মেক্সিকোর ক্যানকুন সাদাবালির দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতের জন্য বিশ্বব্যাপী বিখ্যাত। পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্যের অন্যতম মায়া সভ্যতার চিচেন ইত্জায় যাঁরা বেড়াতে যান, তাঁদের অনেকেই প্রথমে সেখান থেকে যাত্রা শুরু করেন। আর ক্যারিবিয়ান সাগরের বুকে মায়াবী দ্বীপ ইসলা মুহেরেস, যেখানে প্রকৃতি আর মায়া সভ্যতার ইতিহাস মিলেমিশে গেছে। এই লেখায় থাকছে ক্যানকুন আর মুহেরেস দ্বীপ ভ্রমণের গল্প।
জয় বসু
শৈশবে বাংলাদেশের একটা ছোট্ট জেলাশহরে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সাধারণ জ্ঞান বইয়ে পড়েছিলাম, পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্যের অন্যতম মায়া সভ্যতার বিখ্যাত পিরামিডের শহর চিচেন ইত্জা'র কথা! তারপর কেটে গেছে আড়াই দশক। অবশেষে গত জুনে মেক্সিকোর হাজার বছরের পুরোনো এই বিস্ময়কর স্থাপনা চোখের সামনে দেখার সুযোগ হলো আমার। মায়া, অ্যাজটেক, ওলমেক, টোলটেকের মতো ঐতিহাসিক সভ্যতার চারণভূমিতে হাঁটার অভিজ্ঞতা যেন আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল সেই শৈশবে।
২০২৫ সালের ১৪ জুন। খুব ভোরে কানাডার হ্যালিফ্যাক্স স্ট্যানফিল্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হলাম। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল ধরে প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ বরাবর উড়ে যাচ্ছে বিমান। গন্তব্য সুনীল-সবুজ ক্যারিবিয়ান সাগরের তীরে মেক্সিকোর সবচেয়ে বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র ক্যানকুন।
ক্যানকুন আসলে চিচেন ইত্জা ভ্রমণের গেটওয়ে। চিচেন ইত্জায় যারা বেড়াতে যান, তাঁদের অনেকেই প্রথমে এখান থেকে যাত্রা শুরু করেন। সাদাবালির দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতের জন্য ক্যানকুন খুবই বিখ্যাত। তাই মেক্সিকোর অন্যতম ব্যস্ত এই ক্যানকুন বিমানবন্দরে বিভিন্ন দেশের মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। এর মধ্যে প্রায় সবারই প্রধান উদ্দেশ্য ‘পর্যটন’।
বিমানবন্দর থেকে নেমে সোজা চলে গেলাম সৈকত লাগোয়া একটি হোটেলে। রুম থেকেই চোখে পড়ে ক্যারিবিয়ান সমুদ্রের অসাধারণ রঙ। নীল আর সবুজ মেশানো ফিরোজা বর্ণ। সমুদ্রের রঙ দেখে মনে পড়ে যায় কানাডার রকি পর্বতমালার ভেতরে থাকা হ্রদগুলোর কথা। অনেকদিন পর শুনতে পেলাম নিয়মিত ছন্দে সমুদ্রের ঢেউয়ের সৈকতে আছড়ে পড়ার অবিশ্রান্ত শব্দ।
এ দিনটা ক্যানকুনের সাজানো-গোছানো বর্ণিল সৈকতের বালুতট ধরে হাঁটতে হাঁটতে আর সূর্যাস্ত দেখেই কেটে গেল। সূর্যাস্তের পর রাতের ক্যানকুনে দেখা যায় আরেক রূপ। পর্যটকদের ভিড়ে এখানে বছরের কোনো সময়ই সৈকত জনশূন্য হওয়ার সুযোগ নেই। বিস্ময়কর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে হাজারো মানুষের মেলা উপভোগ করতে না পারলে, ক্যানকুনকে শতভাগ উপভোগ করার সুযোগ নেই।
পরদিন সকালে 'সী প্যাশান টু' নামে একটা পালতোলা ক্যাটাম্যারানে করে গেলাম ইসলা মুহেরেস্ দ্বীপে। ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেসে ভেসে এই জার্নিটা ছিল এক কথায় আমার জন্য অকল্পনীয় অভিজ্ঞতা! বৈচিত্র্যময় রঙের এই সমুদ্রের কিছু অংশ এতটাই স্বচ্ছ যে, পানির নিচের প্রবালপ্রাচীর ও সামুদ্রিক উদ্ভিদ দেখা যায়।
কানাডায় থাকার কারণে অনেক দিন নারকেল গাছ দেখার সুযোগ হয়নি। এখানে এসে দীর্ঘ দিন পর চোখে পড়ল চারদিক ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য নারিকেল গাছের সারি। শুধু তাই-ই নয়, অনেক কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখারও সুযোগ হল, যা কানাডায় দেখতে পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এখানকার আবহাওয়াও একেবারে বাংলাদেশের মতোই গরম।
যাহোক, মধ্যদুপুরে গিয়ে পৌঁছালাম মুহেরেস্ দ্বীপে। দ্বীপটা আয়তনে সাড়ে চার বর্গকিলোমিটারও হবে না। কিন্তু আকৃতিতে লম্বাটে হওয়ার দৈর্ঘ্য ৭ কিলোমিটার। আমাদের বহনকারী জলযান ভেসে গেল দ্বীপের উত্তর প্রান্তে।
এখানে দুপুরের খাবার খেলাম। স্থানীয় মশলা দিয়ে রান্না করা বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ । সেখানে ভাতের ব্যবস্থাও ছিল। দ্বীপের এই অংশে সমুদ্রের ঠিক কোল ঘেঁষে সারি ধরে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য সুউচ্চ নারকেল গাছ। বিভিন্ন জায়গায় আবার দেখা গেল নানা প্রাণীর অবয়বে তৈরি ভাস্কর্য।
মেক্সিকোর অন্যসব শহরের মতো এখানেও চোখে পড়ে থ্রিডিতে লেখা স্থাননাম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব স্থানে ছবি তোলার জন্য মানুষের লম্বা লাইন পড়ে যায়।
এরপর আমরা আবার ‘সী প্যাশান টু’জলযানে ফেরত এলাম। এখানকার বেশিরভাগ জলযানই সাদা রঙের, এবং দেখতে প্রায় একই রকমের। তাই আমরা যেন ক্যাটাম্যারানটা হারিয়ে না ফেলি, সেজন্য বারবার এটার নাম উচ্চারণ করিয়ে নামটা মুখস্ত করানো হয়েছিল।
আমাদের পরবর্তী গন্তব্য এই দ্বীপের মধ্যভাগে। যেটাকে এখানে স্প্যানিশে ‘সেন্ত্রো’নামে ডাকা হয়। আর ইংরেজিতে আমরা বলি ‘ডাউনটাউন’। দ্বীপের এই অংশটা সবচেয়ে জমজমাট। এটাই ছিল আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর সাদাবালির সৈকত।
গোটা মেক্সিকো জুড়েই দোকানে দোকানে মায়া ও অ্যাজটেক সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শনের অনুলিপি ও স্মৃতিস্মারক পাওয়া যায়। দোকানিরা এসবের পসরা সাজিয়ে এই ছোট্ট দ্বীপে বসে আছে। পাশে বড় একটা সুপারশপের মতো কেনাকাটার জায়গা দেখতে পেলাম। আশেপাশে ছোট ছোট অনেক দোকানও আছে। আরো দেখলাম স্থানীয় বাজার এলাকা ও সৈকতের পারে সারিবদ্ধভাবে খড়ের ছাউনি দেওয়া রেস্তোরাঁ। এতদিন এগুলো শুধু ছবি আর ভিডিওতেই দেখে এসেছি।
আস্তে আস্তে বেলা পড়ে এল। এবার ফেরার পালা ক্যানকুনে, অর্থাৎ মেক্সিকোর মূল ভূমিতে। যেকোসো পর্যটন এলাকা ছেড়ে আসার সময়ই আমার মনের ভেতর এক অদ্ভুত শূন্যতা কাজ করে। এই দ্বীপটা ছেড়ে আসার সময়ও মন খারাপ হচ্ছিল। যার অন্যতম কারণ, ছোট জীবনের খুব উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত এই এক টুকরো দ্বীপে আমি কাটিয়েছি। কখনো হয়তো এখানে আর আসা হবে না।
ফেরার সময় আস্তে আস্তে দূরে সরে যাওয়া দ্বীপটার দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম । হঠাৎ তাকিয়ে দেখি বিশাল পাল তুলে দিয়েছে আমাদের নৌকা। প্রচণ্ড রোদ। পালের ছায়ায় নৌকার সামনের দিকে ঝুলন্ত ডেকের উপর গিয়ে বসলাম।
বোটের ক্যাপ্টেন খুবই মজার মানুষ। পুরোটা সময়ই সবাইকে মাতিয়ে রেখেছিলেন। বেশির ভাগ যাত্রীই তখন স্প্যানিশ গানের তালে তালে নাচছিল। আমি তখন ডেকের ওপর দড়ির নেটে বসে প্রচণ্ড গতিতে পিছনে ধেয়ে চলা সুনীল সাগরের ঢেউয়ের দিয়ে তাকিয়ে আছি। এরপর বাকিটা সময় ডেকের ওপর শুয়ে সমুদ্রের বুক চিরে জলযান চলার শব্দ আর মিউজিকের পটভূমিতে নীল আকাশের বুকে ভাসমান সাদা মেঘ দেখতে দেখতে ফিরে এলাম ক্যানকুনের পোতাশ্রয়ে। যেখান থেকে শুরু করেছিলাম এই ভ্রমণ।
সেদিন মনে ভীষণ উত্তেজনা কাজ করছিল। কারণ, পরদিন সকালে যাত্রা শুরু হবে মায়া সভ্যতার বিশ্বখ্যাত পিরামিডের শহর চিচেন ইত্জার উদ্দেশ্যে, যার নাম আমি প্রথম শুনেছিলাম ছোটবেলার সেই সাধারণ জ্ঞান বইয়ে।
শৈশবে বাংলাদেশের একটা ছোট্ট জেলাশহরে কিন্ডারগার্টেন স্কুলের সাধারণ জ্ঞান বইয়ে পড়েছিলাম, পৃথিবীর সপ্তমাশ্চর্যের অন্যতম মায়া সভ্যতার বিখ্যাত পিরামিডের শহর চিচেন ইত্জা'র কথা! তারপর কেটে গেছে আড়াই দশক। অবশেষে গত জুনে মেক্সিকোর হাজার বছরের পুরোনো এই বিস্ময়কর স্থাপনা চোখের সামনে দেখার সুযোগ হলো আমার। মায়া, অ্যাজটেক, ওলমেক, টোলটেকের মতো ঐতিহাসিক সভ্যতার চারণভূমিতে হাঁটার অভিজ্ঞতা যেন আমাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেল সেই শৈশবে।
২০২৫ সালের ১৪ জুন। খুব ভোরে কানাডার হ্যালিফ্যাক্স স্ট্যানফিল্ড আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হলাম। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূল ধরে প্রায় ৫ হাজার কিলোমিটার দক্ষিণ বরাবর উড়ে যাচ্ছে বিমান। গন্তব্য সুনীল-সবুজ ক্যারিবিয়ান সাগরের তীরে মেক্সিকোর সবচেয়ে বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র ক্যানকুন।
ক্যানকুন আসলে চিচেন ইত্জা ভ্রমণের গেটওয়ে। চিচেন ইত্জায় যারা বেড়াতে যান, তাঁদের অনেকেই প্রথমে এখান থেকে যাত্রা শুরু করেন। সাদাবালির দীর্ঘ সমুদ্রসৈকতের জন্য ক্যানকুন খুবই বিখ্যাত। তাই মেক্সিকোর অন্যতম ব্যস্ত এই ক্যানকুন বিমানবন্দরে বিভিন্ন দেশের মানুষের ভিড় লেগেই থাকে। এর মধ্যে প্রায় সবারই প্রধান উদ্দেশ্য ‘পর্যটন’।
বিমানবন্দর থেকে নেমে সোজা চলে গেলাম সৈকত লাগোয়া একটি হোটেলে। রুম থেকেই চোখে পড়ে ক্যারিবিয়ান সমুদ্রের অসাধারণ রঙ। নীল আর সবুজ মেশানো ফিরোজা বর্ণ। সমুদ্রের রঙ দেখে মনে পড়ে যায় কানাডার রকি পর্বতমালার ভেতরে থাকা হ্রদগুলোর কথা। অনেকদিন পর শুনতে পেলাম নিয়মিত ছন্দে সমুদ্রের ঢেউয়ের সৈকতে আছড়ে পড়ার অবিশ্রান্ত শব্দ।
এ দিনটা ক্যানকুনের সাজানো-গোছানো বর্ণিল সৈকতের বালুতট ধরে হাঁটতে হাঁটতে আর সূর্যাস্ত দেখেই কেটে গেল। সূর্যাস্তের পর রাতের ক্যানকুনে দেখা যায় আরেক রূপ। পর্যটকদের ভিড়ে এখানে বছরের কোনো সময়ই সৈকত জনশূন্য হওয়ার সুযোগ নেই। বিস্ময়কর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে হাজারো মানুষের মেলা উপভোগ করতে না পারলে, ক্যানকুনকে শতভাগ উপভোগ করার সুযোগ নেই।
পরদিন সকালে 'সী প্যাশান টু' নামে একটা পালতোলা ক্যাটাম্যারানে করে গেলাম ইসলা মুহেরেস্ দ্বীপে। ক্যারিবিয়ান সাগরে ভেসে ভেসে এই জার্নিটা ছিল এক কথায় আমার জন্য অকল্পনীয় অভিজ্ঞতা! বৈচিত্র্যময় রঙের এই সমুদ্রের কিছু অংশ এতটাই স্বচ্ছ যে, পানির নিচের প্রবালপ্রাচীর ও সামুদ্রিক উদ্ভিদ দেখা যায়।
কানাডায় থাকার কারণে অনেক দিন নারকেল গাছ দেখার সুযোগ হয়নি। এখানে এসে দীর্ঘ দিন পর চোখে পড়ল চারদিক ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য নারিকেল গাছের সারি। শুধু তাই-ই নয়, অনেক কৃষ্ণচূড়া গাছ দেখারও সুযোগ হল, যা কানাডায় দেখতে পাওয়ার প্রশ্নই আসে না। এখানকার আবহাওয়াও একেবারে বাংলাদেশের মতোই গরম।
যাহোক, মধ্যদুপুরে গিয়ে পৌঁছালাম মুহেরেস্ দ্বীপে। দ্বীপটা আয়তনে সাড়ে চার বর্গকিলোমিটারও হবে না। কিন্তু আকৃতিতে লম্বাটে হওয়ার দৈর্ঘ্য ৭ কিলোমিটার। আমাদের বহনকারী জলযান ভেসে গেল দ্বীপের উত্তর প্রান্তে।
এখানে দুপুরের খাবার খেলাম। স্থানীয় মশলা দিয়ে রান্না করা বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ । সেখানে ভাতের ব্যবস্থাও ছিল। দ্বীপের এই অংশে সমুদ্রের ঠিক কোল ঘেঁষে সারি ধরে দাঁড়িয়ে আছে অসংখ্য সুউচ্চ নারকেল গাছ। বিভিন্ন জায়গায় আবার দেখা গেল নানা প্রাণীর অবয়বে তৈরি ভাস্কর্য।
মেক্সিকোর অন্যসব শহরের মতো এখানেও চোখে পড়ে থ্রিডিতে লেখা স্থাননাম। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব স্থানে ছবি তোলার জন্য মানুষের লম্বা লাইন পড়ে যায়।
এরপর আমরা আবার ‘সী প্যাশান টু’জলযানে ফেরত এলাম। এখানকার বেশিরভাগ জলযানই সাদা রঙের, এবং দেখতে প্রায় একই রকমের। তাই আমরা যেন ক্যাটাম্যারানটা হারিয়ে না ফেলি, সেজন্য বারবার এটার নাম উচ্চারণ করিয়ে নামটা মুখস্ত করানো হয়েছিল।
আমাদের পরবর্তী গন্তব্য এই দ্বীপের মধ্যভাগে। যেটাকে এখানে স্প্যানিশে ‘সেন্ত্রো’নামে ডাকা হয়। আর ইংরেজিতে আমরা বলি ‘ডাউনটাউন’। দ্বীপের এই অংশটা সবচেয়ে জমজমাট। এটাই ছিল আমার দেখা সবচেয়ে সুন্দর সাদাবালির সৈকত।
গোটা মেক্সিকো জুড়েই দোকানে দোকানে মায়া ও অ্যাজটেক সভ্যতার বিভিন্ন নিদর্শনের অনুলিপি ও স্মৃতিস্মারক পাওয়া যায়। দোকানিরা এসবের পসরা সাজিয়ে এই ছোট্ট দ্বীপে বসে আছে। পাশে বড় একটা সুপারশপের মতো কেনাকাটার জায়গা দেখতে পেলাম। আশেপাশে ছোট ছোট অনেক দোকানও আছে। আরো দেখলাম স্থানীয় বাজার এলাকা ও সৈকতের পারে সারিবদ্ধভাবে খড়ের ছাউনি দেওয়া রেস্তোরাঁ। এতদিন এগুলো শুধু ছবি আর ভিডিওতেই দেখে এসেছি।
আস্তে আস্তে বেলা পড়ে এল। এবার ফেরার পালা ক্যানকুনে, অর্থাৎ মেক্সিকোর মূল ভূমিতে। যেকোসো পর্যটন এলাকা ছেড়ে আসার সময়ই আমার মনের ভেতর এক অদ্ভুত শূন্যতা কাজ করে। এই দ্বীপটা ছেড়ে আসার সময়ও মন খারাপ হচ্ছিল। যার অন্যতম কারণ, ছোট জীবনের খুব উল্লেখযোগ্য ও স্মরণীয় কিছু মুহূর্ত এই এক টুকরো দ্বীপে আমি কাটিয়েছি। কখনো হয়তো এখানে আর আসা হবে না।
ফেরার সময় আস্তে আস্তে দূরে সরে যাওয়া দ্বীপটার দিকে দীর্ঘক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম । হঠাৎ তাকিয়ে দেখি বিশাল পাল তুলে দিয়েছে আমাদের নৌকা। প্রচণ্ড রোদ। পালের ছায়ায় নৌকার সামনের দিকে ঝুলন্ত ডেকের উপর গিয়ে বসলাম।
বোটের ক্যাপ্টেন খুবই মজার মানুষ। পুরোটা সময়ই সবাইকে মাতিয়ে রেখেছিলেন। বেশির ভাগ যাত্রীই তখন স্প্যানিশ গানের তালে তালে নাচছিল। আমি তখন ডেকের ওপর দড়ির নেটে বসে প্রচণ্ড গতিতে পিছনে ধেয়ে চলা সুনীল সাগরের ঢেউয়ের দিয়ে তাকিয়ে আছি। এরপর বাকিটা সময় ডেকের ওপর শুয়ে সমুদ্রের বুক চিরে জলযান চলার শব্দ আর মিউজিকের পটভূমিতে নীল আকাশের বুকে ভাসমান সাদা মেঘ দেখতে দেখতে ফিরে এলাম ক্যানকুনের পোতাশ্রয়ে। যেখান থেকে শুরু করেছিলাম এই ভ্রমণ।
সেদিন মনে ভীষণ উত্তেজনা কাজ করছিল। কারণ, পরদিন সকালে যাত্রা শুরু হবে মায়া সভ্যতার বিশ্বখ্যাত পিরামিডের শহর চিচেন ইত্জার উদ্দেশ্যে, যার নাম আমি প্রথম শুনেছিলাম ছোটবেলার সেই সাধারণ জ্ঞান বইয়ে।
ঢাকায় একসময় আফিম থেকে তৈরি নেশাদ্রব্যের ব্যাপক প্রচলন ছিল। ফেসবুকে পুরান ঢাকার একটি আফিমের দোকানের ছবি মাঝেমধ্যে চোখে পড়ে। দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা, 'আফিমের দোকান'। চার শ বছরের ঐহিত্যবাহী শহর ঢাকায় প্রথম কাদের হাত ধরে এসেছিল আফিম নামের নেশাদ্রব্য? কোন স্বার্থে কারা এর বিস্তার ঘটালেন?
১৫ ঘণ্টা আগেরাশিয়ার পূর্ব উপকূলে ৮ দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্প ও তার পরপরই সুনামির ঢেউ আবার নতুন করে মনে করিয়ে দেয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগের সামনে মানুষ কতটা অসহায়। এই ঘটনায় রাশিয়া, জাপান, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রেও জারি হয়েছে সুনামি সতর্কতা। এমন খবরের পর প্রশ্ন উঠতেই পারে, বাংলাদেশ কি সুনামির ঝুঁকিতে আছে?
২ দিন আগেহাসান আবিদুর রেজা জুয়েলের গান নিয়ে বলার মতো যোগ্যতা আমার নেই। তবে গেল তিরিশ বছরে বাংলাদেশের অডিও ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি একজন অনন্য একজন শিল্পী।
৩ দিন আগেসম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে জুলাই আন্দোলনে শহীদ সাংবাদিক তাহির জামান প্রিয়র স্মরণে নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র ‘প্রিয় আননোন থার্টি ওয়াই’। গত শনিবার (২৬ জুলাই) সন্ধ্যায় জাতীয় জাদুঘর মিলনায়তনে হয়ে গেল সিনেমাটির প্রিমিয়ার শো। কী দেখিয়েছে সিনেমাটি?
৫ দিন আগে