আজ আবরার ফাহাদের শাহাদাতবার্ষিকী
স্ট্রিম ডেস্ক
ফেনী নদীর পানি-বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের বিরোধ বহু বছরের পুরোনো। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ড এই ইস্যুকে নতুনভাবে আলোচনায় আনে। ২১ বছর বয়সী আবরারকে ছাত্রলীগের কিছু সদস্য পিটিয়ে হত্যা করে। অভিযোগ ছিল—ভারতকে ফেনী নদীর পানি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার শেখ হাসিনা সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন আবরার।
আবরারের পোস্টে বলা হয়েছিল, এই সিদ্ধান্তে নোয়াখালীর কৃষি, মাছচাষ ও পানীয় জলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। আবরার তার ফেসবুকে আরও লেখেন:
‘১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোনো সমুদ্রবন্দর ছিল না। তখনকার সরকার ছয় মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি চায় ভারতের কাছে। কিন্তু ভারত তা অগ্রাহ্য করে। ফলে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় তড়িঘড়ি করে মোংলা বন্দর চালু করা হয়। নির্মম পরিহাস হলো, ভারতই এখন সেই মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
কয়েক বছর আগে ভারতের কর্ণাটক ও তামিলনাড়ু রাজ্যের মধ্যে কাবেরী নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে বড় বিতর্ক দেখা দেয়। তারা নিজেদের মধ্যেই পানি ভাগাভাগি নিয়ে দরকষাকষি করে। অথচ আমরা বিনিময় ছাড়াই প্রতিদিন ১ লাখ ৫০ হাজার ঘনমিটার পানি সরবরাহে প্রস্তুত।
এমনকি উত্তর ভারত নিজস্ব সম্পদ রক্ষায় কয়লা ও পাথর রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ আমরা নিজেদের কারখানা গ্যাসের অভাবে বন্ধ রেখেও তাদের গ্যাস দিচ্ছি। সম্ভবত কবি এমন বৈপরীত্য নিয়েই লিখেছিলেন— “অন্যের জন্য প্রাণ দাও, মন দাও, এমন সুখ কি কোথাও আছে, যেখানে নিজেকে ভুলে যেতে পারো?”’
আবরার হত্যাকাণ্ড সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় তোলে। পরবর্তী বছরগুলোতে এই হত্যাকাণ্ড সরকারবিরোধী ক্ষোভের প্রতীক হয়ে ওঠে। অবশেষে ২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর ছাত্রলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়। এই ঘটনা দেখায়, সীমান্তবর্তী পানি-রাজনীতি কীভাবে অভ্যন্তরীণ দমন-পীড়ন ও জনরোষের সঙ্গে মিশে যেতে পারে।
২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ফেনী নদীর পানি-বণ্টন প্রশ্নটি সমাধান হয়নি। ২০১৯ সালের সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে বলে মনে হলেও, বাস্তবায়নে নানা আইনি জটিলতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন করে বিরোধ উসকে দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানি সংকট বেড়ে এই সমস্যাকে আরও গভীর করেছে। বর্তমানে এই নদীসংক্রান্ত বিরোধ ৫৪টি যৌথ নদীর বণ্টন বৈষম্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা বাংলাদেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষের জীবনে বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
ফেনী নদী: চাপের মুখে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত জীবনরেখা
ফেনী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পার্বত্য এলাকা থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলায় বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। নদীটি দুই দেশের সীমান্তের বড় অংশজুড়ে প্রাকৃতিক সীমানা তৈরি করেছে। বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নদীর পানি দিয়ে ধানখেতে সেচ হয়, চিংড়ি চাষ চলে, এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত হয়। অপরদিকে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও এটি জীবনরেখা হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ভূগর্ভস্থ পানিতে লোহার মাত্রা অনেক বেশি।
ফেনী নদী নিয়ে বিরোধের সূচনা ১৯৫৮ সালে, ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আলোচনায়। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের একতরফা পানি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে, বিশেষত শুষ্ক মৌসুমে। কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল না ২০১৯ সাল পর্যন্ত। কারণ বিষয়টি গঙ্গা ও তিস্তা নদীর মতো বড় বিরোধের ছায়ায় চাপা পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে—অস্থির বর্ষা, ত্রিপুরার বন ধ্বংস ও পলি জমে নদীর প্রবাহ কমে গেছে। বর্ষায় গড় প্রবাহ ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার কিউসেক থেকে বিপজ্জনকভাবে নিচে নেমে গিয়েছে, যা বাংলাদেশে ‘ভারতের পানি চুরি’ হিসেবে দেখা হয় এবং জনঅসন্তোষ তৈরি করে।
২০১৯ সালের সমঝোতা স্মারক: পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা নাকি একতরফা আত্মসমর্পণ
২০১৯ সালে শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ফেনী নদী নিয়ে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) দুই দেশের সম্পর্কে নতুন আলোচনার জন্ম দেয়। ভারতের মন্ত্রিসভা ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর এটি অনুমোদন দেয় এবং চুক্তির কার্যকারিতা পূর্ববর্তী সময় থেকে গণনা করা হয়।
এই চুক্তির অধীনে ভারত সীমান্তসংলগ্ন স্থানে নদী থেকে সর্বোচ্চ ১.৮২ কিউসেক (প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫১ লিটার, আর প্রতিদিনের হিসাবে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ লিটার) পানি উত্তোলনের অনুমতি পায়। এতে ত্রিপুরার সাবরুম শহরের বাসিন্দাদের জন্য পানীয় জলের ঘাটতি মেটানোর কথা বলা হয়।
চুক্তির মূল শর্তগুলো ছিল—
* পানি উত্তোলনের যন্ত্র ভারত নিজস্ব ভূখণ্ডে স্থাপন করবে, তবে নদীর তলদেশের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার বহাল থাকবে।
* দুই দেশের যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) পুরো প্রক্রিয়া তদারক করবে।
* বিনিময়ে বাংলাদেশ কোনো প্রত্যক্ষ সুবিধা পায়নি; বিষয়টি ‘সুসম্পর্কের নিদর্শন’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ফেনী নদীর ওপর ১৫০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মিত হয়, যার কাজ ২০২১ সালে সম্পন্ন হয়। এতে ত্রিপুরার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ে।
ভারতে এই চুক্তি মানবিক অর্জন হিসেবে প্রচারিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তা একপাক্ষিক সমঝোতা হিসেবে সমালোচিত হয়। যেমন আবরার ফাহাদ যুক্তি দেন—এটি বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের স্বার্থ উপেক্ষা করেছে এবং ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ আইনের ন্যায্য ভাগের নীতিকে লঙ্ঘন করেছে। ২০২০ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ভারত অস্থায়ী পাম্প দিয়ে পানি উত্তোলন শুরু করলেও, পানির পরিমাণ ও পরিবেশগত ক্ষতি নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকে।
বর্তমান অবস্থা
চুক্তিটি এখনো পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি এবং আইনি জটিলতায় আটকে আছে। ২০২৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) কর্মকর্তাদের কাছে একটি আইনি নোটিশ পাঠান। তিনি অবিলম্বে পানি সরবরাহ বন্ধের দাবি জানান।
নোটিশে বলা হয়—
* এই সমঝোতা স্মারক সংবিধানের ১৪৫ ও ১৪৫(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো বাধ্যতামূলক চুক্তি নয়, কারণ এটি সংসদের অনুমোদন ও রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে।
* চুক্তিতে পারস্পরিক সুবিধা নেই এবং বিদেশি পাম্প বসানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয়েছে।
* স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ভারত অনুমোদিত ১.৮২ কিউসেকের চেয়ে পাঁচ থেকে দশগুণ বেশি পানি তুলছে, ফলে নদীর তলদেশে ক্ষয় ও প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ বা ভারতের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ভারতীয় পাম্প এখনো চালু রয়েছে। নোয়াখালীর স্থানীয়রা মাঝে মাঝে নদীর প্রবাহ কমে যাওয়ার কথা বলছেন, একে তারা ভারতের বাড়তি পানি উত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত করছেন। কিন্তু এই ব্যাপারে জেআরসির কোনো প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি।
এই অচলাবস্থা দুই দেশের বৃহত্তর সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে। ২০২৪ সালের আগস্টে ফেনী ও কুমিল্লার ভয়াবহ বন্যা, যা আংশিকভাবে ভারতের উজানের পানি ছাড়ার ফলে ঘটেছে বলে অভিযোগ, দুই দেশের সম্পর্ককে অবিশ্বাসের পথে ঠেলে দিয়েছে।
বৃহত্তর প্রেক্ষাপট: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ নদীর পানি বণ্টন
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে। এই নদীগুলো দুই দেশের প্রায় ৩০ কোটি মানুষের জীবিকা, কৃষি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, নৌপরিবহন ও পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য অপরিহার্য। এগুলোর বেশিরভাগই গঙ্গা–ব্রহ্মপুত্র–মেঘনা অববাহিকার অংশ, যা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ নদী অঞ্চল।
তবে এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা থাকা সত্ত্বেও দুই দেশের পানি-সম্পর্কে অবিশ্বাস ও উত্তেজনা দীর্ঘদিনের। ভারতের উজানে বাঁধ ও ব্যারাজ (যেমন গঙ্গার ফারাক্কা ব্যারাজ) নিয়ন্ত্রণের কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকটে পড়ে। অন্যদিকে, বর্ষায় অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় বন্যার ঝুঁকি বাড়ে।
এখন পর্যন্ত কেবল দুটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছে—১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি-বণ্টন চুক্তি (যার মেয়াদ শেষ হবে ডিসেম্বর ২০২৬-এ) এবং ২০২২ সালের কুশিয়ারা নদী বিষয়ক সমঝোতা স্মারক। কুশিয়ারা চুক্তিতে শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশকে ন্যূনতম ৩,০০০ কিউসেক প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, তিস্তা নদী নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। ২০১১ সালে খসড়া চুক্তি তৈরি হলেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আপত্তির কারণে তা স্থগিত হয়। বর্তমানে ১৯৮৩ সালের অস্থায়ী বরাদ্দই কার্যকর, যেখানে ভারতের ভাগ ৩৯%, বাংলাদেশের ৩৬%, আর বাকি অংশ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
মূল সমস্যা হলো—ন্যায্য বণ্টনের প্রশ্ন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বর্ষা ও উজানে বাঁধ নির্মাণে বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলে পানির ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এতে খরা ও লবণাক্ততা বেড়ে উপকূলীয় কৃষি ও পানীয় জলের সরবরাহ হুমকিতে পড়ছে।
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী ‘ভাটির রাষ্ট্রের অধিকার’ দাবি করে। তারা ন্যূনতম পানি প্রবাহ নিশ্চিতকরণ ও বন্যা পূর্বাভাসের জন্য তথ্য আদান-প্রদান চায়। অপরদিকে, ভারত নদীগুলোকে নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নীতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। ফলে নিজেদের রাজ্যগুলোর স্বার্থ রক্ষায় তারা নতুন চুক্তি প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে। এই পারস্পরিক অবিশ্বাসই দুই দেশের যৌথ নদী ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন জেআরসির বৈঠকে গঙ্গা চুক্তি (১৯৯৬) নবায়ন ও ১৪টি নদীর পানি-বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ সেখানে ৪০ হাজার কিউসেক পানির দাবি জানায় (বর্তমানে ৩৫ হাজার কিউসেক)। এ ছাড়া চুক্তিটি আরও ৩০ বছরের জন্য নবায়ন করতে বলে।
বাংলাদেশ তিস্তা নদীসহ আরও ১৪টি নদীর জন্য নতুন চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। পাশাপাশি বন্যা ব্যবস্থাপনা সহযোগিতা জোরদার করার প্রস্তাবও উপস্থাপন করেছে। যদিও কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি, আলোচনাগুলোকে ‘গঠনমূলক অগ্রগতি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
দুই দেশ ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ একটি যৌথ প্রযুক্তিগত কমিটি গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছে। এই কমিটি পানি প্রবাহ, তথ্য বিনিময় ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত সুপারিশ তৈরি করবে। ভারত জেআরসি কাঠামোর প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন অনেকাংশে নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের তিস্তা নিয়ে আপত্তি সমাধানের ওপর।
ফেনী নদীর পানি-বণ্টন নিয়ে বাংলাদেশ ও ভারতের বিরোধ বহু বছরের পুরোনো। ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের নির্মম হত্যাকাণ্ড এই ইস্যুকে নতুনভাবে আলোচনায় আনে। ২১ বছর বয়সী আবরারকে ছাত্রলীগের কিছু সদস্য পিটিয়ে হত্যা করে। অভিযোগ ছিল—ভারতকে ফেনী নদীর পানি ব্যবহারের অনুমতি দেওয়ার শেখ হাসিনা সরকারের সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দেন আবরার।
আবরারের পোস্টে বলা হয়েছিল, এই সিদ্ধান্তে নোয়াখালীর কৃষি, মাছচাষ ও পানীয় জলের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। আবরার তার ফেসবুকে আরও লেখেন:
‘১৯৪৭ সালের দেশভাগের পর দেশের পশ্চিমাংশে কোনো সমুদ্রবন্দর ছিল না। তখনকার সরকার ছয় মাসের জন্য কলকাতা বন্দর ব্যবহারের অনুমতি চায় ভারতের কাছে। কিন্তু ভারত তা অগ্রাহ্য করে। ফলে দুর্ভিক্ষ মোকাবিলায় তড়িঘড়ি করে মোংলা বন্দর চালু করা হয়। নির্মম পরিহাস হলো, ভারতই এখন সেই মোংলা বন্দর ব্যবহারে আগ্রহ দেখাচ্ছে।
কয়েক বছর আগে ভারতের কর্ণাটক ও তামিলনাড়ু রাজ্যের মধ্যে কাবেরী নদীর পানি ভাগাভাগি নিয়ে বড় বিতর্ক দেখা দেয়। তারা নিজেদের মধ্যেই পানি ভাগাভাগি নিয়ে দরকষাকষি করে। অথচ আমরা বিনিময় ছাড়াই প্রতিদিন ১ লাখ ৫০ হাজার ঘনমিটার পানি সরবরাহে প্রস্তুত।
এমনকি উত্তর ভারত নিজস্ব সম্পদ রক্ষায় কয়লা ও পাথর রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ আমরা নিজেদের কারখানা গ্যাসের অভাবে বন্ধ রেখেও তাদের গ্যাস দিচ্ছি। সম্ভবত কবি এমন বৈপরীত্য নিয়েই লিখেছিলেন— “অন্যের জন্য প্রাণ দাও, মন দাও, এমন সুখ কি কোথাও আছে, যেখানে নিজেকে ভুলে যেতে পারো?”’
আবরার হত্যাকাণ্ড সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় তোলে। পরবর্তী বছরগুলোতে এই হত্যাকাণ্ড সরকারবিরোধী ক্ষোভের প্রতীক হয়ে ওঠে। অবশেষে ২০২৪ সালের আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের পর ছাত্রলীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হয়। এই ঘটনা দেখায়, সীমান্তবর্তী পানি-রাজনীতি কীভাবে অভ্যন্তরীণ দমন-পীড়ন ও জনরোষের সঙ্গে মিশে যেতে পারে।
২০২৫ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ফেনী নদীর পানি-বণ্টন প্রশ্নটি সমাধান হয়নি। ২০১৯ সালের সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) বিষয়টি মীমাংসা হয়েছে বলে মনে হলেও, বাস্তবায়নে নানা আইনি জটিলতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা নতুন করে বিরোধ উসকে দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পানি সংকট বেড়ে এই সমস্যাকে আরও গভীর করেছে। বর্তমানে এই নদীসংক্রান্ত বিরোধ ৫৪টি যৌথ নদীর বণ্টন বৈষম্যের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা বাংলাদেশের প্রায় ১৬ কোটি মানুষের জীবনে বিরুপ প্রভাব ফেলছে।
ফেনী নদী: চাপের মুখে গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত জীবনরেখা
ফেনী নদী ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পার্বত্য এলাকা থেকে উৎপন্ন হয়ে প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে বাংলাদেশের নোয়াখালী জেলায় বঙ্গোপসাগরে মিশেছে। নদীটি দুই দেশের সীমান্তের বড় অংশজুড়ে প্রাকৃতিক সীমানা তৈরি করেছে। বাংলাদেশের জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই নদীর পানি দিয়ে ধানখেতে সেচ হয়, চিংড়ি চাষ চলে, এবং উপকূলীয় এলাকাগুলোতে পানীয় জলের সরবরাহ নিশ্চিত হয়। অপরদিকে, ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলোতেও এটি জীবনরেখা হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে ভূগর্ভস্থ পানিতে লোহার মাত্রা অনেক বেশি।
ফেনী নদী নিয়ে বিরোধের সূচনা ১৯৫৮ সালে, ভারত ও তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের আলোচনায়। দীর্ঘদিন ধরে ভারতের একতরফা পানি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে, বিশেষত শুষ্ক মৌসুমে। কোনো আনুষ্ঠানিক চুক্তি ছিল না ২০১৯ সাল পর্যন্ত। কারণ বিষয়টি গঙ্গা ও তিস্তা নদীর মতো বড় বিরোধের ছায়ায় চাপা পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে—অস্থির বর্ষা, ত্রিপুরার বন ধ্বংস ও পলি জমে নদীর প্রবাহ কমে গেছে। বর্ষায় গড় প্রবাহ ১ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার কিউসেক থেকে বিপজ্জনকভাবে নিচে নেমে গিয়েছে, যা বাংলাদেশে ‘ভারতের পানি চুরি’ হিসেবে দেখা হয় এবং জনঅসন্তোষ তৈরি করে।
২০১৯ সালের সমঝোতা স্মারক: পারস্পরিক স্বার্থরক্ষা নাকি একতরফা আত্মসমর্পণ
২০১৯ সালে শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় ফেনী নদী নিয়ে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) দুই দেশের সম্পর্কে নতুন আলোচনার জন্ম দেয়। ভারতের মন্ত্রিসভা ২০১৯ সালের ১১ নভেম্বর এটি অনুমোদন দেয় এবং চুক্তির কার্যকারিতা পূর্ববর্তী সময় থেকে গণনা করা হয়।
এই চুক্তির অধীনে ভারত সীমান্তসংলগ্ন স্থানে নদী থেকে সর্বোচ্চ ১.৮২ কিউসেক (প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫১ লিটার, আর প্রতিদিনের হিসাবে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ লিটার) পানি উত্তোলনের অনুমতি পায়। এতে ত্রিপুরার সাবরুম শহরের বাসিন্দাদের জন্য পানীয় জলের ঘাটতি মেটানোর কথা বলা হয়।
চুক্তির মূল শর্তগুলো ছিল—
* পানি উত্তোলনের যন্ত্র ভারত নিজস্ব ভূখণ্ডে স্থাপন করবে, তবে নদীর তলদেশের ওপর বাংলাদেশের সার্বভৌম অধিকার বহাল থাকবে।
* দুই দেশের যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) পুরো প্রক্রিয়া তদারক করবে।
* বিনিময়ে বাংলাদেশ কোনো প্রত্যক্ষ সুবিধা পায়নি; বিষয়টি ‘সুসম্পর্কের নিদর্শন’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়। পরবর্তীতে ফেনী নদীর ওপর ১৫০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মিত হয়, যার কাজ ২০২১ সালে সম্পন্ন হয়। এতে ত্রিপুরার সঙ্গে বাণিজ্য বাড়ে।
ভারতে এই চুক্তি মানবিক অর্জন হিসেবে প্রচারিত হয়। কিন্তু বাংলাদেশে তা একপাক্ষিক সমঝোতা হিসেবে সমালোচিত হয়। যেমন আবরার ফাহাদ যুক্তি দেন—এটি বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলের স্বার্থ উপেক্ষা করেছে এবং ১৯৯৭ সালের জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক পানিসম্পদ আইনের ন্যায্য ভাগের নীতিকে লঙ্ঘন করেছে। ২০২০ সালে পরীক্ষামূলকভাবে ভারত অস্থায়ী পাম্প দিয়ে পানি উত্তোলন শুরু করলেও, পানির পরিমাণ ও পরিবেশগত ক্ষতি নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকে।
বর্তমান অবস্থা
চুক্তিটি এখনো পূর্ণভাবে বাস্তবায়িত হয়নি এবং আইনি জটিলতায় আটকে আছে। ২০২৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. মাহমুদুল হাসান পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) কর্মকর্তাদের কাছে একটি আইনি নোটিশ পাঠান। তিনি অবিলম্বে পানি সরবরাহ বন্ধের দাবি জানান।
নোটিশে বলা হয়—
* এই সমঝোতা স্মারক সংবিধানের ১৪৫ ও ১৪৫(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কোনো বাধ্যতামূলক চুক্তি নয়, কারণ এটি সংসদের অনুমোদন ও রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষর ছাড়াই সম্পন্ন হয়েছে।
* চুক্তিতে পারস্পরিক সুবিধা নেই এবং বিদেশি পাম্প বসানোর মাধ্যমে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয়েছে।
* স্থানীয় সূত্র অনুযায়ী, ভারত অনুমোদিত ১.৮২ কিউসেকের চেয়ে পাঁচ থেকে দশগুণ বেশি পানি তুলছে, ফলে নদীর তলদেশে ক্ষয় ও প্রাণবৈচিত্র্য ধ্বংস হচ্ছে।
চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ বা ভারতের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে ভারতীয় পাম্প এখনো চালু রয়েছে। নোয়াখালীর স্থানীয়রা মাঝে মাঝে নদীর প্রবাহ কমে যাওয়ার কথা বলছেন, একে তারা ভারতের বাড়তি পানি উত্তোলনের সঙ্গে যুক্ত করছেন। কিন্তু এই ব্যাপারে জেআরসির কোনো প্রতিবেদন এখনো প্রকাশিত হয়নি।
এই অচলাবস্থা দুই দেশের বৃহত্তর সম্পর্কেও প্রভাব ফেলছে। ২০২৪ সালের আগস্টে ফেনী ও কুমিল্লার ভয়াবহ বন্যা, যা আংশিকভাবে ভারতের উজানের পানি ছাড়ার ফলে ঘটেছে বলে অভিযোগ, দুই দেশের সম্পর্ককে অবিশ্বাসের পথে ঠেলে দিয়েছে।
বৃহত্তর প্রেক্ষাপট: বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যৌথ নদীর পানি বণ্টন
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট ৫৪টি আন্তঃসীমান্ত নদী রয়েছে। এই নদীগুলো দুই দেশের প্রায় ৩০ কোটি মানুষের জীবিকা, কৃষি, বিদ্যুৎ উৎপাদন, নৌপরিবহন ও পরিবেশগত ভারসাম্যের জন্য অপরিহার্য। এগুলোর বেশিরভাগই গঙ্গা–ব্রহ্মপুত্র–মেঘনা অববাহিকার অংশ, যা বিশ্বের অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ নদী অঞ্চল।
তবে এই পারস্পরিক নির্ভরশীলতা থাকা সত্ত্বেও দুই দেশের পানি-সম্পর্কে অবিশ্বাস ও উত্তেজনা দীর্ঘদিনের। ভারতের উজানে বাঁধ ও ব্যারাজ (যেমন গঙ্গার ফারাক্কা ব্যারাজ) নিয়ন্ত্রণের কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই শুষ্ক মৌসুমে পানি সংকটে পড়ে। অন্যদিকে, বর্ষায় অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দেওয়ায় বন্যার ঝুঁকি বাড়ে।
এখন পর্যন্ত কেবল দুটি আনুষ্ঠানিক চুক্তি হয়েছে—১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি-বণ্টন চুক্তি (যার মেয়াদ শেষ হবে ডিসেম্বর ২০২৬-এ) এবং ২০২২ সালের কুশিয়ারা নদী বিষয়ক সমঝোতা স্মারক। কুশিয়ারা চুক্তিতে শুকনো মৌসুমে বাংলাদেশকে ন্যূনতম ৩,০০০ কিউসেক প্রবাহ নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।
অন্যদিকে, তিস্তা নদী নিয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি। ২০১১ সালে খসড়া চুক্তি তৈরি হলেও পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের আপত্তির কারণে তা স্থগিত হয়। বর্তমানে ১৯৮৩ সালের অস্থায়ী বরাদ্দই কার্যকর, যেখানে ভারতের ভাগ ৩৯%, বাংলাদেশের ৩৬%, আর বাকি অংশ এখনো নির্ধারিত হয়নি।
মূল সমস্যা হলো—ন্যায্য বণ্টনের প্রশ্ন। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, অনিয়মিত বর্ষা ও উজানে বাঁধ নির্মাণে বাংলাদেশের ভাটি অঞ্চলে পানির ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। এতে খরা ও লবণাক্ততা বেড়ে উপকূলীয় কৃষি ও পানীয় জলের সরবরাহ হুমকিতে পড়ছে।
বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুযায়ী ‘ভাটির রাষ্ট্রের অধিকার’ দাবি করে। তারা ন্যূনতম পানি প্রবাহ নিশ্চিতকরণ ও বন্যা পূর্বাভাসের জন্য তথ্য আদান-প্রদান চায়। অপরদিকে, ভারত নদীগুলোকে নিরাপত্তা ও উন্নয়ন নীতির দৃষ্টিকোণ থেকে দেখে। ফলে নিজেদের রাজ্যগুলোর স্বার্থ রক্ষায় তারা নতুন চুক্তি প্রক্রিয়া বিলম্বিত করে। এই পারস্পরিক অবিশ্বাসই দুই দেশের যৌথ নদী ব্যবস্থাপনায় সবচেয়ে বড় বাধা হিসেবে রয়ে গেছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে ভারত-বাংলাদেশ যৌথ নদী কমিশন জেআরসির বৈঠকে গঙ্গা চুক্তি (১৯৯৬) নবায়ন ও ১৪টি নদীর পানি-বণ্টন নিয়ে আলোচনা হয়। বাংলাদেশ সেখানে ৪০ হাজার কিউসেক পানির দাবি জানায় (বর্তমানে ৩৫ হাজার কিউসেক)। এ ছাড়া চুক্তিটি আরও ৩০ বছরের জন্য নবায়ন করতে বলে।
বাংলাদেশ তিস্তা নদীসহ আরও ১৪টি নদীর জন্য নতুন চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে। পাশাপাশি বন্যা ব্যবস্থাপনা সহযোগিতা জোরদার করার প্রস্তাবও উপস্থাপন করেছে। যদিও কোনো চূড়ান্ত চুক্তি হয়নি, আলোচনাগুলোকে ‘গঠনমূলক অগ্রগতি’ হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে।
দুই দেশ ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ একটি যৌথ প্রযুক্তিগত কমিটি গঠনের বিষয়ে একমত হয়েছে। এই কমিটি পানি প্রবাহ, তথ্য বিনিময় ও পরিবেশগত প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত সুপারিশ তৈরি করবে। ভারত জেআরসি কাঠামোর প্রতি তাদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। তবে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন অনেকাংশে নির্ভর করছে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের তিস্তা নিয়ে আপত্তি সমাধানের ওপর।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু-বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের দেশ পরিচালনায় নেতৃত্ব দেবে।
১ ঘণ্টা আগে২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর। এদিন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে ঘটে গেছে মর্মান্তিক এক ঘটনা
৪ ঘণ্টা আগেশহীদ আবরার ফাহাদের ষষ্ঠ শাহাদাত বার্ষিকীতে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে আগ্রাসনবিরোধী আটস্তম্ভ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন আট স্তম্ভের স্বপ্নদ্রষ্টা আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্য সচিব আখতার হোসেন।
১৪ ঘণ্টা আগেরাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড়ে রাস্তা থেকে প্রকাশ্যে এক ব্যবসায়ী অপহরণের শিকার হন। পরে স্বজনদের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় অপহৃতকে নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জের রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা।
১৪ ঘণ্টা আগে