leadT1ad

আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন

বাসস
বাসস
প্রকাশ : ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ৫৪
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: সংগৃহীত

আমানতকারীদের স্বার্থ সুরক্ষায় উপদেষ্টা পরিষদ ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়ার নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়।

সভা শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

প্রেস সচিব বলেন, এই অধ্যাদেশটি দেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষায় যুগান্তকারী আইন হিসেবে বিবেচিত হবে। আগে যেখানে ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০ অনুসারে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পর্যন্ত আমানত সুরক্ষিত ছিল, সেখানে নতুন এই অধ্যাদেশে তা দ্বিগুণ করে দুই লাখ টাকা করা হয়েছে। এতে দেশের আমানতকারীরা উপকৃত হবেন।

প্রেস সচিব জানান, ব্যাংক আমানত বীমা আইন, ২০০০-কে অধিকতর যুগোপযোগী করার লক্ষ্যে ‘আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫’-এর খসড়া প্রণয়ন করা হয়। এ সংক্রান্ত খসড়া তৈরি ও উন্নয়ন সহযোগীদের মতামত গ্রহণের পর এটি মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে জনগণের মতামত সংগ্রহ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থার সঙ্গে সভা-সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে প্রয়োজনীয় সংশোধন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত অধ্যাদেশে ছয়টি অধ্যায় ও ৩৩টি ধারা রয়েছে। এতে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হিসেবে দুটি পৃথক তহবিলের বিধান রাখা হয়েছে — ‘ব্যাংক কোম্পানি আমানত সুরক্ষা তহবিল’ ও ‘ফাইনান্স কোম্পানি আমানত সুরক্ষা তহবিল’। এই তহবিল দুটি পরস্পরের সাথে বিনিময়যোগ্য নয়, ঋণ আদান-প্রদান করতে পারবে না এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের অন্যান্য তহবিলের অন্তর্ভুক্ত হবে না।

তহবিল পরিচালনার জন্য একটি ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হবে, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে। এছাড়া, অধ্যাদেশে ব্যাংকিং ও ফাইনান্স প্রতিষ্ঠানগুলোকে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। নতুনভাবে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ব্যাংক ও কোম্পানিগুলো ৩০ দিনের মধ্যে প্রারম্ভিক প্রিমিয়াম জমা দিতে বাধ্য থাকবেন। বিদ্যমান ও নতুন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ফাইনান্স কোম্পানিগুলোকে ৩১ জুলাই ২০২৮-এর মধ্যে সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

প্রারম্ভিক প্রিমিয়ামের হার নির্ধারিত হবে মূলধনের সর্বনিম্ন ০.৫০ শতাংশ হিসেবে অথবা ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক নির্ধারিত হারে। তহবিলের অর্থ বিনিয়োগে মুনাফা অর্জনের পাশাপাশি নিরাপদ বিনিয়োগ, বৈচিত্র ও তারল্য সংরক্ষণের উপর জোর দেওয়া হবে।

শফিকুল আলম আরও জানান, নতুন অধ্যাদেশে প্রত্যেক আমানতকারীর জন্য সুরক্ষিত আমানতের সর্বোচ্চ সীমা এক লাখ টাকার পরিবর্তে দুই লাখ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে, যা দেশের প্রায় ৯৩ শতাংশ আমানতকারীকে সুরক্ষা প্রদান করবে। এছাড়া, প্রতি তিন বছর অন্তর ট্রাস্টি বোর্ড সর্বোচ্চ সীমা পুনর্নির্ধারণের সুপারিশ করতে পারবে।

অধ্যাদেশ অনুযায়ী, সুরক্ষিত আমানতের দাবির নিষ্পত্তি সময়সীমা ১৮০ কার্যদিবস থেকে কমিয়ে ১৭ কার্যদিবসে আনা হবে।

প্রেস সচিব বলেন, আমানত সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ অর্থনৈতিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি জনগণের আস্থা বৃদ্ধি করবে এবং বাংলাদেশের ব্যাংকিং খাতকে আরও দৃঢ় করবে।

Ad 300x250

সম্পর্কিত