আজ জেমসের জন্মদিন
আজ ২ অক্টোবর, রকস্টার জেমসের জন্মদিন। বাংলা রকে জেমসের 'পাগলামি', ভক্তদের 'গুরু' হয়ে ওঠা, সাক্ষাৎকারের প্যাটার্ন, জেমসের লেখা লিরিক, সাউন্ডস্কেপ ও সিগনেচার মিউজিক স্টাইল থেকে শুরু করে জনতার জেমস নিয়ে জানা যাবে এ লেখায়।
গৌতম কে শুভ
'আসলেই কি জেমস পাগল?' সাক্ষাৎকারে জেমসকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। খুব সম্ভবত নব্বই দশকের শেষ দিকে। রকস্টার জেমস নির্বিকারভাবে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘হুউউ, আমরা সবাই পাগল। চারিদিকে; ডানে-বামে, সামনে-পেছনে আমরা সবাই পাগল।’
তখন জেমসকে অনেকে 'পাগল' বলতেন। এখনো কেউ কেউ বলেন। কিন্তু কারা বলেন? যাদের কাছে রক মিউজিককে স্রেফ লাফালাফি-চিৎকার-চেচামেচি মনে হয়। তাঁদের চোখে রকগানের লিরিক, নতুন নতুন এক্সপেরিমেন্ট, লাইভ পারফরম্যান্স, তরুণ ভক্তদের উন্মাদনা থেকে শুরু করে রকারদের লাইফস্টাইল-কথাবার্তা, সবই 'পাগলামি'।
দুনিয়ার বহু রকস্টারকে শুনতে হয়েছে, 'ক্রেজি', 'ম্যাডম্যান'। পাগল বলায়, কেউ মনে করায় আমি অবশ্য সমস্যা দেখি না। আমরা জানি, পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না। বিভিন্ন পথ ও মতে পাগলের আলাদা আলাদা ব্যাখা। যেমন লালন সাঁইয়ের গানে ‘তিন পাগলে হলো মেলা নদেয় এসে।’ এখানে পাগল মানে নদীয়ার চৈতন্য আর তাঁর দুই প্রধান পার্ষদ নিত্যানন্দ ও অদ্বৈতাচার্য। নদীয়ায় জাতপাতহীন এক অভিনব প্রেমধর্মের জোয়ার আনা প্রসঙ্গে এসেছে গানটি।
রক মিউজিশিয়ানদের ক্ষেত্রে আমার কাছে পাগলামির মানে, সৃজনশীলতা আর স্বাতন্ত্র্য শিল্পীসত্তা। সিলেবাসে এমন প্রশ্ন থাকা অথবা প্রশ্ন কমন না পাওয়া। নতুন পথে হাঁটার চেষ্টা করা। প্রচলিত সংগীতবোধের বাইরে গিয়ে দেখানো, কালচার একই সরলরেখা বরাবর চলতে পারে না। আর তাই রকারদের কাছে পাগল আসলে একধরনের 'স্বীকৃতি'। রকের বড় 'পাগল' জিমি হেনড্রিক্স বলেছিলেন, 'কোনোকিছুকে পাত্তা না দিয়ে তোমাকে এগিয়ে যেতে হবে, আর পাগল হয়ে উঠতে হবে। পাগলামি স্বর্গের মতো।'
এবার আবার জেমসের সেই সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে আসি। ভিডিওতে তাঁর উত্তর দেওয়ার স্টাইল দেখলে মনে হয়, যেন জেমসরূপী রেগে গানের ওস্তাদ বব মার্লে কথা বলছেন।
জেমস সাধারণত সাক্ষাৎকারে খুব বেশি কথাবার্তা বলেন না। আবার এটাও বলা যায়, তাঁকে দিয়ে বোধহয় বলানো যায় না কিংবা তাঁর স্মৃতি ও মনকে উস্কে দেওয়া যায় না। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে একবার এক সাংবাদিক তাঁক প্রশ্ন করেছিলেন 'ফিলিংসের জনপ্রিয়তা কি কমে গেছে?' জেমসের উত্তর ছিল ‘মনে হচ্ছে না। বেড়ে যাচ্ছে, আরও বেড়ে যাচ্ছে।’
বিস্তারিত ব্যাখ্যায় না গিয়ে স্পষ্ট আর জোরালোভাবে এভাবে উত্তর দেওয়া জেমসের বৈশিষ্ট্য। এই প্যাটার্নে তিনি প্রশ্নকে নিজের পক্ষে রি-ফ্রেম করে ফেলেন। যেমন 'জনপ্রিয়তা কমেছে কি না', এমন নেগেটিভ গোছের প্রশ্নেও তিনি পজেটিভ আবহ তৈরি করে ফেলেন। আমার মনে হয়, এটা জেমসের ব্র্যান্ড-স্টাইলও। মিডিয়ায় নিজের কথার নিয়ন্ত্রণ রাখার নিজস্ব কৌশল।
তবে ফারুক মাহফুজ আনাম থেকে 'জেমস' হয়ে ওঠা; তারও পরে ভক্তদের কাছে ‘গুরু’ হয়ে ওঠা মোটেও সহজ কিছু না। আজম খান আর জেমস--এই দুজনই জনতার কাছে গুরু হতে পেরেছেন। আজম খান বাংলা ব্যান্ডযাত্রার প্রথম দিকে দেশি রকের সাউন্ডস্কেপ তৈরি করেছিলেন। পোলাপানদের 'ঝাঁকি-দোলার' লাইনে আনার পথ তিনিই দেখিয়েছিলেন।
আর গ্রামে-গঞ্জে-মাঠে-ঘাটে-তল্লাটে ঝাঁকিকে (পড়ুন রক মিউজিককে) নিয়ে গেছেন জেমস। অন্য আরও অনেকেই আছেন এই দলে; কিন্তু জেমস যেভাবে, যে স্তরে পৌঁছাতে পেরেছেন; সেটা অনন্য।
সম্ভবত বাংলাদেশের এমন কোনো গ্রাম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে জেমস বাজে না। তবে জেমস যে একেবারে প্রথম দিন থেকেই নির্দিষ্ট ও নিজের 'সিগনেচার' ধারায় ছিলেন, সেটা বলা যাবে না। ব্যান্ডের আর নিজের; প্রথম দুটি অ্যালবামের পর তিনি যেন গা ঝাড়া দিয়ে দাঁড়ালেন। পাল্টে গেল আগের ক্লিন-শার্প নোট। পাল্টে গেল তাঁর গানে আশির দশকের বাংলা ব্যান্ড মিউজিকের কমন মেলোডিয়াস প্যাটার্নের উপস্থিতি। আর এল ডিস্টরশন, দরাজ উদাত্ত গলা; শহুরে বয়াতীর 'হেই হেই, আরেএএএ'।
একবার হলেও হাজার হাজার 'দুষ্টু ছেলের দলের' (জেমসের ভাষায়) সঙ্গে জেমসের লাইভ কনসার্ট দেখুন। বেশি ভালো হয়, যেখানে অন্তত ৮-১০টা গান করার সময় পান, তেমন শোতে দেহ দোলাতে হাজির হয়ে যান। সেখানে বাংলা রকের তেজি ঘোড়া জেমস নিয়ে ভক্তদের উন্মাদনা দেখে নিজেই বুঝতে পারবেন। সেটা যুক্তরাষ্ট্রের বাঙালিপাড়া হোক বা বাংলাদেশের গ্রামের কলেজ কনসার্ট, টের পাবেন, জেমস আসলে জনতার।
এই কথা কারও কারও মুখে শুনেছি! সত্যিই তাই?
১৯৮৭ সালে রিলিজ হয় জেমসের ব্যান্ড ফিলিংসের প্রথম অ্যালবাম 'স্টেশন রোড'। সেখানে পাঁচটি গানের গীতিকার কিন্তু জেমস। এরপরে আরও লিখছেন অল্পবিস্তর। তাঁর লেখা কবিতাও পড়েছি। আবার বেশকিছু গান দ্বৈতভাবে লিখেছেন বিষু শিকদার, আনন্দ, দেহলভির সঙ্গে মিলে। কিছু গানের কনসেপ্ট গীতিকারকে তিনিই দিয়েছেন।
জেমসের নিজের লেখা গানে সেই সময়কার আশির দশকের সমাজ-পরিবেশ এসেছে প্রত্যক্ষভাবে। নাড়া দেয় সেগুলো, চটুল নয় মোটেও। জেমসের লেখা এই গুটিকয়েক গানই তাঁর মিউজিক জার্নির আরেকটা চ্যাপ্টার। যেটাকে সহজেই আলাদা করা যায় চাইলেই। ঠিক যেমনভাবে আলাদা করা যায় ৮০ দশকের শেষ থেকে পুরো ৯০ মাতানো সাদা পাঞ্জাবির রকস্টার জেমসের (ফিলিংস, নগরবাউল এবং সলো) সঙ্গে এই শতাব্দীর কালো পাঞ্জাবি পরা 'দূর আকাশের তারা' জেমসকে।
আরেকটা অদ্ভুত বিষয় যা খেয়াল করার মতো,
'(আ) হৈ হৈ কাণ্ড রৈ রৈ ব্যাপার । (আ) নাচে-গানে মন মাতিয়ে সবার', '(আ) চোখের দেখা, (আ) মনের দেখা হয়’, '(আ) বেদের মেয়ে জোছনা'। কিংবা 'হেই হেই, আরেএএএ'।
এই 'আ' আসলে কী? দরাজ গলার এই জেমস যেন শহুরে বয়াতী, নগরবাউল জেমস। ‘আ’ কোনো শব্দ নয়, কোনো অর্থও নাই। কিন্তু জেমসের ক্ষেত্রে এই ‘আ’ একটা সিগনেচার, একটা অপরিহার্য শব্দ।
জেমসের গানে এমন বেশকিছু ধ্বনিচিহ্ন এসেছে। জেমসের গানে এসব ক্যারেক্টার হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে, মিউজিকের পার্ট হয়ে উঠছে। এর প্রভাবও আছে, শ্রোতাভেদে। আপনি জেমসের গান গলা খুলে গাইতে যান, দেখবেন মনের অজান্তেই এসব আপনার গলাতেও ভর করেছে।
বাংলা গানে এমন 'আ' আরও একজনের গানে পাবেন। তিনি কফিল আহমেদ। এই আ-ই কফিল আহমেদের অস্ত্র, আহ্বান, আক্রোশ; সব। এই আ তিনি ছুঁড়ে মেরেছেন বাংলার আকাশে উড়ে যাওয়া জেটজঙ্গির দিকেও। জেমসের ‘আ’ ঠিক তেমনই ভক্তদের সঙ্গে গেঁথে যায়, শ্রোতার গলাতেও ঢুকে পড়ে, গানকে জনতার হৃদয়ে, সাউন্ডে এবং সিগনেচারে পরিণত করে।
'আসলেই কি জেমস পাগল?' সাক্ষাৎকারে জেমসকে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল। খুব সম্ভবত নব্বই দশকের শেষ দিকে। রকস্টার জেমস নির্বিকারভাবে উত্তর দিয়েছিলেন, ‘হুউউ, আমরা সবাই পাগল। চারিদিকে; ডানে-বামে, সামনে-পেছনে আমরা সবাই পাগল।’
তখন জেমসকে অনেকে 'পাগল' বলতেন। এখনো কেউ কেউ বলেন। কিন্তু কারা বলেন? যাদের কাছে রক মিউজিককে স্রেফ লাফালাফি-চিৎকার-চেচামেচি মনে হয়। তাঁদের চোখে রকগানের লিরিক, নতুন নতুন এক্সপেরিমেন্ট, লাইভ পারফরম্যান্স, তরুণ ভক্তদের উন্মাদনা থেকে শুরু করে রকারদের লাইফস্টাইল-কথাবার্তা, সবই 'পাগলামি'।
দুনিয়ার বহু রকস্টারকে শুনতে হয়েছে, 'ক্রেজি', 'ম্যাডম্যান'। পাগল বলায়, কেউ মনে করায় আমি অবশ্য সমস্যা দেখি না। আমরা জানি, পাগল ছাড়া দুনিয়া চলে না। বিভিন্ন পথ ও মতে পাগলের আলাদা আলাদা ব্যাখা। যেমন লালন সাঁইয়ের গানে ‘তিন পাগলে হলো মেলা নদেয় এসে।’ এখানে পাগল মানে নদীয়ার চৈতন্য আর তাঁর দুই প্রধান পার্ষদ নিত্যানন্দ ও অদ্বৈতাচার্য। নদীয়ায় জাতপাতহীন এক অভিনব প্রেমধর্মের জোয়ার আনা প্রসঙ্গে এসেছে গানটি।
রক মিউজিশিয়ানদের ক্ষেত্রে আমার কাছে পাগলামির মানে, সৃজনশীলতা আর স্বাতন্ত্র্য শিল্পীসত্তা। সিলেবাসে এমন প্রশ্ন থাকা অথবা প্রশ্ন কমন না পাওয়া। নতুন পথে হাঁটার চেষ্টা করা। প্রচলিত সংগীতবোধের বাইরে গিয়ে দেখানো, কালচার একই সরলরেখা বরাবর চলতে পারে না। আর তাই রকারদের কাছে পাগল আসলে একধরনের 'স্বীকৃতি'। রকের বড় 'পাগল' জিমি হেনড্রিক্স বলেছিলেন, 'কোনোকিছুকে পাত্তা না দিয়ে তোমাকে এগিয়ে যেতে হবে, আর পাগল হয়ে উঠতে হবে। পাগলামি স্বর্গের মতো।'
এবার আবার জেমসের সেই সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গে আসি। ভিডিওতে তাঁর উত্তর দেওয়ার স্টাইল দেখলে মনে হয়, যেন জেমসরূপী রেগে গানের ওস্তাদ বব মার্লে কথা বলছেন।
জেমস সাধারণত সাক্ষাৎকারে খুব বেশি কথাবার্তা বলেন না। আবার এটাও বলা যায়, তাঁকে দিয়ে বোধহয় বলানো যায় না কিংবা তাঁর স্মৃতি ও মনকে উস্কে দেওয়া যায় না। নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝিতে একবার এক সাংবাদিক তাঁক প্রশ্ন করেছিলেন 'ফিলিংসের জনপ্রিয়তা কি কমে গেছে?' জেমসের উত্তর ছিল ‘মনে হচ্ছে না। বেড়ে যাচ্ছে, আরও বেড়ে যাচ্ছে।’
বিস্তারিত ব্যাখ্যায় না গিয়ে স্পষ্ট আর জোরালোভাবে এভাবে উত্তর দেওয়া জেমসের বৈশিষ্ট্য। এই প্যাটার্নে তিনি প্রশ্নকে নিজের পক্ষে রি-ফ্রেম করে ফেলেন। যেমন 'জনপ্রিয়তা কমেছে কি না', এমন নেগেটিভ গোছের প্রশ্নেও তিনি পজেটিভ আবহ তৈরি করে ফেলেন। আমার মনে হয়, এটা জেমসের ব্র্যান্ড-স্টাইলও। মিডিয়ায় নিজের কথার নিয়ন্ত্রণ রাখার নিজস্ব কৌশল।
তবে ফারুক মাহফুজ আনাম থেকে 'জেমস' হয়ে ওঠা; তারও পরে ভক্তদের কাছে ‘গুরু’ হয়ে ওঠা মোটেও সহজ কিছু না। আজম খান আর জেমস--এই দুজনই জনতার কাছে গুরু হতে পেরেছেন। আজম খান বাংলা ব্যান্ডযাত্রার প্রথম দিকে দেশি রকের সাউন্ডস্কেপ তৈরি করেছিলেন। পোলাপানদের 'ঝাঁকি-দোলার' লাইনে আনার পথ তিনিই দেখিয়েছিলেন।
আর গ্রামে-গঞ্জে-মাঠে-ঘাটে-তল্লাটে ঝাঁকিকে (পড়ুন রক মিউজিককে) নিয়ে গেছেন জেমস। অন্য আরও অনেকেই আছেন এই দলে; কিন্তু জেমস যেভাবে, যে স্তরে পৌঁছাতে পেরেছেন; সেটা অনন্য।
সম্ভবত বাংলাদেশের এমন কোনো গ্রাম খুঁজে পাওয়া যাবে না, যেখানে জেমস বাজে না। তবে জেমস যে একেবারে প্রথম দিন থেকেই নির্দিষ্ট ও নিজের 'সিগনেচার' ধারায় ছিলেন, সেটা বলা যাবে না। ব্যান্ডের আর নিজের; প্রথম দুটি অ্যালবামের পর তিনি যেন গা ঝাড়া দিয়ে দাঁড়ালেন। পাল্টে গেল আগের ক্লিন-শার্প নোট। পাল্টে গেল তাঁর গানে আশির দশকের বাংলা ব্যান্ড মিউজিকের কমন মেলোডিয়াস প্যাটার্নের উপস্থিতি। আর এল ডিস্টরশন, দরাজ উদাত্ত গলা; শহুরে বয়াতীর 'হেই হেই, আরেএএএ'।
একবার হলেও হাজার হাজার 'দুষ্টু ছেলের দলের' (জেমসের ভাষায়) সঙ্গে জেমসের লাইভ কনসার্ট দেখুন। বেশি ভালো হয়, যেখানে অন্তত ৮-১০টা গান করার সময় পান, তেমন শোতে দেহ দোলাতে হাজির হয়ে যান। সেখানে বাংলা রকের তেজি ঘোড়া জেমস নিয়ে ভক্তদের উন্মাদনা দেখে নিজেই বুঝতে পারবেন। সেটা যুক্তরাষ্ট্রের বাঙালিপাড়া হোক বা বাংলাদেশের গ্রামের কলেজ কনসার্ট, টের পাবেন, জেমস আসলে জনতার।
এই কথা কারও কারও মুখে শুনেছি! সত্যিই তাই?
১৯৮৭ সালে রিলিজ হয় জেমসের ব্যান্ড ফিলিংসের প্রথম অ্যালবাম 'স্টেশন রোড'। সেখানে পাঁচটি গানের গীতিকার কিন্তু জেমস। এরপরে আরও লিখছেন অল্পবিস্তর। তাঁর লেখা কবিতাও পড়েছি। আবার বেশকিছু গান দ্বৈতভাবে লিখেছেন বিষু শিকদার, আনন্দ, দেহলভির সঙ্গে মিলে। কিছু গানের কনসেপ্ট গীতিকারকে তিনিই দিয়েছেন।
জেমসের নিজের লেখা গানে সেই সময়কার আশির দশকের সমাজ-পরিবেশ এসেছে প্রত্যক্ষভাবে। নাড়া দেয় সেগুলো, চটুল নয় মোটেও। জেমসের লেখা এই গুটিকয়েক গানই তাঁর মিউজিক জার্নির আরেকটা চ্যাপ্টার। যেটাকে সহজেই আলাদা করা যায় চাইলেই। ঠিক যেমনভাবে আলাদা করা যায় ৮০ দশকের শেষ থেকে পুরো ৯০ মাতানো সাদা পাঞ্জাবির রকস্টার জেমসের (ফিলিংস, নগরবাউল এবং সলো) সঙ্গে এই শতাব্দীর কালো পাঞ্জাবি পরা 'দূর আকাশের তারা' জেমসকে।
আরেকটা অদ্ভুত বিষয় যা খেয়াল করার মতো,
'(আ) হৈ হৈ কাণ্ড রৈ রৈ ব্যাপার । (আ) নাচে-গানে মন মাতিয়ে সবার', '(আ) চোখের দেখা, (আ) মনের দেখা হয়’, '(আ) বেদের মেয়ে জোছনা'। কিংবা 'হেই হেই, আরেএএএ'।
এই 'আ' আসলে কী? দরাজ গলার এই জেমস যেন শহুরে বয়াতী, নগরবাউল জেমস। ‘আ’ কোনো শব্দ নয়, কোনো অর্থও নাই। কিন্তু জেমসের ক্ষেত্রে এই ‘আ’ একটা সিগনেচার, একটা অপরিহার্য শব্দ।
জেমসের গানে এমন বেশকিছু ধ্বনিচিহ্ন এসেছে। জেমসের গানে এসব ক্যারেক্টার হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে, মিউজিকের পার্ট হয়ে উঠছে। এর প্রভাবও আছে, শ্রোতাভেদে। আপনি জেমসের গান গলা খুলে গাইতে যান, দেখবেন মনের অজান্তেই এসব আপনার গলাতেও ভর করেছে।
বাংলা গানে এমন 'আ' আরও একজনের গানে পাবেন। তিনি কফিল আহমেদ। এই আ-ই কফিল আহমেদের অস্ত্র, আহ্বান, আক্রোশ; সব। এই আ তিনি ছুঁড়ে মেরেছেন বাংলার আকাশে উড়ে যাওয়া জেটজঙ্গির দিকেও। জেমসের ‘আ’ ঠিক তেমনই ভক্তদের সঙ্গে গেঁথে যায়, শ্রোতার গলাতেও ঢুকে পড়ে, গানকে জনতার হৃদয়ে, সাউন্ডে এবং সিগনেচারে পরিণত করে।
সমুদ্র শুধুই জলরাশি নয়। ছোট জলযান, নিরীহ মানুষ, সঙ্গে সামান্য সাহায্য—এই দৃশ্য যখন বিশাল শক্তির বিরুদ্ধে দাঁড়ায়, তখন প্রতিটি ঢেউই হয়ে ওঠে ইতিহাসের সাক্ষী। আজও সেই সমুদ্রের মঞ্চে মানুষ দাঁড়াচ্ছে। তারা ডাক্তার, শিক্ষক, ছাত্র, সাধারণ পেশাজীবী।
৫ ঘণ্টা আগেজেন গুডঅল নামটি কানে এলেই যে ছবিটি চোখে সামনে ভেসে ওঠে, তা একজন স্বর্ণকেশী তরুণীর। আলগোছে বসে সামনের দিকে একটি হাত আলতো বাড়িয়ে দিয়েছেন, তাঁর মুখমণ্ডল খুব একটা দৃশ্যমান নয়। তাঁর বাড়িয়ে দেওয়া হাত ছোঁয়ার জন্য একটি আবেগী হাত ইতস্তত বাড়িয়ে দিয়েছে অপরপ্রান্ত থেকে এক শিশু শিম্পাঞ্জি।
১১ ঘণ্টা আগেকফি আবিষ্কার নিয়ে যে গল্পটি এখন বলা হবে, সেটি একজন সুফি সাধকের। বলা হয়ে থাকে, গোতুল আকবর নুরুদ্দিন আবু আল হাসান আল শাদিলি নামের এক সুফি–দরবেশ এতটাই নিষ্কলঙ্ক ছিলেন যে, তাঁর প্রার্থনার কারণে কেউ কেউ আরোগ্য লাভ করতেন।
১ দিন আগেবাঙালি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার বিভিন্ন অঙ্গ ও অনুষঙ্গের মধ্যে কুমারী পূজা অন্যতম। এ পূজায় সাধারণত অরজঃস্বলা কুমারী কন্যাকে সাক্ষাৎ দেবীজ্ঞানে পূজা করা হয়। মৃন্ময়ী প্রতিমার পাশাপাশি চিন্ময়ী কুমারীর মধ্যে দেবীর দর্শন এই পূজার একটি উল্লেখযোগ্য দিক।
২ দিন আগে