leadT1ad

বাংলাদেশের বিনোদন জগতে ভূরাজনীতির প্রভাব: ‘ছোটভাইয়ের’ ভোল বদল

ভারতের হিন্দি-বাংলা, তুর্কি ও কোরিয়ান সিরিজের পাশাপাশি এখন বাংলাদেশের তরুণ দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় পাকিস্তানি টিভি সিরিজ। পাকিস্তানি ড্রামা নিয়ে আলোচনা হয়, ফেসবুকে বাংলাদেশি তরুণদের এমন একাধিক গ্রুপ রয়েছে। এসব গ্রুপে মূলত দর্শকরা নিয়মিত উর্দু সিরিজ নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া ইউটিউব এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সুবাদে দর্শক তৈরি হয়েছে। সেই ঢেউয়েও বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়েছেন হানিয়া আমিরসহ পাকিস্তানি শিল্পীরা।

মাহবুবুল আলম তারেক
বাংলাদেশের বিনোদন জগতে ভূরাজনীতির প্রভাব। স্ট্রিম গ্রাফিক

পাকিস্তানের জনপ্রিয় অভিনেত্রী হানিয়া আমির প্রথমবারের মতো ঢাকায় এসেছেন। সফরকালে তিনি রাজধানীর ব্যস্ত রাস্তা ঘুরে দেখছেন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করছেন নানা মুহূর্ত। একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি দেখাও করেছেন।

বাংলাদেশের সিনেমা, সংগীত ও টেলিভিশন সবসময় কূটনৈতিক সম্পর্ক ও ভূরাজনীতির প্রতিফলন ঘটিয়েছে। এগুলো জনমত গঠনের পাশাপাশি সফট পাওয়ারের হাতিয়ার হিসেবেও ব্যবহৃত হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে ‘সম্পর্কের উন্নতি হওয়ায়’ এবার সেখানকার শিল্পীরা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে জায়গা করে নিচ্ছেন। অন্যদিকে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েনের ফলে সেখানকার বিনোদন জগতের শিল্পীদের আনাগোনা কমেছে।

স্বাধীনতার পর নতুন সাংস্কৃতিক প্রবাহ এবং ভারতীয় আধিপত্য

১৯৭১ সালে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে গঠিত নতুন বাংলাদেশ রাষ্ট্র পাকিস্তানি সংস্কৃতিকে সন্দেহের চোখে দেখে। অপর দিকে ভারতীয় সাংস্কৃতিক পণ্য, বিশেষ করে বোম্বের সিনেমা বাংলাদেশে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়। এতে বাংলাদেশে একধরনের ভারতীয় সাংস্কৃতিক প্রাবল্যের সূচনা হয়। এই ধারা ১৯৯০-র দশকেও চলতে থাকে। সেই সময় দুই দেশের মধ্যে শিল্পী বিনিময় চালু ছিল। ভারতীয় নাট্যদল ঢাকায় আসত, আবার বাংলাদেশি অভিনেতারা সেখানে যেতেন। শেখ হাসিনার গত শাসনামলে এসে এই সম্পর্ক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছায়।

অন্যদিকে পাকিস্তান দীর্ঘদিন সাংস্কৃতিকভাবে বাংলাদেশে প্রান্তিক অবস্থায় ছিল। ১৯৭৪ সালের শিমলা চুক্তির পর কূটনৈতিক সম্পর্ক আবার শুরু হলেও পুরোনো ক্ষত রয়ে যায়। ১৯৯০-র দশকে স্যাটেলাইট টিভি এবং ভিডিও ক্যাসেটের প্রসারের সঙ্গে পাকিস্তানি ড্রামা এবং গান (বিশেষ করে পাকিস্তান টেলিভিশনের নাটক) বাংলাদেশে গোপনে জনপ্রিয়তা পায়। তবে, সরকারি পর্যায়ে এগুলো সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ ছিল না, বরং সীমিত নিয়ন্ত্রণ ছিল।

২০০০-এর দশকে ইন্টারনেট এবং গ্লোবালাইজেশনের ফলে নিষেধাজ্ঞা কার্যত শিথিল হয়। পাকিস্তানি ড্রামা যেমন হামসাফার এবং জিন্দেগি গুলজার হ্যায় বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়, এবং এগুলো প্রকাশ্যে সম্প্রচারিত হতে থাকে। সরকার আর কঠোরভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেনি। কিন্তু আনুষ্ঠানিক সহযোগিতা ছিল খুবই সীমিত।

ভূরাজনীতি এখানে নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করেছে। শেখ হাসিনার সময় (২০১০-এর দশকে) কিছুটা সাংস্কৃতিক বিনিময় বাড়লেও ভারতের প্রভাব এবং বাংলাদেশের জোটনিরপেক্ষতার নীতি পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বিস্তারে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।

ভারত ফ্যাক্টর: সহযোগিতার উত্থান ও পতন

ভারতের ভৌগোলিক নৈকট্য ও সাংস্কৃতিক মিলের কারণে বাংলাদেশ বহুদিন ধরে তাদের প্রধান সাংস্কৃতিক সহযোগী ছিল। সম্পর্ক ভালো থাকাকালে বিনোদন জগতে দুই দেশের মধ্যে সক্রিয় আদান-প্রদান চলত। ২০০৯ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত শেখ হাসিনার শাসনামলে ভারতীয় শিল্পীদের বাংলাদেশে আসা ছিল নিয়মিত ঘটনা। ২০১১ সালে অস্কারজয়ী সংগীতজ্ঞ এ আর রহমান ঢাকায় কনসার্ট করেন, যা বিপুল জনসমাগম ঘটায়। ২০১৩ সালে শাহরুখ খানের সফরও তুমুল সাড়া ফেলে। ২০১৭ সালে কলকাতা-ঢাকা চলচ্চিত্র উৎসবে যৌথ প্রযোজনার সিনেমা প্রদর্শিত হয়। ২০১৯ সালে আসেন সালমান-ক্যাটরিনা।

এসব আয়োজন শুধু বিনোদনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। এগুলো দেশীয় পর্যটন শিল্পের প্রসার ঘটানোর পাশাপাশি রাজস্বতেও ভূমিকা রাখে। বলিউডের ছবি আমদানি করেও প্রতিবছর কোটি টাকার আয় করেছে সিনেমা হলসংশ্লিষ্টরা। তবে বলিউডি সিনেমার প্রভাবে বাংলাদেশি সিনেমা শিল্প ব্যবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ারও অভিযোগ আছে।

ভূরাজনীতি মুহূর্তেই পরিস্থিতি পাল্টে দেয়। ২০২৪ সালের ছাত্র আন্দোলনে শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হয়ে ভারতে পালিয়ে যান। দীর্ঘদিন আওয়ামী লীগ সরকারকে ভারত সরকারের সমর্থন ও অন্যান্য কূটনৈতিক ইস্যুতে তরুণদের মধ্যে ভারতবিরোধী মনোভাব জোরালো হয়। অভিযোগ ওঠে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত হস্তক্ষেপ করেছে। এমনকি একপর্যায়ে ভারতীয় পণ্য বয়কটেরও ডাক ওঠে। অনেক পরিবারেই ভারতীয় টিভি চ্যানেলগুলো দেখা বন্ধ হয়ে যায়। ভারতীয় শিল্পীদের কনসার্ট বাতিল হয়। অঘোষিতভাবে ভারতীয় চলচ্চিত্র আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে #BoycottBollywood হ্যাশট্যাগ ট্রেন্ড করে।

২০২৫ সালে এসেও ভারতের সঙ্গে পরিস্থিতির তেমন উন্নতি ঘটেনি। সীমান্তে হত্যাকাণ্ড এবং সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে টানাপোড়েন চলছেই।

গত বছর গণঅভ্যুত্থানের পর পাকিস্তানি শিল্পীদের আনোগোনা বাড়ে। ছবি: সংগৃহীত।
গত বছর গণঅভ্যুত্থানের পর পাকিস্তানি শিল্পীদের আনোগোনা বাড়ে। ছবি: সংগৃহীত।

পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কন্নোয়ন: নতুন সাংস্কৃতিক উষ্ণতা

শেখ হাসিনার পতনের পর পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক বাড়ে। অন্তর্বর্তী সরকার ভারতের প্রতি নতজানু অবস্থান থেকে সরে এসে ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি গ্রহণ করে। দীর্ঘদিনের দূরত্ব ঘোচাতে ইসলামাবাদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা হয়। এর ফলশ্রুতিতে ২০২৫ সালের আগস্টে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ঢাকা সফর করেন। এ সময় ছয়টি চুক্তি হয়। এর মধ্যে ছিল সাধারণ পাসপোর্টে ভিসা মওকুফ, বাণিজ্য ও কূটনীতি নিয়ে সমঝোতা এবং একটি সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি।

অবশ্য এর আগেই, ২০২৪ সালের শেষদিকে গায়ক আতিফ আসলামের কনসার্ট ঢাকায় ৫০ হাজার দর্শক টানে। এখন পাকিস্তানের জনপ্রিয় টেলিভিশন নেটওয়ার্ক ‘এআরওয়াই ডিজিটাল’ থেকে বাংলাদেশি প্ল্যাটফর্মগুলোতে বৈধভাবে পাকিস্তানি নাটক প্রচার হচ্ছে।

এরপর সবচেয়ে আলোচিত ঘটনা হানিয়া আমিরের ‘সানসিল্ক ক্যাম্পেইন’। তাঁর ঢাকায় আগমন নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে। তা কেবল বিজ্ঞাপন নয়, এক ধরনের সাংস্কৃতিক কূটনীতিও। তার পোস্টগুলো ভাইরাল হয়ে লাখ লাখ ভিউ পেয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এও হানিয়া আমিরকে ঘিরে আলোচনায় মেতে উঠেছেন বাংলাদেশি ব্যবহারকারীরা। একজন লিখেছেন, ‘হানিয়া আমিরের উপস্থিতিতে বাংলাদেশ আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠল।’ আরেকজন মন্তব্য করেছেন, ‘ক্রিকেটে জয়ের পাশাপাশি এটি সত্যিই একটি “উইন-উইন”।’

ভারতের হিন্দি-বাংলা, তুর্কি ও কোরিয়ান সিরিজের পাশাপাশি এখন বাংলাদেশের তরুণ দর্শকদের কাছে জনপ্রিয় পাকিস্তানি টিভি সিরিজ। পাকিস্তানি ড্রামা নিয়ে আলোচনা হয়, ফেসবুকে বাংলাদেশি তরুণদের এমন একাধিক গ্রুপ রয়েছে। এসব গ্রুপে মূলত দর্শকরা নিয়মিত উর্দু সিরিজ নিয়ে আলোচনা করেন। এ ছাড়া ইউটিউব এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মের সুবাদে দর্শক তৈরি হয়েছে। সেই ঢেউয়েও বাংলাদেশে জনপ্রিয় হয়েছেন হানিয়া আমিরসহ পাকিস্তানি শিল্পীরা। ভিসা মওকুফের কারণে ভ্রমণ সহজ হয়েছে। এতে যৌথ প্রযোজনার সুযোগ তৈরি হয়েছে, বিশেষত ঢালিউড ও ললিউডের মধ্যে।

বৃহত্তর প্রভাব: সফট পাওয়ার, অর্থনীতি ও দর্শকের পরিবর্তন

ভূরাজনীতি শুধু ‘কে বাংলাদেশে আসবেন’ তা-ই নির্ধারণ করে না। এটি ‘দর্শকরা কী উপভোগ করবেন’— তাও নির্ণয় করে। এক সময় বাংলাদেশের উৎসবগুলোতে হিন্দি ও টলিউডি সিনেমা ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেত। এমনকি বাংলাদেশের সিনেমা হলেও দেখা যেত সেসব সিনেমা।

আবার অভ্যুত্থানের পরে বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক অবনতি হতে থাকে। এর প্রভাব পড়েছে বিনোদন জগতেও। পাকিস্তানের সঙ্গে কূটনৈতিক তৎপড়তার পাশাপাশি বিনোদন জগতেরও যোগাযোগ বাড়ছে। এরইমধ্যে পাকিস্তানি কয়েকজন শিল্পী বাংলাদেশ সফর করেছেন। যার সবশেষ হানিয়া আমির। সাংস্কৃতিক এই যোগাযোগ ক্রমেই বাড়ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এমনকি বাংলাদেশে জনপ্রিয় চলচ্চিত্র তারকা শাকিব খানের সঙ্গে হানিয়া আমিরের একটি সিনেমায় স্ক্রিন শেয়ার করার কথাও শোনা যাচ্ছে।

২০২৪ সালের ডিসেম্বরে ‘ভয়েস অব আমেরিকার’ একটি জরিপে দেখা যায়, ৫৯ শতাংশ বাংলাদেশি পাকিস্তানকে পছন্দ করে। বিপরীতে ভারতকে পছন্দ করে ৫৩ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। তরুণরা (১৮-৩৪ বছর বয়সী) পাকিস্তানকে বেশি পছন্দ করে। কিন্তু এতে বিনোদনের পছন্দ নিয়ে কোনো তথ্য নেই— শুধু দেশ হিসেবে পছন্দের কথা বলা হয়। গণমাধ্যমে আজকাল পাকিস্তানি কনটেন্টের মান, গল্প এবং নির্মাণশৈলী নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

হানিয়া আমিরের সঙ্গে রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের ঘোরাঘুরি। ছবি: সংগৃহীত।
হানিয়া আমিরের সঙ্গে রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের ঘোরাঘুরি। ছবি: সংগৃহীত।

অর্থনৈতিক দিক থেকেও এসব বিনিময় সফট পাওয়ারকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক রপ্তানি ভারতের সফট পাওয়ারকে টক্কর দিতে সহায়তা করছে। তবে চ্যালেঞ্জও রয়েছে। ১৯৭১ সালের ট্রমা এখনও অনেকের মনে পাকিস্তানি তারকাদের নিয়ে সংশয় তৈরি করে। পাশাপাশি, ভারতের বিশাল সিনেমা শিল্প পাকিস্তানের তুলনায় অনেক বেশি প্রভাব বিস্তার করে।

অভ্যুত্থান-পরবর্তী পরিচয় খুঁজতে থাকা বাংলাদেশে বিনোদন খাতও ভূ-রাজনীতির প্রতিচ্ছবি ও বার্তাবাহক হিসেবে কাজ করবে। পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক উদ্যোগ জনপ্রিয় হচ্ছে। অন্যদিকে, ভারত-বাংলাদেশ আলোচনাও ধীরে ধীরে পুনরায় শুরু হতে পারে। ২০২৬ সালের সম্ভাব্য সম্মেলন নিয়ে ইতিমধ্যেই ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। ফলে এক নতুন দৃশ্যপট তৈরি হতে পারে— একদিকে বলিউড, অন্যদিকে ললিউড চলচ্চিত্র উৎসব। হানিয়া আমিরকে উষ্ণ অভ্যর্থনা, নাচে-গানে ভরা ভক্তদের উল্লাস ও ভাইরাল ভিডিও আশাবাদের প্রতীক। প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই অঞ্চলে পর্দার গল্প সীমান্তের বিভাজন মুছে দিতে পারে।

‘রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের’ ভোল বদল

ভূরাজনীতির এই প্রভাব প্রতিফলিত হয়েছে ‘রাফসান দ্য ছোট ভাই’ নামে পরিচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটরের আচরণেও। ফুড ভ্লগ তৈরি করে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন রাফসান। তার ইউটিউব চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার সংখ্যা ২০ লাখেরও বেশি। তবে ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তাঁর অবস্থান নিয়ে তিনি সমালোচনার মুখে পড়েন। সামাজিক মাধ্যমে তাঁর পুরোনো কিছু ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। সেসবে তিনি হাসিনার উন্নয়ন প্রকল্পের প্রশংসা করেছেন এবং কোটা সংস্কার দাবিকে তুচ্ছ করেছেন। আন্দোলন-পরবর্তী বাংলাদেশে তাকে ভারতপন্থী বলে সমালোচনা করা হয়। তাঁর ব্র্যান্ড চুক্তি বাতিল হয়। মাঝখানে দেশ ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন বলেও কথা ছড়িয়ে পড়ে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক মুহূর্তে দেখা গেছে পাকিস্তানি তারকা হানিয়া আমির ঢাকার ঐতিহাসিক আহসান মঞ্জিলের সামনে রঙিন রিকশায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন রাফসান আহমেদের সঙ্গে। ভিডিওগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুক ও টিকটকে। হানিয়ার সঙ্গে ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর রাফসানের ভিউ আবার বেড়ে যাচ্ছে।

বাইরে থেকে দেখলে এটি শুধু বিদেশি অতিথিকে বাংলাদেশের ঐতিহ্য ঘুরিয়ে দেখানো। কিন্তু পাকিস্তানি তারকার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে রাফসান হয়তো নতুন বাস্তবতায় নিজেকে মানিয়ে নিচ্ছেন। রাফসানের রিকশা ভ্রমণ যেন এক নীরব বার্তা— তিনি নতুন ধারার সঙ্গেই আছেন।

অস্থির বিনোদন জগতে ভূ-রাজনীতি বড় ভূমিকা রাখে। হানিয়া আমিরও টুইট করেছেন, ‘ঢাকা, তুমি আমার মন জিতে নিচ্ছো!’ তিনিও হয়তো অনিচ্ছাকৃতভাবেই রাফসানকে তৈরি করে দিচ্ছেন দ্বিতীয় সুযোগ।

Ad 300x250

সম্পর্কিত