সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ সাইবার স্পেসের বিভিন্ন মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর নানা পরিকল্পনায় ব্যস্ত থাকলেও, কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোর তা বাস্তবায়নের কোনো সক্ষমতা নেই বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে এ বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে বাড়তি সতর্কতা নেওয়া হয়েছে এবং কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরির অপচেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
আজ রোববার (৯ নভেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন একাধিক কর্মকর্তা স্ট্রিমকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
তাঁরা জানান, রাজধানীর দু-একটি জায়গায় কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটছে, যেমন ঝটিকা মিছিল বা নাশকতার অপচেষ্টা। তবে ১৩ নভেম্বর ঘিরে কিছুই হবে না উল্লেখ করে তাঁরা বলেন, ‘এ নিয়ে জনমনে বাড়তি উদ্বেগের কিছুই নেই। তাদের সেই সক্ষমতা নেই। আগের তুলনায় পুলিশ বেশি সতর্ক ও তৎপর।’
এ প্রসঙ্গে পুলিশ সদর দপ্তরের সহকারী মহাপরিদর্শক (মিডিয়া) এ এইচ এম শাহাদাত হোসাইন স্ট্রিমকে বলেন, ‘নির্বাচনকে সামনে রেখে কার্যক্রম নিষিদ্ধ সংগঠনগুলোসহ বিভিন্ন অপশক্তি সাইবার স্পেসে নানা ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে। আমাদের সাইবার পেট্রোল টিম সেগুলো শনাক্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘সারাদেশেই পুলিশকে বাড়তি সতর্কতা নিয়ে দায়িত্ব পালনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’
তিন দিনে এক লাখ বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা
রাজধানীসহ সারাদেশে পুলিশের বাড়তি নজরদারি শুরু হয়েছে এবং বিভিন্ন সড়কে তল্লাশি চৌকি বসানো হয়েছে। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এটি নির্বাচনকে সামনে রেখে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে নিয়মিত নিরাপত্তা মহড়ার অংশ।
ভারতে অবস্থানরত কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ১৩ নভেম্বর ‘লকডাউন’ কর্মসূচির ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ও গোয়েন্দারা সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং সাইবার পেট্রোলিং বাড়ানো হয়েছে।
ডিএমপির উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় ডিবির অভিযানে ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—রূপচান বেপারী, আবরার খান তাহমিদ, রায়হান খান আজাদ, এ বি এম নুরুল হক, মো. আবুল কালাম আজাদ, মো. গিয়াস উদ্দিন খোকন, মো. মিজানুর রহমান ভূঁইয়া, মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. জসিম, মো. মাহবুব রহমান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, ইঞ্জিনিয়ার আবুল কালাম, মোহাম্মদ শাহজালাল, মো. দেলোয়ার হোসেন, ইউনুস সরদার, মো. আকবর হোসেন, মো. আবু সাঈদ, মো. সামছুদ্দিন আহমেদ সেলিম, রায়হান উদ্দিন রেহান, মো. মেজবাহ উদ্দিন প্রিন্স, মরিয়ম পারভীন, মো. নাসির সরকার, আলী হোসেন, মো. মানিক খন্দকার ও মো. হাবিবুর রহমান কামাল।
ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি) জানিয়েছে, কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের শীর্ষ নেতাদের পরিকল্পনা ছিল আগামী ১০ থেকে ১২ নভেম্বর পর্যন্ত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান লেখা এক লাখ গ্যাস বেলুন ওড়ানোর। জনমনে আতঙ্ক তৈরির মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোই তাদের উদ্দেশ্য ছিল বলে গ্রেপ্তারকৃতরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে।
গভীর রাতে যানবাহনে আগুন
এদিকে, শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীতে বিচ্ছিন্নভাবে কয়েকটি যানবাহনে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। মিরপুর-২ নম্বর এলাকায় ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বাসসহ দুটি বাসে এবং মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার একটি গ্যারেজে থাকা একটি পিকআপ ও তিনটি মাইক্রোবাসে আগুন দেওয়া হয়। পুলিশ এসব ঘটনার তদন্ত করছে এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছে।