আ ফ ম ইউসুফ হায়দার

ভূমিকম্পের ঝুঁকির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিনের জন্য এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজও বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ ছুটি মনে হলেও এটি মূলত শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নেওয়া একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ।
এই ছুটির প্রধান কারণ হলো, ভূমিকম্পের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পুরোনো ভবনগুলোতে কোনো ধরনের কাঠামোগত ক্ষতি, ফাটল বা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে কিনা, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা। অনেক ভবন, বিশেষ করে আবাসিক হলগুলো বহু বছরের পুরোনো। ভূমিকম্পের পর বাহ্যিকভাবে কোনো ক্ষতি দেখা না গেলেও ভেতরের কাঠামোতে সূক্ষ্ম ফাটল তৈরি হতে পারে, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করলে প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের পক্ষে নিবিড়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো কঠিন। তাই হলগুলো সাময়িকভাবে খালি করে ভবনগুলোর পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য বলে আমি মনে করি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির মেয়াদ ১৫ দিন। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটি আরও কিছুটা কম। এর কারণটিও স্পষ্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধি বিশাল এবং এর অনেক ভবন ঐতিহাসিক ও শতবর্ষের পুরোনো, যেমন কার্জন হল ১৯০৫ সালে নির্মিত। এতগুলো পুরোনো ভবনের সুক্ষভাবে চেকিংয়ের জন্য বেশি সময় লাগাটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভবন তুলনামূলকভাবে নতুন হওয়ায় তাদের চেকিংয়ের জন্য কম সময়ের প্রয়োজন।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে, তবে প্রাইমারি ও মাধ্যমিক স্কুল বা অন্যান্য অফিস-ব্যাংক কেন খোলা? এর উত্তরে বলা যায়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কর্তৃপক্ষ তাদের ভবনের অবস্থা ও ঝুঁকি সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো জানেন। তাদের ভবন যদি তুলনামূলক নতুন ও নিরাপদ হয়, তবে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও উপাচার্য হিসেবে আমি এর ভবনগুলোর অবস্থা ও বয়স সম্পর্কে অবগত, তাই এই সিদ্ধান্তকে আমার কাছে অত্যন্ত যৌক্তিক মনে হয়েছে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, হল বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ঢাকার অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বা মেসে আশ্রয় নেবে কিনা। এই আশঙ্কাটি অমূলক। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পাশাপাশি ক্লাসও স্থগিত করা হয়েছে। সুতরাং, শিক্ষার্থীদের ঢাকায় থাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বরং এই সুযোগে তারা নিজ নিজ বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাউকে হল ছেড়ে অন্য কোথাও থাকতে বাধ্য করছে না।
সবশেষে বলা যায়, এই সিদ্ধান্তটি কেবল তাৎক্ষণিক ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য নয়। এটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পুরোনো ভবনগুলোর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ বা ‘ওভারহলিং’ করার একটি সুযোগও বটে। অতীতেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেমন, ৮০-র দশকে কার্জন হলের মূল অডিটোরিয়ামের ছাদ সম্পূর্ণরূপে ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। এমনকি এর পাশের অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স ভবনটিকেও কার্জন হলের স্থাপত্যের আদলে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছিল।
সার্বিকভাবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নতির প্রয়োজনে এই ছুটির সিদ্ধান্ত একটি সময়োপযোগী এবং অপরিহার্য পদক্ষেপ।
লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য

ভূমিকম্পের ঝুঁকির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ১৫ দিনের জন্য এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ স্যার সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজও বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আপাতদৃষ্টিতে সাধারণ ছুটি মনে হলেও এটি মূলত শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সকলের নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নেওয়া একটি সতর্কতামূলক পদক্ষেপ।
এই ছুটির প্রধান কারণ হলো, ভূমিকম্পের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পুরোনো ভবনগুলোতে কোনো ধরনের কাঠামোগত ক্ষতি, ফাটল বা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে কিনা, তা পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে যাচাই করা। অনেক ভবন, বিশেষ করে আবাসিক হলগুলো বহু বছরের পুরোনো। ভূমিকম্পের পর বাহ্যিকভাবে কোনো ক্ষতি দেখা না গেলেও ভেতরের কাঠামোতে সূক্ষ্ম ফাটল তৈরি হতে পারে, যা ভবিষ্যতে বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
শিক্ষার্থীরা হলে অবস্থান করলে প্রকৌশলী ও বিশেষজ্ঞদের পক্ষে নিবিড়ভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো কঠিন। তাই হলগুলো সাময়িকভাবে খালি করে ভবনগুলোর পূর্ণাঙ্গ মূল্যায়ন করার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য বলে আমি মনে করি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছুটির মেয়াদ ১৫ দিন। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর ছুটি আরও কিছুটা কম। এর কারণটিও স্পষ্ট। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিধি বিশাল এবং এর অনেক ভবন ঐতিহাসিক ও শতবর্ষের পুরোনো, যেমন কার্জন হল ১৯০৫ সালে নির্মিত। এতগুলো পুরোনো ভবনের সুক্ষভাবে চেকিংয়ের জন্য বেশি সময় লাগাটাই স্বাভাবিক। অন্যদিকে, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভবন তুলনামূলকভাবে নতুন হওয়ায় তাদের চেকিংয়ের জন্য কম সময়ের প্রয়োজন।
অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে, তবে প্রাইমারি ও মাধ্যমিক স্কুল বা অন্যান্য অফিস-ব্যাংক কেন খোলা? এর উত্তরে বলা যায়, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কর্তৃপক্ষ তাদের ভবনের অবস্থা ও ঝুঁকি সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো জানেন। তাদের ভবন যদি তুলনামূলক নতুন ও নিরাপদ হয়, তবে খোলা রাখার সিদ্ধান্ত তাদের নিজস্ব এখতিয়ার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক ও উপাচার্য হিসেবে আমি এর ভবনগুলোর অবস্থা ও বয়স সম্পর্কে অবগত, তাই এই সিদ্ধান্তকে আমার কাছে অত্যন্ত যৌক্তিক মনে হয়েছে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো, হল বন্ধ হওয়ায় শিক্ষার্থীরা ঢাকার অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে বা মেসে আশ্রয় নেবে কিনা। এই আশঙ্কাটি অমূলক। কারণ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের পাশাপাশি ক্লাসও স্থগিত করা হয়েছে। সুতরাং, শিক্ষার্থীদের ঢাকায় থাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বরং এই সুযোগে তারা নিজ নিজ বাড়িতে পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাউকে হল ছেড়ে অন্য কোথাও থাকতে বাধ্য করছে না।
সবশেষে বলা যায়, এই সিদ্ধান্তটি কেবল তাৎক্ষণিক ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য নয়। এটি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পুরোনো ভবনগুলোর প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ বা ‘ওভারহলিং’ করার একটি সুযোগও বটে। অতীতেও এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেমন, ৮০-র দশকে কার্জন হলের মূল অডিটোরিয়ামের ছাদ সম্পূর্ণরূপে ভেঙে নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল। এমনকি এর পাশের অ্যাপ্লাইড ফিজিক্স ভবনটিকেও কার্জন হলের স্থাপত্যের আদলে নতুন রূপ দেওয়া হয়েছিল।
সার্বিকভাবে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি অবকাঠামোগত উন্নতির প্রয়োজনে এই ছুটির সিদ্ধান্ত একটি সময়োপযোগী এবং অপরিহার্য পদক্ষেপ।
লেখক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য

প্রকৃতি তার নিজস্ব ভাষায় সতর্কবার্তা পাঠায়, কিন্তু মানুষ কি সেই ভাষা বুঝতে পারছে? সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশে, বিশেষ করে রাজধানী ঢাকায় যেভাবে ঘন ঘন ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে, তা আমাদের অস্তিত্বের প্রতি এক বিশাল প্রশ্নবোধক চিহ্ন ছুড়ে দিয়েছে।
৩ ঘণ্টা আগে
একটি স্মার্টফোন, ইন্টারনেট কানেকশন—২০২৫ সালের বাংলাদেশে কারো জীবন ধ্বংস করতে মনে হয় এটুকুই যথেষ্ট। মাদারীপুরের বাউল আবুল সরকারের গ্রেপ্তারের ঘটনাটি আপাতদৃষ্টিতে ‘ধর্মীয় অনুভূতি’র মনে হলেও, এর পেছনের কারিগর মূলত ‘প্রযুক্তিগত দুর্বৃত্তায়ন’।
৩ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশের সরকারি ঋণ ২০২৫ সালে ২১ ট্রিলিয়ন টাকার সীমা পেরিয়ে যাওয়ার ঘটনা অনেকেই শুধু একটি সংখ্যা হিসেবে দেখছেন। কিন্তু অর্থনীতির ভেতর থেকে বিষয়টি দেখলে বোঝা যায় এটি আমাদের আর্থিক বাস্তবতার একটি স্পষ্ট বার্তা। রাজস্ব সংগ্রহ যেমন বাড়েনি, উন্নয়ন ব্যয় তেমনই ধীরে ধীরে সম্প্রসারিত হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
মাস চারেক আগে, গত ২১ জুলাই রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়। এই দুর্ঘটনা বদলে দিয়েছে আমাদের জাতীয় পর্যায়ের হিসাব-নিকাশ।
১১ ঘণ্টা আগে