স্ট্রিম প্রতিবেদক
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের বিষয়ে একমত হলেও ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে একটি ‘প্যাকেজ’ প্রস্তাব করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
কমিশনের এই প্যাকেজ প্রস্তাবে প্রথমে বিশেষ আদেশ জারির করার কথা বলা হবে, যার ভিত্তিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। আর পরবর্তী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকার প্রস্তাবও করবে কমিশন। এতে নির্বাচিতরা একইসঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ সভা এবং নিয়মিত জাতীয় সংসদের ভূমিকা পালন করবেন। তবে, নির্বাচিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিষদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করবেন। কিন্তু গণভোটের দিনক্ষণ কমিশন সরকারের ওপর ছেড়ে দেবে। কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতামত নিয়ে আজকে কমিশন সদস্যরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করবেন। সেখানে তাঁরা জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারকে দিতে যাওয়া সুপারিশের লিখিত চূড়ান্ত করবেন। আর আগামী ১২ অক্টোবরের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করবেন। যেখানে চূড়ান্ত জুলাই সনদও থাকবে।
সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গতকাল বুধবার কমিশনের সঙ্গে সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হতে পারেনি। বিকেল থেকে ৩টি বিরতি দিয়ে রাত সোয়া ১১টায় বৈঠক শেষ হয়। বৈঠকে সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণভোট কখন ও কী আদেশে হবে, সেটি নিয়ে বিভক্তি দেখা যায়।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের ভোটের দিনই গণভোট চাওয়া হয়েছে। আর জামায়াত এবং এনসিপি চায় সংবিধান বা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট।
বৈঠকের সমাপনী বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজ সারা দিনের আলোচনার সারাংশ নিয়েছি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের আলোকে সরকারকে দ্রুত পরামর্শ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।‘
তিনি জানান, বিশেষজ্ঞরা সর্বসম্মতভাবে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন— জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য একটি বিশেষ আদেশ জারি করতে হবে; ওই আদেশের মাধ্যমেই গণভোট আয়োজন করতে হবে; গণভোটে দুটি আলাদা প্রশ্ন রাখতে হবে, যাতে ঐকমত্য ও মতবিরোধ উভয় বিষয় স্পষ্ট হয়; নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও ১৩তম জাতীয় সংসদ গঠন করতে হবে; গণভোটে অনুমোদনের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জুলাই সনদে বর্ণিত সংস্কার সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দুটি প্রস্তাব উঠে এসেছে। একাধিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিনই পৃথক ব্যালটে গণভোট নেওয়ার পক্ষে, আর কয়েকটি দল নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে, কমিশনের মতে, সবাই একমত যে সংসদকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের কাঠামোগত পরিবর্তনের ক্ষমতা দেওয়া উচিত।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে চূড়ান্তভাবে মতামত সমন্বয় করে সরকারকে পরামর্শ দেব। পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও জোটকে অবহিত করা হবে।’
কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ অক্টোবর শেষ হবে উল্লেখ করে আলী রিয়াজ বলেন, এর মধ্যেই তারা জুলাই সনদের ওপর একটি স্বাক্ষরদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চান।
কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৭ অথবা ১৮ অক্টোবর জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর সই করার করার জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে ঐকমত্য কমিশন। সেটা সমাবেশ কিংবা আলোচনা সভাও হতে পারে।
এর আগে জাতীয় নির্বাচনের দিন একইসঙ্গে গণভোট দেওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরে বিএনপি। দলটির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের অল্প সময় বাকি আছে। এর আগে গণভোটের মত মহাযজ্ঞ আয়োজন করা সম্ভব নয়। এতে অতিরিক্ত অর্থও খরচ হবে। আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার প্রস্তাব জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রয়াস হবে।’
‘সনদের অঙ্গীকারে একটি বিষয় যুক্ত করতে হবে, যেসব দলের যে যে বিষয়ে ভিন্নমত আছে সেগুলো তারা নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হলে সে দল তাদের ভিন্নমত অনুসারে প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে পারবে’, উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘বিশেষ সংবিধান আদেশ বা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের প্রয়োজন আছে। এই আদেশে গণভোটের কথা বলা থাকবে। তফসিলে জুলাই সনদ থাকবে। আদেশের ভিত্তিতে গণভোট হবে। আর আগামী সংসদের দুটি ক্ষমতা থাকবে। একটি সাধারণ সংসদের ক্ষমতা অন্যটি কনস্টুয়েন্ট পাওয়ার বা গাঠনিক ক্ষমতা। সংসদের প্রথম অধিবশেনে এই ক্ষমতা থাকবে। দ্বিতীয় অধিবেশন থেকে সাধারণ সংসদ কাজ করবে। এভাবে হলে সংস্কার টেকসই হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে কয়টি বিষয়ে ভিন্নমত আছে সেগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো না হলে সংস্কার মুখ থুবড়ে পড়বে। গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে হতে হবে। এখন সিদ্ধান্ত নিলে আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে গণভোট করা সম্ভব।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ‘সংস্কারগুলো আগামীতে প্রশ্নবিদ্ধ হবে বা বাতিল হবে এমন প্রক্রিয়ায় যাওয়া ঠিক হবে না। টেকসই করার বিষয়ে মনযোগ দিতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নামে একটি আদেশ দেওয়া উচিত। জুলাই সনদ বাস্তববায়ন করা হবে কি না, এই প্রশ্নে গণভোট দেওয়া এবং আগামী সংসদকে বিশেষ কনস্টুয়েন্ট পাওয়ার দিতে হবে। কারণ সংবিধানের মৌলিক কাঠামোতে হাত দেওয়া হচ্ছে। এজন্য সংসদকে বিশেষ ক্ষমতা দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট হলে গুরুত্ব হারাবে।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন গণভোটের আয়োজনের পক্ষ মত দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশ জাসদ, এলডিপি। গণতন্ত্র মঞ্চ সংবিধান বা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ভিত্তিতে গণভোট চেয়েছে। একই সঙ্গে সনদের উল্লেখ থাকবে আগামী জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশের নাম হবে সংবিধান সংস্কার সভা এবং নোট অব ডিসেন্টের বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান। সিপিবি-বাসদসহ সমমনা দলগুলো সংবিধান আদেশের বিপরীতে ১৯৯১ সালের গণভোট আইন অনুযায়ী ভোটের দিন গণভোট করার প্রস্তাব করে।
বিএনপির সমমনা দলগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে ভোটের দিন গণভোট করার প্রস্তাব দেন এবং নিয়মিত সংসদের সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সুরাহা করার প্রস্তাব দেয়।
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের আগে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন। সেখানে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিভিন্ন উপায় নিয়ে কথা বলেন।
বিশেষজ্ঞরা জানান, অধ্যাদেশের অধীনে গণভোটের আয়োজন করলে জটিলতা তৈরি হতে পারে। কারণ অধ্যাদেশ পরবর্তী সংসদ অধিবেশনের ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে পাস করতে হয়। কোনো কারণে সেটি না হলে অধ্যাদেশটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অধ্যাদেশ বাতিল হয়ে যাবে। তাই জুলাই ঘোষণাপত্রের অধীনে সংবিধান বা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের অধীনে গণভোট করার পক্ষে মত দেয়। পরবর্তী সংসদকে নিয়মিত সংসদের সংবিধান সংস্কার পরিষদের ক্ষমতা দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়। যেটিই সমাধান বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।
কমিশনের সভায় অংশ নেওয়া একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, শুরুতে কমিশন একসঙ্গে গণভোট ও সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ দিলেও এখন তারা বিষয়টিকে ‘প্র্যাক্টিক্যাল ইস্যু’ হিসেবে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিতে চাইছে।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে মনে হয়েছিল একসঙ্গে করলেই সহজ হবে। কিন্তু এখন অনেকে বলছেন, এতে জটিলতা বাড়তে পারে। তাই আমরা এখন আর আগে বা একই দিনে করার কথা বলছি না। সরকার প্র্যাক্টিক্যাল বাস্তবতা দেখে সিদ্ধান্ত নিক—এটাই এখন আমাদের অবস্থান।’
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের বিষয়ে একমত হলেও ভোটের দিনক্ষণ নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেনি রাজনৈতিক দলগুলো। এক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক দলগুলোর মতামতের ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে একটি ‘প্যাকেজ’ প্রস্তাব করবে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
কমিশনের এই প্যাকেজ প্রস্তাবে প্রথমে বিশেষ আদেশ জারির করার কথা বলা হবে, যার ভিত্তিতে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। আর পরবর্তী জাতীয় সংসদকে দ্বৈত ভূমিকার প্রস্তাবও করবে কমিশন। এতে নির্বাচিতরা একইসঙ্গে সংবিধান সংস্কার পরিষদ সভা এবং নিয়মিত জাতীয় সংসদের ভূমিকা পালন করবেন। তবে, নির্বাচিত নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিষদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করবেন। কিন্তু গণভোটের দিনক্ষণ কমিশন সরকারের ওপর ছেড়ে দেবে। কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি আরও জানিয়েছে, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে মতামত নিয়ে আজকে কমিশন সদস্যরা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করবেন। সেখানে তাঁরা জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সরকারকে দিতে যাওয়া সুপারিশের লিখিত চূড়ান্ত করবেন। আর আগামী ১২ অক্টোবরের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে হস্তান্তর করবেন। যেখানে চূড়ান্ত জুলাই সনদও থাকবে।
সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে গতকাল বুধবার কমিশনের সঙ্গে সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হতে পারেনি। বিকেল থেকে ৩টি বিরতি দিয়ে রাত সোয়া ১১টায় বৈঠক শেষ হয়। বৈঠকে সনদ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গণভোট কখন ও কী আদেশে হবে, সেটি নিয়ে বিভক্তি দেখা যায়।
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে জাতীয় সংসদের ভোটের দিনই গণভোট চাওয়া হয়েছে। আর জামায়াত এবং এনসিপি চায় সংবিধান বা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ভিত্তিতে জাতীয় নির্বাচনের আগেই গণভোট।
বৈঠকের সমাপনী বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আজ সারা দিনের আলোচনার সারাংশ নিয়েছি এবং বিশেষজ্ঞদের মতামতের আলোকে সরকারকে দ্রুত পরামর্শ দেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি।‘
তিনি জানান, বিশেষজ্ঞরা সর্বসম্মতভাবে পাঁচটি প্রস্তাব দিয়েছেন— জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের জন্য একটি বিশেষ আদেশ জারি করতে হবে; ওই আদেশের মাধ্যমেই গণভোট আয়োজন করতে হবে; গণভোটে দুটি আলাদা প্রশ্ন রাখতে হবে, যাতে ঐকমত্য ও মতবিরোধ উভয় বিষয় স্পষ্ট হয়; নির্বাচনের মাধ্যমে সংবিধান সংস্কার পরিষদ ও ১৩তম জাতীয় সংসদ গঠন করতে হবে; গণভোটে অনুমোদনের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জুলাই সনদে বর্ণিত সংস্কার সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলোর পক্ষ থেকে দুটি প্রস্তাব উঠে এসেছে। একাধিক দল জাতীয় নির্বাচনের দিনই পৃথক ব্যালটে গণভোট নেওয়ার পক্ষে, আর কয়েকটি দল নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে। তবে, কমিশনের মতে, সবাই একমত যে সংসদকে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানের কাঠামোগত পরিবর্তনের ক্ষমতা দেওয়া উচিত।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, ‘আমরা আগামী এক-দুই দিনের মধ্যে চূড়ান্তভাবে মতামত সমন্বয় করে সরকারকে পরামর্শ দেব। পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী সব রাজনৈতিক দল ও জোটকে অবহিত করা হবে।’
কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ অক্টোবর শেষ হবে উল্লেখ করে আলী রিয়াজ বলেন, এর মধ্যেই তারা জুলাই সনদের ওপর একটি স্বাক্ষরদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে চান।
কমিশনের সূত্রে জানা গেছে, আগামী ১৭ অথবা ১৮ অক্টোবর জুলাই সনদে রাজনৈতিক দলগুলোর সই করার করার জন্য একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে ঐকমত্য কমিশন। সেটা সমাবেশ কিংবা আলোচনা সভাও হতে পারে।
এর আগে জাতীয় নির্বাচনের দিন একইসঙ্গে গণভোট দেওয়ার পক্ষে মত তুলে ধরে বিএনপি। দলটির বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, জাতীয় নির্বাচনের অল্প সময় বাকি আছে। এর আগে গণভোটের মত মহাযজ্ঞ আয়োজন করা সম্ভব নয়। এতে অতিরিক্ত অর্থও খরচ হবে। আমরা মনে করি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট করার প্রস্তাব জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত করার প্রয়াস হবে।’
‘সনদের অঙ্গীকারে একটি বিষয় যুক্ত করতে হবে, যেসব দলের যে যে বিষয়ে ভিন্নমত আছে সেগুলো তারা নির্বাচনী ইশতেহারে উল্লেখ করবে। জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হলে সে দল তাদের ভিন্নমত অনুসারে প্রস্তাব বাস্তবায়ন করতে পারবে’, উল্লেখ করেন বিএনপির এই নেতা।
আলোচনায় অংশ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিনিধি আইনজীবী শিশির মনির বলেন, ‘বিশেষ সংবিধান আদেশ বা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের প্রয়োজন আছে। এই আদেশে গণভোটের কথা বলা থাকবে। তফসিলে জুলাই সনদ থাকবে। আদেশের ভিত্তিতে গণভোট হবে। আর আগামী সংসদের দুটি ক্ষমতা থাকবে। একটি সাধারণ সংসদের ক্ষমতা অন্যটি কনস্টুয়েন্ট পাওয়ার বা গাঠনিক ক্ষমতা। সংসদের প্রথম অধিবশেনে এই ক্ষমতা থাকবে। দ্বিতীয় অধিবেশন থেকে সাধারণ সংসদ কাজ করবে। এভাবে হলে সংস্কার টেকসই হবে।’
তিনি বলেন, ‘যে কয়টি বিষয়ে ভিন্নমত আছে সেগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো না হলে সংস্কার মুখ থুবড়ে পড়বে। গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে হতে হবে। এখন সিদ্ধান্ত নিলে আগামী নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে গণভোট করা সম্ভব।’
আলোচনায় অংশ নিয়ে এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক জাবেদ রাসিন বলেন, ‘সংস্কারগুলো আগামীতে প্রশ্নবিদ্ধ হবে বা বাতিল হবে এমন প্রক্রিয়ায় যাওয়া ঠিক হবে না। টেকসই করার বিষয়ে মনযোগ দিতে হবে। জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ নামে একটি আদেশ দেওয়া উচিত। জুলাই সনদ বাস্তববায়ন করা হবে কি না, এই প্রশ্নে গণভোট দেওয়া এবং আগামী সংসদকে বিশেষ কনস্টুয়েন্ট পাওয়ার দিতে হবে। কারণ সংবিধানের মৌলিক কাঠামোতে হাত দেওয়া হচ্ছে। এজন্য সংসদকে বিশেষ ক্ষমতা দিতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট হতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট হলে গুরুত্ব হারাবে।’
জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটের দিন গণভোটের আয়োজনের পক্ষ মত দিয়ে গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, সিপিবি, বাসদ, বাংলাদেশ জাসদ, এলডিপি। গণতন্ত্র মঞ্চ সংবিধান বা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের ভিত্তিতে গণভোট চেয়েছে। একই সঙ্গে সনদের উল্লেখ থাকবে আগামী জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশের নাম হবে সংবিধান সংস্কার সভা এবং নোট অব ডিসেন্টের বিষয়টি আলোচনার মাধ্যমে সমাধান। সিপিবি-বাসদসহ সমমনা দলগুলো সংবিধান আদেশের বিপরীতে ১৯৯১ সালের গণভোট আইন অনুযায়ী ভোটের দিন গণভোট করার প্রস্তাব করে।
বিএনপির সমমনা দলগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে ভোটের দিন গণভোট করার প্রস্তাব দেন এবং নিয়মিত সংসদের সংবিধান সম্পর্কিত প্রস্তাবগুলো সুরাহা করার প্রস্তাব দেয়।
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের আগে বুধবার দুপুর ১২টা থেকে প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বৈঠক করে কমিশন। সেখানে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিভিন্ন উপায় নিয়ে কথা বলেন।
বিশেষজ্ঞরা জানান, অধ্যাদেশের অধীনে গণভোটের আয়োজন করলে জটিলতা তৈরি হতে পারে। কারণ অধ্যাদেশ পরবর্তী সংসদ অধিবেশনের ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে পাস করতে হয়। কোনো কারণে সেটি না হলে অধ্যাদেশটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অধ্যাদেশ বাতিল হয়ে যাবে। তাই জুলাই ঘোষণাপত্রের অধীনে সংবিধান বা জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের অধীনে গণভোট করার পক্ষে মত দেয়। পরবর্তী সংসদকে নিয়মিত সংসদের সংবিধান সংস্কার পরিষদের ক্ষমতা দিতে পরামর্শ দেওয়া হয়। যেটিই সমাধান বলে মনে করে বিশেষজ্ঞরা।
কমিশনের সভায় অংশ নেওয়া একজন বিশেষজ্ঞ বলেন, শুরুতে কমিশন একসঙ্গে গণভোট ও সংসদ নির্বাচন আয়োজনের পরামর্শ দিলেও এখন তারা বিষয়টিকে ‘প্র্যাক্টিক্যাল ইস্যু’ হিসেবে সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ছেড়ে দিতে চাইছে।
তিনি বলেন, ‘প্রথম দিকে মনে হয়েছিল একসঙ্গে করলেই সহজ হবে। কিন্তু এখন অনেকে বলছেন, এতে জটিলতা বাড়তে পারে। তাই আমরা এখন আর আগে বা একই দিনে করার কথা বলছি না। সরকার প্র্যাক্টিক্যাল বাস্তবতা দেখে সিদ্ধান্ত নিক—এটাই এখন আমাদের অবস্থান।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখতে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অপরিহার্য।
২ ঘণ্টা আগেস্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিতে হাজির হয়েছেন।
৩ ঘণ্টা আগেডাক বিভাগের বেদখল সম্পদ পুনরুদ্ধার করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।
৩ ঘণ্টা আগেএবার মৌচাকের ফরচুন শপিং মলের দ্বিতীয় তলার শম্পা জুয়েলার্স নামে এক দোকান থেকে ৫০০ ভরি সোনা চুরির অভিযোগ উঠেছে।
৪ ঘণ্টা আগে