ফিলিস্তিনিদের ওপর দশকের পর দশক অন্যায়-অত্যাচার চালিয়ে আসা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন না করতে বরাবরই অনড় অবস্থান দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে পাসপোর্ট চালুর পর সেখানেও স্পষ্ট করে লেখা ছিল–‘এই পাসপোর্ট দিয়ে ইসরায়েলে যাওয়া যাবে না’
আবদুল্লাহ কাফি
ফিলিস্তিনিদের ওপর দশকের পর দশক অন্যায়-অত্যাচার চালিয়ে আসা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন না করতে বরাবরই অনড় অবস্থান দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে পাসপোর্ট চালুর পর সেখানেও স্পষ্ট করে লেখা ছিল–‘এই পাসপোর্ট দিয়ে ইসরায়েলে যাওয়া যাবে না’। তবে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ৪৭ বছর পর অনেকটা ‘সবার অলক্ষ্যে’ ওই অবস্থান থেকে সরে যায়।
২০২০ সালের নতুন পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণ করতে না পারার বার্তাটি সরিয়ে ফেলা হয়। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, শেখ হাসিনার এই কার্যক্রম ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের প্রথম ধাপ। ইসরায়েল থেকে গোয়েন্দা নজরদারি প্রযুক্তি কেনা অথবা সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের ‘রক্ষাকর্তা’ ভারতের সঙ্গে জায়নবাদী রাষ্ট্রটির সুসম্পর্কের কারণে এটি করা হতে পারে।
ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ছিল স্বাধীনতার পর থেকেই
বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৩ সালে পাসপোর্ট সুবিধা চালু হয়। ওই সময় বাংলাদেশি পাসপোর্টে লেখা থাকত– ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সসেপ্ট ইসরায়েল, তাইওয়ান অ্যান্ড দ্য রিপাবলিক অব সাউথ আফ্রিকা’। অর্থাৎ তাইওয়ান, সাউথ আফ্রিকা ও ইসরায়েল বাদে এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিশ্বের সব দেশে যাওয়া যাবে।
পরে তাইওয়ান ও দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় বাংলাদেশ। এরপর থেকে পাসপোর্টে লেখা হতো–‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড একসেপ্ট ইসরায়েল’। তবে ২০২০ সালে নতুন চালু করা ইলেকট্রনিক পাসপোর্টে (ই-পাসপোর্ট) ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ কথাটি মুছে দেয় বাংলাদেশ সরকার। লেখা হয়–‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিস অব দ্য ওয়ার্ল্ড।’
এর কারণ হিসাবে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছিলেন, পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে এই পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করতে শেখ হাসিনা এই পরিবর্তন করেছেন বলে তখন অনেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন। অন্যদের দাবি ছিল, ভারতের চাপে এই পরিবর্তন করেন শেখ হাসিনা।
পাসপোর্টে পরিবর্তন আনা হয় ‘অতি গোপনে’
পাসপোর্টে এত বড় পরিবর্তন আনা হলেও ওই সময় সরকারের উচ্চমহলও বিষয়টি জানত না। ২০২১ সালে ফিলিস্তিনি ইস্যুতে নতুন করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হলে পাসপোর্টে ওই পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এর আগে বিষয়টি নজরেই আসেনি কারও।
‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ অংশ বাদ দেওয়ার বিষয়টি জানতেন না ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন প্রকল্পের অনেক কর্মকর্তারাও। ফাউন্ডেশন ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (এফএসডিএস) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিদ্দিকুর রহমান ছিলেন ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক (ডিপিডি)। যোগাযোগ করা হলে তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘পাসপোর্টে কী থাকবে, কী বাদ যাবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আমাদের ছিল না। আমরা শুধু প্রকল্পটা বাস্তবায়ন করেছি। হঠাৎ শুনলাম, “একসেপ্ট ইসরায়েল” লেখাটা বাদ যাবে।’
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের কেউ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন কি না, জানতে চাইলে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের ছয় মাস আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে শুনেছি। আমরা অনেকে এ ঘটনায় অবাক হয়েছিলাম এবং প্রতিবাদ করেছিলাম বলেই তখন কয়েকটা নিউজ হয়েছিল।’
জানত না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনুষ্ঠানিকভাবে পাসপোর্টের বিষয়টি দেখভাল করে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। তবে বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয় হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে যায়। কিন্তু এই পরিবর্তনের ‘কিছুই জানতেন না’ তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
পাসপোর্টে পরিবর্তনটির বিষয়ে ২০২১ সালের ২৩ মে গণ্যমাধ্যমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ‘বিষয়টি শোনার পর আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করি। তাঁর কাছে জেনেছি, ছয় মাস আগে নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করার পর ‘‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ একসেপ্ট ইসরায়েল’’ থেকে একসেপ্ট ইসরায়েল অংশটি বাদ গেছে। এই পরিবর্তন করা হয়েছে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মানের স্বার্থে।’
পরদিনই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে এক বছর আগে এবং তা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে ছয় মাস আগে।’
এরপর ২০২৪ সালের ৩১ মে রাজধানীর চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) এক অনুষ্ঠানেও আগের কথা বলেন এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া দুঃখজনক। আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা অন্য কেউ কোনো আলোচনা না করেই এমনটি (ই-পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ বাদ দেওয়া) করেছিল।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম বিষয়টি যেভাবে দেখিয়েছিল
মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল ইসরায়েল। তবে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার লিখিতভাবে সেই স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করে। ওই সময় থেকেই বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। দেশের পরবর্তী সব সরকার এই ধারা অনুসরণ করেছে। তবে পাসপোর্টে শেখ হাসিনার হঠাৎ ওই পরিবর্তন আনার বিষয়টিকে ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া’ বলে জানায় ইসরায়েলি গণমাধ্যম।
২০২১ সালের ২৩ মে ইসরায়েলের পত্রিকা ‘দ্য জেরুজালেম পোস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের ওপর থেকে বাংলাদেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গিলাদ কোহেন।
সেই প্রতিবেদনে যুক্ত করা গিলাদ কোহেনের টুইট পোস্টের লিংক। সেই বার্তায় গিলাদ লেখেন, ‘গ্রেট নিউজ! বাংলাদেশে ইসরায়েলের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এটি একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ এবং আমি ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে আমাদের দুদেশের মানুষই উপকৃত হতে পারে এবং উন্নতি করতে পারে।’
ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রচারের পর অবশ্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, ইসরায়েল ভ্রমণে আগের মতোই নিষেধাজ্ঞা আছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ইস্যু করা ই-পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়েছে উল্লেখ করে যে টুইট করা হয়েছে সেটা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। নতুন ইস্যু করা ই-পাসপোর্টে “ইসরায়েল ছাড়া সব দেশ” এই পর্যবেক্ষণটি না থাকার কারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীদের জন্য ইসরায়েলে ভ্রমণ নিষিদ্ধই থাকবে। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েল ইস্যুতে তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি এবং বাংলাদেশ তার দীর্ঘদিনের অবস্থানে কঠোর থাকবে।’
ইসরায়েলের প্রযুক্তি পাওয়া, নাকি ভারতের চাপ
ফাউন্ডেশন ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (এফএসডিএস) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিদ্দিকুর রহমান স্ট্রিমকে বলেন, ‘শেখ হাসিনা ইসরায়েল থেকে আড়িপাতা যন্ত্র আনার আলাপটা যদি সত্য হয়, তাহলে এটা একটা বড় কারণ হতে পারে।’
বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে ট্রেনিং নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ইসরায়েল যেতেন কি না, এ প্রশ্নে সিদ্দিক বলেন, ‘টেকনিক্যাল ট্রেনিং নিয়ে ইসরায়েলে হয়তো কিছু লোক গিয়েছিল। যেমন আমরা পত্রিকায় পড়েছি ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান গিয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম রাসেল স্ট্রিমকে বলেন, ‘বাংলাদেশের তৎকালীন সরকারের মিত্র ছিল ইন্ডিয়ার বিজিপি সরকার। এই বিজিপি আবার ইসরায়েলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের একটা। সেক্ষেত্রে এটাকে অনেকে যুক্তি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেন। তবে এর পেছনে যেহেতু সরাসরি কোনো প্রমাণ নেই, তাই এগুলো আমরা কনস্পেরেসি থিওরি বা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবেই দেখি।’
অবশ্য ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির কোনো বিষয় নেই বলে তখন দাবি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ২০২১ সালের ২৩ মে বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের নতুন পাসপোর্টে ইসরায়েলের নাম বাদ দেওয়া হলেও দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশ কোনো ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করছে না।’
‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ শর্ত পুনর্বহাল
২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ শর্ত পুনর্বহাল করে।
২০২৫ সালের ৭ এপ্রিল পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন-৪ শাখা থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে ‘পূর্বের ন্যায় বাংলাদেশি পাসপোর্টে “ইসরায়েল ব্যতীত” শর্ত পুনর্বহালের’ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। চিঠিতে সই করেন সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন-৪ শাখার উপসচিব নীলিমা আফরোজ।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মেজর (অব.) সুমন সুবহান স্ট্রিমকে বলেন, ‘ইসরায়েলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল মূলত ভারতঘেঁষা রাজনীতির জন্য। কারণ, ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো এবং আমাদের বিগত সরকারও সব সময় ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা কারণ হলো, বাংলাদেশের বিগত সরকার ইসরায়েল থেকে আড়িপাতা যন্ত্র আনার পরিকল্পনা করেছিল। ফলে তাঁরা চেয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দিয়ে কাজটা যেন সহজে করা যায়।’
আর লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিদ্দিকুর রহমান স্ট্রিমকে বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রথম স্টেপ ছিল নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া। সেই হিসেবে পাসপোর্ট থেকে “একসেপ্ট ইসরায়েল” তুলে দেওয়া একটা বড় পদক্ষেপ ছিল। এটা তুলে দেওয়ার অর্থ নাগরিকরা যাওয়া-আসা করতে পারবে। তার পরের স্টেপে আসত এখানে একটা অফিস করা, একটা কনস্যুলেট করা, একটা ভিসা সেন্টার করা, একটা অ্যাম্বাসি করা। আমার মনে হয়, এটা তুলে দেওয়ার পরের ধাপে হাসিনার চিন্তা ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।’
ফিলিস্তিনিদের ওপর দশকের পর দশক অন্যায়-অত্যাচার চালিয়ে আসা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন না করতে বরাবরই অনড় অবস্থান দেখিয়েছে বাংলাদেশ। ১৯৭৩ সালে স্বাধীন বাংলাদেশে পাসপোর্ট চালুর পর সেখানেও স্পষ্ট করে লেখা ছিল–‘এই পাসপোর্ট দিয়ে ইসরায়েলে যাওয়া যাবে না’। তবে গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ৪৭ বছর পর অনেকটা ‘সবার অলক্ষ্যে’ ওই অবস্থান থেকে সরে যায়।
২০২০ সালের নতুন পাসপোর্টে ইসরায়েল ভ্রমণ করতে না পারার বার্তাটি সরিয়ে ফেলা হয়। সংশ্লিষ্টদের ভাষ্য, শেখ হাসিনার এই কার্যক্রম ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের প্রথম ধাপ। ইসরায়েল থেকে গোয়েন্দা নজরদারি প্রযুক্তি কেনা অথবা সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের ‘রক্ষাকর্তা’ ভারতের সঙ্গে জায়নবাদী রাষ্ট্রটির সুসম্পর্কের কারণে এটি করা হতে পারে।
ইসরায়েল ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা ছিল স্বাধীনতার পর থেকেই
বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর ১৯৭৩ সালে পাসপোর্ট সুবিধা চালু হয়। ওই সময় বাংলাদেশি পাসপোর্টে লেখা থাকত– ‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড এক্সসেপ্ট ইসরায়েল, তাইওয়ান অ্যান্ড দ্য রিপাবলিক অব সাউথ আফ্রিকা’। অর্থাৎ তাইওয়ান, সাউথ আফ্রিকা ও ইসরায়েল বাদে এই পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিশ্বের সব দেশে যাওয়া যাবে।
পরে তাইওয়ান ও দক্ষিণ আফ্রিকার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় বাংলাদেশ। এরপর থেকে পাসপোর্টে লেখা হতো–‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ অব দ্য ওয়ার্ল্ড একসেপ্ট ইসরায়েল’। তবে ২০২০ সালে নতুন চালু করা ইলেকট্রনিক পাসপোর্টে (ই-পাসপোর্ট) ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ কথাটি মুছে দেয় বাংলাদেশ সরকার। লেখা হয়–‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিস অব দ্য ওয়ার্ল্ড।’
এর কারণ হিসাবে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছিলেন, পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখতে এই পরিবর্তন করা হয়েছে। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক তৈরি করতে শেখ হাসিনা এই পরিবর্তন করেছেন বলে তখন অনেকেই অভিযোগ তুলেছিলেন। অন্যদের দাবি ছিল, ভারতের চাপে এই পরিবর্তন করেন শেখ হাসিনা।
পাসপোর্টে পরিবর্তন আনা হয় ‘অতি গোপনে’
পাসপোর্টে এত বড় পরিবর্তন আনা হলেও ওই সময় সরকারের উচ্চমহলও বিষয়টি জানত না। ২০২১ সালে ফিলিস্তিনি ইস্যুতে নতুন করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হলে পাসপোর্টে ওই পরিবর্তনের বিষয়টি আলোচনায় আসে। এর আগে বিষয়টি নজরেই আসেনি কারও।
‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ অংশ বাদ দেওয়ার বিষয়টি জানতেন না ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন প্রকল্পের অনেক কর্মকর্তারাও। ফাউন্ডেশন ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (এফএসডিএস) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিদ্দিকুর রহমান ছিলেন ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন প্রকল্পের সহকারী প্রকল্প পরিচালক (ডিপিডি)। যোগাযোগ করা হলে তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘পাসপোর্টে কী থাকবে, কী বাদ যাবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ আমাদের ছিল না। আমরা শুধু প্রকল্পটা বাস্তবায়ন করেছি। হঠাৎ শুনলাম, “একসেপ্ট ইসরায়েল” লেখাটা বাদ যাবে।’
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাদের কেউ বিষয়টি নিয়ে প্রতিবাদ করেছিলেন কি না, জানতে চাইলে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘প্রকল্প বাস্তবায়নের ছয় মাস আগে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে শুনেছি। আমরা অনেকে এ ঘটনায় অবাক হয়েছিলাম এবং প্রতিবাদ করেছিলাম বলেই তখন কয়েকটা নিউজ হয়েছিল।’
জানত না পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনুষ্ঠানিকভাবে পাসপোর্টের বিষয়টি দেখভাল করে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। তবে বৈদেশিক সম্পর্কের বিষয় হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ারে যায়। কিন্তু এই পরিবর্তনের ‘কিছুই জানতেন না’ তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
পাসপোর্টে পরিবর্তনটির বিষয়ে ২০২১ সালের ২৩ মে গণ্যমাধ্যমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় এ কে আব্দুল মোমেন বলেছিলেন, ‘বিষয়টি শোনার পর আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করি। তাঁর কাছে জেনেছি, ছয় মাস আগে নতুন পাসপোর্ট ইস্যু করার পর ‘‘দিস পাসপোর্ট ইজ ভ্যালিড ফর অল কান্ট্রিজ একসেপ্ট ইসরায়েল’’ থেকে একসেপ্ট ইসরায়েল অংশটি বাদ গেছে। এই পরিবর্তন করা হয়েছে পাসপোর্টের আন্তর্জাতিক মানের স্বার্থে।’
পরদিনই তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বিবিসি বাংলাকে বলেন, ‘এই পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত হয়েছে এক বছর আগে এবং তা বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে ছয় মাস আগে।’
এরপর ২০২৪ সালের ৩১ মে রাজধানীর চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) এক অনুষ্ঠানেও আগের কথা বলেন এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ই-পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ শব্দ দুটি বাদ দেওয়া দুঃখজনক। আমি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বা অন্য কেউ কোনো আলোচনা না করেই এমনটি (ই-পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ বাদ দেওয়া) করেছিল।
ইসরায়েলি গণমাধ্যম বিষয়টি যেভাবে দেখিয়েছিল
মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দিয়েছিল ইসরায়েল। তবে স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার লিখিতভাবে সেই স্বীকৃতি প্রত্যাখ্যান করে। ওই সময় থেকেই বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। দেশের পরবর্তী সব সরকার এই ধারা অনুসরণ করেছে। তবে পাসপোর্টে শেখ হাসিনার হঠাৎ ওই পরিবর্তন আনার বিষয়টিকে ‘ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া’ বলে জানায় ইসরায়েলি গণমাধ্যম।
২০২১ সালের ২৩ মে ইসরায়েলের পত্রিকা ‘দ্য জেরুজালেম পোস্ট’-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলের ওপর থেকে বাংলাদেশের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার খবরকে স্বাগত জানিয়েছেন ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্যাসিফিক অঞ্চলের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গিলাদ কোহেন।
সেই প্রতিবেদনে যুক্ত করা গিলাদ কোহেনের টুইট পোস্টের লিংক। সেই বার্তায় গিলাদ লেখেন, ‘গ্রেট নিউজ! বাংলাদেশে ইসরায়েলের ওপর থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। এটি একটি প্রশংসনীয় পদক্ষেপ এবং আমি ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। যাতে আমাদের দুদেশের মানুষই উপকৃত হতে পারে এবং উন্নতি করতে পারে।’
ইসরায়েলি গণমাধ্যমে এমন সংবাদ প্রচারের পর অবশ্য বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দাবি করেছিল, ইসরায়েল ভ্রমণে আগের মতোই নিষেধাজ্ঞা আছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বাংলাদেশের ইস্যু করা ই-পাসপোর্ট থেকে ইসরায়েলে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাতিল করা হয়েছে উল্লেখ করে যে টুইট করা হয়েছে সেটা বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে। নতুন ইস্যু করা ই-পাসপোর্টে “ইসরায়েল ছাড়া সব দেশ” এই পর্যবেক্ষণটি না থাকার কারণে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীদের জন্য ইসরায়েলে ভ্রমণ নিষিদ্ধই থাকবে। বাংলাদেশ সরকার ইসরায়েল ইস্যুতে তার অবস্থান থেকে সরে আসেনি এবং বাংলাদেশ তার দীর্ঘদিনের অবস্থানে কঠোর থাকবে।’
ইসরায়েলের প্রযুক্তি পাওয়া, নাকি ভারতের চাপ
ফাউন্ডেশন ফর স্ট্রাটেজিক অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (এফএসডিএস) পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিদ্দিকুর রহমান স্ট্রিমকে বলেন, ‘শেখ হাসিনা ইসরায়েল থেকে আড়িপাতা যন্ত্র আনার আলাপটা যদি সত্য হয়, তাহলে এটা একটা বড় কারণ হতে পারে।’
বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে ট্রেনিং নিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ইসরায়েল যেতেন কি না, এ প্রশ্নে সিদ্দিক বলেন, ‘টেকনিক্যাল ট্রেনিং নিয়ে ইসরায়েলে হয়তো কিছু লোক গিয়েছিল। যেমন আমরা পত্রিকায় পড়েছি ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান গিয়েছিলেন।’
এ বিষয়ে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক রাশেদুল ইসলাম রাসেল স্ট্রিমকে বলেন, ‘বাংলাদেশের তৎকালীন সরকারের মিত্র ছিল ইন্ডিয়ার বিজিপি সরকার। এই বিজিপি আবার ইসরায়েলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মিত্রদের একটা। সেক্ষেত্রে এটাকে অনেকে যুক্তি হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করেন। তবে এর পেছনে যেহেতু সরাসরি কোনো প্রমাণ নেই, তাই এগুলো আমরা কনস্পেরেসি থিওরি বা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবেই দেখি।’
অবশ্য ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির কোনো বিষয় নেই বলে তখন দাবি করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। ২০২১ সালের ২৩ মে বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, ‘বাংলাদেশের নতুন পাসপোর্টে ইসরায়েলের নাম বাদ দেওয়া হলেও দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশ কোনো ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করছে না।’
‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ শর্ত পুনর্বহাল
২০২৪ সালে গণ-অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের পাসপোর্টে ‘একসেপ্ট ইসরায়েল’ শর্ত পুনর্বহাল করে।
২০২৫ সালের ৭ এপ্রিল পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন-৪ শাখা থেকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। সেখানে ‘পূর্বের ন্যায় বাংলাদেশি পাসপোর্টে “ইসরায়েল ব্যতীত” শর্ত পুনর্বহালের’ জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। চিঠিতে সই করেন সুরক্ষা সেবা বিভাগের বহিরাগমন-৪ শাখার উপসচিব নীলিমা আফরোজ।
যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
বিষয়টি নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে মেজর (অব.) সুমন সুবহান স্ট্রিমকে বলেন, ‘ইসরায়েলের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছিল মূলত ভারতঘেঁষা রাজনীতির জন্য। কারণ, ইসরায়েলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ভালো এবং আমাদের বিগত সরকারও সব সময় ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চেয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আরেকটা কারণ হলো, বাংলাদেশের বিগত সরকার ইসরায়েল থেকে আড়িপাতা যন্ত্র আনার পরিকল্পনা করেছিল। ফলে তাঁরা চেয়েছিল, নিষেধাজ্ঞা উঠিয়ে দিয়ে কাজটা যেন সহজে করা যায়।’
আর লেফটেন্যান্ট কর্নেল সিদ্দিকুর রহমান স্ট্রিমকে বলেন, ‘শেখ হাসিনার প্রথম স্টেপ ছিল নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া। সেই হিসেবে পাসপোর্ট থেকে “একসেপ্ট ইসরায়েল” তুলে দেওয়া একটা বড় পদক্ষেপ ছিল। এটা তুলে দেওয়ার অর্থ নাগরিকরা যাওয়া-আসা করতে পারবে। তার পরের স্টেপে আসত এখানে একটা অফিস করা, একটা কনস্যুলেট করা, একটা ভিসা সেন্টার করা, একটা অ্যাম্বাসি করা। আমার মনে হয়, এটা তুলে দেওয়ার পরের ধাপে হাসিনার চিন্তা ছিল ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলা।’
বাংলাদেশি আলোকচিত্রী ও লেখক শহিদুল আলমের মুক্তির দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও নেতারা। বিবৃতিদাতাদের মধ্যে রয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-সহ বিভিন্ন দল।
৩ ঘণ্টা আগেচট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে ছাত্রদল ৮ দফা ও ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেল ৩৩ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে।
৬ ঘণ্টা আগেইসি সূত্র মতে, জামায়াতে ইসলামী বর্তমানে ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের মৌচাক শাখায় দলীয় হিসাব পরিচালনা করে থাকে। চিঠিতে হিসাব নম্বর, শাখার বিস্তারিত ঠিকানা, হিসাব খোলার তারিখসহ প্রয়োজনীয় তথ্য ইসিকে সরবরাহ করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেইসরায়েলি অবরোধ ভাঙতে গাজা অভিমুখী জাহাজ থেকে আটক হওয়া বাংলাদেশি আলোকচিত্রী শহিদুল আলমের মুক্তি চেয়ে বিবৃতি দিয়েছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
৯ ঘণ্টা আগে