গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকা বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের উন্নয়ন করা আবাসিক প্লট বা অ্যাপার্টমেন্ট (ফ্ল্যাট) হস্তান্তর ও এর বিপরীতে ঋণ নিতে কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগবে না। সম্প্রতি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে এ–সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন গেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, একটি নির্ধারিত ফি পরিশোধ করে সাব-রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে নিবন্ধন করে জমি বা ফ্ল্যাট হস্তান্তর করা যাবে। মন্ত্রণালয় ও তার অধীনে থাকা সংস্থার উন্নয়ন করা আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাট হস্তান্তর–পরবর্তী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সেবা সহজীকরণ, ইজারা গ্রহীতাদের দুর্ভোগ ও হয়রানি কমানো এবং দুর্নীতি দূর করতে সাত দফা নির্দেশনা দিয়েছে।
এতদিন আবাসিক প্লট বা ফ্ল্যাটের দলিল করার জন্য জন্য উত্তরাধিকার, ক্রয়, দান, হস্তান্তর-সংক্রান্ত (বিক্রয় বা বণ্টন) দলিল ও ঋণ গ্রহণের জন্য ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমোদন নিতে হতো। এখন থেকে এসব ক্ষেত্রে কোনো কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাগবে না। তবে প্লটের বিভাজন বা একত্রীকরণ এবং মাস্টারপ্ল্যানের কোনো পরিবর্তনের ক্ষেত্রে আগের মতোই অনুমতি নিতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, দলিল হস্তান্তরের ক্ষেত্রে ফ্ল্যাটের জন্য ২ শতাংশ এবং প্লটের জন্য ৩ শতাংশ ফি সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে জমা দিতে হবে দলিলগ্রহীতাকে। এই ফি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নির্ধারিত অর্থনৈতিক কোড অনুসারে নন-ট্যাক্স রেভিনিউ (এনটিআর) হিসেবে আদায় করা হবে।
হস্তান্তরের পর দলিলের এক কপি এবং নামজারি–সংক্রান্ত সব নথি ৯০ দিনের মধ্যে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানে জমা দিতে হবে। যদি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জমা না দেওয়া হয়, তাহলে দৈনিক ৫০ টাকা হারে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। হস্তান্তর দলিল বা নামজারি–সংক্রান্ত নথিপত্র ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানে দাখিলের ৩০ দিনের মধ্যে মালিকানা হালনাগাদ করতে হবে। এই নথিপত্র রেজিস্টার্ড ডাকের পাশাপাশি ই–মেইল বা ইলেকট্রনিক অন্য কোনো মাধ্যমে দলিলগ্রহীতাকে দিতে হবে।
ইজারা দলিলের মেয়াদ শেষে (৯৯ বছর পর) তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে নবায়ন হয়ে যাবে। দলিল ফি দিতে হবে না। তবে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি ছাড়া প্লট ভাগ বা একাধিক প্লট একত্রীকরণ, মাস্টারপ্ল্যান পরিবর্তন করা যাবে না।
আবাসিক ব্যতীত অন্যান্য সম্পত্তি অর্থাৎ প্রাতিষ্ঠানিক, বাণিজ্য ও শিল্প প্লট, ফ্ল্যাট বা জায়গা হস্তান্তর ও নামজারির ক্ষেত্রে ইজারাদাতা প্রতিষ্ঠানের অনুমতি নেওয়ার বিধান বহাল থাকবে। তবে যেসব প্লট বা ফ্ল্যাটে মালিকানা নিয়ে বিরোধ রয়েছে বা পরিত্যক্ত সম্পত্তি হিসেবে তালিকাভুক্ত বা বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে (জানুয়ারি ২০০৯ থেকে জুলাই ২০২৪ পর্যন্ত) সেগুলোর ক্ষেত্রে এখনকার মতোই অনুমোদন নিতে হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোন কোন আবাসিক প্লট ও ফ্ল্যাট অনুমোদন ছাড়াই হস্তান্তর সম্ভব—সেই তালিকা যথাসম্ভব দ্রুত প্রকাশ করা হবে। প্রকাশিত তালিকায় যদি কোনো ভুল বা ত্রুটি থাকে, তা সংশোধনের ক্ষমতা কর্তৃপক্ষ সংরক্ষণ করবে।