সংকটের আট বছর
রোহিঙ্গাদের আন্তর্জাতিক সহায়তার ক্রমবর্ধমান ঘাটতি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে নিরাপত্তার অভাব, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রত্যাবর্তনের আশাকে কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে।
রাতুল আল আহমেদ
আট বছর আগে ২০১৭ সালের এই দিনে (২৫ আগস্ট) নতুন করে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে সীমান্তে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঢল নামে। এই দফায় আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে সংঘটিত নৃশংস গণহত্যা থেকে বাঁচতে দুই মাসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বাংলাদেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের জন্য নিজেদের সীমান্ত খুলে দিয়েছিল বটে, তবে কিছুদিনের মধ্যেই নানা সঙ্কটে তাঁরা যেন আশ্রয়দাতাদের জন্যই বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। আট বছরেও তাদের ফিরে যাওয়ার কোনো স্পষ্ট অগ্রগতি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।
গবেষকদের মতে, এই সংকট আরও গভীর হয়ে বহুমাত্রিক রূপ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক সহায়তার ক্রমবর্ধমান ঘাটতি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে নিরাপত্তার অভাব, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রত্যাবর্তনের আশাকে কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে।
এই দীর্ঘ সময়ে একজন রোহিঙ্গাকেও আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব না হওয়ায় সংকটটি এখন এমন এক জটিল আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে, যেখানে সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ যোগ হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও তার জনগণ যেন ২০১৭ সালের সেই সংকটময় অবস্থানেই আটকে আছে, যেখানে মানবিক আশ্রয় প্রদান করা গেলেও স্থায়ী সমাধানের পথটি আজও তিমিরেই রয়ে গেছে।
সংকটের শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকার কৌশলগত কারণে রোহিঙ্গাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ‘শরণার্থী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ মূলত বোঝাতে চেয়েছিল যে, এটি একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা এবং তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। যদিও এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা না দেওয়ার মাধ্যমে যেন প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব না হারায়।
তবে গবেষকদের মতে, এই অবস্থানের একটি বড় পরিণতি হলো— রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শরণার্থী হিসেবে প্রাপ্য কিছু অধিকার ও সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
যদিও বাস্তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, গবেষক ও এনজিওগুলো তাদের ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী’ হিসেবেই সম্বোধন করে। এই দাপ্তরিক পরিচয়ের ভিন্নতা তাদের আইনি অবস্থাকে এক ধোঁয়াশাপূর্ণ জায়গায় রেখেছে এবং তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে জটিলতর করেছে।
বিগত আট বছরে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও, প্রকৃত অর্থে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে আছে। এর প্রধান কারণ হলো মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাব এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা প্রদানে তাদের ব্যর্থতা। রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের দেশে প্রত্যাবর্তন করতে চায়, যার মধ্যে নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার দাবিটি অন্যতম।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো সম্ভব হলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করা যায়নি। কারণ, এখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, বিশেষ করে জাতিসংঘ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের শর্তের ওপর জোর দিচ্ছে, যা অতীতে বাংলাদেশ হয়তো সেভাবে অনুসরণ করেনি।
সম্প্রতি এই সংকট আরও জটিল হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত বিভিন্ন গোষ্ঠী— যেমন আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের জন্য আলোচনার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে, নাকি আরাকান আর্মির সঙ্গে— যারা এখন ওই অঞ্চলের কার্যত নিয়ন্ত্রক?
বাংলাদেশ সরকারের জন্য সমস্যা হচ্ছে, আরাকান আর্মি এখনও স্পষ্ট করেনি, তারা ঠিক কী চায়। তারা কি আরাকানে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে, নাকি মিয়ানমারের অধীনে থেকেই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হয়ে থাকবে। ফলে, এ অবস্থায় একটি ‘নন-স্টেট অ্যাক্টর’ বা অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা বাংলাদেশের জন্য একটি বড়সড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, আরাকান আর্মির বিরুদ্ধেও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। ফলে, রোহিঙ্গারা এখন দুই দিক থেকে চাপের মুখে, একদিকে যেমন মিয়ানমার জান্তা, আরেকদিকে আরাকান আর্মি। এই অস্থিতিশীল পরিবেশে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন প্রায় অসম্ভব।
আট বছরে প্রত্যাবাসনে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় নতুন নতুন সংকট তৈরি হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইজরায়েলি হামলাসহ অন্যান্য বৈশ্বিক সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে সরে গেছে। একইসঙ্গে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার উন্নয়ন তহবিল ভান্ডারও সংকুচিত করে ফেলেছে। ফলে, রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা তহবিল মারাত্মকভাবে কমে গেছে, যা তাদের খাদ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক চাহিদার ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান আরেকটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আধিপত্য বিস্তার, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পগুলোতে নিয়মিত সংঘর্ষ, খুন, অপহরণের মতো অপরাধ ঘটছে। এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম কেবল ক্যাম্পের সাধারণ রোহিঙ্গা নয়, স্থানীয় বাংলাদেশিদের জন্যও মারাত্মক নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মতো সংস্থাগুলো তাদের প্রতিবেদনে এসব ক্যাম্পভিত্তিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থানের বিষয়ে আলোকপাত করেছে। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী এসব গোষ্ঠীকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সংগঠিত হতে সহায়তা করছে। যদিও বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
তবে, বাংলাদেশ এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীদের সহায়তা করুক বা নাই করুক, আরাকান আর্মির মতো শক্তিশালী বাহিনীর বিরুদ্ধে তারা লড়াইয়ে টিকতে পারবে না বলেই আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে।
বিশ্লেষক বুলবুল সিদ্দিকীর মতে, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আসা এ অভিযোগ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আশাকে আরও ক্ষীণ করে তুলছে। আরাকান আর্মি এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগও তুলতে পারে বলেই মনে করছেন তিনি।
গত আট বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কয়েক লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, যারা কোনো দেশের নাগরিকত্ব ছাড়াই বেড়ে উঠছে, যা কিনা দীর্ঘমেয়াদে পরিচয়ের সংকট তৈরি করছে। এই শিশুদের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ অনিশ্চিত এবং এই পরিচয়হীন প্রজন্ম দীর্ঘমেয়াদে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকটের শুরুতে, ২০১৭ সালে, কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ রোহিঙ্গাদের প্রতি যে সহানুভূতি দেখিয়েছিল, তা ছিল অভূতপূর্ব। তারা নিজেদের সীমিত সম্পদ দিয়েও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সহানুভূতি উদ্বেগ ও চাপা ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক বুলবুল সিদ্দিকী এর পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলে স্ট্রিমের সঙ্গে আলাপচারিতায় তুলে এনেছেন-
রোহিঙ্গা সংকটের মতো আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ভূমিকা হতাশাজনক। অভিযোগ রয়েছে, আন্তর্জাতিক মহল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর স্বার্থ না দেখে বরং নিজেদের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ওপর চীনের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। তবুও, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে বলেই মনে করছেন বুলবুল সিদ্দিকী। তাঁর মতে, চীনের ‘আরেক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার’ যে নীতি রয়েছে এবং মিয়ানমারে দেশটির বিপুল বিনিয়োগ ও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এই ইস্যুতে তাদের জোরালো ভূমিকার পথে অন্তরায়।
বুলবুল সিদ্দিকীর মতে, একইভাবে ভারতের ‘কালাদান’ প্রকল্পের মতো অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং নিজস্ব নিরাপত্তা উদ্বেগ তাদের মিয়ানমারের প্রতি নমনীয় থাকতে বাধ্য করেছে। এই দুই প্রভাবশালী প্রতিবেশীর নিষ্ক্রিয়তা সংকট সমাধানে একটি বড় বাধা বলেই মনে করছেন তিনি।
আঞ্চলিক জোট হিসেবে আসিয়ানের ভূমিকাও অত্যন্ত দুর্বল ও নিষ্ক্রিয়। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার নেতৃত্বে আসিয়ানের একটি প্রতিনিধি দলের মিয়ানমারে শান্তি আলোচনার জন্য যাওয়ার কথা থাকলেও প্রশ্ন উঠছে, মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তা কোনো কাজে আসবে কিনা।
সব মিলিয়ে আট বছর পর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পরিবর্তে আরও ঘনীভূত হয়েছে। একদিকে যেমন প্রত্যাবর্তনের পথ প্রায় রুদ্ধ, তেমনি অন্যদিকে ক্যাম্পের জীবন নানা সংকটে জর্জরিত।
মিয়ানমারের ভূমিকম্পের পর মানবিক দুর্যোগের সময়ে মানবিক করিডোরের মাধ্যমে সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব উঠলেও বাংলাদেশের দিক থেকে যথাযথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
তবে গবেষক বুলবুল সিদ্দিকীর মতে, বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রথাগত যে বাণিজ্য ব্যবস্থা রয়েছে, তা ব্যবহার করে বরং বাংলাদেশ আরাকান আর্মির বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে দরকষাকষির একটি মাধ্যম গড়ে তুলতে পারে। তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, কক্সবাজার অঞ্চলে যে ‘বার্মিজ মার্কেট’ রয়েছে, সেটাকে প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি দুর্যোগপীড়িত আরাকানে বাংলাদেশ সহায়তাও পাঠাতে পারে।
তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি এই সংকটকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে।
কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ ও প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন করে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হয়তো দ্রুত কোনো সমাধান আনবে না, কিন্তু স্থবির হয়ে পড়া এই সংকটকে আন্তর্জাতিক আলোচনায় পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে যদি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যায় এবং তহবিলসংকট কিছুটা কমানো যায়, তবেই হয়তো এই বিপুলসংখ্যক ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের জন্য ন্যূনতম মানবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদে রোহিঙ্গারা কি সম্মানজনকভাবে নিজেদের দেশে ফিরতে পারবে, নাকি বাংলাদেশই হয়ে উঠতে যাচ্ছে তাদের নতুন ‘দেশ’?
আট বছর আগে ২০১৭ সালের এই দিনে (২৫ আগস্ট) নতুন করে মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে সীমান্তে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ঢল নামে। এই দফায় আরাকান (রাখাইন) রাজ্যে সংঘটিত নৃশংস গণহত্যা থেকে বাঁচতে দুই মাসে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। মানবিকতার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বাংলাদেশের জনগণ রোহিঙ্গাদের জন্য নিজেদের সীমান্ত খুলে দিয়েছিল বটে, তবে কিছুদিনের মধ্যেই নানা সঙ্কটে তাঁরা যেন আশ্রয়দাতাদের জন্যই বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। আট বছরেও তাদের ফিরে যাওয়ার কোনো স্পষ্ট অগ্রগতি দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না।
গবেষকদের মতে, এই সংকট আরও গভীর হয়ে বহুমাত্রিক রূপ নিয়েছে। আন্তর্জাতিক সহায়তার ক্রমবর্ধমান ঘাটতি, রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ভেতরে নিরাপত্তার অভাব, স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি এবং মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিবর্তিত ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রত্যাবর্তনের আশাকে কার্যত অসম্ভব করে তুলেছে।
এই দীর্ঘ সময়ে একজন রোহিঙ্গাকেও আনুষ্ঠানিকভাবে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব না হওয়ায় সংকটটি এখন এমন এক জটিল আবর্তে ঘুরপাক খাচ্ছে, যেখানে সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ যোগ হচ্ছে।
বাংলাদেশ ও তার জনগণ যেন ২০১৭ সালের সেই সংকটময় অবস্থানেই আটকে আছে, যেখানে মানবিক আশ্রয় প্রদান করা গেলেও স্থায়ী সমাধানের পথটি আজও তিমিরেই রয়ে গেছে।
সংকটের শুরু থেকেই বাংলাদেশ সরকার কৌশলগত কারণে রোহিঙ্গাদের আনুষ্ঠানিকভাবে ‘শরণার্থী’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়নি। তাদের ‘বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিক’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ মূলত বোঝাতে চেয়েছিল যে, এটি একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা এবং তাদের অবশ্যই নিজ দেশে ফিরে যেতে হবে। যদিও এর পেছনে মূল উদ্দেশ্য ছিল রোহিঙ্গাদের শরণার্থী মর্যাদা না দেওয়ার মাধ্যমে যেন প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আন্তর্জাতিকভাবে গুরুত্ব না হারায়।
তবে গবেষকদের মতে, এই অবস্থানের একটি বড় পরিণতি হলো— রোহিঙ্গারা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী শরণার্থী হিসেবে প্রাপ্য কিছু অধিকার ও সুরক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
যদিও বাস্তবে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, গবেষক ও এনজিওগুলো তাদের ‘রোহিঙ্গা শরণার্থী’ হিসেবেই সম্বোধন করে। এই দাপ্তরিক পরিচয়ের ভিন্নতা তাদের আইনি অবস্থাকে এক ধোঁয়াশাপূর্ণ জায়গায় রেখেছে এবং তাদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামকে জটিলতর করেছে।
বিগত আট বছরে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক নানা উদ্যোগ নেওয়া হলেও, প্রকৃত অর্থে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ স্থবির হয়ে আছে। এর প্রধান কারণ হলো মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাব এবং রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা প্রদানে তাদের ব্যর্থতা। রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায়, নিরাপদে ও মর্যাদার সঙ্গে তাদের দেশে প্রত্যাবর্তন করতে চায়, যার মধ্যে নাগরিকত্ব ফিরে পাওয়ার দাবিটি অন্যতম।
গত শতকের নব্বইয়ের দশকে কিছু রোহিঙ্গাকে ফেরত পাঠানো সম্ভব হলেও, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি করা যায়নি। কারণ, এখন আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো, বিশেষ করে জাতিসংঘ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবর্তনের শর্তের ওপর জোর দিচ্ছে, যা অতীতে বাংলাদেশ হয়তো সেভাবে অনুসরণ করেনি।
সম্প্রতি এই সংকট আরও জটিল হয়ে উঠেছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে। জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে সংগ্রামরত বিভিন্ন গোষ্ঠী— যেমন আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের একটি বড় অংশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের জন্য আলোচনার পথ আরও কঠিন হয়ে পড়েছে।
ফলে প্রশ্ন উঠছে, প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের জান্তা সরকারের সঙ্গে আলোচনা হবে, নাকি আরাকান আর্মির সঙ্গে— যারা এখন ওই অঞ্চলের কার্যত নিয়ন্ত্রক?
বাংলাদেশ সরকারের জন্য সমস্যা হচ্ছে, আরাকান আর্মি এখনও স্পষ্ট করেনি, তারা ঠিক কী চায়। তারা কি আরাকানে একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করবে, নাকি মিয়ানমারের অধীনে থেকেই স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হয়ে থাকবে। ফলে, এ অবস্থায় একটি ‘নন-স্টেট অ্যাক্টর’ বা অ-রাষ্ট্রীয় গোষ্ঠীর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করা বাংলাদেশের জন্য একটি বড়সড় চ্যালেঞ্জ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে, আরাকান আর্মির বিরুদ্ধেও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়েছে। ফলে, রোহিঙ্গারা এখন দুই দিক থেকে চাপের মুখে, একদিকে যেমন মিয়ানমার জান্তা, আরেকদিকে আরাকান আর্মি। এই অস্থিতিশীল পরিবেশে তাদের নিরাপদ প্রত্যাবর্তন প্রায় অসম্ভব।
আট বছরে প্রত্যাবাসনে কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় নতুন নতুন সংকট তৈরি হচ্ছে, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, গাজায় ইজরায়েলি হামলাসহ অন্যান্য বৈশ্বিক সংকটের কারণে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ রোহিঙ্গা ইস্যু থেকে সরে গেছে। একইসঙ্গে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার উন্নয়ন তহবিল ভান্ডারও সংকুচিত করে ফেলেছে। ফলে, রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা তহবিল মারাত্মকভাবে কমে গেছে, যা তাদের খাদ্য, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবার মতো মৌলিক চাহিদার ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।
রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থান আরেকটি সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, আধিপত্য বিস্তার, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালানকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পগুলোতে নিয়মিত সংঘর্ষ, খুন, অপহরণের মতো অপরাধ ঘটছে। এই সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর কার্যক্রম কেবল ক্যাম্পের সাধারণ রোহিঙ্গা নয়, স্থানীয় বাংলাদেশিদের জন্যও মারাত্মক নিরাপত্তা হুমকি সৃষ্টি করছে।
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের মতো সংস্থাগুলো তাদের প্রতিবেদনে এসব ক্যাম্পভিত্তিক রোহিঙ্গা সশস্ত্র গোষ্ঠীর উত্থানের বিষয়ে আলোকপাত করেছে। তাদের অভিযোগ, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী এসব গোষ্ঠীকে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে সংগঠিত হতে সহায়তা করছে। যদিও বাংলাদেশ দৃঢ়ভাবে এসব অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে।
তবে, বাংলাদেশ এসব সশস্ত্র গোষ্ঠীদের সহায়তা করুক বা নাই করুক, আরাকান আর্মির মতো শক্তিশালী বাহিনীর বিরুদ্ধে তারা লড়াইয়ে টিকতে পারবে না বলেই আপাতদৃষ্টিতে মনে হচ্ছে।
বিশ্লেষক বুলবুল সিদ্দিকীর মতে, বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে আসা এ অভিযোগ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আশাকে আরও ক্ষীণ করে তুলছে। আরাকান আর্মি এ পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দ্বিচারিতার অভিযোগও তুলতে পারে বলেই মনে করছেন তিনি।
গত আট বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে কয়েক লাখ শিশু জন্মগ্রহণ করেছে, যারা কোনো দেশের নাগরিকত্ব ছাড়াই বেড়ে উঠছে, যা কিনা দীর্ঘমেয়াদে পরিচয়ের সংকট তৈরি করছে। এই শিশুদের ভবিষ্যৎ সম্পূর্ণ অনিশ্চিত এবং এই পরিচয়হীন প্রজন্ম দীর্ঘমেয়াদে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতার কারণ হতে পারে।
রোহিঙ্গা সংকটের শুরুতে, ২০১৭ সালে, কক্সবাজারের স্থানীয় জনগণ রোহিঙ্গাদের প্রতি যে সহানুভূতি দেখিয়েছিল, তা ছিল অভূতপূর্ব। তারা নিজেদের সীমিত সম্পদ দিয়েও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই সহানুভূতি উদ্বেগ ও চাপা ক্ষোভে পরিণত হয়েছে। নৃবিজ্ঞানী ও গবেষক বুলবুল সিদ্দিকী এর পেছনে একাধিক কারণ রয়েছে বলে স্ট্রিমের সঙ্গে আলাপচারিতায় তুলে এনেছেন-
রোহিঙ্গা সংকটের মতো আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক শক্তিগুলোর ভূমিকা হতাশাজনক। অভিযোগ রয়েছে, আন্তর্জাতিক মহল রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর স্বার্থ না দেখে বরং নিজেদের স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের ওপর চীনের উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। তবুও, রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে চীনের আগ্রহের ঘাটতি রয়েছে বলেই মনে করছেন বুলবুল সিদ্দিকী। তাঁর মতে, চীনের ‘আরেক দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার’ যে নীতি রয়েছে এবং মিয়ানমারে দেশটির বিপুল বিনিয়োগ ও বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) এই ইস্যুতে তাদের জোরালো ভূমিকার পথে অন্তরায়।
বুলবুল সিদ্দিকীর মতে, একইভাবে ভারতের ‘কালাদান’ প্রকল্পের মতো অর্থনৈতিক স্বার্থ এবং নিজস্ব নিরাপত্তা উদ্বেগ তাদের মিয়ানমারের প্রতি নমনীয় থাকতে বাধ্য করেছে। এই দুই প্রভাবশালী প্রতিবেশীর নিষ্ক্রিয়তা সংকট সমাধানে একটি বড় বাধা বলেই মনে করছেন তিনি।
আঞ্চলিক জোট হিসেবে আসিয়ানের ভূমিকাও অত্যন্ত দুর্বল ও নিষ্ক্রিয়। সম্প্রতি মালয়েশিয়ার নেতৃত্বে আসিয়ানের একটি প্রতিনিধি দলের মিয়ানমারে শান্তি আলোচনার জন্য যাওয়ার কথা থাকলেও প্রশ্ন উঠছে, মিয়ানমারের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তা কোনো কাজে আসবে কিনা।
সব মিলিয়ে আট বছর পর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানের পরিবর্তে আরও ঘনীভূত হয়েছে। একদিকে যেমন প্রত্যাবর্তনের পথ প্রায় রুদ্ধ, তেমনি অন্যদিকে ক্যাম্পের জীবন নানা সংকটে জর্জরিত।
মিয়ানমারের ভূমিকম্পের পর মানবিক দুর্যোগের সময়ে মানবিক করিডোরের মাধ্যমে সাহায্য পাঠানোর প্রস্তাব উঠলেও বাংলাদেশের দিক থেকে যথাযথ নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।
তবে গবেষক বুলবুল সিদ্দিকীর মতে, বিদ্যমান সংকটময় পরিস্থিতিতে মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তে প্রথাগত যে বাণিজ্য ব্যবস্থা রয়েছে, তা ব্যবহার করে বরং বাংলাদেশ আরাকান আর্মির বিশ্বাসভাজন হয়ে উঠে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে দরকষাকষির একটি মাধ্যম গড়ে তুলতে পারে। তিনি উদাহরণ হিসেবে বলেন, কক্সবাজার অঞ্চলে যে ‘বার্মিজ মার্কেট’ রয়েছে, সেটাকে প্রণোদনা দেওয়ার পাশাপাশি দুর্যোগপীড়িত আরাকানে বাংলাদেশ সহায়তাও পাঠাতে পারে।
তবে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি এই সংকটকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নতুন করে তুলে ধরার উদ্যোগ নিয়েছে।
কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন এবং জাতিসংঘসহ বিভিন্ন ফোরামে বিষয়টি জোরালোভাবে উপস্থাপন করার মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহ ও প্রত্যাবাসনের জন্য নতুন করে চাপ সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে।
এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা হয়তো দ্রুত কোনো সমাধান আনবে না, কিন্তু স্থবির হয়ে পড়া এই সংকটকে আন্তর্জাতিক আলোচনায় পুনরুজ্জীবিত করার জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে যদি আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করা যায় এবং তহবিলসংকট কিছুটা কমানো যায়, তবেই হয়তো এই বিপুলসংখ্যক ভাগ্যবিড়ম্বিত মানুষের জন্য ন্যূনতম মানবিক জীবনযাপন নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। তবে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, দীর্ঘমেয়াদে রোহিঙ্গারা কি সম্মানজনকভাবে নিজেদের দেশে ফিরতে পারবে, নাকি বাংলাদেশই হয়ে উঠতে যাচ্ছে তাদের নতুন ‘দেশ’?
আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘সত্যিকারার্থে মানুষকে সেবা না দিতে পারলে আইন বা সরকারের প্রচেষ্টার কোনো মূল্য থাকবে না। আমাদের যে অর্থ আছে, ক্ষমতা আছে, সেটার যথাযথ ব্যবহারে আমরা অনেক কিছুই করতে পারি।’
৫ ঘণ্টা আগেরোহিঙ্গা বিষয়ক হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ও জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ড. খলিলুর রহমান বলেছেন, মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা তাদের অধিকার নিয়ে দেশে ফিরে যেতে প্রস্তুত।
৬ ঘণ্টা আগেভারত নতুন করে বাংলাদেশের পাটপণ্যের ওপর সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে, যার ফলে দেশের সোনালি আঁশ খ্যাত শিল্পের অন্যতম প্রধান রপ্তানি বাজার অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেআইসিটি খাতের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রণয়নের জন্য সময় আরও তিন মাস বাড়িয়েছে টাস্কফোর্স কমিটি। আজ সোমবার (২৫ আগস্ট) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ বিভাগের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
৭ ঘণ্টা আগে