্তিতে পরবর্তী সংসদ নির্বাচন হতে হবে।’ এ দাবিতে প্রয়োজনে লিখিত অবস্থানও জানাবে তাঁদের দল।

জাবেদ রাসিন বলেন, ‘আমরা এটির তীব্র বিরোধিতা করছি। আলোচনার পদ্ধতি নিয়েই আলোচনা হয়নি, অথচ তারা খসড়া প্রকাশ করেছে। এটা আমরা গ্রহণ করতে পারি না।’

জুলাই সনদ প্রসঙ্গে এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, এটি এখনো একটি খসড়া এবং দলীয়ভাবে তাঁরা তা পর্যালোচনা করছেন। তিনি বলেন, ‘এই খসড়ায় আমরা মৌলিক সংস্কারের প্রতিটি বিষয় অন্তর্ভুক্ত দেখতে চাই। যদি তা বাদ দেওয়া হয়, তাহলে দলীয় ফোরামে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে—সই করব কি না।’

আখতার হোসেন জানান, আইনি ভিত্তি নিশ্চিত করতে তারা লিগাল ফ্রেমওয়ার্ক অর্ডার (এলএফও) করার প্রস্তাব দিয়েছেন। একই সঙ্গে, যে সংস্কারগুলো রাজনৈতিক দলগুলো সম্মিলিতভাবে মেনে নিচ্ছে, তা যেন পরবর্তীতে ক্ষমতায় আসা কোনো দল উপেক্ষা করতে না পারে—এই নিশ্চয়তাও চান তাঁরা।

আখতার হোসেন জানান, দলীয় ফোরামে আলোচনা করে খুব শিগগিরই জুলাই সনদসংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক বক্তব্য কমিশনে জমা দেওয়া হবে এবং পরে তা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরা হবে।

জামায়াতের নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের জানান, জামায়াত নিজস্ব একটি সনদের খসড়া তৈরি করছে এবং তা কমিশনে জমা দেবে। জুলাই সনদের খসড়া নিয়ে তিনি বলেন, ‘এটি অসম্পূর্ণ এবং কিছু অংশ বিপজ্জনক। যদি এটা শুধু নমুনা হয়, তাহলে মন্তব্যের দরকার নেই। কিন্তু যদি এটিই চূড়ান্ত হয়, তাহলে আমরা তা মেনে নিতে পারি না।’

আইনি কাঠামো গঠনের ক্ষেত্রে জামায়াত দুটি বিকল্প প্রস্তাব করেছে—অধ্যাদেশের মাধ্যমে কাঠামো তৈরি করে পরে সংসদে অনুমোদন নেওয়া অথবা গণভোটের মাধ্যমে জনগণের চূড়ান্ত অনুমোদন নেওয়া।

তাহের বলেন, ‘আমরা চাই যেকোনো একটি পদ্ধতিতে কাঠামোটিকে আইনগত বৈধতা দেওয়া হোক।’ সংলাপ কার্যকর ও বাস্তবভিত্তিক না হলে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ ‘অনিশ্চিত’ হয়ে পড়বে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘জুলাই সনদের এখনো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা চলছে। সেখানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইস‍্যু, উচ্চকক্ষ, পিআর পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হলেও আমরা ঐক‍মত‍্য হতে পারিনি। আবার অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ঐক‍মত‍্য হয়েছি। আশা করছি, আমরা যেসব বিষয়ে ঐক‍মত‍্য হয়েছি, কমিশন জুলাই সনদে সেই বিষয়গুলো যুক্ত করবে।’

Ad 300x250

সম্পর্কিত