leadT1ad

সংসদে নারীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘অনীহা’ কেন

দেশের রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ নিয়ে আলোচনা নতুন নয়। বিশেষ করে, জাতীয় সংসদ নির্বাচন এলেই এ নিয়ে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে ওঠে। জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং এই আসনগুলোতে সরাসরি নির্বাচনের দাবিও দীর্ঘদিনের। অভিযোগ আছে, অন্য বিভিন্ন ইস্যু রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে যেমন গুরুত্ব পায়, এই ইস্যুতে তেমনটা হয় না। বরং সংসদে নারীর অংশগ্রহণ ইস্যুতে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলের বক্তব্যই শেষ পর্যন্ত সংরক্ষিত আসনে গিয়েই ঠেকে। আগের এই বাস্তবতা পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটেও চলমান। কেন প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর জাতীয় সংসদে নারীর আসনসংখ্যা বাড়াতে কিংবা সেই আসনগুলোতে সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতিতে যেতে অনীহা, এই প্রতিবেদনে থাকল তার অনুসন্ধান।

স্ট্রিম প্রতিবেদকঢাকা
প্রকাশ : ১১ আগস্ট ২০২৫, ১২: ৩২
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২৫, ১২: ৪২
সংসদে নারীর প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর ‘অনীহা’ কেন। স্ট্রিম গ্রাফিক

জাতীয় সংসদে বর্তমানে ৫০টি সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে। এই আসনগুলো সাধারণ নির্বাচনের মতো সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয় না। বরং সাধারণ আসনে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে এই ৫০টি আসনে নারী প্রতিনিধিরা আসেন। অর্থাৎ সংসদে যে রাজনৈতিক দলের যত বেশি সাধারণ আসন থাকে, সেই দল আনুপাতিক হারে তত বেশি সংরক্ষিত নারী আসন পায়।

এই পদ্ধতিটি সংবিধানের ৬৫ অনুচ্ছেদের (৩) দফায় উল্লেখ করা হয়েছে, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। স্বাধীনতার পর থেকে এই ব্যবস্থা চালু থাকলেও এর মেয়াদ একাধিকবার বাড়ানো হয়েছে এবং সর্বশেষ সংশোধনী অনুযায়ী, এটি আরও ২৫ বছর কার্যকর থাকার কথা।

কিন্তু এই পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েই মূল বিতর্ক। যেহেতু এই নারী সংসদ সদস্যেরা সরাসরি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নন। তাই তারা মূলত দলের মনোনয়নের উপর নির্ভরশীল থাকেন এবং অনেক সময় দলের ‘আজ্ঞাবহ’ হিসেবে কাজ করেন। এতে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মূল লক্ষ্য বাধা পায় এবং তারা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পান না। এসব কারণেই সংরক্ষিত নারী আসনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং সরাসরি নির্বাচনের দাবি জোরালো হচ্ছে।

বিশেষ করে গত বছর ৫ আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানের পর রাষ্ট্রের বিভিন্ন ক্ষেত্রে সংস্কারের আয়োজন চলছে, তাতে নারী আসনে সরাসরি নির্বাচন করার বিষয়টি জোরালোভাবে সামনে এসেছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই প্রস্তাব নিয়ে এক ধরনের অনীহা দেখা গেছে। সংরক্ষিত আসন ৫০ থেকে ১০০টি আসন করার বিষয়ে মোটামুটি ঐকমত্য থাকলেও সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতির বিষয়ে তাদের আপত্তি স্পষ্ট।

রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়ে প্রকৃত সদিচ্ছার অভাবও রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগকারীদের মত, তারা মুখে নারীর অধিকারের কথা বললেও, বাস্তবে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। তাদের কাছে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নের চেয়ে ক্ষমতা ধরে রাখাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

ঐকমত্যের সংলাপে যা বলেছে দলগুলো

সংসদে নারী আসনের ইস্যুটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর সংলাপে উঠে আসে ১৪ জুলাই। ওইদিন আলোচনার পর দলীয় অবস্থান তুলে ধরেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমদ। তিনি বলেন, ‘আরপিও অনুযায়ী যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর কমিটিতে ৩৩ শতাংশ আসনে নারীদের সম্পৃক্ত করা যায়নি, সেখানে ৩৩ শতাংশ আসনে সরাসরি তাদের মনোনয়ন সম্ভব নয়। কারণ আমাদের দেশের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় বিভিন্ন সীমাবদ্ধতা রয়েছে। তাই এ বিষয়টিতে ক্রমান্বয়ে এগোনো উচিত বলে মনে করি। সংসদে নারী প্রতিনিধিত্ব নির্বাচনে আমরা বিদ্যমান পদ্ধতির কথাই বলেছি।’

অন্যদিকে সে সময় জামায়াতে ইসলামী জানায়, তাঁরা পিআর (সংখ্যানুপাতিক) পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সংসদীয় আসন ৪০০টি এবং এর মধ্যে ১০০টি নারী আসনের বিষয়ে একমত।

আর ১০০ নারী আসনে সরাসরি নির্বাচনের পক্ষে দাবির কথা জানান জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধিরা। তবে পরে তাঁরা নারী আসনের বিষয়ে একটি নতুন প্রস্তাবও দেন। সেখানে বলেন, প্রতিটি দল ১০-১৫ শতাংশ নারী প্রার্থী মনোনয়ন দেবে। তাতে ৩৫০-৪০০ নারী প্রার্থী পাওয়া যাবে। যাঁরা নির্বাচনে জয়ী হবেন, তাঁরা সংসদ সদস্য হবেন। আর যেসব নারী প্রার্থী পরাজিত হবেন, তাঁদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া ১০০ জন হবেন সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য।

দলগুলোর এমন অবস্থানের বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিপির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, ‘যেহেতু অর্ধেক জনসংখ্যা নারী। তাই রাষ্ট্রীয় বা সামাজিক জায়গায় নারীর অর্ধেক কন্ট্রিবিউশন থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। আগের সংরক্ষিত পদ্ধতি একটা ইন-হিউম্যান একটা পদ্ধতি। এতে নারীর অংশগ্রহণের পথ বন্ধ করা হয়েছে। মনোনয়ন পেয়ে অন্যান্য পুরুষের মত উঠে আসার কথা। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে মাসল পাওয়ার ইউজ করা হয়। আমরা ১০০ আসনের পদ্ধতি নির্ধারণ করতে গিয়ে দেখেছি কোনো নিরাপদ অবস্থা নারীর জন্য পাওয়া যায় না। এটা জাতি হিসেবে লজ্জার ব্যাপার।’

সংসদে নারীর আসনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতি চালু করা বাংলাদেশের নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে। যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দলীয় নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয়, পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা, নির্বাচনের ব্যয় ও জটিলতা এবং তৃণমূল পর্যায়ে নারী নেতৃত্বের অভাবের মতো কিছু আপত্তি রয়েছে, তবে দীর্ঘমেয়াদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং নারীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই সংস্কারগুলো অপরিহার্য।

দলগুলোর এই অনীহা কেন?

বর্তমানে সংরক্ষিত আসনের নারী এমপিরা সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন না। তারা মূলত রাজনৈতিক দলের মনোনয়নের ওপর নির্ভরশীল। এর মানে হলো তাদের সংসদ সদস্য পদটি দলের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। ফলে তারা দলের প্রতি অত্যন্ত অনুগত থাকেন এবং দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে চলেন।

অভিযোগ আছে, সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতি চালু হলে এই নারী এমপিরা জনগণের কাছে সরাসরি দায়বদ্ধ হবেন। তাদের টিকে থাকা নির্ভর করবে জনগণের সমর্থনের ওপর, দলের নয়। রাজনৈতিক দলগুলো আশঙ্কা করে যে, এতে তাদের উপর থেকে নিয়ন্ত্রণ কমে যেতে পারে। নারী সংসদ সদস্যরা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পেলে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ হতে পারে। এটি ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ বজায় রাখার একটি কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ আবার মনে করেন, এই অনীহার পেছনে অন্যতম আরেকটি কারণ বাংলাদেশের ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা এখনও প্রবল’। তাদের অভিযোগ, অনেক রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পুরুষদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। তারা মনে করেন, সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নারী সংসদ সদস্যরা যদি শক্তিশালী অবস্থানে আসেন, তাহলে তাদের সঙ্গে ক্ষমতা ভাগাভাগি করতে হবে। এই ক্ষমতা ভাগাভাগির অনীহা অনেক পুরুষ নেতার আপত্তির একটি বড় কারণ। পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি তাদের জন্য সুবিধাজনক, কারণ এর মাধ্যমে তারা নিজেদের পছন্দের এবং অনুগত নারীদের সংসদে পাঠাতে পারেন, যারা তাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহায়ক হন, কিন্তু ক্ষমতার মূল কেন্দ্রে আসেন না। এটি নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নের পথে একটি বড় বাধা।

এ বিষয়ে নারী সংস্কার কমিশনের শিরীন হক বলেন, ‘রাজনৈতিক অঙ্গন বা সুশীল সমাজ কেউই আসলে নারীর সমান অংশগ্রহণ সহ্য করতে পারে না। যেন এটা একটা বাড়াবাড়ি। আইনসভায় নারীর সিদ্ধান্তকে তারা এখনও স্থান দিতে পারেন না।’

নারী আসনের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘দেশের অর্ধেকের বেশি জনগণের জন্য জনপ্রতিনিধির অনুপাতও হতে হবে ন্যায্য। সংসদে ৬০০ আসনসংখ্যার মধ্যে আমরা ৩০০ নারী আসন প্রস্তাব করেছি। সংরক্ষিত আসনে লড়বে ২ জন। একজন সাধারণভাবে যেকোনো প্রতিদ্বন্দিতা করবে, অন্য আসন হবে সংরক্ষিত। অনেক রাজনৈতিক দল বলছে এরকম হলে নারীর সংখ্যা হবে অর্ধেকের বেশি। তাতে সমস্যাটা কোথায়? আমরা তো এতদিন অর্ধেকের বেশি পুরুষের আধিপত্য দেখে এসেছি।’

তাছাড়া রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের বিষয়ে প্রকৃত সদিচ্ছার অভাবও রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এই অভিযোগকারীদের মত, তারা মুখে নারীর অধিকারের কথা বললেও, বাস্তবে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতিকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায়। তাদের কাছে নারীর প্রকৃত ক্ষমতায়নের চেয়ে ক্ষমতা ধরে রাখাই বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।

এই সংকটের ব্যাপারে জানতে চাইলে নৃবিজ্ঞানী মির্জা তাসলিমা সুলতানা স্ট্রিমকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলো সাধারণত জনতুষ্টিমূলক কাজই করতে চায়। নতুন করে খুব এজেন্ডাও তারা সেট করতে চায়না। আধিপত্যশীল মতাদর্শগুলোর বাইরে তারা বেরোতেও পারে না। রাজনীতিতে আসার বাস্তবতা তাঁর জন্য সবসময় জটিল করে রাখা হয় শ্লাটশেমিং ও ভায়োলেন্স দিয়ে। জনতুষ্টির রাজনীতির জন্য নারীর জন্য সমতার প্রেক্ষিত তৈরিও হয় না।’

এই কারণগুলো একত্রিত হয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে সংরক্ষিত নারী আসন বৃদ্ধি এবং সরাসরি নির্বাচনের বিরোধিতা করতে উৎসাহিত করে বলেও মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে সংরক্ষিত নারী আসনের বিষয়ে নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন বিএনপির সাবেক সদস্য নিলুফার চৌধুরী মনি। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমি সংরক্ষিত নারী আসনের পক্ষে না। যখন নারীরা পশ্চাৎপদ ছিল, তখন না হয় ভিন্ন কথা ছিল। নারীরা অনেকদূর এগিয়েছে। এখন যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩ শতাংশ নারী, ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে ৬৫ শতাংশ নারী। এমন পরিস্থিতি সংরক্ষিত কোটা দেওয়া মানে নারীকে ঘরে বসিয়ে দেওয়া। একেকজন পুরুষ যখন একটা করেই আসন পায় তখন নারীর সংরক্ষিত আসনে এক আসনের জন্য লড়তে হয় তিন জনকে। নারীর অধিকার নিশ্চিত করতে হলে আগে পুরুষের মাইন্ডসেট বদলাতে হবে। সেটা শুরু করতে হবে রাজনৈতিক দলের পুরুষদেরই।’

পরোক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি নিয়েই মূল বিতর্ক। যেহেতু এই নারী সংসদ সদস্যেরা সরাসরি জনগণের কাছে দায়বদ্ধ নন। তাই তারা মূলত দলের মনোনয়নের উপর নির্ভরশীল থাকেন এবং অনেক সময় দলের ‘আজ্ঞাবহ’ হিসেবে কাজ করেন। এতে নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের মূল লক্ষ্য বাধা পায় এবং তারা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পান না।

দাবির বাস্তবায়ন হলেই কি নারীর ক্ষমতায়ন বাড়বে?

সংসদে নারীর আসনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং সরাসরি নির্বাচন পদ্ধতি চালু করা বাংলাদেশের নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে। যদিও রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দলীয় নিয়ন্ত্রণ হারানোর ভয়, পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতা, নির্বাচনের ব্যয় ও জটিলতা এবং তৃণমূল পর্যায়ে নারী নেতৃত্বের অভাবের মতো কিছু আপত্তি রয়েছে, তবে দীর্ঘমেয়াদি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এবং নারীর সার্বিক উন্নয়নের জন্য এই সংস্কারগুলো অপরিহার্য।

আন্তর্জাতিক সফল উদাহরণগুলো প্রমাণ করে যে, সঠিক পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে নারীর কার্যকর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা সম্ভব। বিশ্বের অনেক দেশেই সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা হয়েছে। মেক্সিকো, কিউবা ও নিকারাগুয়ার মতো দেশগুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য প্রার্থী তালিকায় নির্দিষ্ট সংখ্যক নারী প্রার্থী রাখার বাধ্যবাধকতা আরোপ করেছে। যার ফলে এসব দেশের সংসদে কোনও কোনও ক্ষেত্রে নারীর প্রতিনিধিত্ব ৫০ শতাংশেরও বেশি। এই দেশগুলোতেও কোটা পদ্ধতি এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছা নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে সহায়ক হয়েছে এবং সংসদে নারীর প্রতিনিধিত্ব কোথাও কোথাও অর্ধেকেরও বেশি হয়েছে।

তবে সংরক্ষিত আসনেও যাতে নারী পুরুষতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোর প্রতিনিধি না হয়ে ওঠে সেই ব্যাপারে নীতিগত সচেতনতা জরুরি বলেও মনে করেন বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, বাংলাদেশে ক্ষমতার সেই ভয়াল চেহারা অনেকবারই প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে। নারীর সক্রিয় ও সৎ অংশগ্রহণের মাধ্যমে কেবল নারীর ক্ষমতায়নই নয়, জনপ্রতিনিধি হিসেবে সামগ্রিকভাবে দেশের গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারা বেগমান করাই হতে হবে লক্ষ্য।

Ad 300x250

সম্পর্কিত