leadT1ad

খাগড়াছড়িতে সহিংসতার প্রতিবাদে শাহবাগে সমাবেশ, ৮ দফা দাবি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ৫৯
খাগড়াছড়িতে সহিংসতার প্রতিবাদে শাহবাগে সমাবেশ

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িতে চলমান সহিংসতার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে সমাবেশ হয়েছে। মঙ্গলবার শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের ব্যানারে এ আয়োজন করা হয়। সমাবেশ থেকে মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত, সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অধিক বলপ্রয়োগের অভিযোগ তদন্তে স্বাধীন কমিশন গঠনসহ ৮ দফা দাবি জানানো হয়।

সমাবেশে সঞ্চালক পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির কেন্দ্রীয় সদস্য ও চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের কর্মী দীপায়ন খীসা বলেন, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে চলমান ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ দরকার। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পার্বত্য উপদেষ্টা উল্টোপাল্টা কথা বলছেন। আমরা চাই, প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর থেকে বিবৃতি দেওয়া হোক।’

চুক্তি বাস্তবায়ন আন্দোলনের যুগ্ম সমন্বয়কারী ও মানবাধিকারকর্মী জাকির হোসেন বলেন, ‘নতুন দলের একজন নেতা যে বক্তব্য দিয়েছেন সেটি উস্কানিমূলক। ওই বক্তব্যে সুর মেলালেন আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি পূর্ণাঙ্গভাবে বাস্তবায়ন হলে এ ধরনের ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হতো না।’

বাসদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে যা হয়েছে সব সরকারই এজন্য দায়ী। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের ভেতর ফিলিস্তিনের গাজা।

তিনি আরও বলেন, ‘ধর্ষণকারীদের গ্রেপ্তার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। একসঙ্গে যাঁরা বিচারের দাবিতে আন্দোলন করলো, তাঁদের ওপর হামলা হয়েছে, বাড়িঘরে আগুন দিয়েছে, গুলি করে তিনজন পাহাড়িকে হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার আমরা চাই। বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে এই হত্যার বিচার চাই।’

এ সময় আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. মুশতাক হোসেন। আর সংহতি জানিয়ে অংশ নেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের নেতা-কর্মী।

সমাবেশ থেকে উত্থাপিত আট দফা দাবি হলো— খাগড়াছড়িতে মারমা কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের দ্রুত স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করা এবং ওই কিশোরী ও তার পরিবারের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বলপ্রয়োগ এবং মদদের অভিযোগের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন। নিহত ও আহতদের পরিবারকে সুরক্ষা, যথাযথ ক্ষতিপূরণ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। পাহাড়ে দীর্ঘদিনের সামরিকীকরণ নীতি পর্যালোচনা করে শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক সমাধানের পথে এগোনো। পাহাড়ে অবাধ তথ্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা, যাতে ভুক্তভোগীদের কণ্ঠরোধ না হয় এবং তাঁরা সত্য জানতে পারে। খাগড়াছড়ি ও গুইমারার ঘটনা তদন্তে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের যুক্ত করে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি গঠন করা। হত্যার শিকার প্রতিটি পরিবারকে কমপক্ষে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি দ্রুত ও যথাযথ বাস্তবায়ন করে সমস্যার স্থায়ী সমাধান করা।

উল্লেখ্য, খাগড়াছড়িতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর মারমা এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে বিক্ষোভ ও সংঘর্ষ হয়। এ নিয়ে উত্তপ্ত পরিস্থিতির মধ্যে গত রোববার সংঘর্ষে জেলার গুইমারা উপজেলায় তিন পাহাড়ি নিহত এবং সেনা ও পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন। বর্তমানে সেখানে ১৪৪ ধারা জারি আছে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত