আহত যোদ্ধার বয়ানে জনতার জুলাই
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট ছাত্রজনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে পতন ঘটেছিল শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী শাসনের। এ আন্দোলনে গুলির সামনে দাঁড়িয়েছিলেন অজস্র মানুষ। শহীদ হয়েছেন অনেকে। আর যাাঁরা আহত হয়ে অঙ্গ হারিয়েছেন, বদলে গেছে তাঁদের জীবনও। এখন কেমন আছেন তাঁরা? গণ-অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে স্ট্রিম আজ কথা বলেছে আহত কয়েকজন যোদ্ধার সঙ্গে। এই প্রতিবেদনে থাকল আহত যোদ্ধা ফারুখ হোসেন, সাব্বির, রাসেলের গল্প।
আবদুল্লাহ কাফি
ফারুখ হোসেন। থাকেন রাজধানীর মধ্য বাড্ডায়। স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। পেশায় ড্রাইভার। প্রাইভেটকার নিয়ে চড়ে বেড়ান গোটা দেশ। কিন্তু তাঁকে থামতে হলো চব্বিশের জুলাইয়ে। ১৮ তারিখ পুলিশের গুলিতে চোখ হারান তিনি। ফারুখের চোখ এখন ঠিকঠাক দেখে না মোবাইলের নম্বরও। ফারুখ স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমার শরীরে সতেরোটা গুলি লেগেছে। এর মধ্যে তিনটা লাগে চোখে। একটা গুলি এখনও বের করতে পারে নাই। ডাক্তার জানাইছে, গুলি বের করতে গেলে চোখ উপড়ে ফেলতে হবে। ভেতরে গুলি থাকার কারণে সুস্থ চোখটাও দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আমার ভাল চোখটাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি মনে হয় অন্ধ হয়ে যাবো!’
চোখে গুলি লাগার আগে আন্দোলনের পরিস্থিতি কেমন দেখেছিলেন জানতে চাইলে ফারুখ বলেন, ‘১৮ তারিখ আমি যখন মেরুল বাড্ডা ইউলুপের নিচে যাই, তখন চারপাশে মানুষ থইথই করতেছে। চারপাশ থেকে গুলি আসতেছে। পুলিশের সঙ্গে গুলি করতেছে আওয়ামী লীগের দোসররাও। সেদিন আমার ছেলে সঙ্গে ছিল। কিন্তু এক সময় তাঁরে হারায়ে ফেলি। ভিড়ের মধ্যে আমি তাঁরে খুঁজতে থাকি। তখন দেখি, বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের উপর থেকেও গুলি করতেছে। টিয়ারশেল মারতেছে। মানুষ দৌড়াদৌড়ি করতেছে। এর মধ্যেই আমার শরীরে গুলি লাগে। আমি মাটিতে লুটায়ে পড়ি। তখন লোকজন ধরাধরি করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
আমরা আন্দোলন করছি, অনেকে আহত হইছে। কারো চোখ নাই, হাত নাই, পা নাই। অনেকে মারা গেছে। এতকিছুর পরে আমরা আশাবাদী যে, দেশটা বদলাবে।রাসেল হাওলাদার, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফারুখ হোসেনের মতো আরও অনেকে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৮৮ জন। তাঁদের কেউ কেউ অন্ধত্ব কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন দীর্ঘ চিকিৎসায়। অনেকের ডান চোখ অন্ধ হয়ে গেছে চিরদিনের জন্য। অনেকের বাম চোখ। অনেকে আবার হারিয়েছেন দুই চোখই। তাদের মধ্যে একজন সাব্বির আহমেদ।
রাজধানীর মগবাজারে থাকেন সাব্বির। পড়াশোনার পাশাপাশি করেন চাকরি। চোখ হারানোর পর বন্ধ হয়ে গেছে পড়াশোনা। দুই চোখে দেখেন না একদম। বুঝতে পারেন না আলো-অন্ধকারও। কারওয়ান বাজারে আহত হন সাব্বির। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমি ৪ আগস্ট গুলি খাই। সেদিন খুব গোলাগুলি হচ্ছিল। পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে হেলমেট পরে গুলি চায় আওয়ামী লীগের লোকেরাও। আমি যেখানে ছিলাম, সেখানে অনেকে শহীদ হয়েছেন। একজনের মাথায় গুলি লেগে মগজ বের হয়ে যায়। সেই মগজ ছিটকে গিয়ে পড়ে আরেক জনের হাতে।’
যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলন করেছেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সাব্বির বলেন, ‘আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে গিয়েছি সেটা তো আসলে এক বছরে পূরণ হওয়ার মতো না। কারণ ৫৪ বছর ধরে দেশে একটা সিস্টেম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এই সিস্টেমটারই পরিবর্তন করতে হবে। আমলা থেকে একেবারে নিচ পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া শুধু সরকারের পরিবর্তন দিয়ে দেশ পরিবর্তনের নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। এটা একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার কিছুটা অর্জন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘খালি চোখে দেখা যায়, কিছুই হয়নি। আবার অনেক কিছুই হইছে, যেইটা আসলে অনেকে উপলব্ধি করতে পারে না।’
আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে গিয়েছি সেটা তো আসলে এক বছরে পূরণ হওয়ার মতো না। কারণ ৫৪ বছর ধরে দেশে একটা সিস্টেম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এই সিস্টেমটারই পরিবর্তন করতে হবে।সাব্বির আহমেদ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত
উত্তর বাড্ডার কুমিল্লা পাড়ার বাসিন্দা রাসেল হাওলাদার। জুলাইয়ের ১৯ তারিখ গুলশানের গুদারাঘাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। রাসেল স্ট্রিমকে বলেন, ‘সেদিন ছিল শুক্রবার। জুমার আগ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করি। পুলিশও তখন আমাদের বিপরীতে অবস্থান নেয়। কিন্তু জুমার পর ভয়ংকর রূপ ধারণ করে পুলিশ। নামাজ শেষ করে আবার যখন আন্দোলনে আসি, তখন আমার পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি। তখন গোলাগুলি চলছে। আমরা স্লোগান দিচ্ছি। লোকজন আহত হচ্ছে। তখন আমি একটু ঘুরে অন্য গলি দিয়ে দেখার চেষ্টা করি, পুলিশের পরিস্থিতি আসলে কী। কিন্তু গলি থেকে মাথা বের করার সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালায় পুলিশ। ভরা মজলিসের মধ্যে যে ছররা গুলি ব্যবহার করে, সেটা আমার একার উপর ছুঁড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আমার সাদা পাঞ্জাবি লাল হয়ে যায়। সারা গায়ে প্রায় আশিটার মতো গুলি লাগে। চোখে লাগে অনেকগুলো। তারপরই মূলত আমি চোখ হারাই। আমি আর কিছু দেখতে পারছিলাম না।’
আহত হওয়ার পর চিকিৎসা নিতে কোনো বেগ পেতে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে রাসেল বলেন, ‘আহত হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে নানা ধরণের হয়রানির শিকার হইছি। রাস্তায় অনবরত গুলি চলতেছিল। গুদারাঘাট থেকে আমি ঢাকা মেডিকেল গেছি অটো রিকশা করে। অ্যাম্বুলেন্সে যাইতে চাইছিলাম কিন্তু আমাদেরকে তারা নিতে চায় নাই। এক অ্যাম্বুলেন্সে উঠে দেখি সেখানে পুলিশের পানি, পুলিশের খাবার। সেদিন কোন অ্যাম্বুলেন্স আমাদের সাহায্য করে নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল যাওয়ার পর সেখান থেকে বলা হয়, আপনার চোখের অবস্থা খারাপ। আপনি আগে চোখের চিকিৎসা করুন। পরে আমার বন্ধুরা আমাকে নিয়ে যায় আগারগাঁও চক্ষু হাসপাতালে। সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার সময় আবার হেনস্তার শিকার হই। মহাখালী, তিতুমীর কলেজের সামনে পুলিশ, ছাত্রলীগ মিলে রাস্তা বন্ধ করে রাখে। আমাদের গাড়ি আটকানো হয়। আমি আহত, তবুও তারা আমাকে মারতে চায়। তখন পুলিশ ছিল নিরব। আমরা তাদের হাতে-পায়ে ধইরা বাড়ি ফিরি।’
নিজের আশা জানিয়ে রাসেল বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করছি, অনেকে আহত হইছে। কারো চোখ নাই, হাত নাই, পা নাই। অনেকে মারা গেছে। এতকিছুর পরে আমরা আশাবাদী যে, দেশটা বদলাবে। আমরা যে প্রত্যাশা নিয়ে আন্দোলনটা করছি, আমরা চাই সে স্বপ্নগুলো পূরণ হোক। একটা বৈষম্যহীন দেশ গড়ে উঠুক। যেখানে সবাই একসঙ্গে বাস করতে পারবে।’
ফারুখ হোসেন। থাকেন রাজধানীর মধ্য বাড্ডায়। স্ত্রী আর দুই সন্তান নিয়ে তাঁর সংসার। পেশায় ড্রাইভার। প্রাইভেটকার নিয়ে চড়ে বেড়ান গোটা দেশ। কিন্তু তাঁকে থামতে হলো চব্বিশের জুলাইয়ে। ১৮ তারিখ পুলিশের গুলিতে চোখ হারান তিনি। ফারুখের চোখ এখন ঠিকঠাক দেখে না মোবাইলের নম্বরও। ফারুখ স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমার শরীরে সতেরোটা গুলি লেগেছে। এর মধ্যে তিনটা লাগে চোখে। একটা গুলি এখনও বের করতে পারে নাই। ডাক্তার জানাইছে, গুলি বের করতে গেলে চোখ উপড়ে ফেলতে হবে। ভেতরে গুলি থাকার কারণে সুস্থ চোখটাও দিন দিন খারাপ হচ্ছে। আমার ভাল চোখটাও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমি মনে হয় অন্ধ হয়ে যাবো!’
চোখে গুলি লাগার আগে আন্দোলনের পরিস্থিতি কেমন দেখেছিলেন জানতে চাইলে ফারুখ বলেন, ‘১৮ তারিখ আমি যখন মেরুল বাড্ডা ইউলুপের নিচে যাই, তখন চারপাশে মানুষ থইথই করতেছে। চারপাশ থেকে গুলি আসতেছে। পুলিশের সঙ্গে গুলি করতেছে আওয়ামী লীগের দোসররাও। সেদিন আমার ছেলে সঙ্গে ছিল। কিন্তু এক সময় তাঁরে হারায়ে ফেলি। ভিড়ের মধ্যে আমি তাঁরে খুঁজতে থাকি। তখন দেখি, বিভিন্ন বিল্ডিংয়ের উপর থেকেও গুলি করতেছে। টিয়ারশেল মারতেছে। মানুষ দৌড়াদৌড়ি করতেছে। এর মধ্যেই আমার শরীরে গুলি লাগে। আমি মাটিতে লুটায়ে পড়ি। তখন লোকজন ধরাধরি করে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়।’
আমরা আন্দোলন করছি, অনেকে আহত হইছে। কারো চোখ নাই, হাত নাই, পা নাই। অনেকে মারা গেছে। এতকিছুর পরে আমরা আশাবাদী যে, দেশটা বদলাবে।রাসেল হাওলাদার, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ফারুখ হোসেনের মতো আরও অনেকে চোখে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এর মধ্যে জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ৬৮৮ জন। তাঁদের কেউ কেউ অন্ধত্ব কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন দীর্ঘ চিকিৎসায়। অনেকের ডান চোখ অন্ধ হয়ে গেছে চিরদিনের জন্য। অনেকের বাম চোখ। অনেকে আবার হারিয়েছেন দুই চোখই। তাদের মধ্যে একজন সাব্বির আহমেদ।
রাজধানীর মগবাজারে থাকেন সাব্বির। পড়াশোনার পাশাপাশি করেন চাকরি। চোখ হারানোর পর বন্ধ হয়ে গেছে পড়াশোনা। দুই চোখে দেখেন না একদম। বুঝতে পারেন না আলো-অন্ধকারও। কারওয়ান বাজারে আহত হন সাব্বির। তিনি স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমি ৪ আগস্ট গুলি খাই। সেদিন খুব গোলাগুলি হচ্ছিল। পুলিশসহ বিভিন্ন বাহিনীর সঙ্গে হেলমেট পরে গুলি চায় আওয়ামী লীগের লোকেরাও। আমি যেখানে ছিলাম, সেখানে অনেকে শহীদ হয়েছেন। একজনের মাথায় গুলি লেগে মগজ বের হয়ে যায়। সেই মগজ ছিটকে গিয়ে পড়ে আরেক জনের হাতে।’
যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলন করেছেন সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সাব্বির বলেন, ‘আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে গিয়েছি সেটা তো আসলে এক বছরে পূরণ হওয়ার মতো না। কারণ ৫৪ বছর ধরে দেশে একটা সিস্টেম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এই সিস্টেমটারই পরিবর্তন করতে হবে। আমলা থেকে একেবারে নিচ পর্যন্ত পরিবর্তন করতে হবে। এছাড়া শুধু সরকারের পরিবর্তন দিয়ে দেশ পরিবর্তনের নিশ্চয়তা দেওয়া যায় না। এটা একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। আমরা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার কিছুটা অর্জন করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘খালি চোখে দেখা যায়, কিছুই হয়নি। আবার অনেক কিছুই হইছে, যেইটা আসলে অনেকে উপলব্ধি করতে পারে না।’
আমরা যে স্বপ্ন নিয়ে আন্দোলনে গিয়েছি সেটা তো আসলে এক বছরে পূরণ হওয়ার মতো না। কারণ ৫৪ বছর ধরে দেশে একটা সিস্টেম প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে। এই সিস্টেমটারই পরিবর্তন করতে হবে।সাব্বির আহমেদ, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত
উত্তর বাড্ডার কুমিল্লা পাড়ার বাসিন্দা রাসেল হাওলাদার। জুলাইয়ের ১৯ তারিখ গুলশানের গুদারাঘাট এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন তিনি। রাসেল স্ট্রিমকে বলেন, ‘সেদিন ছিল শুক্রবার। জুমার আগ পর্যন্ত আমরা আন্দোলন করি। পুলিশও তখন আমাদের বিপরীতে অবস্থান নেয়। কিন্তু জুমার পর ভয়ংকর রূপ ধারণ করে পুলিশ। নামাজ শেষ করে আবার যখন আন্দোলনে আসি, তখন আমার পরনে ছিল সাদা পাঞ্জাবি। তখন গোলাগুলি চলছে। আমরা স্লোগান দিচ্ছি। লোকজন আহত হচ্ছে। তখন আমি একটু ঘুরে অন্য গলি দিয়ে দেখার চেষ্টা করি, পুলিশের পরিস্থিতি আসলে কী। কিন্তু গলি থেকে মাথা বের করার সঙ্গে সঙ্গে গুলি চালায় পুলিশ। ভরা মজলিসের মধ্যে যে ছররা গুলি ব্যবহার করে, সেটা আমার একার উপর ছুঁড়ে। সঙ্গে সঙ্গে আমার সাদা পাঞ্জাবি লাল হয়ে যায়। সারা গায়ে প্রায় আশিটার মতো গুলি লাগে। চোখে লাগে অনেকগুলো। তারপরই মূলত আমি চোখ হারাই। আমি আর কিছু দেখতে পারছিলাম না।’
আহত হওয়ার পর চিকিৎসা নিতে কোনো বেগ পেতে হয়েছে কিনা জানতে চাইলে রাসেল বলেন, ‘আহত হয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথে নানা ধরণের হয়রানির শিকার হইছি। রাস্তায় অনবরত গুলি চলতেছিল। গুদারাঘাট থেকে আমি ঢাকা মেডিকেল গেছি অটো রিকশা করে। অ্যাম্বুলেন্সে যাইতে চাইছিলাম কিন্তু আমাদেরকে তারা নিতে চায় নাই। এক অ্যাম্বুলেন্সে উঠে দেখি সেখানে পুলিশের পানি, পুলিশের খাবার। সেদিন কোন অ্যাম্বুলেন্স আমাদের সাহায্য করে নাই।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল যাওয়ার পর সেখান থেকে বলা হয়, আপনার চোখের অবস্থা খারাপ। আপনি আগে চোখের চিকিৎসা করুন। পরে আমার বন্ধুরা আমাকে নিয়ে যায় আগারগাঁও চক্ষু হাসপাতালে। সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাকে অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা শেষে বাসায় ফেরার সময় আবার হেনস্তার শিকার হই। মহাখালী, তিতুমীর কলেজের সামনে পুলিশ, ছাত্রলীগ মিলে রাস্তা বন্ধ করে রাখে। আমাদের গাড়ি আটকানো হয়। আমি আহত, তবুও তারা আমাকে মারতে চায়। তখন পুলিশ ছিল নিরব। আমরা তাদের হাতে-পায়ে ধইরা বাড়ি ফিরি।’
নিজের আশা জানিয়ে রাসেল বলেন, ‘আমরা আন্দোলন করছি, অনেকে আহত হইছে। কারো চোখ নাই, হাত নাই, পা নাই। অনেকে মারা গেছে। এতকিছুর পরে আমরা আশাবাদী যে, দেশটা বদলাবে। আমরা যে প্রত্যাশা নিয়ে আন্দোলনটা করছি, আমরা চাই সে স্বপ্নগুলো পূরণ হোক। একটা বৈষম্যহীন দেশ গড়ে উঠুক। যেখানে সবাই একসঙ্গে বাস করতে পারবে।’
এর আগে সকালে বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়, সেখানে এনসিপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন পিটার হাস। এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা শুরু হল
৪ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ লিখেছেন, আমাদের তিন দিনব্যাপী আয়োজনের ফটোফ্রেমগুলোর একটা অংশ নিয়ে কুতর্ক এবং মব সৃষ্টি করা হয়েছে। এই বিষয়ে আমাদের অবস্থান সুস্পষ্ট।
৫ ঘণ্টা আগেআগামী রমজানের আগেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের বর্ষপূর্তিতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ ঘোষণা দেন।
৬ ঘণ্টা আগেছাত্র-গণঅভ্যুত্থান ২০২৪-এর উপযুক্ত রাষ্ট্রীয় ও সাংবিধানিক স্বীকৃতি প্রদান করা হবে এবং পরবর্তী নির্বাচনে নির্বাচিত সরকারের সংস্কারকৃত সংবিধানের তফসিলে এই ঘোষণাপত্র সন্নিবেশিত থাকবে বলেও ঘোষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়।
৭ ঘণ্টা আগে