leadT1ad

ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষায় দুটি নতুন অধ্যাদেশ জারি

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
ঢাকা

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২০: ৫২
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। সংগৃহীত ছবি

নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্যের গোপনীয়তা, নিরাপত্তা ও মালিকানা নিশ্চিত করতে দুটি যুগান্তকারী অধ্যাদেশ জারি করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ‘ব্যক্তিগত উপাত্ত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ এবং ‘জাতীয় উপাত্ত ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ, ২০২৫’ নামের এই আইন দুটির মাধ্যমে এখন থেকে যেকোনো তথ্য সংগ্রহ, সংরক্ষণ বা ব্যবহারের আগে নাগরিকের সুস্পষ্ট সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

আজ রোববার (৯ নভেম্বর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এই অধ্যাদেশ দুটির মাধ্যমে প্রত্যেক নাগরিককে তাঁর তথ্যের প্রকৃত মালিক হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। এখন থেকে সরকারি বা বেসরকারি যেকোনো পক্ষ কেবল ‘উপাত্ত-জিম্মাদার’ বা ‘প্রক্রিয়াকারী’ হিসেবে তথ্য প্রক্রিয়া করতে পারবে। কোনো নাগরিক যেকোনো ডেটাবেইসে থাকা নিজের তথ্য দেখতে, ভুল সংশোধন করতে, মুছে ফেলতে এবং নিজের তথ্যের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া স্বয়ংক্রিয় সিদ্ধান্তে বাধা দেওয়ার অধিকার রাখবেন।

আর্থিক, স্বাস্থ্য, জেনেটিক ও বায়োমেট্রিকের মতো সংবেদনশীল তথ্যগুলোকে অতিরিক্ত সুরক্ষা দেওয়া হয়েছে। এসব তথ্যের সুরক্ষার লঙ্ঘন ঘটলে প্রশাসনিক জরিমানা, ক্ষতিপূরণ, অর্থদণ্ড এবং শাস্তির বিধানও রাখা হয়েছে। এসব বিষয় তদারকির জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাবিশিষ্ট কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়েছে।

শিশু ও সংবেদনশীল তথ্যের বিশেষ সুরক্ষা

নতুন অধ্যাদেশে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের তথ্য সুরক্ষার জন্য কার্যকর বিধান রাখা হয়েছে। তাদের তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে অভিভাবকের সম্মতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়া, শিশুদের অনলাইন ট্র্যাকিং বা তাদের প্রোফাইল ব্যবহার করে বিজ্ঞাপন প্রচারের মতো কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো ও ডিজিটাল অবকাঠামো

নাগরিকদের তথ্য ব্যবস্থাপনা কার্যকর করার জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জাতীয় কর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে, যা নীতিমালা প্রণয়ন, আইনের প্রয়োগ তদারকি এবং অভিযোগ নিষ্পত্তির দায়িত্বে থাকবে। এই কর্তৃপক্ষ সব রাষ্ট্রীয় সফটওয়্যার ও ডেটাবেইসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

তথ্যের নিরাপদ আদান-প্রদানের জন্য ‘ন্যাশনাল রেসপন্সিবল ডেটা এক্সচেঞ্জ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে এবং ন্যূনতমকরণের নীতি অনুসরণ করে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সহজে তথ্য বিনিময় করতে পারবে। এ ছাড়া, নাগরিকদের জন্য একটি ‘একক ডিজিটাল পরিচয়’ ধারণারও প্রবর্তন করা হয়েছে, যার মাধ্যমে একটি আইডি ব্যবহার করেই বিভিন্ন সরকারি ও ডিজিটাল সেবা গ্রহণ করা যাবে।

মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই পদক্ষেপগুলো বিশ্বব্যাপী ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষার আধুনিক প্রবণতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা একই সঙ্গে বিনিয়োগবান্ধব এবং মানবাধিকার সুরক্ষায় সহায়ক হবে। এর ফলে অনলাইন ব্যবসা-বাণিজ্য, ক্লাউড কম্পিউটিং এবং আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি-বাণিজ্যে সহযোগিতা সহজ হবে এবং রাষ্ট্রের ডিজিটাল রূপান্তর ত্বরান্বিত হবে।

Ad 300x250
সর্বাধিক পঠিত

সম্পর্কিত