.png)
‘দেশবিরোধী’ তকমা পাওয়ার আশঙ্কা, জাতিগত ও আঞ্চলিক বিভাজন, অর্থনৈতিক চাপ এবং প্রতিবাদের ফল অকার্যকর হওয়ার আশঙ্কা তাদের নিরুৎসাহিত করে।

স্ট্রিম ডেস্ক

ভারতের জেনারেশন জেড বিশাল, অস্থির ও প্রযুক্তিনির্ভর একটি প্রজন্ম। ২৫ বছরের নিচে এমন প্রায় ৩৭ কোটি মানুষ আছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের কাছাকাছি। স্মার্টফোন ও সামাজিক মাধ্যমের কারণে তারা রাজনীতি, দুর্নীতি ও বৈষম্য সম্পর্কে সচেতন।
তবুও তারা রাস্তায় নামতে ভয় পায়। কারণ, ‘দেশবিরোধী’ তকমা পাওয়ার আশঙ্কা, জাতিগত ও আঞ্চলিক বিভাজন, অর্থনৈতিক চাপ এবং প্রতিবাদের ফল অকার্যকর হওয়ার আশঙ্কা তাদের নিরুৎসাহিত করে।
এশিয়া ও আফ্রিকার অন্যান্য দেশে দৃশ্যটা ভিন্ন। নেপালে তরুণদের আন্দোলনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকার পড়ে যায়। মাদাগাস্কার ও ইন্দোনেশিয়ায় তরুণেরা দুর্নীতি ও মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরকারকে ছাড় দিতে বাধ্য করেছে। বাংলাদেশেও সরকারি চাকরির কোটা ও দুর্নীতির বিরোধিতা করে তরুণরা গত বছর পরিবর্তন এনেছে। এসব আন্দোলন দ্রুত, বিকেন্দ্রীকৃত এবং সামাজিক মাধ্যমে সংগঠিত হয়েছে।
ভারতেও কিছু ক্ষীণ প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ দেখা গেছে। সেপ্টেম্বর মাসে লাদাখে রাজ্যের মর্যাদা দাবি করে বিক্ষোভে সহিংসতা হয়। কর্মী সোনম ওয়াংচুক এটিকে ‘জেন জেডের ক্ষোভ’ হিসেবে দেখেছেন। জাতীয় রাজনীতিতেও এর প্রতিধ্বনি শোনা যায়। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘জেন জেড তরুণরাই ভোট জালিয়াতি ঠেকাবে ও সংবিধান রক্ষা করবে।’
নেপালের আন্দোলনের পর দিল্লি পুলিশকেও তরুণনেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের আশঙ্কায় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। অনলাইনে এ নিয়ে তর্ক চলছে। কেউ কেউ ভারতীয় তরুণদের প্রতিবাদে নামার আহ্বান জানাচ্ছেন, আবার অনেকে নেপালের সহিংস অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করিয়ে সতর্ক করছেন।
তথ্য যাচাই সংস্থা বুমলাইভ জানিয়েছে, অনলাইনেই প্রজন্মটির মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। একপক্ষ আন্দোলনকে ন্যায্য দাবি মনে করছে, অন্যপক্ষ বিদেশি প্রভাবের সন্দেহ করছে।
ভারতে ছাত্র আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাস আছে—ইন্দিরা গান্ধির আমল থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ক্যাম্পাস আন্দোলন পর্যন্ত। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নেপাল বা বাংলাদেশের মতো কেন্দ্রীয় সরকার পতনের মতো শক্তি ভারতের তরুণদের মধ্যে এখনো গড়ে ওঠেনি।
এর একটি বড় কারণ হলো বিভাজন। ভারতের তরুণেরা বেকারত্ব, দুর্নীতি ও বৈষম্যে ক্ষুব্ধ হলেও তাদের দাবি স্থানীয় ইস্যু ঘিরে সীমাবদ্ধ। ফলে জাতীয় পর্যায়ে একক আন্দোলন গড়ে ওঠা কঠিন।
বিহারের তরুণ সাংবাদিক বিপুল কুমার বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ঐক্য নেই। ভারতের ক্ষমতা যেমন বিকেন্দ্রীকৃত, তেমনি তরুণদের ক্ষোভও।’
যুব নীতি বিশ্লেষক সুধাংশু কৌশিক মনে করেন, এ কারণেই ভারত জেন জেড বিপ্লবে ‘ব্যতিক্রম’ রয়ে যাবে। তার মতে, বয়স নয়—ভাষা, অঞ্চল ও জাতিগত পরিচয়ও তরুণদের আলাদা করে দেয়।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যদি ভারতে জেন জেড আন্দোলন হয়, তা কি দলিত তরুণদের হবে, শহুরে না তামিল ভাষাভাষীদের?’ তার মতে, ভারতের তরুণ সমাজ এত বৈচিত্র্যময় যে একক উদ্দেশ্যে সবাইকে একত্র করা প্রায় অসম্ভব।

সতর্ক, সচেতন, কিন্তু নীরব
ভারতের শহুরে তরুণরা সাধারণত চাকরির সুযোগ, অবকাঠামো ও জীবনযাত্রার মান নিয়ে ভাবেন। দলিত তরুণদের প্রধান উদ্বেগ জাতিগত বৈষম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার। অন্যদিকে, তামিল ভাষাভাষী তরুণেরা ভাষা, আঞ্চলিক অধিকার ও সংস্কৃতি রক্ষার বিষয়ে সোচ্চার।
প্রতিবাদের কারণও অঞ্চলভেদে আলাদা। গুজরাট ও হরিয়ানায় উচ্চবর্ণের তরুণেরা সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন করেছে। আবার তামিলনাডুতে তরুণেরা প্রতিবাদে নামে যখন আদালত ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়নিয়ন্ত্রণ খেলা ‘জাল্লিকাট্টু’ নিষিদ্ধ করে।
এই বিভাজনের ওপর আছে আরেকটি বড় বাধা—‘দেশবিরোধী’ তকমার ভয়। রাজনৈতিক বিজ্ঞানে স্নাতক ধৈর্য চৌধুরীর মতে, এই তকমাই অনেক সচেতন তরুণকেও রাস্তায় নামা থেকে বিরত রাখে। রাজনীতিক ও কিছু গণমাধ্যম প্রায়ই এই অভিযোগ ব্যবহার করে ভিন্নমতকে দুর্বল করে।
অতীতে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রাজনৈতিক আলোচনার প্রাণকেন্দ্র ছিল, এখন অনেক জায়গায় সেখানে প্রতিবাদ নিষিদ্ধ বা সীমিত। গবেষক হাজারা নাজিব বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলো একসময় সক্রিয় আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল, এখন সেই চেতনা হারিয়েছে।’
সরকার তরুণদের শক্তিকে নীতিগত অগ্রাধিকার হিসেবে দাবি করে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের সম্পৃক্ত করতে চায়। কিন্তু বাস্তবে অর্থনৈতিক চাপ তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে। বিশ্লেষক সুধাংশু কৌশিকের মতে, ‘ভারতের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় থাকলেও বেকারত্বের ভয় বাড়ছে। ফলে অনেক তরুণ বিদেশে যাওয়ার পথ বেছে নিচ্ছে।’
ভোটের ক্ষেত্রেও তরুণদের আগ্রহ কমছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ১৮ বছর বয়সী নিবন্ধিত ভোটারের হার ছিল মাত্র ৩৮ শতাংশ। এক জরিপে দেখা গেছে, ২৯ শতাংশ তরুণ রাজনীতিকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলে। কৌশিকের মতে, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে তরুণেরা নিজেদের পরিচয় বেশি করে ধর্ম, সংস্কৃতি ও ভাষার ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত করছে।
সিএসডিএস-লোকনীতি-র এক জরিপে দেখা যায়, শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এখনো তরুণদের মধ্যে শক্ত সমর্থন ধরে রেখেছে—২০১৯ সালে ৪০ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে সামান্য কম।
তবুও ভারতের জেন জেড-এর রাজনৈতিক সচেতনতার শিকড় গভীর। তারা কিশোর বয়সে দেখেছে ২০১০-এর দশকের বড় বড় আন্দোলন—আন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী প্রতিবাদ থেকে ২০১২ সালের দিল্লি ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভ পর্যন্ত।
২০১৯ সালে তারা সরাসরি অংশ নেয় কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল, কৃষি আইন ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে আন্দোলনে। সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ ছিল সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, কিন্তু তার মূল্যও ছিল বড়। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ও আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভে পুলিশি অভিযান ও সংঘর্ষ হয়। ছাত্রনেতা উমর খালিদ আজও কারাগারে, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
‘সরকার প্রতিবাদকে এমনভাবে কলঙ্কিত করেছে যে, এখন খুব কম মানুষই প্রতিবাদের কথা ভাবেন’, বলেন ২৬ বছর বয়সী যতি ঝা। সরকারের দাবি, তারা কেবল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করেছে, আর এই আন্দোলন নাকি ‘বহিরাগত প্রভাব’ বা ‘দেশবিরোধী’দের দিয়ে পরিচালিত ছিল।
সমাজবিজ্ঞানী দিপঙ্কর গুপ্ত মনে করেন, তরুণদের উদ্যম ক্ষণস্থায়ী। প্রতিটি প্রজন্ম নিজস্ব লক্ষ্য গড়ে তোলে, পুরনো কারণ উত্তরাধিকারসূত্রে নেয় না। ইতিহাস দেখায়—তরুণরা সরকার বদলে দিতে পারে, কিন্তু স্থায়ী পরিবর্তন বা উন্নতি সবসময় আসে না; আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ বা নেপাল পর্যন্ত তাই দেখা গেছে।
এই মুহূর্তে ভারতের জেন জেড বিদ্রোহী নয়, বরং পর্যবেক্ষক। তাদের প্রতিবাদ নীরব, কিন্তু তাদের আকাঙ্ক্ষা স্পষ্ট—একটি ন্যায়সঙ্গত, সুযোগসুবিধাপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যৎ।
সূত্র: বিবিসি

ভারতের জেনারেশন জেড বিশাল, অস্থির ও প্রযুক্তিনির্ভর একটি প্রজন্ম। ২৫ বছরের নিচে এমন প্রায় ৩৭ কোটি মানুষ আছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশের কাছাকাছি। স্মার্টফোন ও সামাজিক মাধ্যমের কারণে তারা রাজনীতি, দুর্নীতি ও বৈষম্য সম্পর্কে সচেতন।
তবুও তারা রাস্তায় নামতে ভয় পায়। কারণ, ‘দেশবিরোধী’ তকমা পাওয়ার আশঙ্কা, জাতিগত ও আঞ্চলিক বিভাজন, অর্থনৈতিক চাপ এবং প্রতিবাদের ফল অকার্যকর হওয়ার আশঙ্কা তাদের নিরুৎসাহিত করে।
এশিয়া ও আফ্রিকার অন্যান্য দেশে দৃশ্যটা ভিন্ন। নেপালে তরুণদের আন্দোলনে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকার পড়ে যায়। মাদাগাস্কার ও ইন্দোনেশিয়ায় তরুণেরা দুর্নীতি ও মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরকারকে ছাড় দিতে বাধ্য করেছে। বাংলাদেশেও সরকারি চাকরির কোটা ও দুর্নীতির বিরোধিতা করে তরুণরা গত বছর পরিবর্তন এনেছে। এসব আন্দোলন দ্রুত, বিকেন্দ্রীকৃত এবং সামাজিক মাধ্যমে সংগঠিত হয়েছে।
ভারতেও কিছু ক্ষীণ প্রতিবাদের স্ফুলিঙ্গ দেখা গেছে। সেপ্টেম্বর মাসে লাদাখে রাজ্যের মর্যাদা দাবি করে বিক্ষোভে সহিংসতা হয়। কর্মী সোনম ওয়াংচুক এটিকে ‘জেন জেডের ক্ষোভ’ হিসেবে দেখেছেন। জাতীয় রাজনীতিতেও এর প্রতিধ্বনি শোনা যায়। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, ‘জেন জেড তরুণরাই ভোট জালিয়াতি ঠেকাবে ও সংবিধান রক্ষা করবে।’
নেপালের আন্দোলনের পর দিল্লি পুলিশকেও তরুণনেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের আশঙ্কায় প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। অনলাইনে এ নিয়ে তর্ক চলছে। কেউ কেউ ভারতীয় তরুণদের প্রতিবাদে নামার আহ্বান জানাচ্ছেন, আবার অনেকে নেপালের সহিংস অভিজ্ঞতার কথা স্মরণ করিয়ে সতর্ক করছেন।
তথ্য যাচাই সংস্থা বুমলাইভ জানিয়েছে, অনলাইনেই প্রজন্মটির মধ্যে বিভাজন তৈরি হয়েছে। একপক্ষ আন্দোলনকে ন্যায্য দাবি মনে করছে, অন্যপক্ষ বিদেশি প্রভাবের সন্দেহ করছে।
ভারতে ছাত্র আন্দোলনের দীর্ঘ ইতিহাস আছে—ইন্দিরা গান্ধির আমল থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক ক্যাম্পাস আন্দোলন পর্যন্ত। তবে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নেপাল বা বাংলাদেশের মতো কেন্দ্রীয় সরকার পতনের মতো শক্তি ভারতের তরুণদের মধ্যে এখনো গড়ে ওঠেনি।
এর একটি বড় কারণ হলো বিভাজন। ভারতের তরুণেরা বেকারত্ব, দুর্নীতি ও বৈষম্যে ক্ষুব্ধ হলেও তাদের দাবি স্থানীয় ইস্যু ঘিরে সীমাবদ্ধ। ফলে জাতীয় পর্যায়ে একক আন্দোলন গড়ে ওঠা কঠিন।
বিহারের তরুণ সাংবাদিক বিপুল কুমার বলেন, ‘আমাদের মধ্যে ঐক্য নেই। ভারতের ক্ষমতা যেমন বিকেন্দ্রীকৃত, তেমনি তরুণদের ক্ষোভও।’
যুব নীতি বিশ্লেষক সুধাংশু কৌশিক মনে করেন, এ কারণেই ভারত জেন জেড বিপ্লবে ‘ব্যতিক্রম’ রয়ে যাবে। তার মতে, বয়স নয়—ভাষা, অঞ্চল ও জাতিগত পরিচয়ও তরুণদের আলাদা করে দেয়।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘যদি ভারতে জেন জেড আন্দোলন হয়, তা কি দলিত তরুণদের হবে, শহুরে না তামিল ভাষাভাষীদের?’ তার মতে, ভারতের তরুণ সমাজ এত বৈচিত্র্যময় যে একক উদ্দেশ্যে সবাইকে একত্র করা প্রায় অসম্ভব।

সতর্ক, সচেতন, কিন্তু নীরব
ভারতের শহুরে তরুণরা সাধারণত চাকরির সুযোগ, অবকাঠামো ও জীবনযাত্রার মান নিয়ে ভাবেন। দলিত তরুণদের প্রধান উদ্বেগ জাতিগত বৈষম্য ও সামাজিক ন্যায়বিচার। অন্যদিকে, তামিল ভাষাভাষী তরুণেরা ভাষা, আঞ্চলিক অধিকার ও সংস্কৃতি রক্ষার বিষয়ে সোচ্চার।
প্রতিবাদের কারণও অঞ্চলভেদে আলাদা। গুজরাট ও হরিয়ানায় উচ্চবর্ণের তরুণেরা সংরক্ষণের দাবিতে আন্দোলন করেছে। আবার তামিলনাডুতে তরুণেরা প্রতিবাদে নামে যখন আদালত ঐতিহ্যবাহী ষাঁড়নিয়ন্ত্রণ খেলা ‘জাল্লিকাট্টু’ নিষিদ্ধ করে।
এই বিভাজনের ওপর আছে আরেকটি বড় বাধা—‘দেশবিরোধী’ তকমার ভয়। রাজনৈতিক বিজ্ঞানে স্নাতক ধৈর্য চৌধুরীর মতে, এই তকমাই অনেক সচেতন তরুণকেও রাস্তায় নামা থেকে বিরত রাখে। রাজনীতিক ও কিছু গণমাধ্যম প্রায়ই এই অভিযোগ ব্যবহার করে ভিন্নমতকে দুর্বল করে।
অতীতে যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো রাজনৈতিক আলোচনার প্রাণকেন্দ্র ছিল, এখন অনেক জায়গায় সেখানে প্রতিবাদ নিষিদ্ধ বা সীমিত। গবেষক হাজারা নাজিব বলেন, ‘এই প্রতিষ্ঠানগুলো একসময় সক্রিয় আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল, এখন সেই চেতনা হারিয়েছে।’
সরকার তরুণদের শক্তিকে নীতিগত অগ্রাধিকার হিসেবে দাবি করে, বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে তাদের সম্পৃক্ত করতে চায়। কিন্তু বাস্তবে অর্থনৈতিক চাপ তাদের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করছে। বিশ্লেষক সুধাংশু কৌশিকের মতে, ‘ভারতের অর্থনীতি তুলনামূলকভাবে ভালো অবস্থায় থাকলেও বেকারত্বের ভয় বাড়ছে। ফলে অনেক তরুণ বিদেশে যাওয়ার পথ বেছে নিচ্ছে।’
ভোটের ক্ষেত্রেও তরুণদের আগ্রহ কমছে। ২০২৪ সালের নির্বাচনে ১৮ বছর বয়সী নিবন্ধিত ভোটারের হার ছিল মাত্র ৩৮ শতাংশ। এক জরিপে দেখা গেছে, ২৯ শতাংশ তরুণ রাজনীতিকে পুরোপুরি এড়িয়ে চলে। কৌশিকের মতে, সাম্প্রতিক দশকগুলোতে তরুণেরা নিজেদের পরিচয় বেশি করে ধর্ম, সংস্কৃতি ও ভাষার ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত করছে।
সিএসডিএস-লোকনীতি-র এক জরিপে দেখা যায়, শাসকদল ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) এখনো তরুণদের মধ্যে শক্ত সমর্থন ধরে রেখেছে—২০১৯ সালে ৪০ শতাংশ এবং ২০২৪ সালে সামান্য কম।
তবুও ভারতের জেন জেড-এর রাজনৈতিক সচেতনতার শিকড় গভীর। তারা কিশোর বয়সে দেখেছে ২০১০-এর দশকের বড় বড় আন্দোলন—আন্না হাজারের দুর্নীতিবিরোধী প্রতিবাদ থেকে ২০১২ সালের দিল্লি ধর্ষণবিরোধী বিক্ষোভ পর্যন্ত।
২০১৯ সালে তারা সরাসরি অংশ নেয় কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল, কৃষি আইন ও নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (সিএএ) বিরুদ্ধে আন্দোলনে। সিএএ বিরোধী প্রতিবাদ ছিল সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ, কিন্তু তার মূল্যও ছিল বড়। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া ও আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র বিক্ষোভে পুলিশি অভিযান ও সংঘর্ষ হয়। ছাত্রনেতা উমর খালিদ আজও কারাগারে, যদিও তিনি অভিযোগ অস্বীকার করেন।
‘সরকার প্রতিবাদকে এমনভাবে কলঙ্কিত করেছে যে, এখন খুব কম মানুষই প্রতিবাদের কথা ভাবেন’, বলেন ২৬ বছর বয়সী যতি ঝা। সরকারের দাবি, তারা কেবল আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা করেছে, আর এই আন্দোলন নাকি ‘বহিরাগত প্রভাব’ বা ‘দেশবিরোধী’দের দিয়ে পরিচালিত ছিল।
সমাজবিজ্ঞানী দিপঙ্কর গুপ্ত মনে করেন, তরুণদের উদ্যম ক্ষণস্থায়ী। প্রতিটি প্রজন্ম নিজস্ব লক্ষ্য গড়ে তোলে, পুরনো কারণ উত্তরাধিকারসূত্রে নেয় না। ইতিহাস দেখায়—তরুণরা সরকার বদলে দিতে পারে, কিন্তু স্থায়ী পরিবর্তন বা উন্নতি সবসময় আসে না; আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ বা নেপাল পর্যন্ত তাই দেখা গেছে।
এই মুহূর্তে ভারতের জেন জেড বিদ্রোহী নয়, বরং পর্যবেক্ষক। তাদের প্রতিবাদ নীরব, কিন্তু তাদের আকাঙ্ক্ষা স্পষ্ট—একটি ন্যায়সঙ্গত, সুযোগসুবিধাপূর্ণ ও মর্যাদাপূর্ণ ভবিষ্যৎ।
সূত্র: বিবিসি
.png)

প্রশান্ত মহাসাগরের গভীরে, সমুদ্রতলজুড়ে ছড়িয়ে আছে বাদামী ও কালো রঙের শিলাখণ্ড। এই শিলাগুলোকে বলা হয় পলিমেটালিক নডিউলস। এতে এমন গুরুত্বপূর্ণ ধাতব উপাদান রয়েছে যা নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন ও আধুনিক শিল্পের ভবিষ্যৎ গঠনে ব্যবহৃত হতে পারে।
২ ঘণ্টা আগে
এ বছরের শুরুতে মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই সেনাবাহিনী শহরটি পুনর্দখল করে নেয়। এই পরিবর্তন প্রমাণ করে, মিয়ানমারে এখন সামরিক ভারসাম্য কতটা জান্তার পক্ষে চলে গেছে।
৪ ঘণ্টা আগে
ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশে মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লেগে একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন ধরে যায়। এতে অন্তত ২৫ জন নিহত এবং ১৮ যাত্রী আহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে মোটরসাইকেল আরোহী রয়েছেন।
৫ ঘণ্টা আগে
গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার দুই সপ্তাহ পরও সেখানে খাদ্য সংকট ‘বিপর্যয়কর’ অবস্থায় রয়ে গেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও )। আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থাগুলো ইসরায়লকে মানবিক সহায়তা প্রবেশে বাধা দেওয়া বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে