.png)

রাতুল আল আহমেদ

ইতিহাসের দীর্ঘতম শাটডাউন চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যেই গত শনিবার দেশটির ১৪ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে শাটডাউনের জেরে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন বলতে বোঝায় দেশটির ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম ও সেবার আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে থেমে যাওয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবছরের শেষ দিন ৩০ সেপ্টেম্বর। দেশটির পার্লামেন্ট বা কংগ্রেসে বার্ষিক বরাদ্দ বিল অনুমোদন করতে কংগ্রেস সদস্যগণ এর মধ্যে একমত হতে ব্যর্থ হলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশের মতো সংসদীয় দেশে বাজেট পাস করতে ব্যর্থ হলে সাধারণত সরকারের পতন ঘটে। মার্কিন ব্যবস্থায় এমনটা ঘটে না। মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যবস্থায় আইনসভা ও নির্বাহী ক্ষমতা আলাদা। কাঠামোগত এই বিভাজনের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় থাকলেও কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া অর্থ ব্যয় করার আইনি ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের থাকে না।
আধুনিক মার্কিন শাটডাউনের আইনি ভিত্তি হল ১৮৭০ সালের অ্যান্টিডেফিসিয়েন্সি অ্যাক্ট। এই ফেডারেল আইন নিশ্চিত করে যে কংগ্রেসের স্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া কোনো সরকারি অর্থ খরচ করা যাবে না।
তবে বিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সময় জুড়ে বাজেট ঘাটতি দেখা দিলেও সরকারের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হত না। বিভিন্ন এজেন্সি সাধারণত ধরে নিত যে কংগ্রেস দ্রুতই অর্থায়ন অনুমোদন করবে। তবে এই পরিস্থিতি পাল্টে যায় ১৯৮০ সালে যখন তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল বেনজামিন সিভিলেটি এ আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে দুটি ঐতিহাসিক মতামত দেন। তাঁর মতে, কংগ্রেসের অর্থায়ন অনুমোদন না থাকলে ফেডারেল সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে সকল ‘অপ্রয়োজনীয়’ কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে। কেবল মানবজীবন রক্ষা বা সম্পদ সুরক্ষার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কাজগুলো চালিয়ে যাওয়া যাবে।
এই ব্যাখ্যার ফলে আগে যা ছিল কেবল একটি প্রশাসনিক অসুবিধা তা বাস্তবে রূপ নেয়। ১৯৮০র দশকের শুরু থেকে যে কোনো বড় অর্থায়ন ঘাটতির পর শাটডাউন হওয়া স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে লক্ষ লক্ষ ফেডারেল কর্মীকে অস্থায়ীভাবে বেতনবিহীন ছুটিতে পাঠানো হয়। সিভিলেটির নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিটি ফেডারেল সংস্থাকে অফিস অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের আগাম সমন্বয়ে ‘অপরিহার্য’ ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ কার্যক্রমের তালিকা নির্ধারণ করে বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করে রাখতে হয়।
সরকারি অর্থায়ন বন্ধ হলে প্রতিটি সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতিমূলক যে পরিকল্পনা য়াছে তা কার্যকর করে। ‘অপ্রয়োজনীয়’ কার্যক্রম, যেগুলো সরাসরি জননিরাপত্তা বা সম্পদ সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত নয় সেসব স্থগিত থাকে। এর মধ্যে পড়ে পাসপোর্ট ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণ, প্রশাসনিক শুনানি, এবং ফেডারেল গবেষণা অনুদানে পরিচালিত প্রকল্পসমূহ। এসব খাতে কর্মরতদের সাময়িকভাবে বেতন ছাড়া ছুটিতে পাঠানো হয়, এবং আইনত তারা এ সময়ে কাজ করতেও পারে না, এমনকি চাইলেও না।
অন্যদিকে ‘অপরিহার্য’ কর্মীরা বা যাদের কাজ মানবজীবন বা সম্পদের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, কংগ্রেস অর্থবরাদ্দ না দেওয়া পর্যন্ত বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য থাকেন। এদের মধ্যে সাধারণত অন্তর্ভুক্ত থাকে যেমন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা, বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণে থাকা কর্মীরা বা জরুরি চিকিৎসা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীরা।
আবার কিছু সংস্থা ও কর্মসূচি সরকার বন্ধের প্রভাব থেকে তুলনামূলকভাবে মুক্ত। যে মনমার্কিন ডাক বিভাগ মূলত ডাকমাশুলের আয়ে চলে, তাই এর কার্যক্রম চলতে থাকে। একইভাবে সোশ্যাল সিকিউরিটি, মেডিকেয়ারের মতো বাধ্যতামূলক ব্যয় কর্মসূচি আলাদা তহবিল থেকে পরিচালিত হওয়ায় তাদের মূল সেবা সচল থাকে। যদিও এসব কর্মসূচির প্রশাসনিক কাজ যেমন নতুন আবেদন গ্রহণের ক্ষেত্রে দেরি হতে পারে।
সত্যি বলতে শাটডাউনের প্রভাব ব্যাপক এবং বহুমাত্রিক। অপরিহার্য সেবাগুলো চললেও তা প্রায়ই সীমিত কর্মী নিয়ে চাপের মধ্যে পরিচালিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, শনিবার দেশটির ১৪ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। মূলত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার বা বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারীরা বেতন ছাড়াই অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে ক্লান্তির কথা জানানোয় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। যেমন জাতীয় উদ্যান বা জাদুঘর বন্ধ থাকায় পর্যটন রাজস্ব কমে যায় এবং স্থানীয় ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাসপোর্ট ও অভিবাসন সেবা স্থবির হয়ে পড়ে। সরকারি অনুদানে পরিচালিত গবেষণা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ব্যাহত হয় এবং সম্পদ অপচয় ঘটে।
অর্থনৈতিক ক্ষতিও কম নয়। কংগ্রেসের বাজেট অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ১৬-দিনের সরকার বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ চার মাসের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যায় ০.৬% এবং মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার। সাধারণত প্রতি সপ্তাহের শাটডাউনে বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ০.১ থেকে ০.১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।
মানবিক দিক থেকেও পরিস্থিতি গুরুতর। শত হাজার সরকারি কর্মচারী বেতন না পাওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েন। তারা ভাড়া, গাড়ির কিস্তি, বা মর্টগেজ পরিশোধে ব্যর্থ হন। কংগ্রেস সাধারণত পরবর্তীতে বকেয়া বেতন মঞ্জুর করে, কিন্তু সেই মুহূর্তের ভোগান্তি বেশ ভোগায়। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসা ও কন্ট্রাক্টর যারা ফেডারেল প্রকল্পের উপর নির্ভরশীল, তারা প্রায়ই কোনো ক্ষতিপূরণ পান না। ফলে স্থায়ী লোকসান হয় তাদের।
দীর্ঘস্থায়ী শাটডাউন জনগণের সরকারের প্রতি আস্থা কমিয়ে আনে। এছাড়াও আর্থিক বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করে।
১৯৮০ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সরকার বন্ধের ঘটনা ঘটে। এগুলোর অধিকাংশই দলীয় রাজনীতির বাজেট-বিরোধ বা নীতিগত মতবিরোধ থেকে উদ্ভূত।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো —
১৯৯৫–১৯৯৬ (২১ দিন): প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময়ে রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের সঙ্গে বাজেট কাটছাঁট ও মেডিকেয়ার তহবিল নিয়ে বিরোধের ফলে।
২০১৩ (১৬ দিন): প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে, বিল পাস করা নিয়ে বিরোধে বড় ধরনের প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরি হয়।
২০১৮–২০১৯ (৩৫ দিন): প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রা্মপের প্রথম প্রেসিডেন্সি আমলে, মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণের অর্থায়ন নিয়ে বিরোধের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিতীয় দীর্ঘতম শাটডাউন ঘটে।
আজকের তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাটডাউনে্র ভেতর দিয়ে যাচ্ছে । এটি শুরু হয় ১ অক্টোবর ২০২৫এ। কংগ্রেসে অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্টের ভর্তুকি ও মেডিকেইডের তহবিল কাটছাঁট করা নিয়ে এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়।

ইতিহাসের দীর্ঘতম শাটডাউন চলছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। এর মধ্যেই গত শনিবার দেশটির ১৪ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে শাটডাউনের জেরে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে শাটডাউন বলতে বোঝায় দেশটির ফেডারেল সরকারের কার্যক্রম ও সেবার আংশিক বা সম্পূর্ণরূপে থেমে যাওয়া। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থবছরের শেষ দিন ৩০ সেপ্টেম্বর। দেশটির পার্লামেন্ট বা কংগ্রেসে বার্ষিক বরাদ্দ বিল অনুমোদন করতে কংগ্রেস সদস্যগণ এর মধ্যে একমত হতে ব্যর্থ হলে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়।
বাংলাদেশের মতো সংসদীয় দেশে বাজেট পাস করতে ব্যর্থ হলে সাধারণত সরকারের পতন ঘটে। মার্কিন ব্যবস্থায় এমনটা ঘটে না। মার্কিন প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যবস্থায় আইনসভা ও নির্বাহী ক্ষমতা আলাদা। কাঠামোগত এই বিভাজনের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ক্ষমতায় থাকলেও কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া অর্থ ব্যয় করার আইনি ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের থাকে না।
আধুনিক মার্কিন শাটডাউনের আইনি ভিত্তি হল ১৮৭০ সালের অ্যান্টিডেফিসিয়েন্সি অ্যাক্ট। এই ফেডারেল আইন নিশ্চিত করে যে কংগ্রেসের স্পষ্ট অনুমোদন ছাড়া কোনো সরকারি অর্থ খরচ করা যাবে না।
তবে বিংশ শতাব্দীর বেশিরভাগ সময় জুড়ে বাজেট ঘাটতি দেখা দিলেও সরকারের কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হত না। বিভিন্ন এজেন্সি সাধারণত ধরে নিত যে কংগ্রেস দ্রুতই অর্থায়ন অনুমোদন করবে। তবে এই পরিস্থিতি পাল্টে যায় ১৯৮০ সালে যখন তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল বেনজামিন সিভিলেটি এ আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে দুটি ঐতিহাসিক মতামত দেন। তাঁর মতে, কংগ্রেসের অর্থায়ন অনুমোদন না থাকলে ফেডারেল সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে সকল ‘অপ্রয়োজনীয়’ কার্যক্রম স্থগিত করতে হবে। কেবল মানবজীবন রক্ষা বা সম্পদ সুরক্ষার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত কাজগুলো চালিয়ে যাওয়া যাবে।
এই ব্যাখ্যার ফলে আগে যা ছিল কেবল একটি প্রশাসনিক অসুবিধা তা বাস্তবে রূপ নেয়। ১৯৮০র দশকের শুরু থেকে যে কোনো বড় অর্থায়ন ঘাটতির পর শাটডাউন হওয়া স্বাভাবিক হয়ে দাঁড়ায়। এর ফলে লক্ষ লক্ষ ফেডারেল কর্মীকে অস্থায়ীভাবে বেতনবিহীন ছুটিতে পাঠানো হয়। সিভিলেটির নির্দেশ অনুযায়ী, প্রতিটি ফেডারেল সংস্থাকে অফিস অফ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের আগাম সমন্বয়ে ‘অপরিহার্য’ ও ‘অপ্রয়োজনীয়’ কার্যক্রমের তালিকা নির্ধারণ করে বিকল্প পরিকল্পনা তৈরি করে রাখতে হয়।
সরকারি অর্থায়ন বন্ধ হলে প্রতিটি সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে তাদের জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলার প্রস্তুতিমূলক যে পরিকল্পনা য়াছে তা কার্যকর করে। ‘অপ্রয়োজনীয়’ কার্যক্রম, যেগুলো সরাসরি জননিরাপত্তা বা সম্পদ সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত নয় সেসব স্থগিত থাকে। এর মধ্যে পড়ে পাসপোর্ট ও ভিসা প্রক্রিয়াকরণ, প্রশাসনিক শুনানি, এবং ফেডারেল গবেষণা অনুদানে পরিচালিত প্রকল্পসমূহ। এসব খাতে কর্মরতদের সাময়িকভাবে বেতন ছাড়া ছুটিতে পাঠানো হয়, এবং আইনত তারা এ সময়ে কাজ করতেও পারে না, এমনকি চাইলেও না।
অন্যদিকে ‘অপরিহার্য’ কর্মীরা বা যাদের কাজ মানবজীবন বা সম্পদের নিরাপত্তার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত, কংগ্রেস অর্থবরাদ্দ না দেওয়া পর্যন্ত বেতন ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে বাধ্য থাকেন। এদের মধ্যে সাধারণত অন্তর্ভুক্ত থাকে যেমন আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তা, সামরিক বাহিনীর সদস্যরা, বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণে থাকা কর্মীরা বা জরুরি চিকিৎসা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মীরা।
আবার কিছু সংস্থা ও কর্মসূচি সরকার বন্ধের প্রভাব থেকে তুলনামূলকভাবে মুক্ত। যে মনমার্কিন ডাক বিভাগ মূলত ডাকমাশুলের আয়ে চলে, তাই এর কার্যক্রম চলতে থাকে। একইভাবে সোশ্যাল সিকিউরিটি, মেডিকেয়ারের মতো বাধ্যতামূলক ব্যয় কর্মসূচি আলাদা তহবিল থেকে পরিচালিত হওয়ায় তাদের মূল সেবা সচল থাকে। যদিও এসব কর্মসূচির প্রশাসনিক কাজ যেমন নতুন আবেদন গ্রহণের ক্ষেত্রে দেরি হতে পারে।
সত্যি বলতে শাটডাউনের প্রভাব ব্যাপক এবং বহুমাত্রিক। অপরিহার্য সেবাগুলো চললেও তা প্রায়ই সীমিত কর্মী নিয়ে চাপের মধ্যে পরিচালিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, শনিবার দেশটির ১৪ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল হয়েছে। মূলত এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার বা বিমান চলাচল নিয়ন্ত্রণকারীরা বেতন ছাড়াই অতিরিক্ত পরিশ্রমের কারণে ক্লান্তির কথা জানানোয় এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রম তাৎক্ষণিকভাবে বন্ধ হয়ে যায়। যেমন জাতীয় উদ্যান বা জাদুঘর বন্ধ থাকায় পর্যটন রাজস্ব কমে যায় এবং স্থানীয় ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাসপোর্ট ও অভিবাসন সেবা স্থবির হয়ে পড়ে। সরকারি অনুদানে পরিচালিত গবেষণা কার্যক্রম বন্ধ থাকায় বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি ব্যাহত হয় এবং সম্পদ অপচয় ঘটে।
অর্থনৈতিক ক্ষতিও কম নয়। কংগ্রেসের বাজেট অফিসের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৩ সালের ১৬-দিনের সরকার বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের শেষ চার মাসের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমে যায় ০.৬% এবং মোট ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ২৪ বিলিয়ন ডলার। সাধারণত প্রতি সপ্তাহের শাটডাউনে বার্ষিক জিডিপি প্রবৃদ্ধি ০.১ থেকে ০.১৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে দেয়।
মানবিক দিক থেকেও পরিস্থিতি গুরুতর। শত হাজার সরকারি কর্মচারী বেতন না পাওয়ায় আর্থিক সংকটে পড়েন। তারা ভাড়া, গাড়ির কিস্তি, বা মর্টগেজ পরিশোধে ব্যর্থ হন। কংগ্রেস সাধারণত পরবর্তীতে বকেয়া বেতন মঞ্জুর করে, কিন্তু সেই মুহূর্তের ভোগান্তি বেশ ভোগায়। অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসা ও কন্ট্রাক্টর যারা ফেডারেল প্রকল্পের উপর নির্ভরশীল, তারা প্রায়ই কোনো ক্ষতিপূরণ পান না। ফলে স্থায়ী লোকসান হয় তাদের।
দীর্ঘস্থায়ী শাটডাউন জনগণের সরকারের প্রতি আস্থা কমিয়ে আনে। এছাড়াও আর্থিক বাজারে অনিশ্চয়তা তৈরি করে।
১৯৮০ সালের পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সরকার বন্ধের ঘটনা ঘটে। এগুলোর অধিকাংশই দলীয় রাজনীতির বাজেট-বিরোধ বা নীতিগত মতবিরোধ থেকে উদ্ভূত।
কিছু গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ হলো —
১৯৯৫–১৯৯৬ (২১ দিন): প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সময়ে রিপাবলিকান-নিয়ন্ত্রিত কংগ্রেসের সঙ্গে বাজেট কাটছাঁট ও মেডিকেয়ার তহবিল নিয়ে বিরোধের ফলে।
২০১৩ (১৬ দিন): প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে, বিল পাস করা নিয়ে বিরোধে বড় ধরনের প্রশাসনিক অচলাবস্থা তৈরি হয়।
২০১৮–২০১৯ (৩৫ দিন): প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রা্মপের প্রথম প্রেসিডেন্সি আমলে, মার্কিন-মেক্সিকো সীমান্ত প্রাচীর নির্মাণের অর্থায়ন নিয়ে বিরোধের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে দ্বিতীয় দীর্ঘতম শাটডাউন ঘটে।
আজকের তারিখ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র সবচেয়ে দীর্ঘস্থায়ী শাটডাউনে্র ভেতর দিয়ে যাচ্ছে । এটি শুরু হয় ১ অক্টোবর ২০২৫এ। কংগ্রেসে অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্টের ভর্তুকি ও মেডিকেইডের তহবিল কাটছাঁট করা নিয়ে এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হয়।
.png)

আফ্রিকার আকাশে তুরস্কের তৈরি বায়রাক্তার টিবি২ ড্রোনের উপস্থিতি নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। পূর্ব আফ্রিকার যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সোমালিয়ার রাজধানী মোগাদিসুতে বৃহত্তম বিদেশী সামরিক ঘাঁটি গেড়ে বসেছে আঙ্কারা।
৭ ঘণ্টা আগে
অর্থনৈতিক লাভ ও নিজেদের স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এমন কোনো কাজ নেই যা যুক্তরাষ্ট্র করে না। অতীতে সাম্রাজ্যবাদী মনোভাব থেকে নতুন ভূমি জয় অথবা পরোক্ষ আধিপত্য বিস্তারই ছিল তাদের মূল লক্ষ্য।
২ দিন আগে
নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির ঐতিহাসিক বিজয়কে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞরা দেখছেন গণতন্ত্রের পুনরুদ্ধারের প্রতীক হিসেবে। মামদানির বিজয় কেবল নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের জন্যই নয়, যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক রাজনীতির জন্যও তাৎপর্যপূর্ণ।
২ দিন আগে
নিউইয়র্কের মেয়র পদে জিতেছেন জোহরান মামদানি। এর পর থেকে সোশ্যাল মিডিয়া থেকে চায়ের টং, সবখানেই তাঁকে নিয়ে কথা হচ্ছে। আধুনিক সময়ে নিউইয়র্কের সবচেয়ে কম বয়সী মেয়র হওয়ার পাশাপাশি মামদানি প্রথম মুসলমান ও দক্ষিণ এশীয় মেয়রও বটে।
৩ দিন আগে