প্রসাধনী হিসেবে কাজল উপমহাদেশের সাজসজ্জার ঐতিহ্য। বিয়েবাড়ি হোক বা পার্টি, নারীদের সাজের বড় একটি অংশ জুড়ে থাকে চোখের মেকআপ। সেখানে কাজলের ব্যবহার দেখা যায়। কাজল কেন এখনো ট্রেন্ডি? কাজলের কি ঔষধি গুণ আছে? প্রসাধনী শিল্পে কাজলের দখল কতখানি? এসব জানা যাবে এ লেখায়।
তামান্না আনজুম
এমন অনেক বাঙালি নারীকে খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা চোখে কাজল ছাড়া নিজেকে দেখতে পছন্দ করেন না। যেমন আমার এক ক্লাসমেটের কথাই ধরা যাক। তাঁর কথায়, ‘কাজল ছাড়া আমার চলেই না।’ প্রশ্ন করলাম, ‘কেন চলে না’? যে উত্তর পেলাম তা হলো, কাজলে নাকি তাঁকে কনফিডেন্ট লাগে।
প্রসাধনী হিসেবে কাজল উপমহাদেশের সাজসজ্জার ঐতিহ্য। বাংলা গান-কবিতা-সিনেমায় কাজলের কথা এসেছে বারবার। যেমন কাজী নজরুল ইসলামের ‘বর্ষা বিদায়’ কবিতার ‘ওগো ও কাজল-মেয়ে, উদাস আকাশ ছলছল চোখে তব মুখে আছে চেয়ে।’ কিংবা কিশোর কুমারের গানে ‘নয়নও সরসী কেন ভরেছে জলে, কত কি রয়েছে লেখা কাজলে কাজলে’। এমন আরো বহু গান-কবিতা পাওয়া যাবে। কাজল নয়না মেয়ের চাহনি থেকে শুরু করে কাজল কালো চোখের সৌন্দর্্যের কথা সেখানে পাওয়া যায়। আর সিনেমার কথা তো বাদ-ই দিলাম! বলিউড থেকে ঢালিউড সিনেমার কয়েকজন নায়িকার ক্ষেত্রে চোখের কাজল-ই তাঁদের ‘সিগনেচার সাজ’।
বিয়েবাড়ি হোক বা পার্টি, নারীদের সাজের বড় একটি অংশ জুড়ে থাকে চোখের মেকআপ। কাজল, মাস্কারা আর আইশ্যাডোর আছে ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার। এ ছাড়াও এখন মেকআপে নতুন ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে রঙিন কাজল। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন রঙের কাজল ব্যবহার করে চোখের সাজে আনা যায় ভিন্ন মাত্রা। তবে কালো কাজলের আবেদন চিরন্তন।
অনেকেই পচ্ছন্দ করেন স্মোকি আই মেকআপ। সেখানে কালোর পরিবর্তে নীল বা ধূসর রঙের কাজল ব্যবহার করেন। নীলের নানা শেড ডার্ক ব্লু, নিয়ন ব্লু, ফিরোজা বা গ্রে-ব্লু রঙের কাজল পোশাকের ধরন ও অনুষ্ঠানের সময় অনুযায়ী বেছে নেওয়া যায়। ধূসর কাজলেরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন শেড। সামান্য গ্লিটার বা শিমারযুক্ত ধূসর কাজল চোখে এনে দিতে পারে আকর্ষণীয় লুক। এটা পার্টি বা জমকালো অনুষ্ঠানের জন্য একেবারে মানানসই সাজ।
চোখের সাজে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে কাজল ও আইলাইনার একসঙ্গে ব্যবহার করার চল আছে এখন। চোখের ওপরের পাতায় মোটা করে পছন্দের কোনো রঙিন আইলাইনার দিয়ে, নিচের ওয়াটারলাইনে মানানসই রঙের কাজল ব্যবহার করা যেতে পারে। চাইলে ওপরের ল্যাশ লাইনে কালো লাইনারের ঠিক ওপরেই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে রঙিন কাজল দিয়ে সরু একটি ডাবল লাইন টেনে নেওয়া যায়। এতে চোখে আসবে আকর্ষণীয় লুক।
কাজল চোখের কথা উঠলেই যার নাম সবার আগে মনে আসে, তিনি ‘মহানায়িকা’ সুচিত্রা সেন। তাঁর অভিনয়, ব্যক্তিত্ব এবং সৌন্দর্যের বিশাল অংশ জুড়ে ছিল তাঁর বাঙ্ময় চোখ। ‘সাগরিকা’ বা ‘সপ্তপদী’র মতো ছবিতে তাঁর কাজল পরা চোখের চাহনি বাঙালি দর্শকের মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলেছে। মিষ্টি হাসির চেয়েও দর্শক তাঁকে বেশি ভালোবেসেছিল চোখের ভাষাকে।
বলিউডেও কিন্তু কাজলের বাহারি ব্যবহার কম নয়। কাজল চোখের ঐশ্বরিয়া রায় থেকে স্মোকি আইয়ের দীপিকা পাডুকোন। তাঁদের কাজল চোখ মন কেড়েছে লাখো দর্শকের। অন্যদিকে, হলিউডের নির্বাক চলচ্চিত্র যুগে নিজের পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে কাজল ব্যবহার করতেন আকর্ষণীয় তারকা থেডা বারা। ‘দ্য ডেভিলস ডটার’, ‘দ্য ভিক্সেন’-এর মতো ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ‘ভ্যাম্প’ চরিত্রকে জনপ্রিয় করে তোলেন। বলা হয়, চোখে কালো কাজলের মোহনীয় রেখাই তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল।
কাজলের ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের পুরোনো। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ সালে প্রাচীন মিশর ও মেসোপটেমিয়ায় নারী-পুরুষ উভয়েই ‘কোহল’ ব্যবহার করতেন। তাঁদের বিশ্বাস ছিল, কাজল সূর্যের তেজ ও অশুভ শক্তি থেকেও চোখকে সুরক্ষা দেয়। ফারাওদের সমাধি থেকে পাওয়া কাজলের পাত্রও এর গুরুত্বের সাক্ষ্য বহন করে। মিশরীয়রা মূলত গ্যালেনা ও ম্যালাকাইটের মতো খনিজ গুঁড়ো করে কাজল তৈরি করত।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ভারতীয় উপমহাদেশে কাজলের ব্যবহার সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকেই বিস্তৃত ছিল। পরবর্তী সময়ে আরব বণিকদের মাধ্যমে ‘কুহল’ এই অঞ্চলে আসে। আর তা থেকেই ‘কাজল’ নামের প্রচলন ঘটে। উপমহাদেশের সংস্কৃতিতে কাজল শুধু সৌন্দর্যের উপাদান নয়, এর সঙ্গে আধ্যাত্মিক বিশ্বাসও জড়িত। শিশুদের কপালে বা চোখের কোণে কাজলের টিপ দিয়ে ‘নজর লাগা’ থেকে রক্ষার প্রথা আজও প্রচলিত।
হিন্দু ধর্মে দেবী কালী ও দুর্গার চোখ কাজল দিয়ে ঘন করে আঁকা হয়, যা তাদের ঐশ্বরিক শক্তি ও মায়াবী রূপের প্রতীক। পাশাপাশি শাস্ত্রীয় নৃত্যে চোখের ভাষা ও আবেগ প্রকাশে কাজলের তুলনা নেই।
অনেকে মনে করেন, কাজল চোখ পরিষ্কার রাখে এবং ওষুধ হিসেবে কাজ করে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও এর উল্লেখ আছে। ঘি বা ক্যাস্টর অয়েলের প্রদীপ থেকে সংগ্রহ করা কালি দিয়ে তৈরি কাজলে কর্পূর, আমলকী বা ত্রিফলার মতো ভেষজ উপাদান মেশানো হতো। বিশ্বাস করা হতো, এই কাজল চোখকে শীতল রাখে, সংক্রমণ রোধ করে এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে।
অবশ্য কাজল সম্পর্কে প্রচলিত এ ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী একটি তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল ‘ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে। এই জার্নালের তথ্যমতে, দীর্ঘদিন কাজল ব্যবহারে চোখে ‘লেড’ জনিত বিষক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আবার শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে শরীর বৃদ্ধিতে স্থবিরতা, মাংসপেশির অসাড়তার মতো সমস্যা।
চোখের কাজল একসময় ছিল শুধু ঘরোয়া প্রসাধন, মাটির ছোট্ট ডিব্বেতে রাখা গাঢ় গুঁড়ো। কিন্তু এখন? আধুনিক প্রসাধনী শিল্পে কাজলের বাজার এখন অনেক বড়। ভারতের কালার কসমেটিক মার্কের্টে কাজল একাই দখল করে রেখেছে প্রায় বাজারের ২৫ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোও এই বাজারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। গার্লেইন, ডিওর, লরিয়েল, মেবেলিনের মতো ব্র্যান্ড শুধু ইউরোপ-আমেরিকা নয়, ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল বাজারকে সামনে রেখে নতুন নতুন কালেকশন বাজারে নিয়ে আসছে। পেন্সিল, লিকুইড বা জেল—বিভিন্ন শেড ও ফিনিশে এটি এখন বিশ্বজুড়ে বিক্রি হচ্ছে।
‘ভোগ ইন্ডিয়া’র তথ্য বলছে, ২০১০ সালে ভারতে কাজলের বাজার ছিল ২৫০ কোটি টাকার। পাঁচ বছর পরেই সেই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৯০০ কোটিতে। আর এখন? কাজজের ইন্ডাস্ট্রি কয়েক হাজার কোটি টাকার বিশাল সাম্রাজ্য। সৌন্দর্যচর্চা, সিনেমা ও ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা, আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড—সব মিলিয়ে কাজল হয়ে উঠেছে সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল কসমেটিক পণ্যগুলোর একটি।
এমন অনেক বাঙালি নারীকে খুঁজে পাওয়া যাবে, যারা চোখে কাজল ছাড়া নিজেকে দেখতে পছন্দ করেন না। যেমন আমার এক ক্লাসমেটের কথাই ধরা যাক। তাঁর কথায়, ‘কাজল ছাড়া আমার চলেই না।’ প্রশ্ন করলাম, ‘কেন চলে না’? যে উত্তর পেলাম তা হলো, কাজলে নাকি তাঁকে কনফিডেন্ট লাগে।
প্রসাধনী হিসেবে কাজল উপমহাদেশের সাজসজ্জার ঐতিহ্য। বাংলা গান-কবিতা-সিনেমায় কাজলের কথা এসেছে বারবার। যেমন কাজী নজরুল ইসলামের ‘বর্ষা বিদায়’ কবিতার ‘ওগো ও কাজল-মেয়ে, উদাস আকাশ ছলছল চোখে তব মুখে আছে চেয়ে।’ কিংবা কিশোর কুমারের গানে ‘নয়নও সরসী কেন ভরেছে জলে, কত কি রয়েছে লেখা কাজলে কাজলে’। এমন আরো বহু গান-কবিতা পাওয়া যাবে। কাজল নয়না মেয়ের চাহনি থেকে শুরু করে কাজল কালো চোখের সৌন্দর্্যের কথা সেখানে পাওয়া যায়। আর সিনেমার কথা তো বাদ-ই দিলাম! বলিউড থেকে ঢালিউড সিনেমার কয়েকজন নায়িকার ক্ষেত্রে চোখের কাজল-ই তাঁদের ‘সিগনেচার সাজ’।
বিয়েবাড়ি হোক বা পার্টি, নারীদের সাজের বড় একটি অংশ জুড়ে থাকে চোখের মেকআপ। কাজল, মাস্কারা আর আইশ্যাডোর আছে ঐতিহ্যবাহী ব্যবহার। এ ছাড়াও এখন মেকআপে নতুন ট্রেন্ড হয়ে উঠেছে রঙিন কাজল। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে বিভিন্ন রঙের কাজল ব্যবহার করে চোখের সাজে আনা যায় ভিন্ন মাত্রা। তবে কালো কাজলের আবেদন চিরন্তন।
অনেকেই পচ্ছন্দ করেন স্মোকি আই মেকআপ। সেখানে কালোর পরিবর্তে নীল বা ধূসর রঙের কাজল ব্যবহার করেন। নীলের নানা শেড ডার্ক ব্লু, নিয়ন ব্লু, ফিরোজা বা গ্রে-ব্লু রঙের কাজল পোশাকের ধরন ও অনুষ্ঠানের সময় অনুযায়ী বেছে নেওয়া যায়। ধূসর কাজলেরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন শেড। সামান্য গ্লিটার বা শিমারযুক্ত ধূসর কাজল চোখে এনে দিতে পারে আকর্ষণীয় লুক। এটা পার্টি বা জমকালো অনুষ্ঠানের জন্য একেবারে মানানসই সাজ।
চোখের সাজে বাড়তি মাত্রা যোগ করতে কাজল ও আইলাইনার একসঙ্গে ব্যবহার করার চল আছে এখন। চোখের ওপরের পাতায় মোটা করে পছন্দের কোনো রঙিন আইলাইনার দিয়ে, নিচের ওয়াটারলাইনে মানানসই রঙের কাজল ব্যবহার করা যেতে পারে। চাইলে ওপরের ল্যাশ লাইনে কালো লাইনারের ঠিক ওপরেই পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে রঙিন কাজল দিয়ে সরু একটি ডাবল লাইন টেনে নেওয়া যায়। এতে চোখে আসবে আকর্ষণীয় লুক।
কাজল চোখের কথা উঠলেই যার নাম সবার আগে মনে আসে, তিনি ‘মহানায়িকা’ সুচিত্রা সেন। তাঁর অভিনয়, ব্যক্তিত্ব এবং সৌন্দর্যের বিশাল অংশ জুড়ে ছিল তাঁর বাঙ্ময় চোখ। ‘সাগরিকা’ বা ‘সপ্তপদী’র মতো ছবিতে তাঁর কাজল পরা চোখের চাহনি বাঙালি দর্শকের মনে চিরস্থায়ী ছাপ ফেলেছে। মিষ্টি হাসির চেয়েও দর্শক তাঁকে বেশি ভালোবেসেছিল চোখের ভাষাকে।
বলিউডেও কিন্তু কাজলের বাহারি ব্যবহার কম নয়। কাজল চোখের ঐশ্বরিয়া রায় থেকে স্মোকি আইয়ের দীপিকা পাডুকোন। তাঁদের কাজল চোখ মন কেড়েছে লাখো দর্শকের। অন্যদিকে, হলিউডের নির্বাক চলচ্চিত্র যুগে নিজের পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে কাজল ব্যবহার করতেন আকর্ষণীয় তারকা থেডা বারা। ‘দ্য ডেভিলস ডটার’, ‘দ্য ভিক্সেন’-এর মতো ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে তিনি ‘ভ্যাম্প’ চরিত্রকে জনপ্রিয় করে তোলেন। বলা হয়, চোখে কালো কাজলের মোহনীয় রেখাই তাঁকে বাকিদের থেকে আলাদা করে তুলেছিল।
কাজলের ইতিহাস কয়েক হাজার বছরের পুরোনো। খ্রিস্টপূর্ব ৩১০০ সালে প্রাচীন মিশর ও মেসোপটেমিয়ায় নারী-পুরুষ উভয়েই ‘কোহল’ ব্যবহার করতেন। তাঁদের বিশ্বাস ছিল, কাজল সূর্যের তেজ ও অশুভ শক্তি থেকেও চোখকে সুরক্ষা দেয়। ফারাওদের সমাধি থেকে পাওয়া কাজলের পাত্রও এর গুরুত্বের সাক্ষ্য বহন করে। মিশরীয়রা মূলত গ্যালেনা ও ম্যালাকাইটের মতো খনিজ গুঁড়ো করে কাজল তৈরি করত।
ইতিহাস ঘেঁটে জানা যায়, ভারতীয় উপমহাদেশে কাজলের ব্যবহার সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকেই বিস্তৃত ছিল। পরবর্তী সময়ে আরব বণিকদের মাধ্যমে ‘কুহল’ এই অঞ্চলে আসে। আর তা থেকেই ‘কাজল’ নামের প্রচলন ঘটে। উপমহাদেশের সংস্কৃতিতে কাজল শুধু সৌন্দর্যের উপাদান নয়, এর সঙ্গে আধ্যাত্মিক বিশ্বাসও জড়িত। শিশুদের কপালে বা চোখের কোণে কাজলের টিপ দিয়ে ‘নজর লাগা’ থেকে রক্ষার প্রথা আজও প্রচলিত।
হিন্দু ধর্মে দেবী কালী ও দুর্গার চোখ কাজল দিয়ে ঘন করে আঁকা হয়, যা তাদের ঐশ্বরিক শক্তি ও মায়াবী রূপের প্রতীক। পাশাপাশি শাস্ত্রীয় নৃত্যে চোখের ভাষা ও আবেগ প্রকাশে কাজলের তুলনা নেই।
অনেকে মনে করেন, কাজল চোখ পরিষ্কার রাখে এবং ওষুধ হিসেবে কাজ করে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্রেও এর উল্লেখ আছে। ঘি বা ক্যাস্টর অয়েলের প্রদীপ থেকে সংগ্রহ করা কালি দিয়ে তৈরি কাজলে কর্পূর, আমলকী বা ত্রিফলার মতো ভেষজ উপাদান মেশানো হতো। বিশ্বাস করা হতো, এই কাজল চোখকে শীতল রাখে, সংক্রমণ রোধ করে এবং দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে।
অবশ্য কাজল সম্পর্কে প্রচলিত এ ধারণার সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী একটি তথ্য প্রকাশিত হয়েছিল ‘ল্যানসেট’ মেডিক্যাল জার্নালে। এই জার্নালের তথ্যমতে, দীর্ঘদিন কাজল ব্যবহারে চোখে ‘লেড’ জনিত বিষক্রিয়া দেখা দিতে পারে। আবার শিশুদের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে শরীর বৃদ্ধিতে স্থবিরতা, মাংসপেশির অসাড়তার মতো সমস্যা।
চোখের কাজল একসময় ছিল শুধু ঘরোয়া প্রসাধন, মাটির ছোট্ট ডিব্বেতে রাখা গাঢ় গুঁড়ো। কিন্তু এখন? আধুনিক প্রসাধনী শিল্পে কাজলের বাজার এখন অনেক বড়। ভারতের কালার কসমেটিক মার্কের্টে কাজল একাই দখল করে রেখেছে প্রায় বাজারের ২৫ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডগুলোও এই বাজারে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। গার্লেইন, ডিওর, লরিয়েল, মেবেলিনের মতো ব্র্যান্ড শুধু ইউরোপ-আমেরিকা নয়, ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার বিশাল বাজারকে সামনে রেখে নতুন নতুন কালেকশন বাজারে নিয়ে আসছে। পেন্সিল, লিকুইড বা জেল—বিভিন্ন শেড ও ফিনিশে এটি এখন বিশ্বজুড়ে বিক্রি হচ্ছে।
‘ভোগ ইন্ডিয়া’র তথ্য বলছে, ২০১০ সালে ভারতে কাজলের বাজার ছিল ২৫০ কোটি টাকার। পাঁচ বছর পরেই সেই অঙ্ক বেড়ে দাঁড়ায় প্রায় ৯০০ কোটিতে। আর এখন? কাজজের ইন্ডাস্ট্রি কয়েক হাজার কোটি টাকার বিশাল সাম্রাজ্য। সৌন্দর্যচর্চা, সিনেমা ও ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির চাহিদা, আর সোশ্যাল মিডিয়ায় ট্রেন্ড—সব মিলিয়ে কাজল হয়ে উঠেছে সবচেয়ে দ্রুতবর্ধনশীল কসমেটিক পণ্যগুলোর একটি।
গুগলের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘এআই এখন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে গেছে। তাই এর নিরাপত্তা নিয়ে পরীক্ষা আরও জরুরি।’ এই বাগ শনাক্তকরণ কর্মসূচির আওতায় গুগলের এআইয়ের ত্রুটি ধরিয়ে দিলে মিলতে পারে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার ডলার।
২০ ঘণ্টা আগেডাবলিনের নীল আকাশে তখন শরতের রোদ মৃদু সোনালি আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। আয়ারল্যান্ডের বাতাসে হালকা শীতের ছোঁয়া। সেই বিকেলে রাজধানীর রেড কাউ হোটেলের হলরুম যেন রঙিন হয়ে উঠেছিল বাংলাদেশি প্রবাসীদের পদচারণায়।
২১ ঘণ্টা আগেআজ নন্দিত কবি ও রহস্য উপন্যাসের অন্যতম পুরোধা এডগার অ্যালেন পো’য়ের মৃত্যু দিবস। পো ছিলেন অন্ধকার, বিভ্রম আর ভয়ের সৌন্দর্যের নান্দনিক রূপকার। এডগার অ্যালান পোয়ের মৃত্যুও যেন তাঁর নিজেরই সাহিত্যের উপমা। কেমন ছিল তাঁর জীবনের শেষদিনগুলো?
১ দিন আগেশরতের সাদা মেঘের ফাঁক গলে উঠে এসেছে চাঁদ। আকাশে আজ ভরা পূর্ণিমা। এই পূর্ণিমাতেই আছে দুটি ধর্মীয় উৎসব। কোজাগরী পূর্ণিমা ও প্রবারণা পূর্ণিমা। দুটি আলাদা ধর্মীয় উৎসব। তবু চাঁদের আলোই মিলিয়ে দেয় মানুষকে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা রাত জেগে করবেন লক্ষ্মীদেবীর আরাধনা। হিন্দু পুরাণ মতে, এই পূর্ণিমা রাতেই লক্ষ্মীদ
২ দিন আগে