leadT1ad

রাজধানীতে ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে মুক্তিপণ, তিন থানা পুলিশের কেউ জানে না

স্ট্রিম প্রতিবেদক
স্ট্রিম প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ অক্টোবর ২০২৫, ২৩: ৫৩
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

রাজধানীর যাত্রাবাড়ী মোড়ে রাস্তা থেকে প্রকাশ্যে এক ব্যবসায়ী অপহরণের শিকার হন। পরে স্বজনদের কাছ থেকে ৬০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় অপহৃতকে নারায়ণগঞ্জের মদনগঞ্জের রাস্তায় ফেলে পালিয়ে যায় অপহরণকারীরা। খবর পেয়ে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করেছেন স্বজনরা।

এদিকে, অপহরণের ঘটনাস্থল এবং অপহৃতের উদ্ধারস্থল ভিন্ন ভিন্ন থানা এলাকায় হলেও সংশ্লিষ্ট থানাগুলো এই ঘটনার বিষয়ে কিছু জানে না।

আজ সোমবার (৬ অক্টোবর) ভোর ৬টার দিকে যাত্রাবাড়ি মোড় এলাকায় অপহরণের ঘটনাটি ঘটে। অপহৃত ব্যবসায়ীর নাম মকবুল হোসেন। পেশায় তিনি মাংস বিক্রেতা।

স্বজনরা জানান, মকবুল বিভিন্ন এলাকায় গরু, খাসি কেটে সেসব পশুর ভুড়ি সংগ্রহ করে নিজের এলাকায় বিক্রি করেন। আজ ভোরের দিকে সোনারগাঁও থানাধীন আলমপুরা বাসা থেকে বের হয়ে মানিকনগর এলাকায় একটি গরু কাটার কাজে যাচ্ছিলেন। পথে যাত্রাবাড়ি মোড় এলাকায় পৌঁছলে তাকে ঘেঁষে একটি কালো রঙের মাইক্রোবাস থামে। তারপর সেই গাড়িতে তাকে তুলে নিয়ে যায়।

মকবুলের স্বজনরা জানান, অপহরণের প্রায় এক ঘণ্টা পর মকবুল তার স্বজনদের কাছে বলেন, ‘আমারে মাইরা ফালাইব, টাকা না পাঠাইলে’। এসময় তিনি চিৎকার করছিলেন।

মকবুলের বরাতে তাঁর বড় ভাই শাহ আলম স্ট্রিমকে জানান, অপহরণ করে গাড়িতে তোলার পর তাঁর হাত, পা ও চোখ বেঁধে হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে থাকে অপহরণকারীরা। তারপর মোবাইল ফোন দিয়ে স্বজনদেরে কাছে মুক্তিপণ হিসেবে দুই লাখ টাকা দাবি করতে থাকে। পরে স্বজনরা আতঙ্কিত হয়ে বিভিন্ন জায়গা থেকে ধারদেনা করে ৬০ হাজার টাকা অপহরণকারী চক্রের দেওয়া বিকাশ নম্বরে পাঠায়। পরে অপহরণকারীরা ওই টাকা তাদের নিজেদের মোবাইল নম্বরে স্থানান্তর করে মোবাইল ফোন ও সিম ভেঙে ফেলে। তারপর তারা তাঁর ভাইকে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়। পরে স্বজনরা খবর পেয়ে দুপুরের দিকে মদনগঞ্জের রাস্তা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

আজ সন্ধ্যায় শাহ আলম স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমাদের বাড়ি সোনারগাঁও থানার আলমপুরা গ্রামে। সেখান থেকে যাত্রাবাড়ি এলাকায় যাওয়ার পরই তাঁকে মাইক্রবাসে তুলে নেওয়া হয়। অপহরণের পর তাঁর ওপর নির্যাতন চালানো হয়। হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গা থেতলে দিয়েছে অপহরণকারীরা। পরে টাকা পাঠানোর পর আমরা তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করেছি।’

তিনি বলেন, ‘ঘটনার পরপরই থানা পুলিশ ও র‌্যাবকে অবহিত করা হয়। অপহরণকারীরা বুঝতে পেরে আরও বেশি মারধর করেছে। পরে আমার এক চাচার মোবাইল নম্বর দিয়ে ভাইয়ের মোবাইল ফোনের বিকাশে ৬০ হাজার টাকা পাঠানোর প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁকে রাস্তায় ফেলে রেখে যায় অপহরণকারীরা। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হয়।’

ঢামেক হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ( পরিদর্শক) মো. ফারুক হোসেন বলেন, ‘ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগে মকবুল চিকিৎসাধীন। এ বিষয়ে আরও খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্ট্রিমকে বলেন, ‘অপহরণ ও উদ্ধারস্থল—এই দুই জায়গার কোনটিই আমার থানা এলাকায় নয়। মদনগঞ্জ এলাকা হলে বন্দর থানায় পড়েছে।’

বন্দর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আনিছুর রহমান স্ট্রিমকে বলেন, ‘অপহরণ বা উদ্ধার—কোন তথ্যই আমরা জানি না। কেউ আমাদের জানায়নি। তবে অপহরণস্থল যাত্রাবাড়ি এলাকা হলে সেখানেই জানাতে পারেন।’

এই প্রসঙ্গে যাত্রাবাড়ি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কাজী রমজানুল হক স্ট্রিমকে বলেন, ‘আমাদের কাছে কোনো ব্যক্তির অপহরণ বা উদ্ধার হওয়ার তথ্য নাই। কেউ অভিযোগ জানাননি।’

বিষয়:

আহতঅপহরণ
Ad 300x250

সম্পর্কিত